Friday, October 17, 2025

অনলাইনে নিরাপদ থাকার ৫টি কার্যকরী উপায়

0 comments

ডিজিটাল এই যুগে আমাদের জীবনের বড় একটি অংশই কাটে অনলাইনে। কেনাকাটা, ব্যাংকিং থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ—সবকিছুই এখন অনলাইন-নির্ভর। কিন্তু এর সাথেই বেড়েছে হ্যাকিং, স্ক্যাম ও প্রতারণার ঝুঁকি। অনলাইনে নিজেকে ও নিজের তথ্যকে সুরক্ষিত রাখতে কিছু কার্যকরী উপায় জানা থাকা জরুরি।

  1. শক্তিশালী ও ভিন্ন পাসওয়ার্ড ব্যবহার: প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্য আলাদা ও কঠিন পাসওয়ার্ড (বড়-ছোট অক্ষর, সংখ্যা ও চিহ্ন মিলিয়ে) ব্যবহার করুন। password123 বা নিজের নাম/জন্মদিন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

  2. টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (2FA) চালু করুন: ফেসবুক, গুগল বা ব্যাংকিং অ্যাপে অবশ্যই 2FA চালু রাখুন। এতে কেউ আপনার পাসওয়ার্ড জেনে গেলেও আপনার মোবাইলে কোড আসা ছাড়া লগইন করতে পারবে না।

  3. অচেনা লিংক বা ফাইল ক্লিক না করা: ইমেইল, মেসেঞ্জার বা SMS-এ আসা লোভনীয় অফার বা অপরিচিত কোনো লিংকে ক্লিক করবেন না। এগুলো ফিশিং লিংক হতে পারে, যার মাধ্যমে আপনার তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে।

  4. পাবলিক Wi-Fi ব্যবহারে সতর্কতা: পাবলিক বা ফ্রি Wi-Fi ব্যবহার করে ব্যাংকিং বা ব্যক্তিগত তথ্য আদান-প্রদান করবেন না। হ্যাকাররা এসব নেটওয়ার্ক থেকে সহজেই আপনার তথ্য চুরি করতে পারে।

  5. ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ারে সাবধানতা: অনলাইনে কোথায় আপনার নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর বা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দিচ্ছেন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। নির্ভরযোগ্য ও ভেরিফায়েড ওয়েবসাইট ছাড়া এসব তথ্য শেয়ার করবেন না।

Thursday, October 16, 2025

পুরান ঢাকার কাচ্চি বিরিয়ানি: যেভাবে মোঘল খাবার হয়ে উঠলো আমাদের ঐতিহ্য

0 comments

 প্লেটজুড়ে ধোঁয়া ওঠা বাসমতী চালের সাদা-হলুদ পাহাড়, তার ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে খাসির তুলতুলে নরম মাংস আর সোনালি এক আলু। চামচ দিয়ে আলতো চাপ দিতেই মাংসটা এমনভাবে গলে গেলো, যেন হাড়ের সাথে তার কোনোকালে সম্পর্কই ছিল না। নাকে এসে লাগছে জাফরান, জয়ত্রী আর কেওড়া জলের মন মাতানো এক রাজকীয় সুবাস...

এই দৃশ্য বা অনুভূতির সাথে পরিচিত নয় এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া কঠিন। ঢাকার আসল পরিচয় কী? রিকশার টুং টাং শব্দ? সরু গলির হাজারো গল্প? নাকি এক প্লেট কাচ্চি বিরিয়ানির এই মাতাল করা ঘ্রাণ? কাচ্চি বিরিয়ানি আমাদের কাছে শুধু একটি খাবার নয়, এটি একটি উৎসব, একটি স্মৃতি এবং পুরান ঢাকার শত শত বছরের ঐতিহ্য আর আবেগের নাম। কিন্তু কীভাবে এই পারস্যের খাবার মুঘলদের হাত ধরে আমাদের রান্নাঘরে এলো এবং শেষ পর্যন্ত ‘ঢাকাইয়া কাচ্চি’ নামে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেলো? চলুন, আজ সেই ইতিহাসের গন্ধমাখা গলিতেই এক চক্কর ঘুরে আসা যাক।

ইতিহাসের পাতা থেকে: মুঘল রান্নাঘরের সেই ‘কাঁচা’ মাংসের কারসাজি

গল্পের শুরুটা করতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে কয়েকশ বছর পেছনে, মুঘলদের শাহী রান্নাঘরে। "কাচ্চি" শব্দটি একটি উর্দু শব্দ, যার সহজ অর্থ হলো "কাঁচা"। এই বিরিয়ানির সবচেয়ে বড় বিশেষত্বই হলো এর নামে। অন্যান্য বিরিয়ানিতে যেখানে মাংস আগে রান্না করে তারপর চালের সাথে মেশানো হয়, সেখানে কাচ্চির ক্ষেত্রে কাঁচা মাংস দই এবং নানা মশলায় মেরিনেট করে হাঁড়ির (ডেগ) নিচে রাখা হয়। তার ওপরে দেওয়া হয় আধা-সিদ্ধ চালের আস্তরণ এবং সবশেষে সেই বিখ্যাত সোনালি আলু।

এরপর হাঁড়ির মুখ আটা দিয়ে এমনভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় যেন একবিন্দু বাতাসও ভেতরে-বাইরে চলাচল করতে না পারে। এই পদ্ধতিকে বলা হয় ‘দম পোখত’ বা দমে রান্না। এরপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা হালকা আঁচে কয়লার আগুনে রান্না হতে থাকে। ফলাফল? মশলার সব সুবাস চাল আর মাংসের ভেতরে প্রবেশ করে এক ঐশ্বরিক স্বাদ তৈরি করে, আর মাংস এতটাই নরম হয় যে মুখে দিলেই মিলিয়ে যায়। এই দমে রান্নার জাদুই কাচ্চিকে দিয়েছে তার রাজকীয় পরিচয়।

ঢাকায় আগমন ও নবাবী ছোঁয়া: যেভাবে কাচ্চি পেলো তার আসল ঠিকানা

মুঘলদের হাত ধরে কাচ্চি বাংলায় এলেও, একে ‘ঢাকাইয়া’ বানানোর পেছনের কারিগর ছিলেন ঢাকার নবাবরা। বিশেষ করে নবাবী আমলে ঢাকা যখন একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে ওঠে, তখন পারস্য ও উত্তর ভারত থেকে আসা বাবুর্চিরা এই খাবারটিকে ঢাকার আবহাওয়ায় নতুন করে গড়ে তোলেন। তারা ঢাকার স্থানীয় মশলা, ঘি এবং ঐতিহ্যের সাথে মুঘল রেসিপির এক অসাধারণ মিশ্রণ ঘটান।

তবে কাচ্চির সাথে আলুর এই অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের গল্পটি আরও মজার। অনেকে মনে করেন, আওয়াধের নির্বাসিত নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ যখন কলকাতায় আসেন, তখন তার বাবুর্চিরা মাংসের পরিমাণ কমাতে土豆 ব্যবহার শুরু করেন। সেই থেকে বিরিয়ানিতে আলুর প্রচলন হয়। পুরান ঢাকার বাবুর্চিরা সেই আলুকে শুধু ব্যবহারই করেননি, তাকে ঘি-তে ভেজে, জাফরানের রঙে রাঙিয়ে কাচ্চির এক অপরিহার্য অংশে পরিণত করেছেন। আজ ঢাকাইয়া কাচ্চি আলু ছাড়া কল্পনাও করা যায় না!

