Friday, May 29, 2020

ঘড়ির মধ্যে অদ্ভুত বিষয়গুলো খেয়াল করেছেন?

0 comments

টিকটিক শব্দ করে ঘোরে ঘড়ির কাঁটা। কোনদিকে ঘোরে? আমরা সবাই জানি—ডান দিকে, কখনোই বামে নয়! কেন ডানে ঘোরে, এটা অনেকের কাছেই অদ্ভুত বিষয়। ঘড়ির মাঝে আরো কিছু চোখ ধাঁধানো বিষয় রয়েছে, তা হয়তো আমরা কখনোই খেয়াল করিনি!

ঘড়ির সাহায্যে সময় এবং সময়ের ব্যবধান পরিমাপ করা হয়। বর্তমানে সময় পরিমাপের জন্য দেয়াল ঘড়ি, পকেট ঘড়ি, ডিজিটাল ঘড়ি, হাত ঘড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। ডিজিটাল ব্যতিত অন্য ঘড়িতে ১ থেকে ১২ পর্যন্ত সংখ্যায় উল্লেখ করা থাকে। একটু খেয়াল করলেই আপনিও সংখ্যাগুলোর মধ্যে তিনটি অদ্ভুত বিষয় দেখতে পাবেন-
চিত্র ১

আপনার বাসার দেয়ালে টাঙানো ঘড়িটার উপরের সংখ্যা থেকে ও নীচেরটি বিয়োগ করুন (১২-৬)। ফলাফল ৬ হওয়াটাই স্বাভাবিক। এবার চিত্রের মতো ১১-৫, ১০-৪, ৯-৩, ৮-২, ৭-১ বিয়োগ করুন; সবগুলোর ফলাফলই একই (৬)।


চিত্র ২

ঘড়ির সবচেয়ে উপরের সংখ্যাটি ১২। এরপর হচ্ছে ১১ ও ১; সংখ্যা দুটি যোগ করলে ফলাফল দাঁড়ায় ১২। এবার ধারাবাহিকভাবে নীচের সংখ্যাগুলো একইভাবে যোগ করুন—১০+২, ৯+৩, ৮+৪, ৭+৫। প্রতিটি যোগের ফলাফল একই, অর্থাৎ ১২।

চিত্র ৩

দুই নম্বর চিত্রের যোগ থেকে ১২ ও ৬ বাদ পড়েছিল। এবার সংখ্যা দুটিকেও আমরা কাজে লাগাতে পারবো। ফলফল একই আসবে; ১৩। যেমন- ১২+১, ১১+২, ১০+৩; এভাবে ধারাবাহিকভাবে একের এক যোগ করলে ফলাফল একই আসবে।

সংগ্রহ: ডেইলি বাংলাদেশ/এনকে

Thursday, May 28, 2020

কোন রঙের গোলাপ কী প্রতীক ধারণ করে জানেন কি?

0 comments
গোলাপ ভালোবাসে না এমন মানুষ খুব কমই আছে। নানা রঙের গোলাপ রয়েছে। তবে লালা রঙের গোলাপ খুবই সহজলভ্য। আনন্দ, শোক, ভালোবাসা ইত্যাদি সবকিছুর মধ্যেই ফুল প্রাধান্য পায়।
তবে রঙের রকমভেদে একেক কাজে একেক রকম গোলাপ ব্যবহার হয়ে আসছে। তাই সঠিক জায়গায় সঠিক রঙের গোলাপটি ব্যবহার করাই উত্তম। নইলে আপনাকে পড়তে হবে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। অনেকেই জানেন না, প্রতিটি রঙের গোলাপ ভিন্ন ভিন্ন প্রতীক বহন করে। তাই চলুন আজ জেনে নেয়া যাক কোন রঙের গোলাপ কী প্রতীক ধারণ করে-

