হেঁচকি বা হিক্কা বেশ প্রচলিত একটি সমস্যা। এটা মাঝে মাঝে আমাদের বেশ
অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। তবে কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে এবং পালন করলে হেঁচকি দূর
করা সম্ভব। ‘ডায়াফ্রাগ্ম’ নামক পেশিটির,
যা পেট ও বুককে আলাদা রাখে, অনৈচ্ছিক সংকোচনের কারণে হেঁচকি হয়। এই সংকোচন এক মিনিটে
কয়েকবার হয়। ফলে আমরা দ্রুত শ্বাস নিতে বাধ্য হই এবং সেই সঙ্গে আমাদের ‘ভোকাল কর্ড’
বা স্বরতন্ত্রী তাৎক্ষনিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। আর তখনই হেঁচকি ওঠে।
হেঁচকি কমানোর কয়েকটি ঘরোয়া সমাধান
ঠাণ্ডা পানি: এক গ্লাস
ঠাণ্ডা পানি পান করে শরীরকে একটা ঝাঁকি দিতে পারেন। ফলে আপনার শরীর এই ঝটকা সামলাতে
ব্যস্ত থাকবে, অপরদিকে হেঁচকি কমে যাবে। ঠাণ্ডা পানি দিয়ে কুলিকুচি কিংবা বরফ মুখে
নিয়ে চুষে খেলেও একই উপকার মিলবে।
শ্বাস আটকে রাখা: এই পদ্ধতিতে
রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যায়, মনকে অমনযোগী করে এবং হেঁচকি থেমে যায়।
বড় একটা দম নিয়ে যতক্ষণ সম্ভব দম আটকে রাখতে হবে, একটু বাতাস বের হতে দেওয়া যাবে না।
চাপ বাড়ানোর জন্য দুই কানে আঙ্গুল দিয়ে বন্ধ করে নিতে পারেন।
চিনি: চিনি
খেলে ‘ভেগাস’ নামক স্নায়ু উদ্দীপ্ত হয়, ফলে শরীর হেঁচকির কথা ভুলে যায়। চিনি বা চিনির
কিউব মুখ নিয়ে চাবাতে থাকলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে। তবে ডায়বেটিস থাকলে এই পদ্ধতি ব্যবহার
করা যাবে না।
পিনাট বাটার: পিনাট বাটারের আঠালো উপাদান শ্বাস-প্রশ্বাসের তাল নষ্ট হয়, ফলে
হেঁচকি কমে। তাই পিনাট বাটারের গিলতে পারে। কিংবা এর পরিবর্তে আমন্ড বাটার, টফি ইত্যাদিও
ব্যবহার করতে পারেন।
হেঁচকি উঠলে প্রাথমিকভাবে যা করবেন এই বিষয়ে চিকিৎসকদের পরার্মশ :
• কিছুক্ষণ শ্বাস বন্ধ করে রাখতে পারেন।
• একটি ছিদ্রহীন ঠোঙ্গা বা কাগজের ব্যাগে মুখ আটকে দম ছাড়ুন। আবার ওটা
থেকে দম নিন। খেয়াল রাখতে হবে ঠোঙ্গার ভেতর যেন বাইরের বাতাস না ঢুকে।
• এক গ্লাস বরফকুচি ঠাণ্ডা পানি খেতে পারেন। স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিও খেতে পারেন। তবে ঠাণ্ডা পানি এ ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে।
• জিহ্বা সামনের দিকে টেনে ধরে রাখতে পারেন।
• হেঁচকি ওঠা ব্যক্তিকে অন্যমনস্ক করে দিলেও কাজে আসতে পারে। যেমন :
তাকে উদ্ভট কিছু বলা- তুমি না কি মিথ্যা বলেছ বা তুমি না কি ওই কাজটি করনি
ইত্যাদি।
• লেবুতে কামড় দেওয়া যেতে পারে বা খাওয়া যেতে পারে।
• জিহ্বার নিচে আধা চা চামচ চিনি দিয়ে রাখতে পারেন। যতক্ষণ পর্যন্ত চিনি
না গলে ততক্ষণ পর্যন্ত রাখতে হবে। এভাবে কয়েকবার দিতে পারেন।
• আঙুল দিয়ে জিহ্বার পেছনে শক্ত তালুতে হালকা স্পর্শ করতে হবে। হালকা স্পর্শ করলে এটা কমে যাবে।
প্রতিরোধ
হেঁচকি প্রতিরোধে ধীরে ধীরে খাবার খেতে হবে।
কোমল পানীয় বেশি পান করা যাবে না। ভারি খাবার খাওয়া এড়িয়ে যেতে হবে। এ ছাড়া
যদি কোনো ওষুধের কারণে এই সমস্যা হয় তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেটা
পরিবর্তন করার ব্যবস্থা করতে হবে।
0 comments:
Post a Comment