সাধারণের অসাধারণ ভালোবাসা: যেভাবে কাচ্চি আমাদের হলো

নবাবদের রান্নাঘর থেকে এই রেসিপি ধীরে ধীরে পুরান ঢাকার সাধারণ বাবুর্চিদের হাতে চলে আসে। আর এখানেই ঘটে আসল বিপ্লব। পুরান ঢাকার অলিগলিতে গড়ে ওঠা বিরিয়ানীর দোকানগুলো এই রাজকীয় খাবারকে সাধারণ মানুষের প্লেটে পৌঁছে দেয়। বিয়ে, আকিকা, ঈদ বা যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে কাচ্চি ছাড়া আয়োজন যেন অপূর্ণ থেকে যায়।

হাজী বিরিয়ানি থেকে শুরু করে হানিফের বিরিয়ানি কিংবা নতুন প্রজন্মের শত শত ব্র্যান্ড—প্রত্যেকেই নিজেদের বিশেষত্ব দিয়ে কাচ্চিকে আরও জনপ্রিয় করে তুলেছে। পুরান ঢাকার বাবুর্চিদের হাতে কাচ্চির মশলার ব্যবহারে যে গোপন অনুপাত আর রান্নার ধরনে যে মমতা মিশে থাকে, সেটাই ঢাকাইয়া কাচ্চিকে অন্য যেকোনো বিরিয়ানি থেকে আলাদা করে রেখেছে।

শেষ কথা: শুধু খাবার নয়, এক ঐতিহ্যের ধারক

আজ কাচ্চি বিরিয়ানি ঢাকার সীমানা পেরিয়ে সারা বাংলাদেশ, এমনকি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু পুরান ঢাকার সরু গলিতে, কয়লার আঁচে, বিশাল ডেগে রান্না হওয়া সেই কাচ্চির স্বাদ ও ঘ্রাণের সাথে অন্য কিছুর তুলনা চলে না।

তাই পরেরবার যখন আপনি এক প্লেট কাচ্চি সামনে নিয়ে বসবেন, তখন শুধু এর স্বাদই নেবেন না, চোখ বন্ধ করে একবার ভাবার চেষ্টা করবেন এর পেছনের শত শত বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য আর ভালোবাসার গল্প। কারণ কাচ্চি শুধু একটি খাবার নয়; এটি মুঘল আভিজাত্য, নবাবী যত্ন আর ঢাকাইয়া মমতার এক জীবন্ত ইতিহাস।

Wednesday, October 15, 2025

সারাদিন স্ক্রিনের সামনে? চোখ এবং ঘাড়ের ব্যথা থেকে মুক্তির সহজ ৫টি ব্যায়াম

0 comments

 ল্যাপটপ বা মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে? তাহলে চোখ জ্বালাপোড়া, মাথা ব্যথা আর ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাগুলো আপনার নিশ্চয়ই পরিচিত। এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পেতে কাজের ফাঁকেই করে নিতে পারেন এমন সহজ ৫টি ব্যায়ামের কথা আজ জানানো হলো।

An infographic style illustration showing a person sitting at a desk and demonstrating simple neck and eye exercises. Use clean lines, soft colors, and clear visual instructions for each exercise. Friendly and helpful vibe.


  1. চোখের জন্য ২০-২০-২০ নিয়ম: প্রতি ২০ মিনিট পর পর স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে ২০ ফুট দূরের কোনো জিনিসের দিকে ২০ সেকেন্ড তাকিয়ে থাকুন।

  2. ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলা: স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে আমরা চোখের পাতা কম ফেলি, ফলে চোখ শুষ্ক হয়ে যায়। তাই কিছুক্ষণ পর পর ইচ্ছাকৃতভাবে কয়েকবার চোখের পাতা ফেলুন।

  3. ঘাড় ঘোরানো (Neck Rotation): সোজা হয়ে বসে মাথা ঘড়ির কাঁটার দিকে ও বিপরীত দিকে ৫ বার করে ধীরে ধীরে ঘোরান।

  4. চিন-টাক (Chin Tuck): সোজা হয়ে বসে থুতনি পেছনের দিকে নিন, যেন আপনার ডাবল চিন তৈরি হচ্ছে। ৫ সেকেন্ড ধরে রেখে ছেড়ে দিন। এটি ঘাড়ের পেছনের পেশিকে আরাম দেয়।

  5. কাঁধ ঘোরানো (Shoulder Rolls): দুই কাঁধ একসাথে কান পর্যন্ত তুলে ৫ সেকেন্ড ধরে রেখে নামিয়ে ফেলুন। এরপর সামনে ও পেছনে ৫ বার করে ঘোরান। এটি কাঁধের পেশিকে রিলাক্স করে।

Tuesday, October 14, 2025

মাসিক ৫,০০০ টাকা থেকে শুরু করুন: নতুনদের জন্য বাংলাদেশে সেরা কয়েকটি বিনিয়োগের উপায়

0 comments

বিনিয়োগ মানেই বিশাল অংকের টাকা—এই ধারণাটি ভুল। ছাত্র বা নতুন চাকরিজীবী হিসেবে মাসিক মাত্র ৫,০০০ টাকা দিয়েও আপনি বিনিয়োগের জগতে পা রাখতে পারেন। সঠিক জায়গায় অল্প অল্প করে বিনিয়োগ করলে তা বড় সম্পদে পরিণত হতে পারে। চলুন জেনে নিই নতুনদের জন্য সেরা কয়েকটি বিনিয়োগের উপায়।

  1. স্টক মার্কেট (শেয়ার বাজার): ভালোভাবে জেনে-বুঝে ভালো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা দীর্ঘমেয়াদে সবচেয়ে লাভজনক উপায়গুলোর একটি। শুরুতে অল্প টাকা দিয়ে ভালো মৌলভিত্তির শেয়ারে বিনিয়োগ করুন।

  2. মিউচুয়াল ফান্ড: যারা শেয়ার বাজার নিয়ে গবেষণা করার সময় পান না, তাদের জন্য এটি সেরা। এখানে আপনার টাকা একজন ফান্ড ম্যানেজার বিভিন্ন শেয়ারে বিনিয়োগ করেন, ফলে ঝুঁকি কমে যায়।

  3. সঞ্চয়পত্র: এটি সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগগুলোর মধ্যে একটি। সরকার কর্তৃক পরিচালিত হওয়ায় এখানে ঝুঁকির কোনো সম্ভাবনা নেই এবং নির্দিষ্ট হারে লাভ পাওয়া যায়।

  4. ডিপোজিট পেনশন স্কিম (DPS): প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ব্যাংকে জমা রেখে মেয়াদ শেষে সুদসহ বড় অংকের টাকা পাওয়ার এটি একটি দারুণ উপায়।

  5. গোল্ড বা স্বর্ণ: মুদ্রাস্ফীতির বিপরীতে স্বর্ণ সবসময়ই একটি ভালো বিনিয়োগ। অল্প পরিমাণে গোল্ড কয়েন বা বারে বিনিয়োগ করে রাখা যেতে পারে।

Monday, October 13, 2025

ঢাকার আশেপাশে একদিনে ঘুরে আসার মতো সেরা ৫টি জায়গা

0 comments

 ঢাকার যান্ত্রিক জীবন থেকে মুক্তি পেতে মন প্রায়ই এদিক-সেদিক ছুটে যেতে চায়। কিন্তু লম্বা ছুটির অভাবে তা হয়ে ওঠে না। চিন্তা নেই! ঢাকার আশেপাশে এমন অনেক সুন্দর জায়গা আছে যেখানে আপনি মাত্র একদিনেই ঘুরে আসতে পারেন। চলুন জেনে নিই সেরা ৫টি ভ্রমণ ঠিকানা।

