Tuesday, December 31, 2013

দেওয়ানি মামলা

0 comments
সম্পত্তির উপর স্বত্ব ও দখলের ‍অধিকার নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হলে যে ‍মামলার মাধ্যমে তা নিষ্পত্তি করা হয় তাকে দেওয়ানি মামলা বলা হয়। দেওয়ানি মামলাকেই আদালতের ভাষায় মোকদ্দমা বলা হয়।

সব ধরনের দৃশ্যমান স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এবং অদৃশ্য সব ধরনের অধিকার সংক্রান্ত মোকদ্দমা হচ্ছে দেওয়ানি আদালতের বিচার্য বিষয়।

সাধারণভাবে দেওয়ানি মামলার বিষয়বস্তু:

- যেকোনো ধরনের সম্পত্তি বা স্বত্ব নিয়ে যে মামলা হয় মূলত তাই দেওয়ানি আদালতের বিচার্য বিষয়।

- কোনো মানবিক সম্পর্ক (পিতা-পুত্র, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক) নিয়ে যদি বিরোধ দেখা যায় তবে তা দেওয়ানি আদালতের বিচার্য বিষয়।

- মসজিদের নামাজ পড়া বা মন্দিরে পূজা করার অধিকার নিয়ে দেওয়ানি আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করা হয়।

- ভোটাধিকার নিয়েও দেওয়ানি আদালতে মামলা করা হয়।

সাধারণভাবে বলা যায়, সব ধরনের স্বত্ব, অধিকার, দাবি প্রভৃতির মামলা দেওয়ানি আদালতের আওতাভুক্ত।

সুপ্রিম কোর্ট (আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ) ছাড়াও আমাদের দেশে পাঁচ ধরনের দেওয়ানি আদালত আছে।

জেলা জজ আদালত:

হাইকোর্ট বিভাগের পরেই জেলা জজের স্থান। জেলার সর্বোচ্চ আদালতই জেলা জজ আদালত। এ আদালত যখন দেওয়ানি প্রকৃতির মামলা করে তখন তাকে দেওয়ানি আদালত বলা হয়।আবার যখন ফৌজদারী মামলার বিচার করলে তাকে ফৌজদারী আদালত বলে।

- ১ লাখ হতে ৫ লাখ পর্যন্ত মূল্যমানের মামলার আপীল জেলা জজ আদালতে করতে হয়।

- সাকসেশন সার্টিফিকেট, লেটার অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ইত্যাদি জেলা জজ ইস্যু করতে পারেন।

- জেলা জজ আদালত তার নিম্ন আদালতের মোকদ্দমা স্থানান্তর সম্পর্কিত দরখাস্ত, রিভিশন শুনানী গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করতে পারেন।

- পারিবারিক আদালতের রায় ও আদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আপীল গ্রহণ ও ও নিষ্পত্তি করে থাকেন।

অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত:

অতিরিক্ত জেলা জজের বিচারিক ক্ষমতা জেলা জজের সমান। তবে কোনো মোকদ্দমা বা আপীল এই আদালতে সরাসরি দায়ের করা যায় না।

- জেলা জজ আদালতে দাখিলকরা দরখাস্ত নিষ্পত্তির জন্য এ আদালতে প্রেরণ করা হলে তা শুনানী শেষে নিষ্পত্তি করা হয়।

- অতিরিক্ত জেলা জজের কোনো প্রশাসনিক ক্ষমত‍া নেই।

যুগ্ম জেলা জজ:

প্রত্যেক জেলায় এক বা একাধিক যুগ্ম জেলা জজ থাকেন। তিনি দেওয়ানি মোকদ্দমার সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচারক।

এ ‍আদালত ৪ লক্ষ ১ টাকা হতে ‍অসীম মূল্যমানের বিষয়বস্তুর মূল মোকদ্দমা গ্রহণ ও বিচার নিষ্পত্তি করতে পারেন।

সিনিয়র সহকারি জজ:

প্রত্যেক জেলায় সাধারণত এক বা একাধিক সিনিয়র সহকারি জজ আদালত থাকে। সম্পত্তি, অফিস, ব্যক্তিগত অপকার, ক্ষতিপূরণ ও ধর্মীয় অধিকার-সংক্রান্ত যাবতীয় মোকদ্দমা সিনিয়র সহকারি জজ ও সহকারি জজ আদালতে দায়ের করা হয়।

এ আদালত দুই লক্ষ ১ টাকা হতে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মূল্যমানের মূল মোকদ্দমা গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করতে পারে।

সহকারি জজ আদালত:

এ আদালত সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মূল্যমানের বিষয়বস্তুর মূল মামলা বিচারের জন্য গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করতে পারে। এ আদালতের কোনো আপিল এখতিয়‍ার নেই।

সিনিয়র সহকারি জজ ও সহকারি জজ আদালতে কী কী মামরা করা যায়:

- স্বত্ব ঘোষণার মোকদ্দমা৻

- স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মোকদ্দমা।

- চুক্তি কার্যকরের মোকদ্দমা।

- দলিল, চুক্তিপত্র, লিখিত ‍অঙ্গীকারপত্র ইত্যাদি রদ ও রহিতের জন্য মোকদ্দমা।

- যেকোনো কর্তৃপক্ষের অবৈধ আদেশ রদ ও রহিতের মোকদ্দমা।

- দখল পাওয়ার মোকদ্দমা।

- সম্পত্তি বা অফিস সংক্রান্ত কোনো অধিকার সম্পর্কে ঘোষণা পাওয়ার মোকদ্দমা।

- টাকা পাওয়ার মোকদ্দমা।

- সম্পত্তি অগ্রক্রয়ের মোকদ্দমা।

-নির্বাচনসংক্রান্ত মোকদ্দমা।

0 comments:

Post a Comment