Tuesday, May 29, 2012

জিন্সের প্যান্ট থেকে রোগ

0 comments
আঁট-সাট, টাইট জিন্স প্যান্টগুলোকে এবার আলমিরা থেকে সরিয়ে ফেলার সময় এসেছে। একদল মার্কিন বিশেষজ্ঞ টাইট জিন্স প্যান্ট পরার ব্যাপারে সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, টাইট জিন্স প্যান্ট পায়ের বিভিন্ন পেশীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
এবিসি নিউজের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘ম্যারালজিয়া প্যারিসথেটিকা’ নামক এক রোগে আক্রান্ত কিছু রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। এ রোগের লক্ষণ হিসেবে পায়ের ওপরের অংশে টান টান ভাব, অশারতা ইত্যাদি ধরা পড়েছে। যার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞ দলটি ফ্যাশনের অন্যতম অনুষজ্ঞ টাইট জিন্স প্যান্টকে দায়ী করেছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত বাল্টিমোর মেডিক্যাল সেন্টারের ডাক্তার ক্যারেন বোয়েল বলেন, এটি একটি ব্যাধি যার কারণে পায়ের ওপরের অংশের পেশীগুলো ক্রমশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে।

তিনি আরও বলেন, টাইট জিন্স প্যান্টের সাথে উঁচু জুতা এ সমস্যাকে আরও তীব্রতর করে। কারণ উঁচু জুতাও পায়ের পেশীতে চাপ সৃষ্টি করে।

তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, জিন্স প্যান্ট পড়লে যদি কারও শরীরে কোনো রকমের চাপ অনূভুত হয় তবে তা অগ্রাহ্য করা মোটেও উচিৎ নয়। কারণ এতে স্থায়ী বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

টাইট জিন্স প্যান্টের বিপরীতে তিনি লেগিংস পরার পরামর্শ দিয়েছেন।

কামরুন নাহার সুমি

Thursday, May 24, 2012

বিশ্বের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পরিচিতি

0 comments
গোয়েন্দা সংস্থার ইংরেজি নাম হলো intelligence agency। এটি মূলত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশেষায়িত সরকারি সংস্থা। এটি আইন প্রয়োগ, জাতীয় নিরাপত্তা সংরক্ষণ, সামরিক প্রতিরোধে ও বৈদেশিক নীতি প্রণয়নে সরকারকে সহায়তা করে। আর সে জন্য দরকারি বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ, গবেষণা ও প্রয়োগ করে। সরাসরি কিংবা গোপনীয় অথবা নানা উপায়ে এরা তথ্যাদি সংগ্রহ করে থাকে। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি সংশ্লিষ্ট গবেষণার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক তথ্যাদি সংগ্রহে নিযুক্ত থাকে। কিছু কিছু গোয়েন্দা সংস্থা গুপ্তহত্যা, সামরিক অভ্যুত্থানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। প্রতিটি দেশের জন্যই গোয়েন্দা সংস্থা এক বড় অস্ত্র। কোন গোয়েন্দা সংস্থা কেমন বা কার কাজ কি তা জানা অনেক কষ্টের। আর তাই গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর র্যাংকিং করাও সহজ নয়। তারপরও বছরের পর বছর আলোচনা-সমালোচনা ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে আলোচিত গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কথা তুলে ধরা হলো এখানে। বিস্তারিত লিখেছেন- রণক ইকরাম


মোসাদ, ইসরায়েল


মোসাদকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ ও দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা। ১৩ ডিসেম্বর ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ইংরেজি নাম হচ্ছে (Institute for Intelligence and Special Operations)। বিশ্বজুড়ে 'মোসাদ'কে ঘিরে সবচেয়ে বেশি রহস্যজনক ও চাঞ্চল্যকর গল্প চালু আছে। হিটলারের নাৎসি বাহিনীর হাতে প্রায় ৬০ লাখ ইহুদির মৃত্যুর পর বিশ্বের ইহুদি সম্প্রদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিজস্ব রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্নের প্রকল্পে শামিল হয়েছিল। ইহুদি, খ্রিস্ট ও ইসলাম ধর্মের কাছে 'পবিত্র ভূমি' বলে পরিচিত বৃহত্তর প্যালেস্টাইনকেই তারা বেছে নিয়েছিল নতুন এই বাসভূমির জন্য। নাৎসিদের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে ইহুদিদের সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হতো। এই জায়নিস্ট আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে শুরু থেকেই আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে আসছে ইসরায়েল। ফলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দূর করতে যে কোনো পদক্ষেপ নিতে শুরু থেকেই প্রস্তুত ইহুদি এই রাষ্ট্র। আর এ কাজে ভয়াবহভাবে ব্যবহৃত হয় ইহুদিদের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। কিন্তু নিজস্ব স্বার্থ রক্ষা করতে ইসরায়েল যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করে এসেছে, তাকে ঘিরে বিতর্কের কোনো শেষ নেই।


