১৯৭৭ সালের কথা। একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজের সূত্রে বাংলাদেশে আসে এক আমেরিকান-সুইডিশ দম্পতি। চাকরির সুবাদে বাংলাদেশই হয় তাদের বসবাসের নতুন ঠিকানা। ধীরে ধীরে পরিবারও বড় হতে থাকে। ১৯৮১ সালে সেই পরিবারেই জন্ম ইয়াকোব থমাসের; বাংলা ভাষাকে ভালোবেসে ভিন্নধারার ফন্ট তৈরি করে বাংলা টাইপোগ্রাফির জগতে যিনি দখল করে আছেন তাৎপর্যপূর্ণ স্থান।
ইয়াকোব থমাসের জন্ম আমেরিকাতে হলেও বেড়ে ওঠা পুরোটাই বাংলাদেশে। তাই বাংলার সংস্কৃতি ও ভাষার প্রতি তার ভালোবাসা জন্মে ছোটবেলাতেই। তবে নিজের নাম উচ্চারণের ক্ষেত্রে নিজ মাতৃভাষা সুইডিশকেই প্রাধান্য দিয়েছেন তিনি। ইয়াকোব থমাসের নাম ইংরেজিতে রূপান্তর করলে লেখ্যরূপ দাঁড়ায় জেকব থমাস। সাধারণত সুইডিশ ভাষায় ইংরেজি অক্ষর 'জে' (J) এর উচ্চারণ 'ইয়' হয়। তাই মায়ের ভাষা অনুসারে 'ইয়াকোব থমাস' হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বেশি।
কিন্তু বাংলায় যার বড় হওয়া, নামের ক্ষেত্রে তো তার ছায়া অবশ্যই থাকবে। ইয়াকোবের ভাষ্যে, সুইডিশ ভাষায় নাম 'ইয়াকোব' হলেও ছোটবেলা থেকে বাংলাদেশে থাকায় বাংলায় নাম দাঁড়িয়েছে 'ইয়াকুব'। নামের পাশাপাশি পরিবার ও সমাজের সাহচর্যে শুদ্ধ বাংলা ভাষায় কথা বলার চর্চাও শুরু হয়েছিলো শৈশবে। ভালোবাসতেন ছবি আঁকতে। আর এই আঁকাআঁকির ঝোঁক তাকে টেনে নিয়ে যায় ফন্ট তৈরির জগতে।
১৫ বছর বয়স পর্যন্ত ইয়াকোব থমাস বাংলাদেশে ছিলেন। মাঝে অবশ্য দক্ষিণ ভারতে পড়াশোনার জন্য গিয়েছিলেন। সেখানকার বোর্ডিং স্কুলে পড়তেন তিনি। ছুটিতে ফিরতেন বাংলাদেশে। মা-বাবার চাকরির সুবাদে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় থাকা এবং ঘোরার সৌভাগ্য তার হয়েছিলো। ইয়াকোব বলেন, 'ছোটবেলায় প্রথমে ঈশ্বরদীতে ৫ বছর ছিলাম। তারপর কুষ্টিয়াতে ৫ বছর এবং সবশেষে ঢাকাতে ২/৩ বছর ছিলাম। ঢাকাতে আমরা ফার্মগেটে থাকতাম।'
দীর্ঘ ১৫ বছর বাংলাদেশে কাটানোর পর এদেশীয় পাট গুটিয়ে পাড়ি জমান আমেরিকাতে। সেখানে গিয়ে ধীরে ধীরে শেখা শুরু করেন বাংলা হরফ। ইয়াকোব বলেন, 'ছোটবেলায় আমি বাংলা বর্ণমালা শিখিনি। আমেরিকাতে চলে যাওয়ার পরপরই শিখতে শুরু করেছি। ফন্ট, ক্যালিগ্রাফি, লেটারিং এর প্রতি আমার বিশেষ ঝোঁক ছিল। ফাইন আর্টসের পাশাপাশি কমার্শিয়াল আর্ট নিয়ে তাই পড়াশোনা করি। তখন দেখি, গ্রাফিক ডিজাইনের মূল উপাদান হলো ছবি এবং ফন্ট। এগুলো আসলে কারা ডিজাইন করে সেটা জানার আগ্রহ তখন জন্মালো। এটি আসলে সৃজনশীলতার অংশ।'
আমেরিকায় গিয়ে গ্রাফিক ডিজাইনের উপর নিতে শুরু করেন প্রাতিষ্ঠানিক পাঠ। পরবর্তী সময়ে জর্জিয়ার সাভানাহ কলেজ অফ আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন থেকে গ্রাফিক ডিজাইন বিষয়ে সম্পন্ন করেন স্নাতকোত্তর। পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে ২০০৪ সালে পুনরায় ফিরে আসেন বাংলাদেশে। এখানে এসে যুক্ত হন বিভিন্ন এনজিও'র সাথে।