  1. গোলাপ গ্রাম, সাভার: সাদুল্লাপুরের এই গ্রামটি ফুলের রাজ্য, বিশেষ করে গোলাপের। সারি সারি গোলাপের বাগান আপনার মন ভালো করে দেবে। শীতকাল গোলাপ দেখার সেরা সময়।

  2. পানাম নগর, সোনারগাঁও: বাংলার প্রাচীন রাজধানীর এক হারানো শহর পানাম নগর। এখানকার পুরোনো স্থাপত্য ও দালানকোঠা আপনাকে ইতিহাসের পাতায় নিয়ে যাবে।

  3. মৈনট ঘাট, দোহার: পদ্মার পাড়ের এই জায়গাটি "মিনি কক্সবাজার" নামেই পরিচিত। নদীর বিশালতা, সূর্যাস্তের দৃশ্য আর তাজা ইলিশ ভাজা আপনার দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখবে।

  4. বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, গাজীপুর: পরিবার ও বাচ্চাদের নিয়ে ঘোরার জন্য এটি একটি আদর্শ জায়গা। উন্মুক্ত পরিবেশে বাঘ, সিংহসহ বিভিন্ন প্রাণী দেখার সুযোগ রয়েছে এখানে।

  5. জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: সবুজে ঘেরা এই ক্যাম্পাসটি সব সময়ই সুন্দর। তবে শীতকালে অতিথি পাখিদের আগমনে এর সৌন্দর্য বহুগুণ বেড়ে যায়। পাখি দেখতে আর প্রকৃতির মাঝে হাঁটতে এর চেয়ে ভালো জায়গা আর হয় না।

Sunday, October 12, 2025

ঢাকার আশেপাশে একদিনে ঘুরে আসার মতো ৫টি অপরিচিত সুন্দর জায়গা

0 comments

গোলাপ গ্রাম বা পানাম নগরের মতো পরিচিত জায়গাগুলোতে মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। আপনি যদি কোলাহল এড়িয়ে নিরিবিলি কোনো জায়গায় একদিন কাটাতে চান, তবে ঢাকার কাছেই রয়েছে অসাধারণ কিছু অপরিচিত স্থান। ঢাকার আশেপাশে একদিনে ঘুরে আসার মতো ৫টি নিরিবিলি ও সুন্দর জায়গা অনেকেরই অজানা। চলুন আজ সেই লুকানো রত্নগুলোর খোঁজ করি।

  1. জিন্দা পার্ক, রূপগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের এই পার্কটি স্থানীয়দের উদ্যোগে গড়ে ওঠা এক দারুণ সবুজ পৃথিবী। विशाल দিঘি, গাছপালা আর মাটির ঘর মিলিয়ে এটি একটি ছবির মতো সুন্দর জায়গা।

  2. সুবর্ণগ্রাম অ্যামিউজমেন্ট পার্ক অ্যান্ড রিসোর্টস, মুন্সিগঞ্জ: ঢাকার কাছেই গ্রামীণ পরিবেশে আধুনিক বিনোদনের এক চমৎকার জায়গা এটি। পরিবার নিয়ে দারুণ একটি দিন কাটানোর জন্য আদর্শ।

  3. বাংলার তাজমহল, সোনারগাঁও: আগ্রার তাজমহলের আদলে তৈরি এই স্থাপনাটি হয়তো আসলটির মতো বিশাল নয়, তবে এর সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে।

  4. জল ও জঙ্গলের কাব্য, পুবাইল: প্রকৃতির মাঝে পুরোপুরি হারিয়ে যেতে চাইলে গাজীপুরের এই রিসোর্টটি সেরা। এখানকার গ্রামীণ পরিবেশ ও শান্ত পুকুর আপনাকে দেবে মানসিক শান্তি।

  5. আড়াইহাজারের চর, নারায়ণগঞ্জ: মেঘনা নদীর বুকে জেগে ওঠা এই বিশাল চরটি এক কথায় অসাধারণ। বিস্তীর্ণ কাশবন আর নদীর সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই, বিশেষ করে শরৎকালে।

Saturday, October 11, 2025

কম বাজেটে মাস পার করার স্মার্ট কৌশল

0 comments

মাস শেষে পকেট প্রায় খালি হয়ে যাওয়াটা আমাদের অনেকেরই পরিচিত সমস্যা। কিন্তু কিছু স্মার্ট কৌশল জানা থাকলে কম বাজেটেও মাস ভালোভাবে চালিয়ে নেওয়া সম্ভব। খরচের লাগাম টেনে ধরতে এবং মাস শেষে কিছুটা সঞ্চয় করতে নিচের কৌশলগুলো অনুসরণ করতে পারেন।

  1. বাজেট তৈরি করুন (৫০/৩০/২০ নিয়ম): মাসের শুরুতে আয়ের ৫০% আপনার প্রয়োজনীয় খরচের জন্য, ৩০% ব্যক্তিগত ইচ্ছা বা বিনোদনের জন্য এবং বাকি ২০% সঞ্চয়ের জন্য ভাগ করে নিন।

  2. সাপ্তাহিক বাজার তালিকা: সপ্তাহের শুরুতে কী কী খাবেন বা রান্না করবেন তার একটি তালিকা তৈরি করে ফেলুন। এতে অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা এড়ানো যাবে।

  3. বাইরের খাবার কমানো: সপ্তাহে বা মাসে কতবার বাইরে খাবেন তা নির্দিষ্ট করে ফেলুন। ঘরে রান্না করে খেলে স্বাস্থ্যের পাশাপাশি টাকাও বাঁচবে।

  4. বিদ্যুৎ ও গ্যাস ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন: অপ্রয়োজনে লাইট, ফ্যান বন্ধ রাখা বা গ্যাসের ব্যবহার কমানোর মতো ছোট ছোট অভ্যাস মাস শেষে বিলের ওপর বড় প্রভাব ফেলে।

  5. অপ্রয়োজনীয় সাবস্ক্রিপশন বাতিল করুন: যে অ্যাপ বা সার্ভিস (যেমন: Netflix, Spotify) আপনি নিয়মিত ব্যবহার করেন না, সেগুলোর সাবস্ক্রিপশন বাতিল করুন।

  6. গণপরিবহন ব্যবহার: কাছাকাছি দূরত্বের জন্য রিকশা বা সিএনজি'র বদলে হাঁটা বা গণপরিবহন ব্যবহার করার অভ্যাস করুন।

  7. খরচের হিসাব রাখুন: প্রতিদিন কোথায় কত খরচ করছেন তা একটি নোটবুক বা মোবাইল অ্যাপে লিখে রাখুন। মাস শেষে এটি আপনাকে খরচের খাতগুলো চিনতে সাহায্য করবে।

Friday, October 10, 2025

ছাত্র অবস্থায় বা চাকরির পাশাপাশি বাড়তি আয়ের উপায়

0 comments

 বর্তমান সময়ে শুধু একটি আয়ের উপর নির্ভর করা কঠিন। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রী ও তরুণ চাকরিজীবীদের জন্য বাড়তি কিছু আয় জীবনযাত্রাকে অনেক সহজ করে তুলতে পারে। আপনার দক্ষতা ও সময়ের ওপর ভিত্তি করে বেছে নিতে পারেন সেরা কোনো উপায়। নিচে এমন ৫টি উপায় আলোচনা করা হলো যা আপনি আজ থেকেই শুরু করতে পারেন।