ভয়ঙ্কর গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের কর্মী সংখ্যা কত তার পরিসংখ্যান কেউ জানে না। তবে ধারণা করা হয় এর কর্মী সংখ্যা কম করে হলেও ১২০০ হবে। এর সদর দফতর ইসরায়েলের তেলআবিবে। সংস্থাটির জবাবদিহিতা দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে। সংস্থার বর্তমান প্রধান তামির পারদো। মোসাদের প্রধান বিচরণ এলাকা বলতে কিছু নেই। বলা হয়ে থাকে, এদের নেটওয়ার্ক সমগ্র বিশ্বেই বিস্তৃত।


মোসাদের দায়িত্ব এতটাই বিশাল যে, সম্পূর্ণ বর্ণনা কঠিন। সাধারণভাবে বৈদেশিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স পরিচালনা, গুপ্তহত্যা, বৈদেশিক নীতি-নির্ধারণে সহায়তা, কাউন্টার টেররিজম, নিজস্ব লোক সংগ্রহ ও নেটওয়ার্ক তৈরি, বিদেশি কূটনীতিকদের ওপর নজরদারি, শত্রু এজেন্টদের সন্ধান, সাইবার ওয়ারফেয়ার পরিচালনা, নতুন প্রযুক্তি সংগ্রহ, ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশন পরিচালনা, ড্রোন আক্রমণ, গুপ্ত কারাগার পরিচালনা, বিশ্বের বড় বড় করপোরেশনের নীতিনির্ধারণের চেষ্টা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্পিওনাজ। মোসাদের এই কাজের বাজেটও কারও জানা নেই।


মোসাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এমএসএস, এফএসবি, এমআইএসআইআরআই, হিজবুল্লাহ, হামাস।


ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের বিখ্যাত অপারেশনগুলো হচ্ছে আর্জেন্টিনায় আইখম্যান হান্ট ১৯৬০, হেবাররত চুকারস হত্যা ১৯৬৫, অপারেশন ডায়মন্ড ১৯৬৩-৬৬, ১৯৭২ সালের মিউনিখ অলিম্পিকে হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ, অপারেশন জেরাল্ড বুল কিলিং ১৯৯০, আতেফ বেইসো হত্যা ১৯৯২, মোহাম্মদ আল মাবহু হত্যা, ২০১০। মোসাদের মোটো হচ্ছে : Where there is no guidance, a nation falls, but in an abundance of counselors there is safety.




এমআই সিক্স, যুক্তরাজ্য


সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস বা এমআই৬ যুক্তরাজ্য সরকার তথা ব্রিটিশ গভর্নমেন্টের বৈদেশিক গুপ্তচর বিভাগের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা হিসেবে এমআই৫, সরকারি যোগাযোগের প্রধান দফতর বা জিসিএইচকিউ, প্রতিরক্ষা সংস্থা বা ডিআইয়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। যুক্তরাজ্যের জয়েন্ট ইন্টেলিজেন্স কমিটি বা জিআইসি'র নিয়ন্ত্রণে থেকে নির্দিষ্ট নির্দেশনার মাধ্যমে কাজ করে সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস।


এটা বার বার এমআই৬ নামে গণমাধ্যমে উল্লেখ হতে থাকে। বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যখন সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস নামটি বহুনামে উল্লেখ হয়, তখন এমআইসিক্স নামকরণটি নিশ্চিত হয়ে যায়।[১] ১৯৯৪ সালের আগ পর্যন্ত এমআই৬ নামটি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পায়নি ও স্বীকৃত ছিল না। সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস বা এসআইএস বা এমআই৬ বর্তমানে ব্রিটেনের জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে গুপ্তচরের প্রধান ভূমিকা পালনে সক্ষম।