লাল গোলাপ

কাউকে প্রেম নিবেদন করতে গেলে হাতে একটা লাল গলাপ থাকা চাই-ই-চাই। তাছাড়া প্রেমের কবিতা কিংবা গল্পে লাল গোলাপ না থাকলে যেন পূর্ণতাই মিলে না। তাইতো গল্প, গান কিংবা কবিতায় বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে রক্ত গোলাপের কথা। এক কথায় সৌন্দর্য ও ভালোবাসার প্রতীক লাল গোলাপ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রেমের ধরন বদলে গেলেও প্রেম নিবেদনের ভাষা হিসেবে লাল গোলাপের আবেদন এখনো চিরন্তন।

গোলাপি গোলাপ

শুধু লাল গোলাপেই মনের ভাষা বোঝা যায় তা কিন্তু নয়। মনের ভাষা বোঝাতে পারে গোলাপি গোলাপও। ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা, স্বীকৃতির প্রতীক গোলাপি গোলাপ। যার উপর ভরসা করতে পারবেন তাকে এই গোলাপের শুভেচ্ছা দিতে পারেন। তাছাড়া প্রিয় বন্ধু, নির্ভরযোগ্য সঙ্গীকে ‘ধন্যবাদ’ জানাতে পারেন গোলাপি গোলাপ দিয়ে।

সাদা গোলাপ

সাধারণত আমরা শোক জ্ঞাপনের ক্ষেত্রে সাদা গোলাপ ব্যবহার করে থাকি। তবে সাদা গোলাপের গুরুত্ব অনেক গভীর। নিশ্চয়ই জানেন, খ্রিষ্টানদের বিয়ের সময় কনের হাতে একগুচ্ছ সাদা গোলাপ দেয়া হয়। কেন জানেন কি? মূলত এই ফুল নতুন জীবন শুরুর প্রতীক। আধ্যাত্মিকতারও প্রতীক সাদা গোলাপ। মৃতহেদ, সমাধির উপর সাদা গোলাপ রাখার অর্থ তাকে মনে করা। তবে শুধু মৃত ব্যক্তিকে নয়, কাউকে মনে করলে আপনি তাকেও সাদা গোলাপ পাঠিয়ে জানাতে পারেন মনের ভাষা।

কমলা গোলাপ

আবেগ, উৎসাহ, উদ্দীপনার প্রতীক কমলা গোলাপ। সহযোদ্ধাকে উদ্বুদ্ধ করতে ব্যবহার করা হয় কমলা গোলাপ। কমলা গোলাপ উপহার দিয়ে বোঝাতে পারেন, আপনি তার পাশেই আছেন।

হলুদ গোলাপ

জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পর্ক বন্ধুত্ব। হলুদ গোলাপ হচ্ছে এই বন্ধুত্বের প্রতীক। তাছাড়া আনন্দ, সুস্বাস্থ্য বোঝাতেও হলুদ গোলাপ ব্যবহার করা হয়। তাই আপনার জীবনে তার মূল্য বোঝাতে প্রিয়বন্ধুকে দিতে পারেন একগুচ্ছ হলুদ গোলাপ।

রক্তবেগুনী গোলাপ

বিশ্বস্ততার প্রতীক রক্তবেগুনী রং। তাছাড়া রানিকে সম্মান জানাতে দেয়া হয় রক্তবেগুনী গোলাপ। তাই রক্তবেগুনী গোলাপের ভাষা এখনো রহস্যের চাদরে ঢাকা।

পিচ গোলাপ

এই রঙের গোলাপ আরোগ্যের প্রতীক। সততা, আন্তরিকতা, সহমর্মিতা বোঝাতেও দেয়া হয় গুচ্ছ পিচ গোলাপ।

ফুল সবসময় শান্তি বয়ে আনে। বন্ধুত্ব, ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা, অনুপ্রেরণা, শোক, আনন্দ ইত্যাদি সবকিছুর প্রকাশ ঘটাতে পারে একটি মাত্র সুন্দর ফুল বা গোলাপ। যে ফুল ভালোবাসে তার মনই প্রকৃতিপক্ষে সুন্দর মন।

ডেইলি বাংলাদেশ থেকে সংগৃহিত

ঢাকায় রহস্যময় ‘ইহুদি ক্লাব’