বাংলাদেশে কাজ করতে গিয়ে সর্বপ্রথম ফন্টের বিষয়টি নজরে পড়ে ইয়াকোব থমাসের। সুতন্বী ফন্ট সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হতো তখন। তিনি বলেন, 'কাজ করতে গিয়ে আমি দেখলাম বাংলায় অল্প কয়েকটা ফন্ট ছিল। মূলত একটি ফন্টই সবাই বেশি ব্যবহার করতো। ডিসপ্লে ফন্ট কয়েকটা ছিল, যেগুলো আবার ভালো মানের না। ল্যাটিন স্ক্রিপ্টের ক্ষেত্রে দেখতাম ৬০ হাজারের বেশি ফন্ট আছে। সেখানে নতুন কিছু করার সুযোগ ছিল না। কিন্তু বাংলা ভাষার জন্য অনেককিছু করা যেতে পারে।'
মানের ঘাটতি এবং অনুকরণপ্রিয়তার বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হওয়ার পর ইয়াকোবের কাজের প্রতি আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। তিনি বলেন, 'বাংলায় সুতন্বী ফন্ট কে ডিজাইন করেছে তা আমার জানার খুব কৌতূহল ছিল। সব জায়গায় বিভিন্ন নামে একই রকম ফন্ট দেখতে পাওয়া যেত। তবে লেটারপ্রেস ফাউন্ড্রিতে যেসব পুরোনো বই আছে, সেগুলোর ফন্ট অনেকটা ভিন্ন।'
গ্রাফিক ডিজাইন ও ফন্টের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ভাষার প্রতি আকর্ষণও গড়ে উঠে ইয়াকোবের। বর্তমানে বলতে না পারলেও অনায়াসেই পড়তে পারেন ৭ থেকে ৮টি ভাষা। ভাষার প্রতি ভালোবাসাই ফন্টের দিকে ঝুঁকতে সাহায্য করেছে বলে মনে করেন তিনি। আরবি ক্যালিগ্রাফির প্রতি ভালো লাগা থেকে ইয়াকোব আরবি ভাষাও শিখেছেন।
অনুপ্রেরণার উৎস যখন হাতের লেখা-ব্যানার-দেয়াল লিখন!
ইয়াকোবের হাতের লেখা দেখে ফন্ট তৈরির নেশা ছিল। তাই পথেঘাটে ছড়িয়ে থাকা সাইনবোর্ড কিংবা ব্যানার কোনোকিছুই নজর এড়াতো না। নিয়মিত সেগুলো পড়তেন এবং চিন্তা করতেন কীভাবে এগুলোকে ফন্টে রূপান্তর করা যায়।
প্রতিটি ফন্ট কীভাবে একে অপরের থেকে ভিন্ন হয় এবং নতুনত্ব কীভাবে আসে তা জানতে চাইলাম ইয়াকোব থমাসের কাছে। উত্তরে তিনি হাতের লেখা নিয়মিত চর্চা এবং কলমের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। টাইপোগ্রাফি বা ক্যালিগ্রাফি চর্চার কিছু কলম রয়েছে। পাইলট প্যারালাল কলম এর মধ্যে অন্যতম। কলমের 'নিব'-এর মধ্যেই দেখা যায় মূল ভিন্নতা। কিছু কলমের মোটা নিব থাকে, আবার কিছু কলমের থাকে চিকন। কলম অনুসারে লেখাও ভিন্নরকম হয়।
ইয়াকোব বলেন, 'কলমের কারণে আসলে ফলাফল ভিন্ন হয়। নতুন ফন্ট তৈরির অনুপ্রেরণা হাতের লেখা, দেয়াল লিখন, সিএনজির পেছনের লেখা থেকে পাই। আবার ল্যাটিন স্ক্রিপ্টের বিভিন্ন ফন্ট থেকেও অনুপ্রেরণা পাই।'
বাম হাতে কলম ধরে কাগজে-কলমে প্রাথমিকভাবে ফন্ট তৈরির কাজ করেন ইয়াকোব। প্রথমে কাগজে প্রতিটি অক্ষর অসংখ্যবার লিখে ফন্টের ধরন কেমন হবে যাচাই করে নেন। এরপর গাণিতিক পরিভাষায় লেখার জ্যামিতিক মাত্রা নিখুঁতভাবে নির্ধারণ করেন। ফন্টের কোন অংশ কতটুকু বাঁকা থাকবে, ধারের অংশ কতটুকু সুক্ষ্ম থাকবে কিংবা কতটুকু সোজা থাকবে তা গাণিতিকভাবেই ঠিক করা হয়। আর সবটুকুই নির্ভর করে কলম এবং হাতের ক্যালিগ্রাফির উপর। কলমের ভিন্নতা ফন্টেও ভিন্নতা এনে দেয়।