১৯০৯ সালে উইলিয়াম মেলভিল নামক সিক্রেট সার্ভিস ব্যুরোর এক কর্মকর্তা সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের প্রতিষ্ঠাতা।[১] দফতরটি নৌ-সেনা বিভাগ এবং যুদ্ধ অফিসের যৌথ উদ্যোগে গ্রেট ব্রিটেন ও বিদেশের মধ্যে গোয়েন্দা অভিযানের দায়িত্ব নিয়োজিত ছিল। এটি বিশেষ করে জার্মান সাম্রাজ্যের কার্যকলাপের ওপরই সবিশেষ মনোযোগ দিয়েছিল। ব্যুরো বা দফতরটি নৌ এবং সেনা- এ দুই বিভাগে বিভাজন করা হয়েছিল। এগুলো হলো : বিদেশি গুপ্তচরবৃত্তি এবং অভ্যন্তরীণ গুপ্তচরবৃত্তি। এই বিভাজনের মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল নৌ-সেনা বিভাগ। তারা জার্মান সাম্রাজ্যের নৌবাহিনীর সামরিক শক্তিমত্তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী ছিল। এই বিশেষায়ন ১৯৪১ সালের আগেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সৃষ্টি করা হয়েছিল।


যখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়, দুটি শাখাই প্রশাসনিকভাবে রূপান্তরিত হয়ে ডাইরেক্টরেট অব মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স সেকশন ৬ (এমআইসিক্স) হয়ে যায়। এ নামই বর্তমানকালে সাধারণ নাম হয়ে এমআই ৬ হিসেবে সর্বসাধারণ্যে পরিচিতি পেয়ে আসছে। সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস সংস্থাটির ভবনের অঙ্গসজ্জা জেমস বন্ড চলচ্চিত্রের গোল্ডেনআই, দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ নট এনাফ এবং ডাই এনোদার ডে ছবিতে দেখানো হয়েছে। এমআইসিক্স প্রথমবারের মতো ভবনের অঙ্গসজ্জা জেমস বন্ড সিরিজের 'দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ নট এনাফ' চলচ্চিত্রে প্রদর্শনের অনুমতি প্রদান করে। ওই চলচ্চিত্রে ভবনের অভ্যন্তরে ব্রিফকেস পরিপূর্ণ টাকায় বিস্ফোরণ ঘটানোর দৃশ্য ধারণ করা হয়।


এমআই সিঙ্ গঠিত হয় ১৯০৯ সালে সিক্রেট সার্ভিস ব্যুরো নামে। এর সদর দফতর : ভাউঙ্ হলো ক্রস, লন্ডন-এ। এর দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হচ্ছে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ। আর সংস্থা প্রধান : স্যার জন সারোয়ার্স। এটির মূল দায়িত্ব হচ্ছে বৈদেশিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স পরিচালনা, বন্ধুভাবাপন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা, দেশ ও মিত্রদের অর্থনৈতিক ও সামরিক স্বার্থ রক্ষায় গোয়েন্দা তৎপরতা পরিচালনা। এমআই৬ এর বিখ্যাত এজেন্ট জেমস বন্ড। আর এর বিখ্যাত অপারেশন অপারেশন কাপকেক।




সিআইএ, যুক্তরাষ্ট্র


সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (ইংরেজি : Central Intelligence Agency) (CIA), যা সিআইএ নামেও পরিচিত, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন একটি বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থা। এটি একটি স্বাধীন সংস্থা, যার দায়িত্ব্ব যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং উচ্চপদস্থ নীতিনির্ধারকদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করা। দ্বিতীয় বিশ্বযদ্ধকালীন গঠিত অফিস অফ স্ট্র্যাটেজিক সার্ভিসেস (OSS)-এর উত্তরসূরি হিসেবে সিআইএর জন্ম। এর কাজ ছিল যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন শাখা-প্রশাখার মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করা। ১৯৪৭ সালে অনুমোদিত হওয়া ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা জাতীয় নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সিআইএ গঠন করা হয়, যাতে বলা হয়, 'এটি কোনো পুলিশ বা আইন রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান নয়, দেশে কিংবা বিদেশে যেখানেই কাজ করুক না কেনো।' সিআইএ'র প্রাথমিক কাজ হচ্ছে বিদেশি সরকার, সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করা এবং তা জাতীয় নীতিনির্ধারকদের কাছে তা সরবরাহ ও পরামর্শ প্রদান করা। সিআইএ এবং এর দায়বদ্ধতা ২০০৪ সালে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। ২০০৪-এর ডিসেম্বরের পূর্বে সিআইএ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান গোযন্দো সংস্থা; এটি শুধু নিজের কর্মকাণ্ডই নয়, বরং অন্য গোয়ন্দো সংস্থাগুলোর কর্মকাণ্ডও দেখাশোনা করত। কিন্তু ২০০৪ সালে অনুমোদিত ইন্টেলিজেন্স রিফর্ম অ্যান্ড টেররিজম প্রিভেনশন অ্যাক্ট, ২০০৪ দ্ব্বারা তা পরিবর্তিত হয়।


