Friday, October 28, 2011

রাজেন্দ্রবাবুর জমিদারবাড়ি, সুনামগঞ্জ, সিলেট

1 comments
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত 'পাইলগাঁও' গ্রাম। স্থানীয় লোকমুখে শোনা বাবুর বাড়ির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস থেকে জানা যায় এই বাড়িটির বয়স আনুমানিক ২০০ বছরেরও বেশি। তৎকালীন প্রতাপশালী জমিদার ব্রজেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী এ বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে বাড়িটি '’রাজেন্দ্রবাবুর বাড়ি’ নামে'ই পরিচিতি লাভ করে এবং সংক্ষিপ্তভাবে '’বাবুর বাড়ি’' নামেই এখন এটি স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক পরিচিত।













বৃহত্তর সিলেট বিভাগের হলদিপুর, পাইলগাঁও, জগন্নাথপুর এবং বানিয়াচং এলাকা নিয়ে রাজেন্দ্রবাবুর বিশাল জমিদারী ছিল। এই বাড়ি থেকেই তিনি জমিদারী পরিচালনা করতেন। মোট বাড়ির সংখ্যা এখানে তিনটি। প্রথমটি বৈঠকখানা, তারপরেই কাচারীঘর এবং একদম ভিতরে অন্দরমহল। অন্দরমহলের পাশেই একটি জেলখানা রয়েছে। পুকুর রয়েছে দু’টি। একটি বৈঠকখানার বড়বাড়িটির সামনেই। আরেকটি ভিতরে অন্দরমহলের পিছনদিকে। অন্দরমহলের পাশেই রয়েছে রান্না করার জন্যে সুবিশাল এক রান্নাঘর। বৈঠকখানার বড়বাড়িটির সামনে রয়েছে একটি মন্দির। অযত্ন আর অবহেলায় মন্দিরটি ঘন গাছপালায় ঢেকে গিয়েছে। এখানে এখন বড় বড় সাপ এবং অন্যান্য সরীসৃপের বসবাস।

লোকমুখে শোনা যায়, রাজেন্দ্রবাবুর একটি মাত্র মেয়ে ছিল যিনি অজানা রোগে ভুগে মারা যান। তারপর দেশবিভাগের সময় বাবু এই জমিদারী ছেড়ে দিয়ে একেবারের জন্যে ভারতে চলে যান। বর্তমানে সিলেটপ্রবাসী জনাব আজমল হোসেন এই বাড়ি এবং বাড়ি সংলগ্ন জমি-জমা সরকার থেকে লীজ নিয়েছেন। অন্দরমহলের বাড়িটিতে বর্তমানে তিনটি পরিবার বাস করছে যাদের নিজস্ব কোন বাড়িঘর নেই।
পাইলগাঁও গ্রামে জমিদার রাজেন্দ্রবাবু '’পাইলগাঁও ব্রজনাথ উচ্চবিদ্যালয়'’ নামে নিজের নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। শোনা যায়, তাঁর স্ত্রী রাণীর নামে রাণীগঞ্জ বাজারের নামকরণ হয়েছে। বর্ষায় হাওড় এ অঞ্চলে চলাচলের জন্য তাঁর নিজস্ব পানশী নৌকা ছিল। আর শুকনার সময় তিনি ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করতেন।
কিভাবে বাবুর বাড়িতে যাওয়া যাবে?
ঢাকা থেকে গ্রীনলাইনের এসি বাসে রাত সোয়া বারোটায় উঠলে ভোর ৬ টায় সিলেটের হুমায়ূনরশিদ চত্ত্বরে নামিয়ে দেবে। সিলেটের কীন ব্রিজের (পুলের মুখ) ওপার থেকে জগন্নাথপুরগামী সিএনজিতে ৫ জনের শেয়ারে জনপ্রতি ৮০ টাকা করে সরাসরি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পৌরপয়েন্টে পৌঁছতে প্রায় ২ ঘন্টা লাগবে। আর রিজার্ভ সিএনজি ৪০০ টাকার কমে যাবেনা। জগন্নাথপুর বাসকাউন্টার থেকেও জনপ্রতি ৪৫ টাকা করে জগন্নাথপুর উপজেলায় যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে প্রায় আড়াইঘন্টা সময় লাগবে। জগন্নাথপুর পৌঁছানোর পর রিক্সাযোগে পৌরপয়েন্টে পৌঁছাতে হবে।