  1. কনটেন্ট রাইটিং বা ফ্রিল্যান্সিং: আপনার যদি লেখালেখির হাত ভালো থাকে, তবে এটি হতে পারে আয়ের দারুণ একটি উৎস। বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ব্লগ বা কোম্পানির জন্য লিখে ভালো আয় করা সম্ভব। Upwork, Fiverr-এর মতো প্ল্যাটফর্মে নিজের প্রোফাইল তৈরি করে কাজ শুরু করতে পারেন।

  2. অনলাইন টিউশন: ছাত্রছাত্রীদের জন্য এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি উপায়। আপনি যে বিষয়ে দক্ষ, সেই বিষয়ে অনলাইনে অন্য ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে পারেন। বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বা ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে সহজেই টিউশন খুঁজে পাওয়া যায়।

  3. ই-কমার্স বা এফ-কমার্স: আপনার যদি ছোটখাটো ব্যবসা করার ইচ্ছা থাকে, তবে ফেসবুক বা ইন্সটাগ্রাম পেজ খুলে নিজের পণ্য বিক্রি করতে পারেন। অল্প পুঁজিতে পোশাক, হাতে বানানো গয়না, বা ঘরে তৈরি খাবারের ব্যবসা এখন বেশ জনপ্রিয়।

  4. গ্রাফিক্স ডিজাইন বা ভিডিও এডিটিং: বর্তমানে ডিজিটাল কন্টেন্টের চাহিদা ব্যাপক। Canva-এর মতো সহজ টুল ব্যবহার করে বেসিক গ্রাফিক্স ডিজাইন বা ভিডিও এডিটিং শিখেও ছোট ছোট কাজ করে আয় করা সম্ভব।

  5. রাইড শেয়ারিং বা ডেলিভারি সার্ভিস: আপনার যদি সাইকেল, মোটরবাইক বা গাড়ি থাকে, তবে অবসর সময়ে Pathao, Uber-এর মতো রাইড শেয়ারিং বা ফুড ডেলিভারি সার্ভিস দিয়েও স্মার্ট ইনকাম করতে পারেন।

Thursday, October 9, 2025

বাংলাদেশে ছাত্রছাত্রী ও চাকরিজীবীদের জন্য সেরা ৫টি ফ্রি AI টুলস

0 comments

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা AI এখন আর শুধু বড় বড় কোম্পানির বিষয় নয়। আমাদের প্রতিদিনের কাজকে সহজ, দ্রুত ও সুন্দর করার জন্য রয়েছে দারুণ সব AI টুলস, যার বেশিরভাগই বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। ছাত্রছাত্রী ও চাকরিজীবীদের জন্য এমনই সেরা ৫টি টুলস নিয়ে আজ আলোচনা করা হলো।

  1. ChatGPT/Gemini: যেকোনো তথ্য খোঁজা, ইমেইল লেখা, প্রেজেন্টেশন বানানো বা কোনো জটিল বিষয় সহজে বোঝার জন্য এর চেয়ে ভালো টুল আর হয় না।

  2. Canva Magic Studio: প্রেজেন্টেশন, সিভি, পোস্টার বা যেকোনো ডিজাইনের জন্য Canva সেরা। এর AI ফিচারগুলো দিয়ে আপনি এক ক্লিকেই দারুণ সব ডিজাইন তৈরি করতে পারবেন।

  3. Grammarly: আপনার ইংরেজি লেখার যেকোনো ভুল (গ্রামার, বানান) শুদ্ধ করার জন্য এটি একটি আবশ্যক টুল। ছাত্র বা চাকরিজীবী, সবার জন্যই এটি প্রয়োজনীয়।

  4. Notion AI: নোট লেখা, কাজের তালিকা তৈরি করা, বা নিজের প্রোজেক্ট সাজিয়ে রাখার জন্য Notion খুবই জনপ্রিয়। এর AI ফিচার আপনার অগোছালো নোটগুলোকে মুহূর্তে গুছিয়ে দেবে।

  5. Remove.bg: যেকোনো ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড মাত্র ৫ সেকেন্ডে নিখুঁতভাবে মুছে ফেলার জন্য এটি সেরা একটি AI টুল, যা প্রেজেন্টেশন বা ডিজাইনের কাজে অনেক সময় বাঁচায়।

Wednesday, October 8, 2025

ভিসা ছাড়াই বিশ্বভ্রমণ: বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে ঘুরে আসুন ৩৯টি দেশ

0 comments

বিশ্বজুড়ে ভ্রমণের স্বপ্ন দেখেন? আপনার বাংলাদেশী পাসপোর্টটিই এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী! বিখ্যাত হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্সের সর্বশেষ পাসপোর্ট সূচক অনুযায়ী, আমাদের পাসপোর্টের অবস্থান ৯৭তম থেকে ৩ ধাপ এগিয়ে এখন ৯৪তম। এই উন্নতির ফলে বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে আপনি এখন বিশ্বের ৩৯টি দেশে ভিসা ছাড়াই অথবা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় অনায়াসে ভ্রমণ করতে পারবেন।


তাহলে আর দেরি কেন? চলুন দেখে নেওয়া যাক, কোন কোন দেশে আপনার জন্য ভ্রমণের দরজা খোলা আছে এবং ভ্রমণ শুরুর আগে আপনার কী কী জানা প্রয়োজন।

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্ট কোনগুলো?

  • শীর্ষস্থান: সিঙ্গাপুর (১৯৩টি দেশে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ)।

  • দ্বিতীয় স্থান: জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া (১৯০টি দেশে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ)।

  • তৃতীয় স্থান: ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও স্পেনের মতো ইউরোপীয় দেশগুলো (১৮৯টি দেশে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ)।

যে ৩৯টি দেশে ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা (সম্পূর্ণ তালিকা)

আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনা সহজ করার জন্য দেশগুলোকে অঞ্চল অনুযায়ী ভাগ করে দেওয়া হলো:

🏝️ ক্যারিবীয় অঞ্চল

  • বাহামা

  • বার্বাডোজ

  • ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড

  • হাইতি

  • গ্রানাডা

  • মন্টসেরাত

  • সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস

  • সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড দ্য গ্রেনাডিনস

  • ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো

🏔️ এশিয়া

  • ভুটান

  • কম্বোডিয়া

  • মালদ্বীপ

  • নেপাল

  • শ্রীলঙ্কা

  • পূর্ব তিমুর

🌍 আফ্রিকা

  • বুরুন্ডি

  • কেপ ভার্দে

  • কমোরো দ্বীপপুঞ্জ

  • গিনি-বিসাউ

  • কেনিয়া

  • মোজাম্বিক

  • রুয়ান্ডা

  • সিচেলিস

  • সিয়েরা লিওন

  • সোমালিয়া

  • গাম্বিয়া

🌊 ওশেনিয়া

  • ফিজি

  • কুক আইল্যান্ড

  • কিরিবাতি

  • মাইক্রোনেশিয়া

  • নুউয়ে

  • সামোয়া

  • টুভালু

  • ভানুয়াতু

🌎 দক্ষিণ আমেরিকা

  • বলিভিয়া

🛂 ভ্রমণের আগে অবশ্যই যা জেনে রাখা জরুরি

"ভিসা ছাড়া ভ্রমণ" কথাটি শুনলে যতটা সহজ মনে হয়, বাস্তবে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। তাই যাত্রা করার আগে এই বিষয়গুলো অবশ্যই মাথায় রাখুন:

১. ভিসার ধরন জানুন: এই ৩৯টি দেশের মধ্যে সবগুলোতে "সম্পূর্ণ ভিসামুক্ত" প্রবেশাধিকার নেই। অনেক ক্ষেত্রে বিমানবন্দরে নামার পর নির্দিষ্ট ফি দিয়ে "অন-অ্যারাইভাল ভিসা" নিতে হয়। আবার কিছু দেশের জন্য যাত্রা করার আগে অনলাইনে "ই-ভিসা" আবেদন করতে হতে পারে।

২. আপডেট তথ্য যাচাই করুন: দেশগুলোর ভিসা নীতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হতে পারে। তাই ভ্রমণের পরিকল্পনা করার আগে অবশ্যই সেই দেশের দূতাবাস বা অফিসিয়াল ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইট থেকে সর্বশেষ তথ্য যাচাই করে নিন।

৩. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: ভিসা না লাগলেও সাধারণত এয়ারপোর্টে কিছু কাগজপত্র দেখাতে হয়। যেমন: * ফিরতি বিমানের টিকিট। * হোটেল বুকিংয়ের প্রমাণপত্র। * ভ্রমণের জন্য পর্যাপ্ত ডলার বা মুদ্রার প্রমাণ।

সঠিক পরিকল্পনা এবং পূর্বপ্রস্তুতি আপনার ভ্রমণকে করবে আনন্দদায়ক ও ঝামেলামুক্ত। শুভ হোক আপনার বিশ্বভ্রমণ!

Tuesday, October 7, 2025

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুদের শিক্ষা বিপর্যয়

0 comments

বাংলাদেশের কক্সবাজার বিশ্বের সবচেয়ে বড় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের ঠিকানা। মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা এখন সেখানে বসবাস করছে। তাদের অর্ধেকের বেশি শিশু-কিশোর। কিন্তু সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়ায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার সুযোগ ভয়াবহ সংকটে পড়েছে।


আড়াই লাখ শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত

জাতিসংঘের তথ্যমতে, কক্সবাজারের শিবিরে প্রায় ৪,৫০০ শিক্ষা কেন্দ্র চালু ছিল। তবে সহায়তা কমে যাওয়ায় এর বড় অংশ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে প্রায় আড়াই লাখ শিশু বর্তমানে স্কুলবঞ্চিত। মাত্র ৩০ শতাংশ শিশু কোনো না কোনোভাবে শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে, বাকিরা ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছে।

শিশুর গল্প: স্কুল থেকে শ্রমে

১৪ বছর বয়সী আরশাদ (ছদ্মনাম) একসময় প্রতিদিন ক্যাম্পের লার্নিং সেন্টারে যেত। কিন্তু কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তাকে এখন একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতে হচ্ছে। দিনে ১০ ঘণ্টা কাজের পরেও হাতে আসে মাত্র কয়েকশো টাকা। আরশাদের মতো অনেক শিশু এখন অল্প বয়সেই শ্রমে জড়িয়ে পড়ছে।

অন্যদিকে, ১২ বছরের মরিয়মের পরিবার জানায়, শিক্ষা কেন্দ্র বন্ধ থাকায় তারা মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন। পরিবারটির মতে, নিরাপত্তা ও ভবিষ্যতের আশঙ্কা থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।

‘হারানো প্রজন্ম’-এর শঙ্কা

মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি অবিলম্বে এই সংকট সমাধান না করা হয় তবে রোহিঙ্গা শিশুদের একটি বড় অংশ স্থায়ীভাবে শিক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এতে তারা দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত হওয়ার বদলে নিরক্ষর প্রজন্মে পরিণত হবে— যা কেবল তাদের নয়, গোটা অঞ্চলের জন্য দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা সংকট ডেকে আনতে পারে।

আন্তর্জাতিক সহায়তার ঘাটতি

শিক্ষা খাতের জন্য প্রতিবছর যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন, তার মাত্র ৫০ শতাংশ বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে। বাকি অর্থ জোগাড় না হওয়ায় শিক্ষা কেন্দ্রগুলো চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বৈশ্বিক মানবিক সহায়তায় রোহিঙ্গা ইস্যু ধীরে ধীরে গুরুত্ব হারাচ্ছে, যা শিশুদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

টেকসই সমাধানের দাবি

স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, শুধু অস্থায়ী সহায়তা নয়— দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ জরুরি। শিশুদের শিক্ষা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি কারিগরি ও জীবনমুখী শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা প্রয়োজন।

 

রোহিঙ্গা শিশুদের এই শিক্ষা সংকট কেবল তাদের ভবিষ্যৎ নয়, গোটা সমাজের জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তবে কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে এক ভয়াবহ “হারানো প্রজন্ম” তৈরি হবে— যা মানবিক বিপর্যয়কে আরও গভীর করে তুলবে।


Monday, October 6, 2025

“ছয়বার মৃত” বলে ঘোষণা করার পরও জীবিত যিনি

0 comments

 বিশ্বের কিছু মানুষ সত্যিই আমাদের ধারণার বাইরে চলে যায়। তানজানিয়ার একজন গ্রামের সাধারণ মানুষ ইসমাইল আজিজি (Ismail Azizi) তার জীবন দিয়ে এক গভীর রহস্য তৈরি করেছেন—যিনি মৃত্যুর মুখ থেকে ছয়বার ফিরে এসেছেন



ইসমাইলের জীবনের প্রতিটি “মৃত্যু” একটি ধাক্কার মতো আশ্চর্যজনক:

  1. ম্যালেরিয়ার কারণে মারা যাওয়ার পর, তিনি আগে থেকেই মৃত বলে ঘোষণা পান—কিন্তু পূর্ণবিশ্রুধির আগেই জীবনে ফিরে আসেন।

  2. গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত হওয়ার পরও সবাই তাকে মৃত ভাবছিল, কিন্তু তিনি আবার হাঁটুন।

  3. সাপের বিষাক্ত কামড়ে, এজেন্ট ওষুধ দিচ্ছে—তবু তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

  4. কোনো গর্তে পড়েন—বলতে গেলে এটা সরকারি বাথরুম অথবা টয়লেট পিটও হতে পারে; সেখানেও মৃতপ্রায় অবস্থায় শরীর পড়ে ছিল, কিন্তু বের করে উন্নত চিকিৎসায় ফিরে আসেন।

  5. নিজের ঘরে পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা চালানো হয়, তাকে অপশক্তি ভেবে তাঁকে তাঁর বাড়িতে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেন প্রতিবেশীরা। আগুন ধরিয়ে দেন তাঁর ঘরে। ইসমাইলকে সে বারও মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল।

  6. সর্বোপরি, একবার তিন দিন মর্গে পড়ে থাকার পর, কফিনে নামিয়ে দেয়ার ঠিক আগে তিনি আবার প্রাণ ফেরান—প্রকৃতপক্ষে ফিরে আসেন, জীবিত।

 

ইসমাইলের কথায়, ‘‘প্রতি বার যখনই আমি মারা যেতাম এবং ফিরে আসতাম, আমার শরীরে অদ্ভুত অনুভূতি হত। লোকেরা আমার সঙ্গে এমন আচরণ করতে শুরু করলেন যেন আমি এক জন পিশাচ।’’ তার দাবি, তিনি কখনও কারও ক্ষতি করেননি। তবুও স্থানীয়দের সন্দেহ যে তিনি অপশক্তি বা কালাজাদুর সঙ্গে যুক্ত। পরিবারও ত্যাগ করেছে তাঁকে।