টাইপোগ্রাফি বা ক্যালিগ্রাফির জন্য প্রয়োজনীয় কলম কোন জায়গা থেকে সংগ্রহ করেছে জানতে চাইলে ইয়াকোব বলেন, 'পাইলট প্যারালাল কলম আমি আমেরিকা থেকে নিয়ে এসেছি। আরবি ক্যালিগ্রাফির জন্য একটু চ্যাপ্টা আকৃতির কাঠের কলম ব্যবহার করি। এগুলো সংগ্রহের জন্য আমাকে ইস্তাম্বুল বাজারে যেতে হয়েছে।'
২০১৫ সালে চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর হাতের লেখার উপর ভিত্তি করে ফন্ট তৈরির উদ্যোগ নেন তিনি। কাইয়ুম চৌধুরীর হাতের লেখার সংকলন অনেকবছর ধরেই পর্যবেক্ষণ করেছেন ইয়াকোব থমাস। পরবর্তী সময়ে হাতের লেখা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে এবং শ্রদ্ধা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে তৈরি করেন কাইয়ুম ফন্ট।
কাইয়ুম ফন্ট ছাড়াও সূর্য, প্রসারণ, বরেন্দ্র, প্রকৃতি, সূর্যোদয়, সফর, বিপি ভূত, কমিক বেঙ্গলি, ফিগিন্স পিকাসহ বিভিন্ন ফন্ট তৈরি করেছেন। এই ফন্টগুলোর নামের পেছনেও ভিন্ন ভিন্ন গল্প রয়েছে। ধরা যাক, বরেন্দ্র ফন্টের কথা। আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে ফেরার পর ইয়াকোব প্রায় ১২ বছর রাজশাহীতে ছিলেন। তাই এই অঞ্চলের প্রতি ভালোবাসা থেকে ফন্টের নাম রাখেন বরেন্দ্র ফন্ট। আবার বিপি ভূত ফন্টটি অনেকটা ভূতুড়ে আদলে তৈরি। ইংরেজিতে যদিও 'স্পুকি' ফন্ট ঘরানার অনেকরকমের ফন্ট রয়েছে। তবে বাংলায় এমন ফন্টের সংখ্যা তুলনামূলক কম।
বিভিন্ন আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং জাতীয় দৈনিক পত্রিকার জন্য ইয়াকোব ফন্ট প্রস্তুত করেছেন। এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের বিলুপ্ত একটি সেমিটিক ভাষা ইউগারেটিকের উপরও ফন্ট তৈরি করেছেন। ফন্টের জগতে প্রবেশের পরেও অধ্যয়ন থেকে নিজেকে দূরে রাখেননি। আধুনিক টাইপের ধরন নিয়ে জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্যে ২০১৬ সালে লন্ডনে টাইপ ডিজাইনের উপর একটি কোর্স করেন।
পাইরেসি এখন মূল সমস্যা
ইয়াকোব থমাসের মতে, বাংলাদেশে ফন্ট নিয়ে কাজ করার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নতুন কিছু তৈরির পর তা হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়া। এর অবশ্য ভালো খারাপ দুটি দিকই উল্লেখ করেন পশ্চিমের এই নকশাকার। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে ফন্ট নিয়ে কাজ করা একটি কঠিন বিষয়। হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়ার ভালো দিক হচ্ছে, নানান জায়গায় ফন্ট ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। অপরদিকে যারা টাইপ ডিজাইনকে জীবিকা হিসেবে নিতে চায় তাদের কাজের সুযোগ হারিয়ে যায়।'