পৌর পয়েন্ট থেকে রানীগঞ্জের রাস্তায় রিজার্ভ (১২৫ টাকা) বা শেয়ার সিএনজিতে (২০ টাকা জনপ্রতি) হাবিবপুর ফেরিঘাট পার হয়ে শিবগঞ্জ বাজারে পৌঁছাতে প্রায় ৪০ মিনিট লাগবে। সেখান থেকে ডিঙ্গি নৌকায় ইটাখোলা নদীতে ঘন্টাখানেক যাবার পর একটা ঘাটে মাঝি নামিয়ে দেবে যেখান থেকে আরও প্রায় ৪০ মিনিট পথ হেঁটে তারপর পাইলগাঁও গ্রামে পৌঁছাতে হবে। ফেরার সময়ও একই রাস্তা। হাতের ডানপাশে পড়বে কুশিয়ারা নদী। তবে এবার ঘাটে ডিঙ্গি নৌকা না পাওয়া গেলে প্রায় একঘন্টার মতো হেঁটে শিবগঞ্জ বাজারে আসতে হবে। সেখান থেকে শেয়ার অথবা রিজার্ভ সিএনজিতে জগন্নাথপুর।

লিখেছেন: পয়গম্বর

Monday, October 10, 2011

কিডনি ভালো রাখাতে

0 comments
কিডনির সমস্যা অনেক বেশি যন্ত্রণাদায়ক। সমস্যাটির প্রথম সমাধান হলো প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া। এরপরে আসে নানারকম সতর্কতার ব্যাপার। সেই সতর্কতাগুলো তুলে ধরা হলো-

++ ডায়রিয়া, বমি, রক্তআমাশয়, পানিশূন্যতায় অতিদ্রুত চিকিত্সকের কাছে যেতে হবে—এগুলোর মাধ্যমে কিডনি বিকল হতে পারে।

++ চিকিত্সকের পরামর্শ ব্যতীত অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথানাশকসহ যেকোনো ওষুধ গ্রহণে সতর্কতা অবলম্বন করুন।

++ মাঝে মাঝে কিডনির কার্যকারিতা পরীক্ষা করুন।

++ পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

++ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

++ ধূমপান বর্জন করুন।

++ ডায়াবেটিক আক্রান্তরা নিয়মিত শর্করা ও রক্তের অ্যালবুমিন পরীক্ষা করুন।

++ উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের ক্ষেত্রে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।

++ প্রস্রাবের ইনফেকশন হলে দ্রুত চিকিত্সকের পরামর্শ নিন।

++ শিশুদের গলাব্যথা, খোস-পাঁচড়ার দ্রুত চিকিত্সা করানো উচিত। কারণ এগুলো থেকে কিডনি প্রদাহ বা নেফ্রাইটিস রোগ দেখা দিতে পারে।

মাউথওয়াশ

0 comments
আমরা অনেকে ঘুম থেকে উঠার পর ব্রাশ না করে মাউথওয়াশ ব্যবহার করি। এখন প্রশ্ন হলো মাউথ ওয়াশ কী? মাউথ ওয়াশ হলো ওষুধসমৃদ্ধ একটি অ্যান্টিসেপটিক দ্রবণ, যা মুখে নিয়ে কুলি করার জন্য ব্যবহার করা হয়। আমেরিকান ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এফডিএ কর্তৃক মাউথওয়াশকে প্রধানত তিন ভাগে শ্রেণীবিন্যাস করা হয়েছে, কসমেটিক মাউথওয়াশ এবং রাপিউটিক মাউথওয়াশ। আসুন জেনে নিই এর ব্যবহারগুলো।
মাউথওয়াশের উপাদানগুলো :বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুত মাউথওয়াশে যেসব উপাদান ব্যবহূত হয়ে থাকে সেগুলো হলো—থাইমল, ইউক্যালিপ্টল, হেক্সিটিডিন, মিথাইল স্যালিসাইলেট, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, ক্লোরোহেক্সিডিন গ্লুকোনেট, ফ্লোরাইড, পোভিডন আয়োডিন ইত্যাদি।