এই ঘটনা সংক্রান্ত একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি “Afrimax English via Nairaland” প্রকাশ করেছে।

তানজ়ানীয় যুবক জানিয়েছেন, বর্তমানে গ্রামের একটি জীর্ণ বাড়িতে একা বসবাস করেন তিনি। সামান্য চাষাবাদ, রান্নাবান্না এবং ঘর পরিষ্কার করে সময় কাটে তাঁর।

ইসমাইলের জীবনের অদ্ভুত পরিণতি

যখন পরিবার দেখা পায়, তখন তারা ভয়ে পালিয়ে যায়—তারা মনে করে ইসমাইল হয়তো ভূত বা অশুভ শক্তির বাহক। এতে তার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং গ্রামবাসীর সম্মান হারায়। অবশেষে, তিনি একাকিত্বে, একটি ফেটে যাওয়া বাড়িতে জীবন চালাচ্ছেন—ক্ষুদ্র ফসল ও রান্না ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থেকে জীবিকার প্রয়োজন জোগান করছেন।

সামাজিক ও মানবিক প্রভাব

ইসমাইলের চরম অসাধারণ জীবনকাল উৎসাহ বা বিভ্রম—যার বেশিরভাগ সময়ই বিভ্রান্তি ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতা দিয়ে পূর্ণ। তিনি যেমন একটি “ফিরে আসা” যাত্রার উদাহরণ, তেমনি তার জীবন সমাজের নির্ভরযোগ্যতার ক্ষয়, অন্ধ ধ্যান এবং গভীর মানবিক বিচারের বিচ্ছুরণের প্রতীক।

তথ্যচিত্র অনুযায়ী, ইসমাইলকে তাঁর গ্রামে অভিশপ্ত এবং অমর বলে মনে করা হয়। স্থানীয় সম্প্রদায় বা পরিবারের কাছ থেকে কোনও সমর্থন পান না তিনি। এত কিছুর পরেও ইসমাইল কিন্তু শান্ত। জবাবদিহি করতে করতে ক্লান্তও বটে।

ইসমাইল আজিজির রহস্যময় জীবন এখন সমগ্র গ্রামের জন্যে একটি ট্যাবু হয়ে উঠেছে। ছয়বার মৃত্যু ঘোষণা হওয়া—ম্যালেরিয়া, গাড়ি দুর্ঘটনা, সাপের কামড়, পিটে পড়া, আগুনে পোড়ানো—সত্ত্বেও জীবিত ফিরে আসার এই অদ্ভুত গল্প মানবতা ও জীবনের অপ্রত্যাশিত দিকগুলোকে নতুনভাবে ভাবিয়ে তোলে।

Sunday, October 5, 2025

কি হবে, হঠাৎ যদি যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন বন্ধ করে দেয়?

0 comments

 দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় মিত্র ও সহায়তার উৎস। বছরে বিলিয়ন ডলারের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে ওয়াশিংটন তেলআবিবকে শক্তিশালী অবস্থানে রেখেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—যদি হঠাৎ একদিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন বন্ধ করে দেয়, তখন কী ঘটতে পারে?


১. সামরিক দুর্বলতা:
ইসরায়েল তার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য ব্যাপকভাবে মার্কিন সহায়তার উপর নির্ভরশীল। “আয়রন ডোম” থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক ফাইটার জেট—সবই যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ ও প্রযুক্তির সহায়তায় পরিচালিত। সমর্থন বন্ধ হলে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বড় ধাক্কা আসবে।

২. অর্থনৈতিক চাপ:
মার্কিন সহায়তা ইসরায়েলের বার্ষিক বাজেটের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। হঠাৎ তা বন্ধ হলে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে সংকট দেখা দিতে পারে, বিশেষত প্রতিরক্ষা খাতে।

৩. মধ্যপ্রাচ্যের শক্তির ভারসাম্য:
যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া ইসরায়েলের আঞ্চলিক আধিপত্য নড়বড়ে হয়ে পড়বে। ফিলিস্তিন, ইরান, লেবাননের হিজবুল্লাহসহ অন্যান্য শক্তি নতুন কৌশল গ্রহণ করতে পারে।

৪. কূটনৈতিক পরিবর্তন:
মার্কিন প্রভাব কমে গেলে ইসরায়েল হয়তো ইউরোপ, রাশিয়া কিংবা চীনের দিকে ঝুঁকতে পারে। এতে বৈশ্বিক কূটনীতিতে নতুন জোট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

৫. ফিলিস্তিন প্রশ্নে নতুন মোড়:
সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হতে পারে ফিলিস্তিন ইস্যুতে। যুক্তরাষ্ট্রের চাপ না থাকলে ইসরায়েলকে আলোচনায় বসতে হতে পারে। ফিলিস্তিনিদের জন্য এটি হতে পারে বড় সুযোগ।

যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া ইসরায়েলকে টিকে থাকার কৌশল পাল্টাতে হবে। এটি শুধু ইসরায়েল নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি ভূমিকম্পসদৃশ পরিবর্তন ডেকে আনবে। তবে বাস্তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত অসম্ভব, কারণ ইসরায়েল মার্কিন কৌশলগত স্বার্থের একটি মূল অংশ।

Saturday, October 4, 2025

বাংলাদেশে সোনার বার কেনা-বেচা: আইন, ভ্যাট-ট্যাক্স ও বিশ্বস্ত ডিলার

0 comments

 সোনার মূল্য বিশ্ববাজারে বাড়ার সঙ্গে বাংলাদেশে অনেকেই বিনিয়োগ হিসেবে সোনার বার কেনায় আগ্রহ করছেন। কিন্তু বার কেনা-বেচায় কিছু বিশেষ আইন, ভ্যাট/কাস্টমস ও নিরাপত্তার দিক থাকে — ভুল করলে বড় সমস্যা হতে পারে। এই গাইডে সবকিছু সহজ ভাষায় এবং প্র্যাকটিক্যালভাবে তুলে ধরা হলো।

বিশ্বজুড়ে অনিশ্চয়তা বাড়লে মানুষ সোনাকে “সেফ-হেভেন” ধরে — এর ফলে বার আকারে স্টক রাখা জনপ্রিয় হচ্ছে। বাংলাদেশে বড় পরিমাণে বার কেনার ক্ষেত্রে প্রধান দুইটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে — (১) আইনগত অনুমোদন (২) কর/ভ্যাট-শর্ত।

আইনি অনুমোদন: বাংলাদেশে সোনার বার আমদানি ও বিক্রির জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক (Bangladesh Bank) যে ডিলারদের অনুমোদন দেয়, তার মাধ্যমেই বড় লেনদেন করা উচিত। ব্যক্তিগতভাবে সৌখিন গহনা কিনলে সাধারণত কোনো আলাদা লাইসেন্স লাগে না; কিন্তু বার (ingot) ও আমদানির ক্ষেত্রে Bangladesh Bank-এর অনুমোদিত ডিলারের মাধ্যমে লেনদেন করা নীতিগতভাবে বাধ্যতামূলক। সরকারি নির্দেশে আমদানি/বিক্রি অনুমোদিত ডিলারদের মাধ্যমে করা হচ্ছে।

