Thursday, May 28, 2020

ঢাকায় রহস্যময় ‘ইহুদি ক্লাব’

0 comments
দশ কাঠা জমির ওপর দাঁড়িয়ে আছে সাদামাটা একটি ভবন। এটি ১১০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর মধ্যে কয়েকবার এটির সংস্কারের প্রয়োজন হয়েছে, তা দেখলেই বোঝা যায়। একটি বিশেষ কারণে ভবনটি নিয়ে এই সময়েও আলোচনা হয়। অনেকের মতে এটি ছিল ইহুদিদের ক্লাব। আবার কেউ কেউ বলেন, এটি ইহুদিদের প্রার্থনার জায়গা, সেখানে তারা গোপনে সভাও করতেন। তবে এসব মতাভেদের সুনির্দিষ্ট কোনো দলিল নেই।
যে ভবনটির কথা বলছিলাম, সেটির অবস্থান ঢাকার পুরানা পল্টন মোড়ে। ভবনের গায়ে একটি শ্বেতপাথরে লেখা আছে ‘ফ্রিম্যাসন্স হল-১৯১০’। এখনও এই লেখাটি দৃশ্যমান। কথিত আছে, এই ক্লাবে ইহুদি সম্প্রদায়ের লোকজন ছাড়া অন্যদের প্রবেশের অনুমতি ছিল না। ক্লাবের ভেতরে তাদের আলাপ-আলোচনা, খানাপিনা ও নাচ-গান চলতো। বাইরের মানুষ যাতে না জানে, সেভাবেই এসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হতো।

সেখানে কী হতো সেটা নিয়েও নানান মতাভেদ থাকলেও, এটি যে ফ্রিম্যাসনদের তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ফ্রিম্যাসনরি হলো একটি সংঘ, সেখানকার সদস্যদের বলা হয় ফ্রিম্যাসন। ক্যাথিড্রাল তৈরি এবং পাথরের কাজ যারা করেন, তাদের নিয়ে এমন সংগঠন করা হতো সেই সময়ে। ব্রিটানিকার তথ্য অনুযায়ী, ফ্রিম্যাসনরির কর্মকাণ্ড প্রচলিত অনেক ধর্ম থেকে ভিন্ন—অনেক ক্ষেত্রে বিপরীত।

এসব সংঘের সদস্য কারা? এই প্রশ্নের জবাবও ব্রিটানিকায় রয়েছে। বলা হয়েছে, ফ্রিম্যাসনরিতে বিভিন্ন ধর্মের নানা বিষয় রয়েছে। এটি সরাসরি কোনো ধর্মভিত্তিক সংগঠন নয়। এটি প্রধানত প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের সংঘ। সংঘের সদস্যরা ঈশ্বর–বিশ্বাসী এবং তারা মনে করেন আত্মা অমর।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ নামে তাদের ক্লাব রয়েছে। ১৭৭৫ সালে লন্ডনে এর সদর দপ্তর স্থাপিত হয়। তবে পুরানা পল্টনের এই ভবনটি ‘ইহুদি ক্লাব’ নামেই পরিচিত। এখনও অনেকের কাছে এটি রহস্যজনক! পল্টনের অনেক বাসিন্দার মতে, স্বাধীনতার পর ইহুদি ক্লাবটি অনেকটা পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। সদস্যদের বেশিরভাগই আমেরিকা কিংবা ইসরায়েলে চলে যান।

‘ঢাকাই কথা ও কিস্সা’ গ্রন্থে কাদের মাহমুদ উল্লেখ করেন, ২০১৩ সালে সর্বশেষ হিসাবে দেখা যায়, ঢাকায় দুইশ’রও কম ইহুদি বসবাস করছেন। তাদের অস্তিত্ব সম্পর্কে ঢাকাবাসী খুব একটা জানেন না। তারাও পরিচয় গোপন করে ঢাকায় বসবাস করতে ভালোবাসেন।

ভবনটি এখন ভূমি মন্ত্রণায়লের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৭০ বছর ধরে এই ভবনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিস রয়েছে। ভবনটি জরাজীর্ণ। এই ভবনের জমির পেছনের অংশ দখল করে গড়ে উঠেছে প্রায় ডজনখানেক দোকান।


সূত্র:ডেইলি বাংলাদেশ

0 comments:

Post a Comment