মাউথওয়াশ কীভাবে ব্যবহার করবেন?

++ মাউথওয়াশ ব্যবহারের আগে দাঁত ব্রাশ এবং ডেন্টাল ফ্লসিং করে নেওয়া ভালো।

++ ২ চামচ পরিমাণ সমপরিমাণ পানির সঙ্গে মিশিয়ে অথবা চিকিত্সক কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে।

++ মাউথওয়াশ ৩০ সেকেন্ডের জন্য মুখের অভ্যন্তরে রেখে কুলি করতে হবে। তবে ফ্লোরাইডযুক্ত মাউথওয়াশের ক্ষেত্রে ১ মিনিট কুলি করতে হবে।

++ মাউথওয়াশ ব্যবহারের ৩০ মিনিটের মধ্যে কিছু খাওয়া বা ধূমপান করা ঠিক নয়। অন্যথায় মাউথওয়াশের কার্যকারিতা অনেকাংশে হ্রাস পায় অথবা নষ্ট হয়ে যায়।

অতিরিক্ত বা যথাযথ মাউথওয়াশ ব্যবহার না করলে যেসব সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে সেগুলো হলো—

++ মুখের স্বাদের পরিবর্তন আসতে পারে। মুখের স্বাদের এ পরিবর্তন ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার জন্য হতে পারে আবার ক্ষেত্রবিশেষে ১ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
++ দাঁতে দাগ পড়তে পারে।
++ মুখের অভ্যন্তরে শুষ্কভাব বিরাজ করতে পারে।
++ অতিরিক্ত ব্যবহারে মুখে ঘা বা আলসার দেখা যেতে পারে।

পায়ের যত্ন

0 comments
ভাবুন তো আপনার পুরো শরীর যখন পায়ের উপর দণ্ডায়মান তখন আপনার পায়ের যত্নটা ঠিক কতটুকু নেওয়া উচিত। মূলত পায়ের ওপর ভর দিয়েই আমাদের দৈনন্দিনের পথচলা। তাই সারা বছরই দু’খানি পায়ের চাই বাড়তি পরিচর্যা। গ্রীষ্মের শেষের এ সময়টায় প্রকৃতিতে ধুলাবালির যেমন রাজত্ব, তেমনি হঠাত্ আকাশ ভেঙে নামা বৃষ্টির পানি আর কাদারও সমান উত্পাত। তাই এ সময় পা সুন্দর রাখতে কর্মব্যস্ততার ফাঁকে বের করে নিন খানিকটা সময়।
++ যদি সময় থাকে, কুসুম গরম পানিতে এক চিমটি লবণ ও শ্যাম্পু দিয়ে ১০ মিনিট পা চুবিয়ে রেখে ঝামা পাথর দিয়ে পা দু’খানি ঘষে নিন।