0 comments
দশ কাঠা জমির ওপর দাঁড়িয়ে আছে সাদামাটা একটি ভবন। এটি ১১০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর মধ্যে কয়েকবার এটির সংস্কারের প্রয়োজন হয়েছে, তা দেখলেই বোঝা যায়। একটি বিশেষ কারণে ভবনটি নিয়ে এই সময়েও আলোচনা হয়। অনেকের মতে এটি ছিল ইহুদিদের ক্লাব। আবার কেউ কেউ বলেন, এটি ইহুদিদের প্রার্থনার জায়গা, সেখানে তারা গোপনে সভাও করতেন। তবে এসব মতাভেদের সুনির্দিষ্ট কোনো দলিল নেই।
যে ভবনটির কথা বলছিলাম, সেটির অবস্থান ঢাকার পুরানা পল্টন মোড়ে। ভবনের গায়ে একটি শ্বেতপাথরে লেখা আছে ‘ফ্রিম্যাসন্স হল-১৯১০’। এখনও এই লেখাটি দৃশ্যমান। কথিত আছে, এই ক্লাবে ইহুদি সম্প্রদায়ের লোকজন ছাড়া অন্যদের প্রবেশের অনুমতি ছিল না। ক্লাবের ভেতরে তাদের আলাপ-আলোচনা, খানাপিনা ও নাচ-গান চলতো। বাইরের মানুষ যাতে না জানে, সেভাবেই এসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হতো।

সেখানে কী হতো সেটা নিয়েও নানান মতাভেদ থাকলেও, এটি যে ফ্রিম্যাসনদের তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ফ্রিম্যাসনরি হলো একটি সংঘ, সেখানকার সদস্যদের বলা হয় ফ্রিম্যাসন। ক্যাথিড্রাল তৈরি এবং পাথরের কাজ যারা করেন, তাদের নিয়ে এমন সংগঠন করা হতো সেই সময়ে। ব্রিটানিকার তথ্য অনুযায়ী, ফ্রিম্যাসনরির কর্মকাণ্ড প্রচলিত অনেক ধর্ম থেকে ভিন্ন—অনেক ক্ষেত্রে বিপরীত।

এসব সংঘের সদস্য কারা? এই প্রশ্নের জবাবও ব্রিটানিকায় রয়েছে। বলা হয়েছে, ফ্রিম্যাসনরিতে বিভিন্ন ধর্মের নানা বিষয় রয়েছে। এটি সরাসরি কোনো ধর্মভিত্তিক সংগঠন নয়। এটি প্রধানত প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের সংঘ। সংঘের সদস্যরা ঈশ্বর–বিশ্বাসী এবং তারা মনে করেন আত্মা অমর।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ নামে তাদের ক্লাব রয়েছে। ১৭৭৫ সালে লন্ডনে এর সদর দপ্তর স্থাপিত হয়। তবে পুরানা পল্টনের এই ভবনটি ‘ইহুদি ক্লাব’ নামেই পরিচিত। এখনও অনেকের কাছে এটি রহস্যজনক! পল্টনের অনেক বাসিন্দার মতে, স্বাধীনতার পর ইহুদি ক্লাবটি অনেকটা পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। সদস্যদের বেশিরভাগই আমেরিকা কিংবা ইসরায়েলে চলে যান।

‘ঢাকাই কথা ও কিস্সা’ গ্রন্থে কাদের মাহমুদ উল্লেখ করেন, ২০১৩ সালে সর্বশেষ হিসাবে দেখা যায়, ঢাকায় দুইশ’রও কম ইহুদি বসবাস করছেন। তাদের অস্তিত্ব সম্পর্কে ঢাকাবাসী খুব একটা জানেন না। তারাও পরিচয় গোপন করে ঢাকায় বসবাস করতে ভালোবাসেন।

ভবনটি এখন ভূমি মন্ত্রণায়লের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৭০ বছর ধরে এই ভবনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিস রয়েছে। ভবনটি জরাজীর্ণ। এই ভবনের জমির পেছনের অংশ দখল করে গড়ে উঠেছে প্রায় ডজনখানেক দোকান।