ভ্যাট-ট্যাক্স ও কাস্টমস: ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভিনিউ (NBR) অনুযায়ী বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড VAT হল ১৫% — কিন্তু গহনা তৈরির মজুরি বা গোল্ডস্মিথ সার্ভিসের মতো নির্দিষ্ট সার্ভিস আইটেমে ভিন্ন (নিম্ন) হার প্রযোজ্য থাকতে পারে বলে সরকারি নথিপত্রে বলা আছে। আমদানি/ট্যারিফ-কেসে কাস্টমস ট্যারিফে VAT ও অন্যান্য শুল্ক ধার্যিত হতে পারে — তাই আমদানির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ঠিক রাখা জরুরি। সাধারণভাবে বলা যায়: কেনার সময় যেই ভ্যাট/শুল্ক প্রদান করবেন, তা বিক্রি করলে সরাসরি রিফান্ড হবে না — বিক্রি হলে আপনাকে বাজারমূল্যেই টাকা দেওয়া হবে, আর ভ্যাট সরকারি রাজস্বে যায়। (নির্দিষ্ট হার ও নিয়ম সময়ের সঙ্গে বদলাতে পারে; সর্বশেষ অফিসিয়াল নোটিশ দেখুন)।

কেনার পদ্ধতি (প্রয়োগিক টিপস):

  • বড় পরিমাণ কেনার আগে উদ্দেশ্য স্থির করুন — স্টোরেজ/ইনভেস্টমেন্ট না ট্রেডিং?

  • বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত ডিলারের কাছ থেকেই ক্রয় করুন — ইনভয়েস/রসিদ, বার-সিরিয়াল/সার্টিফিকেট নেবেন।

  • পেমেন্টে ব্যাঙ্ক-ট্রান্সফার বা চেক ব্যবহার করুন; ক্যাশ টার্জে ঝুঁকি থাকে।

  • বড় বার হলে সেফ-ডিপোজিট বা ইনস্যুরেন্স বিবেচনা করুন।

  • বিক্রি করার সময় যেখানে থেকে কিনেছেন সেখানে ফিরেই বিক্রি করুন — নথি থাকলে লেনদেন পরিষ্কার হয়।

বিশ্বস্ত ডিলারদের তালিকা (সংক্ষিপ্ত, অফিসিয়াল উৎস ভিত্তিক): Modhumoti Bank Ltd., Diamond World, Jewellery House, Rotno Gold Corner, Aroosa Gold Corp., Amin Jewellers, Sreeja Gold Palace Ltd., Jarwa House (Pvt) Ltd., Milon Bazar, SQ Trading & Engineering, M.K. International, Buraq Commodities Exchange Co., Golden World Jewellers, Riya Jewellers, Laxmi Jewellers Ltd., BDEX Gold & Diamond Ltd., D Damas The Art of Jewellery, Princess Gold & Diamond Cottage Ltd. — সম্পূর্ণ ও আপডেট তালিকা দেখতে Bangladesh Bank-এর অফিসিয়াল নোটিশ দেখুন। 

সোনার বার বিনিয়োগ লাভজনক হতে পারে—কিন্তু নিরাপদ এবং আইনি পথে, বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত ডিলারের মাধ্যমে কিনুন, সব কাগজ রাখুন এবং ভ্যাট/কাস্টমস-সম্পর্কিত অফিসিয়াল নোটিশ নিয়মিত দেখুন। প্রয়োজনে ট্যাক্স/কাস্টমস-এক্সপার্টের সঙ্গে পরামর্শ নিন।

Friday, October 3, 2025

আবু ধাবির নতুন ওয়েভ পুলে বিলাসিতার দৌড় : প্রত্যেক ঢেউতে $১৫০

0 comments

 আবুধাবিতে একটি নতুন ওয়েভ পুল তৈরি হচ্ছে, যা অতি ধনীদের জন্য। এখানে এক একটি ঢেউয়ের জন্য খরচ করতে হবে $150। CNN-এর একটি প্রতিবেদনে এই খবরটি প্রকাশ করা হয়েছে। এই ওয়েভ পুলটির নাম Surf Abu Dhabi। এটি তৈরি করছে মুবাদালা ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি। মুবাদালা হলো আবুধাবির একটি সার্বভৌম সম্পদ তহবিল। তারা জানান, এই ওয়েভ পুলটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবসৃষ্ট ওয়েভ পুল হতে যাচ্ছে। এখানে কৃত্রিমভাবে ঢেউ তৈরি করা হবে। যা সার্ফিং-এর জন্য খুবই উপযুক্ত। এই প্রকল্পের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জন কার্টার বলেন, “আমরা এমন একটি স্থান তৈরি করতে চেয়েছিলাম যা সার্ফারদের জন্য স্বপ্নের মতো।”


শুধুমাত্র সার্ফারদের জন্য নয়

এই ওয়েভ পুলটি শুধু সার্ফারদের জন্য নয়, এটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে সবাই এখানে আসতে পারে। যারা সার্ফিং জানেন না, তাদের জন্য এখানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়াও, এই পুলের চারপাশে বিলাসবহুল ভিলা, হোটেল এবং রেস্তোরাঁ থাকবে। এখানে একসাথে ৫০০ জন সার্ফ করতে পারবে।

কত খরচ?

এই ওয়েভ পুলটিতে সার্ফ করার জন্য প্রতি ঘণ্টায় $150 থেকে শুরু করে $400 পর্যন্ত খরচ হবে। এই খরচটা নির্ভর করবে কোন সময়ে সার্ফিং করা হচ্ছে, তার ওপর। জন কার্টার আরও বলেন, “আমরা মনে করি, সার্ফিং-এর জন্য এই ধরনের জায়গা তৈরি করা খুবই প্রয়োজন ছিল।” এই প্রজেক্টটি আবুধাবির পর্যটন শিল্পকে আরও নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ ও দামের ধরণ

  • তরঙ্গের দৈর্ঘ্য ও সময়: এই পুলটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৭৫৫ গজ (৬৯০ মিটার)। এক তরঙ্গের রাইডের সময় লেগে যায় প্রায় এক মিনিট।

  • পানি ও প্রযুক্তি: আরব উপসাগর থেকে আনয়ন করা ৮ কোটি লিটার সামুদ্রিক (sea) পানি ব্যবহার করা হচ্ছে; কিছুটা জল পরিশোধনের (desalination) মাধ্যমে মান বজায় রাখা হয়েছে।

  • উন্নত প্রযুক্তি: পুলের নিচে একটি “আন্ডারওয়াটার উইং” (underwater wing) একাধিক পুলে দিয়ে পুলস (pulleys) দ্বারা টানা হয়, এবং পুলের তলা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তরঙ্গকে ভেঙে ভাল “ব্রেক” তৈরিতে নিয়োজিত হয় — এই সকল প্রযুক্তিগত দিক মিলিয়ে ও “বাথিমেট্রি” পেটেন্ট করা হয়েছে।

  • মূল্য ও এক্সক্লুসিভ প্যাকেজ:

    • মাঝারি বা উন্নত পর্যায়ের তরঙ্গ সেশনে চারজন সাঁতারু একসাথে প্রবেশ করতে পারবেন, প্রতি জনের জন্য খরচ ~ AED 3,500 (প্রায় US$950)

    • পুরো পুলই চাইলে ৯০ মিনিটের জন্য রিজার্ভ করা যাবে, খরচ ~ AED 20,000 (প্রায় US$5,450)

  • ক্লায়েন্ট গোষ্ঠী: বিদেশি পর্যটক ও বিলাসবহুল অভিজ্ঞতা লাভ করতে ইচ্ছুক উচ্চ আয়ের ব্যক্তি ও পরিবার প্রধানভাবে এখানে আসছেন; প্রায় ৮০% গ্রাহকই আন্তর্জাতিক।