++ বাইরে যাওয়ার আগে রোদের প্রকোপ থেকে পা বাঁচাতে সানস্ক্রিন লোশন লাগিয়ে নিন।
++ ফিতাওয়ালা জুতা পরতে পারেন। ফিতার ফাঁকে ফাঁকে বাতাস চলাচল করতে পারে। এতে পায়ে ঘাম হবে না।
++ পা ভেজা রাখবেন না। ধোয়ার পর পা মুছে তাতে ময়েশ্চারাইজার লাগান।
++ যাদের পায়ে ঘাম হয়, তারা একেবারে খোলা জুতা বেছে নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে পায়ে ধুলাবালু যথাসম্ভব কম লাগানোর চেষ্টা করুন।
++ পায়ে ধুলাবালু বা কাদা-পানি লাগলে যত দ্রুত সম্ভব পা পরিষ্কার করুন।
++ বাসার মেঝে পরিষ্কার রাখুন। বাসায় খালি পায়ে হাঁটা ভালো। এতে শরীর তাপ নিঃসরণের সুযোগ পায়।
++ সারা দিনের কাজ শেষে বাসায় ফিরে হালকা কুসুম গরম পানিতে কিছুক্ষণ পা ডুবিয়ে রাখতে পারেন।
++ অফিসে পৌঁছে একটি আরামদায়ক স্যান্ডেল পরে নিতে পারেন।

++ পা ফাটার প্রবণতা যাদের, তারা ঝামা পাথর দিয়ে শুষ্ক চামড়া ঘষে তুলে ভ্যাসলিন মেখে নিন রাতে।
++ রোদে পোড়া দাগ যদি পায়ে পড়েই যায়, তবে কাগজি লেবুর খোসা, রসসহ ঘষলে উপকার পাবেন।
++ পা পরিষ্কারের সময় নখের ময়লা তুলে ফেলুন ভালোভাবে।
++ যাদের পা ঘামে, তারা ধনেপাতা ও পুদিনা পাতার স্যুপ খান। এতে শরীর ঠান্ডা থাকবে, ঘামও কম হবে।
++ সানস্ক্রিন লোশনে অ্যালার্জি থাকলে তিলের তেল লাগাতে পারেন এর পরিবর্তে।
++ কম মসলাযুক্ত খাবার খান। তবে হলুদ ও জিরা রাখতে পারেন খাবারের তালিকায়।
++ সপ্তাহে এক দিন পায়ে একটা স্ক্রাব লাগান।
++ মসুর ডাল, কাঁচা হলুদ, গাজরের রস, দুধ ও এক চামচ ময়দা একসঙ্গে মিশিয়ে পায়ে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ঘষে ধুয়ে ফেলুন।

++ পায়ের জুতা যথাসম্ভব সামনের দিকে বদ্ধ রাখুন। পেছন দিকে খোলা রাখুন, যাতে বাতাস ঢুকতে পারে।
++ মাসে একবার পার্লারে গিয়ে পেডিকিউর করে নেওয়া ভালো। এই তো! এবার জুতার আড়ালে পা নয়, বরং আপনার সুন্দর দু’খানি পায়ের আড়ালে সুন্দর জুতা।

লেখক: তামান্না শারমিন

ব্যাংক

0 comments
Bank শব্দটি এসেছে ইতালিয়ান ভাষা থেকে। তবে তখন শব্দটির মানে ছিল বর্তমানে প্রচলিত অর্থ থেকে ভিন্ন। তখন Bank মানে বুঝানো হতো 'moneychanger' এর টেবিলকে। মধ্যযুগীয় ইতালির প্রত্যেক শহরে প্রচলিত ছিল আলাদা আলাদা মুদ্রা। যেমন মিলান থেকে একজন মানুষ ফ্লোরেন্সে এলে তাকে প্রথমে ফ্লোরেন্সের মুদ্রা কিনতে হতো।
আর moneychanger-এর কাছে নানা শহরের মুদ্রা পাওয়া যেত। পৃথিবীর টাকা-কড়ির ইতিহাসে moneychanger এবং তার ...টেবিলটার গুরুত্ব ছিল অনেক। কারণ পরবর্তী সময়ে এরা সুদে টাকা ধার দিত। অনেক ক্ষেত্রে তারা নিজেদের টাকা বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ করত। আধুনিক যুগের Bank শব্দের পূর্ব নাম হলো moneychanger-এর টেবিল, কথাটি অবিশ্বাস্য হলেও একেবারেই সত্য।