সূত্র:ডেইলি বাংলাদেশ

Monday, May 25, 2020

প্রথম বাংলা ইসলামি গান রেকর্ডিংয়ের কথা

0 comments
কাজী নজরুলের শতাধিক ইসলামি গানের মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় হল ‘ও মোর রমজানের ওই রোজার শেষে এল খুশির ঈদ’ গানটি। আব্বাসউদ্দীন আহমদের জীবনী থেকে জানা যায়, সঙ্গীতশিল্পী আব্বাসউদ্দীনের অনুরোধেই কাজী নজরুল ইসলাম এ গান রচনা করেছিলেন। তবে আব্বাসউদ্দীনের অনুরোধে রচনা করলেও এই গান নজরুলের জীবনব্যাপী সংগ্রামেরই অংশ যেখানে তিনি স্বজাতির বেদনা ও মুক্তির তাড়নায় প্রতিনিয়ত সৃষ্টির আনন্দে মেতে ছিলেন।

কবি তার কালজয়ী এ গানটি রচনা করেন ১৯৩১ সালে। লেখার মাত্র চারদিন পর শিল্পী আব্বাসউদ্দীনের গলায় গানটি রেকর্ড করা হয়। রেকর্ড করার দুই মাস পর ঈদের ঠিক আগে আগে এই রেকর্ড প্রকাশ করা হয়। আব্বাসউদ্দীনের ‘দিনলিপি ও আমার শিল্পী জীবনের কথা’র এ গান সম্পর্কে আব্বাসউদ্দীন লিখেন,

‘কাজীদার লেখা গান ইতোমধ্যে অনেকগুলো রেকর্ড করে ফেললাম। তার লেখা ‘ বেণুকার বনে কাঁদে বাতাস বিধুর’, ‘অনেক কিছু বলার যদি দুদিন আগে আসতে’, ‘গাঙে জোয়ার এল ফিরে তুমি এলে কই’, ‘বন্ধু আজও মনে পড়ে আম কুড়ানো খেলা’ ইত্যাদি রেকর্ড করলাম। একদিন কাজীদাকে বললাম, ‘কাজীদা, একটা কথা মনে হয়। এই যে পিয়ারু কাওয়াল, কাল্লু কাওয়াল- এরা উর্দু কাওয়ালি গায়, এদের গানও শুনি অসম্ভব বিক্রি হয়। এ ধরনের বাংলায় ইসলামি গান দিলে হয় না?

কথাটা তার মনে লাগল। তিনি বললেন, ‘আব্বাস, তুমি ভগবতীবাবুকে বলে তার মত নাও। আমি ঠিক বলতে পারব না’। আমি ভগবতী ভট্টাচার্য অর্থাৎ গ্রামোফোন কোম্পানির রিহার্সেল-ইনচার্জকে বললাম। তিনি তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলেন, ‘না না না, ওসব গান চলবে না। ও হতে পারে না’। মনের দুঃখ মনেই চেপে গেলাম।

এর প্রায় ছয় মাস পর। একদিন দুপুরে বৃষ্টি হচ্ছিল, আমি অফিস থেকে গ্রামোফোন কোম্পানির রিহার্সেল ঘরে গিয়েছি। দেখি, একটা ঘরে আশ্চর্যময়ী আর ভগবতীবাবু বেশ রসালো গল্প করছেন। আমি নমস্কার দিতেই বললেন, ‘বসুন, বসুন’। আমি তার রসাপ্লুত মুখের দিকে চেয়ে ভাবলাম, এ-ই উত্তম সুযোগ। বললাম, ‘যদি কিছু মনে না করেন, তাহলে বলি। সেই যে বলেছিলাম ইসলামি গান দেওয়ার কথা। আচ্ছা; একটা এক্সপেরিমেন্টই করুন না, যদি বিক্রি না হয় আর নেবেন না, ক্ষতি কী’? তিনি হেসে বললেন, ‘নেহাতই নাছোড়বান্দা আপনি, আচ্ছা আচ্ছা, করা যাবে’।

শুনলাম, পাশের ঘরে কাজীদা আছেন। আমি কাজীদাকে বললাম, ভগবতীবাবু রাজি হয়েছেন। তখন সেখানে ইন্দুবালা কাজীদার কাছে গান শিখছিলেন। কাজীদা বলে উঠলেন, ‘ইন্দু, তুমি বাড়ি যাও, আব্বাসের সঙ্গে কাজ আছে’। ইন্দুবালা চলে গেলেন।