আমি বাংলাদেশে সাক্ষাৎ করেছি কয়েকজনের সাথে যারা টাইপ ডিজাইনকে পেশা হিসেবে নিতে পারছে না। 'রবি' ফন্টের উদ্ভাবক নাজিমউদদৌলা মিলন, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইন থেকে স্নাতক হয়েছেন। এই ফন্টটি তৈরি করার পর তিনি টাইপ ডিজাইনিং বাদ দিয়েছেন। কারণ একটি কাজ পাওয়ার পর আর কোনো কাজ আসেনি; কেউ ফন্ট কিনতে চায় না। বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইরেসি হয়।'
টাইপ ডিজাইন থেকে আয় কম হওয়ার কারণে অনেকে এই জায়গা থেকে সরে যাচ্ছে বলেও মনে করেন ইয়াকোব। তার মতে, টাইপ ডিজাইনের পরিবর্তে ইউআই/ইউএক্স ডিজাইনের ক্ষেত্রে ডিজাইনাররা বেশি ঝুঁকছে।
সপরিবারে থাকেন বারিধারায়
২০১৭ সাল থেকে বেঙ্গল ক্রিয়েটিভ মিডিয়াতে কর্মরত আছেন ইয়াকোব থমাস। তার তৈরিকৃত ফন্টের সংরক্ষাণাগার হিসেবে 'বাংলা টাইপ ফাউন্ড্রি' নামক একটি ওয়েবসাইটও তৈরি করেছেন। ২০১৮ সালে 'বাংলা টাইপ ফাউন্ড্রি' ব্র্যান্ড হিসেবে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে বারিধারা ডিওএইচএসে পরিবার নিয়ে থাকেন তিনি।
পারিবারিক জীবনে স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে ইয়াকোব থমাসের। বড় সন্তান বর্তমানে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে ভারতে থাকলেও ইয়াকোব ঢাকায় বাকি দুই সন্তান এবং স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। তার স্ত্রী আমেরিকান বংশোদ্ভুত হলেও বেড়ে উঠেছেন থাইল্যান্ডে। স্ত্রীর প্রসঙ্গে ইয়াকোব বলেন, 'আমরা ইন্ডিয়াতে একই স্কুলে পড়াশোনা করতাম। আমাদের সম্পর্কের শুরু সেখানেই। সে খুব ভালো বাংলা বলতে পারে।'
টাইপ ডিজাইনের বিষয়টি ছেলেমেয়েদের মধ্যেও ছড়িয়ে দিয়েছেন পশ্চিমের এই নকশাকার। তিনি বলেন, 'মাঝেমধ্যে আমার কাজের অংশ তাদেরকে শিখিয়েছি। আমার বড় ছেলে আর্ট ভালোই পারে। তবে সে এখন আর্ট বাদ দিয়ে কেমিস্ট্রি নিয়ে পড়ছে।'
স্বপ্ন দেখেন বাংলায় বই লেখার!
অনলাইনে ফন্ট বিক্রির প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার স্বপ্ন দেখেন ইয়াকোব। যেখানে পাইরেসির সুযোগ ছাড়া বিভিন্ন ফন্টের নকশাকাররা তাদের ফন্ট বিক্রি করতে পারবে। তাতে নতুন নতুন ফন্টও আসবে এবং অল্প দামে হলেও মানুষের ফন্ট কেনার অভ্যাস হবে বলে মনে করেন তিনি।
এছাড়াও ইয়াকোবের ইচ্ছা ভবিষ্যতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে টাইপ ডিজাইনকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার। তিনি বলেন, '৫ বছর আমি অনেকটা একাই কাজ করেছি। এখন আমি অন্যদের প্রশিক্ষণ দিতে চাচ্ছি। আমার কাজ শেখাতে খুব ভালো লাগে।'
বাংলা ভাষায় টাইপ ডিজাইন নিয়ে তেমন কোনো বই না থাকায় আক্ষেপ রয়েছে ইয়াকোব থমাসের। তাই বাংলায় বই লেখার স্বপ্নের কথাও উল্লেখ করেন এক ফাঁকে।
তিনি বলেন, 'আমার কাছে ল্যাটিন স্ক্রিপ্টের ৪ থেকে ৫টি বই আছে। কিন্তু বাংলায় কোনো বই খুঁজে পাইনি। বাংলার ফন্টের ব্যাপারগুলো ল্যাটিন স্ক্রিপ্টে উল্লেখ নেই। তাই এটা নিয়ে আমি একটা পাঠ্যবই লিখতে চাই।'
সুস্মিতা চক্রবর্তী মিশু | দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
0 comments:
Post a Comment