ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী কুরবানী (উদ্বিয়াহ) একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যা নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ হলে একজন মুসলমানের উপর ওয়াজিব হয়ে যায়। নিচে কুরবানী কারা দিতে পারবে এবং কার উপর এটি ওয়াজিব তার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হলো:
কুরবানী কে কে দিতে পারবে?
কুরবানী দিতে পারবে এমন ব্যক্তি হতে হবে:
-
মুসলিম – কুরবানী শুধু মুসলমানদের জন্য।
-
বালেগ (প্রাপ্তবয়স্ক) – শিশুদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়।
-
আকিল (স্মরণশক্তিসম্পন্ন ও জ্ঞানসম্পন্ন) – পাগল বা মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়।
-
মুকীম (অবস্থানকারী) – মুসাফির (অস্থায়ী ভ্রমণরত) ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়, তবে ইচ্ছা করলে করতে পারে।
-
সামর্থ্যবান – যে ব্যক্তি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক, তার উপর কুরবানী ওয়াজিব।
কুরবানী কার উপর ওয়াজিব?
নিম্নোক্ত শর্তগুলো পূরণ হলে কুরবানী ওয়াজিব হয়:
-
যার মালিকানায় ঈদুল আযহার দিন সুবহে সাদিক থেকে কুরবানীর শেষ সময় পর্যন্ত (৩ দিন), নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে, তার উপর কুরবানী ওয়াজিব।
-
নিসাব পরিমাণ সম্পদ:
-
সোনা: ৭.৫ তোলা (৮৭.৪৮ গ্রাম)
-
রূপা: ৫২.৫ তোলা (৬১২.৩৬ গ্রাম)
-
অথবা এর সমমূল্যের টাকা বা সম্পদ (নগদ অর্থ, ব্যবসায়িক মালামাল, জমি ইত্যাদি)
-
-
এই সম্পদ মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত হতে হবে (যেমন বাসস্থান, পোশাক, খাদ্য, ব্যবহারের গাড়ি ইত্যাদি বাদ দিয়ে বাকি সম্পদ গণ্য হবে)।
-
রোজা বা হজের মতো সময়সীমা নির্ধারিত – কুরবানীর সময় শুরু হয় ঈদের প্রথম দিন (১০ জিলহজ্ব) সুবহে সাদিক থেকে এবং শেষ হয় ১২ জিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত।
অতিরিক্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
-
নারী ও পুরুষ উভয়ের উপরই কুরবানী ওয়াজিব, যদি তারা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হন।
-
প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ও সামর্থ্যবান ব্যক্তিকে নিজ নিজ কুরবানী দিতে হবে, পরিবারের পক্ষ থেকে একটি কুরবানী যথেষ্ট নয় যদি পরিবারের সকল সদস্যই নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হন।
0 comments:
Post a Comment