এক ঠোঙা পান আর চা আনতে বললাম দশরথ থেকে। তারপর দরজা বন্ধ করে আধঘণ্টার ভেতরই লিখে ফেললেন, ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এল খুশির ঈদ’।

তখনই সুর সংযোগ করে শিখিয়ে দিলেন। পরের দিন ঠিক এই সময় আসতে বললেন। পরের দিন লিখলেন, ‘ইসলামের ওই সওদা লয়ে এল নবীন সওদাগর’। গান দু’খানা লেখার ঠিক চার দিন পরই রেকর্ড করা হল। কাজীদার আর ধৈর্য মানছিল না। তার চোখেমুখে কী আনন্দই যে খেলে যাচ্ছিল! তখনকার দিনে যন্ত্র ব্যবহার হতো শুধু হারমোনিয়াম আর তবলা। গান দু’খানা আমার তখন মুখস্থ হয়নি। তিনি নিজে যা লিখে দিয়েছিলেন, মাইকের পাশ দিয়ে হারমোনিয়ামের ওপর ঠিক আমার চোখ বরাবর হাত দিয়ে কাজীদা নিজেই সেই কাগজখানা ধরলেন, আমি গেয়ে চললাম। এই হল আমার প্রথম ইসলামি রেকর্ড। শুনলাম; দুই মাস পর ঈদুল ফিতররের সময় গান দু’খানা তখন বাজারে বের হবে। ঈদের বাজার করতে একদিন ধর্মতলার দিকে গিয়েছি। বিএন সেন অর্থাৎ সেনোলা রেকর্ড কোম্পানির বিভূতিদার সঙ্গে দেখা। তিনি বললেন, ‘আব্বাস, আমার দোকানে এস’। তিনি এক ফটোগ্রাফার ডেকে নিয়ে এসে বসলেন, ‘এর ফটোটা নিন তো’। আমি তো অবাক! বললাম, ‘ব্যাপার কী’? তিনি বললেন, ‘তোমার একটা ফটো নিচ্ছি, ব্যস, আবার কী’?

ঈদের বন্ধে বাড়ি গেলাম।…কলকাতা ফিরে এসে ট্রামে চড়ে অফিসে যাচ্ছি। ট্রামে একটি যুবক আমার পাশে গুনগুন করে গাইছে, ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে’। আমি একটু অবাক হলাম। এ গান কী করে শুনল! অফিস ছুটির পর গড়ের মাঠে বেড়াতে গিয়েছি, মাঠে বসে একদল ছেলের মাঝে একটি ছেলে গেয়ে উঠল, ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে’। আনন্দে-খুশিতে মন ভরে উঠল।… ছুটলাম কাজীদার বাড়ি। শুনলাম, তিনি রিহার্সেল রুমে গেছেন। দেখি, দাবা খেলায় তিনি মত্ত। দাবা খেলতে বসলে দুনিয়া ভুলে যান তিনি। আমার গলার স্বর শুনে একদম লাফিয়ে উঠে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন, ‘আব্বাস, তোমার গান কী যে-’ আর বলতে দিলাম না পা ছুঁয়ে তার কদমবুসি করলাম। ভগবতীবাবুকে বললাম, ‘তাহলে এক্সপেরিমেন্টের ধোপে টিকে গেছি, কেমন’? তিনি বললেন, ‘এবার তাহলে আরও ক’খানা এই ধরনের গান…’ (আব্বাসউদ্দীন, ১৯৬০)

Thursday, May 21, 2020

সালমান খান ও ঐশ্বরিয়া রায়ের ব্যার্থ প্রেমের কাহিনী

0 comments
নব্বইয়ের দশকে বলিউডে ‘অ্যাংরি ইয়ং ম্যান’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন বর্তমানের সুপারস্টার সালমান খান। এই অত্যন্ত রাগী ছিলেটারই প্রেমে পড়েছিলেন সেই সময় ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন আসা ঐশ্বরিয়া রাই। তাদের সেই প্রেমে একসময় সরগরম ছিল বলিউড। কিন্তু আজ সবই অতীত। অকারণ সন্দেহ, পরকীয়ার রেশ, গায়ে হাত তোলা- ইত্যাদি নানা কারণে দাড়ি পড়ে গিয়েছিল সালমান-ঐশ্বরিয়ার প্রেমকাহিনিতে। সেই থেকে তাদের কথা বলা, মুখ দেখাদেখি সবই বন্ধ। তবে ঠিক কী কারণে বিচ্ছেদ হয়েছিল তাদের?