Monday, October 3, 2011

সিলজান হ্রদ

1 comments
সিলজান। বড্ড রূপসী। একটি হ্রদ। এটি সুইডেনের ষষ্ঠ বৃহত্তম হ্রদ। হ্রদ এবং হৃদ এলাকা একটি জনপ্রিয় পর্যটক-আকর্ষক স্থান। শুধু সুইডেনেই নয়, সারা ইউরোপেই এর নৈসর্গিক শোভার খ্যাতি।
মধ্য সুইডেনের ডালারনায় হ্রদটির অবস্থন। হ্রদের চিত্রময়তায় ভরা প্রকৃতি যেন হাতছানি দেয়। সূর্যাস্তের সময় মনে হয়, সূর্যটি যেন এর হলদে আভার সবটুকু নিয়ে হ্রদে নামছে, গলে পড়ছে এর সবটুকু হলুদাভ রূপমাধুরী হ্রদ-এলাকার সবটুকুজুড়ে।

গ্রীষ্মকালে হ্রদের ওপরের নীলাকাশে ঘুরে বেড়ায় উজ্জ্বল সাদাটে মেঘমালা। এতে হঠাৎ দেখায় অনেকের মনে হতে পারে কোনো রূপসী পরী যেন উড়ে যাচ্ছে দূরে, বহু দূরের দেশে। হ্রদের সুশ্যামল ও স্বচ্ছ সবুজ জলের মায়াবী টান দৃশ্যকে দান করে পরিপূর্ণতা। হেমন্তেও হ্রদের রূপ থাকে বর্ণিল ও অমলিন।
হ্রদের ধারে হেঁটে বেড়িয়ে কিংবা নৌকায় ভ্রমণ করে প্রকৃতির সুধা পান হতে পারে কারো জীবনের সবচেয়ে আনন্দঘন অভিজ্ঞতা। এতে মন ভরে, চোখ জুড়ায়। আহ! হ্রদ তুমি!
সিলজানের আয়তন প্রায় ৩৫৪ বর্গকিলোমিটার। এর সর্বোচ্চ গভীরতা ১২০ মিটার। সাগরসমতল থেকে হ্রদের উচ্চতা ১৬১ মিটার। হ্রদের তীরের সবচেয়ে বড় শহর মোরা।

-মুহাম্মদ রোকনুদ্দৌলাহ্

ক্যাডমিয়াম

0 comments
ক্যাডমিয়াম ও রূপার সঙ্কর রূপার চেয়েও উজ্জ্বল সাদা হয়। এটি খুব ভালো পালিশ করা যায়। তাই রূপার আধার ও গহনা তৈরি করা হয় এই সঙ্কর দিয়ে। সোনা, রূপা বা তামার সাথে ক্যাডমিয়াম মিশিয়ে অলঙ্কার এবং মূল্যবান শৌখিন দ্রব্য তৈরি করা যায়। টিন, দস্তা ও ক্যাডমিয়ামের সঙ্কর কাজে লাগে অ্যালুমিনিয়াম ও ব্রোঞ্জ রাং ঝালাইয়ের কাজে। হলুদ রঙ তৈরি করতে ক্যাডমিয়াম সালফাইড ব্যবহার করা হয়।