বিশ্লেষণ: বিলাসিতা বনাম অভিজ্ঞতার দাম

পজিটিভ দিক:

  • একজন সাঁতারুর জন্য বন্ধুরা, কর্মব্যস্ত পেশাজীবী, বা ভ্রমণপ্রিয় ব্যক্তি হিসাবে সময় ও অসুবিধার বিষয়ে কম ঝামেলা হয় — সমুদ্রের অনিশ্চিত তরঙ্গের অপেক্ষায় থাকতে হয় না।

  • পুরো “প্যাকেজ” পাওয়া যায় — কোচিং, ভিডিও রিভিউ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত, যা দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে।

  • এটি একটি নতুন পর্যটক আকর্ষণ; আবু ধাবি আন্তর্জাতিক পর্যটন ও বিলাসিতা সেক্টরকে আরও মজবুত করার চেষ্টায় রয়েছে।

নেগেটিভ প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়:

  • ব্যয় বেশি হওয়ায় এটি সাধারন মানুষের জন্য ব্যয়বহুল; “লাক্সারি” অভিজ্ঞতা হিসেবে এটি মূলধারার ব্রড বিকল্প হতে পারে না।

  • সমুদ্রের সঙ্গে সংযোগ ও প্রকৃতির অনুভূতি অনেক সাঁতারুর কাছে গুরুত্বপূর্ণ — কোনো মেশিন তৈরি তরঙ্গ কখনো পুরোপুরি সেই অনুভূতি দিতে পারবে না।

  • অবকাঠামো ও শক্তি খরচসহ রক্ষণাবেক্ষণের খরচও উচ্চ; পরিবেশগত প্রভাব ও টেকসইতার প্রশ্ন উঠতে পারে।

“Surf Abu Dhabi” নামের এই প্রকল্পটি বিলাসিতা, প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতার মিলনস্থল — যেখানে মোটামুটিভাবে $৯৫০ থেকে শুরু করে প্রাইভেট সেশন পর্যন্ত দামে সাঁতারুরা হয়েছে লক্ষ্যবস্তু। এটি স্পষ্ট যে—এখনকার সময়ের নতুন ধনী পর্যটকরাই এসব স্থানে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তবে এই রকম অভিজ্ঞতা সত্যিকার অর্থে অর্থের বিনিময়ে কি “সম্পূর্ণ তরঙ্গ” পাওয়া যায়, সেটি নির্ভর করছে প্রত্যেক সাঁতারুর অভিমুখ ও প্রত্যাশার উপর।

Thursday, October 2, 2025

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি বাড়ছে: আদতে কী লাভ?

0 comments

গাজার চলমান সংঘাত এবং জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনকে ঘিরে আবারও সামনে এসেছে প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রের প্রশ্ন। ক্রমেই বাড়ছে প্যালেস্টাইনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া দেশের সংখ্যা। তবে, এখনো অনেক প্রভাবশালী শক্তি স্বীকৃতি দেয়নি। এই স্বীকৃতি আদৌ কী বদল আনছে বিশ্ব কূটনীতিতে?


সাম্প্রতিক স্বীকৃতি

চলতি বছর প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইউরোপীয় দেশ। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স ও পর্তুগাল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পাশাপাশি অ্যান্ডোরা, বেলজিয়াম, লাক্সেমবুর্গ, মাল্টা, মনাকো ইত্যাদি দেশও প্যালেস্টাইনকে স্বীকৃতি দেওয়া তালিকায় যোগ দিচ্ছে। তাদের মতে, মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানই একমাত্র কার্যকর পথ।

অতীতে স্বীকৃতি দেওয়া দেশ

প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রকে ১৯৮৮ সালে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার বহু দেশ একে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে। বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে প্রায় ১৩৯টি দেশ প্যালেস্টাইনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—

  • এশিয়ার দেশগুলো: ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, চীনসহ অধিকাংশ মুসলিম রাষ্ট্র

  • আফ্রিকার বেশিরভাগ দেশ

  • লাতিন আমেরিকার প্রায় সব দেশ

এখনো স্বীকৃতি দেয়নি যারা

তবে, এখনো কিছু বড় শক্তি প্যালেস্টাইনকে স্বীকৃতি দেয়নি। এদের মধ্যে রয়েছে—

  • যুক্তরাষ্ট্র

  • জার্মানি

  • ফ্রান্স

  • জাপান
    এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কিছু দেশ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ স্বীকৃতি দিতে রাজি হয়নি।

এক নজরে প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি: কারা দিয়েছে, কারা দেয়নি

অঞ্চল/মহাদেশস্বীকৃতি দিয়েছে (দেশের উদাহরণ)স্বীকৃতি দেয়নি (দেশের উদাহরণ)
এশিয়াভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, চীন, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, ইরানজাপান, দক্ষিণ কোরিয়া
আফ্রিকামিশর, দক্ষিণ আফ্রিকা, আলজেরিয়া, নাইজেরিয়া, ঘানাকিছু ছোট আফ্রিকান দেশ এখনো নিরপেক্ষ
ইউরোপস্পেন, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন, মাল্টা, চেক প্রজাতন্ত্রজার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস
উত্তর আমেরিকাকিউবা, নিকারাগুয়াযুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো
লাতিন আমেরিকাব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ভেনেজুয়েলা, চিলি, উরুগুয়েঅধিকাংশই স্বীকৃতি দিয়েছে (প্রায় সবাই)
ওশেনিয়াকিছু প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রনিউজিল্যান্ড

 

মোট চিত্র:

  • জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে প্রায় ১৩৬ টি দেশ প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

  • স্বীকৃতি দেয়নি মূলত পশ্চিমা শক্তি ও তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্ররা—যেমন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া।

স্বীকৃতি পেয়ে লাভ কী?

  1. কূটনৈতিক মর্যাদা বৃদ্ধি – আন্তর্জাতিক পরিসরে প্যালেস্টাইন একটি বৈধ রাষ্ট্র হিসেবে অবস্থান জোরদার করে।

  2. জাতিসংঘে প্রভাব – সাধারণ অধিবেশনে সমর্থন বাড়ে, যদিও নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো ক্ষমতার কারণে পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ এখনও অসম্ভব।

  3. মানবাধিকার ইস্যুতে জোরালো অবস্থান – ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বেশি আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি হয়।

  4. অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহায়তা – স্বীকৃতি পাওয়া দেশগুলোর সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, সাহায্য ও উন্নয়ন সহযোগিতা বাড়ে।

দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান নিয়ে বিশ্বমঞ্চে অবস্থান

বিশ্বের অধিকাংশ দেশ মনে করে, ইসরায়েল ও প্যালেস্টাইনের জন্য আলাদা দুটি রাষ্ট্র গঠন ছাড়া স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয়। সাম্প্রতিক সময়ে জাতিসংঘের অধিবেশনে একে জোরালোভাবে সামনে এনেছেন বিভিন্ন বিশ্বনেতা। তবে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্ররা এ বিষয়ে দ্বিধান্বিত অবস্থান নিয়ে চলছে।

সারসংক্ষেপ:
প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তবে যেসব প্রভাবশালী শক্তি এখনো স্বীকৃতি দেয়নি, তাদের অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলছে। গাজার পরিস্থিতি বিশ্ববাসীকে আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছে—দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানই হতে পারে স্থায়ী শান্তির একমাত্র পথ।