তাদের প্রেম শুরু হয়েছিল সঞ্জয় লীলা বানসালি পরিচালিত ‘হাম দিল দে চুকে সানম’ ছবির শুটিং সেট থেকে। সে সময় ঐশ্বরিয়া ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় নতুন। বিশ্বসুন্দরীর খেতাব জিতেছিলেন ঠিকই, কিন্তু বলিউডে সেভাবে জায়গা পাকা করতে পারেননি। অন্যদিকে, সালমান বেশ প্রতিষ্ঠিত। সে সময় সালমানের সম্পর্ক ছিল সোমি আলির সঙ্গে। তিনি ঐশ্বরিয়া-সালমানের বার বার সাক্ষাৎ ও সময় কাটানো কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি। ফলে তাদের ব্রেক আপ হয়ে যায়। সোমি চলে যান বিদেশে।

এই সুযোগে সালমান খান ও ঐশ্বরিয়া একে অপরের আরও কাছাকাছি আসার সুযোগ পেয়ে যান। সালমানের দুই বোন আলভিরা এবং অর্পিতার সঙ্গেও বেশ ভালো সম্পর্ক হয়ে যায় অ্যাশের। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো তখন তাদের প্রেমের গুঞ্জনে ডগমগ করছে। সালমানও বলিউডে ঐশ্বরিয়ার পায়ের তলায় মাটি শক্ত করতে উঠে পড়ে লাগেন। ঐশ্বরিয়া কার সঙ্গে কাজ করবেন, কোন ছবি নেবেন এসব ব্যাপারেও পরামর্শ দিতে শুরু করেন।

ঠিক সেই সময়ে ঐশ্বরিয়ার কাছে সুভাষ ঘাই পরিচালিত ‘তাল’ ছবির অফার আসে। কিন্তু সুভাষ ঘাইয়ের সঙ্গে তার নায়িকাদের নানা গসিপ আগে থেকেই চালু থাকায় পরিচালকের এই ছবিতে ঐশ্বরিয়াকে কাজ করতে নিষেধ করেন সালমান। কিন্তু নায়িকা ছাড়ার পাত্রী নন। সালমানের বারণ সত্ত্বেও তিনি ওই ছবিতে অভিনয় করেন এবং সেটি বক্স অফিসে সুপারহিট হয়। কিন্তু ছবির এক প্রিমিয়ার পার্টিতে ঐশ্বরিয়াকে খারাপ কথা বলায় সুভাষকে চড় মেরে বসেন সালমান।

সে সময় বলতে গেলে ঐশ্বরিয়ার জীবন আবর্তিত হত সালমানের হাতেই। ভাইজান ভাবতেন, প্রেমিক হিসেবে এটা তো তার অধিকার। ঠিক এমন সময়েই হরিণ শিকার কাণ্ডে নাম জড়ায় সালমানের। শুধু তাই নয়, শোনা যায়, এ সময় নাকি তার সাবেক প্রেমিকা সোমি আলির সঙ্গেও তার আবার কথাবার্তা শুরু হয়েছিল। সোমির বাবার চিকিৎসার জন্য টাকাও পাঠান সালমান। তাও আবার ঐশ্বরিয়াকে কিছু না জানিয়ে।