চিনি- ১৪২ রোগের কারণ

0 comments
চিনি একটি অপ্রাকৃতিক তথা রাসায়নিক উপাদান। শিল্প কারখানায় রিফাইনিং পদ্ধতিতে আখের রস থেকে ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন, এনজাইম এবং অন্যান্য উপকারী পুষ্টি উপাদান দূর করে চিনি (সুক্রোজ) তৈরি করা হয়। চিনি তৈরির প্রক্রিয়া অনেকটা হেরোইন তৈরির মতো। হেরোইন তৈরির ক্ষেত্রে প্রথমে পপি গাছের বীজ থেকে অপিয়াম আলাদা করা হয়। তারপর অপিয়ামকে রিফাইন করে মরফিন এবং মরফিনকে আবার রিফাইন করে তৈরি হয় হেরোইন। ঠিক একইভাবে আখ বা বিট থেকে রস বের করে তা রিফাইন করে তৈরি হয় মোলাসেস। তারপর একে রিফাইন করে তৈরি হয় ব্রাউন সুগার এবং সবশেষে রিফাইন করে সাদা স্বচ্ছ চিনি (C12H22O) তৈরি হয়। বিভিন্ন গবেষণায় চিনিকে বহু রোগের একটি অন্যতম কারণ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের গবেষণা মতে, চিনি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করা ছাড়াও দেহের খনিজ লবণের ভারসাম্য নষ্ট করে, বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার ঝুঁকি বাড়ায়, দৃষ্টিশক্তি কমায়, এসিডিটি তৈরি করে, অকালে বার্ধক্য আনে। শুধু তা-ই নয়, এজমা, পিত্তপাথর, লিভার টিউমার, অশ্ব, দন্ত, এলার্জি, চোখের ছানি, মাইগ্রেন, স্মৃতিলোপ, গ্যাস্ট্রিক, আর্থটিটিস, কোষ্ঠকাঠিন্যসহ ১৪২টি রোগের অন্যতম কারণ হিসেবে শনাক্ত হয়েছে চিনি। চিনির ক্ষতিকর প্রভাবগুলো খুব অল্প সময়ে চোখে পড়ে না। তাই সহজে এর ক্ষতি উপলব্ধিতে আসে না। আমাদের খাদ্য তালিকায় যে শর্করা থাকে তাতে যে পরিমাণ চিনি বিদ্যমান থাকে তা দেহের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি। প্রথমে এই চিনি গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয় এবং পরে দেহে শক্তি উৎপাদন করে। যখন দেহে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি চিনি গ্রহণ করা হয় তখন তা দেহের জন্য উপকারী না হয়ে বরং ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আইসক্রিম, কেক, পেস্ট্রি, কার্বোনেটেড ড্রিংকস এবং অন্যান্য সফট ড্রিংকস, এনার্জি ড্রিংকস এবং প্রক্রিয়াজাত বিভিন্ন খাবারে অতিমাত্রায় চিনি থাকে। আমরা রোগের জন্য সব সময় ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং অন্যান্য প্যাথোজেনকে দায়ী করি এবং চিনিকে করি না। কারণ চিনির প্রভাব দ্রুত আমাদের শরীরে পড়ে না। কেস স্টাডিতে দেখা গেছে, অনেক ক্যান্সার রোগীর অবস্থা উন্নত হয় শুধু ক্যান্সার ফুয়েল গ্লুকোজের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে ক্যান্সার বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে ধীর করা সম্ভব। ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডায়েট, ব্যায়াম, সাপ্লিমেন্ট, মেডিকেশন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করে ব্লাড গ্লুকোজ লেভেল নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মেডিসিনের মহৎ ব্যক্তি জার্মান অটো ওয়ারবার্গ ১৯৩১ সালে প্রথম আবিষ্কার করেন, স্বাস্থ্যকর কোষ বা হেলথি সেলের চেয়ে গঠনগতভাবে ক্যান্সার কোষের বিপাকীয় শক্তি আলাদা। তার থিসিসের মূল কথা ম্যালিগন্যান্ট টিউমার অবায়বীয় গ্লাইকোলাইসিস পদ্ধতিতে দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এ পদ্ধতিতে ক্যান্সার কোষগুলো জ্বালানি হিসেবে গ্লুকোজ ব্যবহার করে উপজাত হিসেবে যে ল্যাকটিক এসিড তৈরি করে তা স্বাভাবিক কোষে হয় না।