এদিকে পাল্লা দিয়ে চলছিল সালমানের মদের প্রতি আসক্তি আর ঐশ্বরিয়ার প্রতি অপরিসীম অধিকার ফলানো। একবার নাকি ঐশ্বরিয়ার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ভাইজান দরজা খোলার জন্য পাগলের মতো চিৎকার করতে থাকেন। ঐশ্বরিয়া দরজা না খুললে তিনি নিজেকে শেষ করে দেয়ার হুমকিও দিতে থাকেন। পরদিনই সমস্ত পত্রিকায় এই খবর বেশ বড় করে ছাপা হয়। ঘটনা জেনে যায় গোটা ভারত।

ঐশ্বরিয়ার বাড়ি থেকেও কিছুতেই এই সম্পর্ক মেনে নিতে চাইছিলেন না তার বাবা-মা। সে কথা পরবর্তীকালে নিজেই বলেছিলেন সালমান। এক বার এক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে চোখে সানগ্লাস পরে পুরস্কার নিতে ওঠেন ঐশ্বরিয়া। মনে খটকা লাগে উপস্থিত দর্শকদের। ঐশ্বরিয়া বলেছিলেন, তার চোখে ইনফেকশন হয়েছে। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির অন্দর বলছিল অন্য কথা। সালমান নাকি তার গায়ে হাত তুলেছিলেন।

এই ঘটনা প্রথমে স্বীকার না করলেও পরবর্তীতে সে কথা মেনে নিয়েছিলেন মিস ওয়ার্ল্ড। তিনি বলেছিলেন, এক বার নয়, বহু বার তাকে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে সালমানের কাছে। যদিও ভাইজান কখনোই এই অভিযোগ মানেননি। তার কথায়, ‘আমি ইমোশানাল, নিজেকে বহুবার আঘাত করেছি। কিন্তু সুভাষ ঘাই ছাড়া জীবনে কখনও কারও গায়ে হাত তুলিনি।’

এই সম্পর্ক থেকে অব্যাহতি চাইছিলেন ঐশ্বরিয়া রাই। ‘কুছ না কাহো’ ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন অভিষেক বচ্চন। শোনা যায়, সালমান নাকি সেই ছবির শুটিং সেটে গিয়েও নানা পাগলামী করেছিলেন। ভেঙে দিয়েছিলেন ঐশ্বরিয়ার গাড়ি। অভিষেক থেকে শাহরুখ, প্রায় সব সহ অভিনেতাকে নিয়েই প্রবল সন্দেহ করতেন সালমান।

‘আত্মসম্মান ভূলুণ্ঠিত হচ্ছিল’, এই বলেই অবশেষে সম্পর্ক থেকে সরে আসেন ঐশ্বরিয়া। কিন্তু ব্রেক আপ পরবর্তী ট্রমা থেকে কিছুতেই বেরোতে পারছিলেন না সালমান। ব্রেক আপের পর বিবেক ওবেরয়ের সঙ্গে ঐশ্বরিয়া সম্পর্কে জড়ালে তাকেও হুমকি দিয়েছিলেন সল্লু মিয়া। বলিউডের অন্দরে কান পাতলে এমনটাই শোনা যায়।

তবে সে সবই এখন অতীত। মাঝে কেটে গেছে অনেকগুলো বছর। ঐশ্বরিয়া এখন বচ্চন পরিবারের বধূ। স্বামী অভিষেক এবং কন্যা আরাধ্যাকে নিয়ে তার সুখের সংসার। অন্যদিকে সালমানের নাম জড়িয়েছে বিভিন্ন অভিনেত্রীর সঙ্গে। কখনও ক্যাটরিনা, কখনও আবার তার জীবনে এসেছেন ইউলিয়া ভন্তুর। শোনা যায়, বর্তমানে ইউলিয়ার সঙ্গেই সম্পর্কে রয়েছেন তিনি। তবে বয়স ৫০ পেরিয়েও আজও তিনি অবিবাহিত।

বাকি প্রেমিকাদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও আজও ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ তার। বহু বার বহু পরিচালক তাদের আবারও একসঙ্গে ছবি করার প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু দুজনেই তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। সালমান খান এবং ঐশ্বরিয়ার প্রেম জায়গা পেয়েছে বলিউডের সব থেকে চর্চিত ব্যর্থ প্রেমের তালিকায়।

সূত্র: ঢাকাটাইমস থেকে নেয়া।