ডা. আলমগীর মতি বিশিষ্ট হারবাল গবেষক ও চিকিৎসক

অ্যালকোহলে যত ক্ষতি

0 comments
ধর্মীয় বা সামাজিক বিধিবিধানের বাইরেও স্বাস্থ্যের ওপর মদ বা অন্য অ্যালকোহলসমৃদ্ধ পানীয়ের ক্ষতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। বেশি অ্যালকোহল পান করলে হ্যাংওভার হয়। শরীর দুর্বল লাগে। চেহারা-সুরতেও পড়ে বাজে ছাপ। তবে এটা কেবল অ্যালকোহলপানের পরের দিনের সকালের অবস্থা।
কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে শরীরের ওপর এর কী প্রভাব পড়ে? সাম্প্রতিক কিছু গবেষণার ফল বলছে, শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের বেশ ক্ষতি করে অ্যালকোহল। প্রাণঘাতী ব্যাধি ক্যানসারের বড় কারণ এটি। এ ছাড়া প্রজননক্ষমতা হ্রাস, জন্মগত ত্রুটি ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাসসহ বহু ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে অ্যালকোহল।

অতিরিক্ত অ্যালকোহলপানে দীর্ঘ মেয়াদে স্তন ক্যানসার, মুখের ক্যানসার, হূদেরাগ, স্ট্রোক ও যকৃতের (লিভার) সিরোসিস হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। অ্যালকোহল ও যকৃতের সমস্যার ব্যাপারটি কমবেশি অনেকেই জানেন। বিজ্ঞানীরা শরীরের অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ওপরও এর প্রভাব নিয়ে অনেক গবেষণা করছেন।

ক্যানসার রিসার্চ ইউকে নামের যুক্তরাজ্যের একটি প্রতিষ্ঠান এ বছর তাদের একটি গবেষণার ফল চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী বিএমজেতে প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, অ্যালকোহলের কারণে যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর ১৩ হাজার মানুষের ক্যানসার হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দিনে প্রতি ১০ গ্রাম বাড়তি অ্যালকোহলের জন্য স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি ৭ থেকে ১২ শতাংশ বাড়ে। অন্ত্র ক্যানসারের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, অ্যালকোহল পান সপ্তাহে ১০০ গ্রাম বাড়ালে এ রোগের ঝুঁকি ১৯ শতাংশ বাড়বে।

মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের গবেষক কে জি প্যাটেল বলেন, অ্যালকোহল ডিএনএকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তিনি বলেন, যে পর্যন্ত শরীরের ডিএনএতে পরিবর্তন না ঘটে, সে পর্যন্ত কারও ক্যানসার হবে না। মদ্যপান করলে অ্যালকোহল শরীরে ঢুকে অ্যাসিটালডিহাইডে পরিণত হয়। এটি একটি বিষাক্ত উপাদান এবং তা ডিএনএকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে শরীরকে ক্যানসারের পথে ঠেলে দেয়।

ইমিউনোলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যালকোহল শরীরের ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, বাড়তি অ্যালকোহলপানে মানসিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে স্মৃতিশক্তি। কমে যেতে পারে প্রজননক্ষমতা। গর্ভাবস্থায় কোনো নারী মাত্র একবার অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করলেও তাঁর সন্তানের জিনের কাঠামোয় স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। এমনকি অল্প মাত্রায় পান করলেও নারীদের সন্তান ধারণে সমস্যা হতে পারে। অন্যদিকে বেশি পান করলে পুরুষের শুক্রাণুর মান ও পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটন জেনারেল হাসপাতালের যকৃত বিভাগের বিশেষজ্ঞ নিক শেরন বলেন, যুক্তরাজ্যে যকৃত ক্যানসারে মৃত্যুর হার গত ২০-৩০ বছরে পাঁচ গুণ বেড়েছে। ৮০ ভাগের মৃত্যু হয়েছে শুধু অ্যালকোহলের কারণে।

ইতিমধ্যেই হূৎপিণ্ডসংক্রান্ত গবেষণায় দেখা গেছে, পরিমিত অ্যালকোহল পানের ফলে হূদেরাগের ঝুঁকি কমে। কেননা এতে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে এবং ধমনিতে রক্ত জমাট বাঁধা বন্ধ হয়। দিনে তিন মাত্রার বেশি অ্যালকোহল পান করলে হূৎপিণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।

বিবিসি