সিআইএ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর। এর কর্মীসংখ্যা অজ্ঞাত। তবে অনুমানিক এই সংখ্যা ২০ হাজারের বেশি হতে পারে। এর সদর দফতর ল্যাংলি, ভার্জিনিয়ার জর্জ বুশ সেন্টার ফর ইন্টেলিজেন্সে। এর জবাবদিহিতা মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে। সিআইএ'র বর্তমান সংস্থা প্রধান ডেভিড পেট্রাউস। বর্তমানে সিআইএ'র বেশ কয়েকটি বিভাগ রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে : মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিভাগ MENA, দক্ষিণ এশিয়া বিভাগ OSA, রাশিয়ান ও ইউরোপিয়ান বিভাগ OREA, এশিয়া প্যাসিফিক, লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকা বিভাগ (APLAA)।


মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ'র কাজের পরিধিও সুবিশাল। সাধারণভাবে বৈদেশিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স পরিচালনা, গুপ্তহত্যা, বৈদেশিক নীতিনির্ধারণে সহায়তা, কাউন্টার টেররিজম, নিজস্ব লোক সংগ্রহ ও নেটওয়ার্ক তৈরি, বিদেশি কূটনীতিকদের ওপর নজরদারি, শত্রু এজেন্টদের সন্ধান, সাইবার ওয়ারফেয়ার পরিচালনা, নতুন প্রযুক্তি সংগ্রহ, ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশন পরিচালনা, ড্রোন আক্রমণ, গুপ্ত কারাগার পরিচালনা, বিশ্বের বড় করপোরেশনগুলোর নীতিনির্ধারণের চেষ্টা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্পিওনাজ। সিআইএ'র ঘোষিত বাজেটের পরিমাণ ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর প্রধান বিচরণ এলাকা সমগ্র সৌরজগৎ। আর সিআইএ'র প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী : এমএসএস, এফএসবি, আল-কায়েদা। সিআইয়ের বিখ্যাত অপারেশনের মধ্যে রয়েছে বে অব পিগস হামলা, বিন লাদেন হত্যা, অপারেশন ফোনিক্স (ভিয়েতনাম), অপারেশন গ্লাডিও প্রভৃতি।




এমএসএস, চীন


চীনের গোয়েন্দা সংস্থা গওজিয়া অ্যাংকেন বু অথবা মিনিস্ট্রি অব স্টেট সিকিউরিটি। এটি বিশ্বজুড়ে এমএসএস (MSS) নামে পরিচিত। চীনা এমএসএসের অনেক কিছুই সাধারণ মানুষের অজানা। আর এর কর্মী সংখ্যা পৃথিবীর সব গোয়েন্দা সংস্থার তুলনায় সবচেয়ে বেশি বলে ধারণা করা হয়। ২০০৫ সালে দলত্যাগী দুজন চীনা এজেন্ট থেকে জানা গেছে, শুধু অস্ট্রেলিয়ায়ই এমএসএস'র এক হাজার ইনফর্মার আছে। এমএসএসের সদর দফতর চীনের রাজধানী বেইজিং-এ অবস্থিত। এর জবাবদিহিতা স্টেট কাউন্সিল অব চায়নার কাছে। এমএসএসের সংস্থা প্রধান জেং হুই চ্যাং। তিনি দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এমএসএস সর্বমোট ১২টি ব্যুরোতে বিভক্ত। এর মূল দায়িত্ব হচ্ছে বৈদেশিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স পরিচালনা, গুপ্তহত্যা, বর্ডার সার্ভেইল্যান্স, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, কাউন্টার টেররিজম, নিজস্ব লোক সংগ্রহ ও নেটওয়ার্ক তৈরি, বিদেশি কূটনীতিকদের ওপর নজরদারি, শত্রু এজেন্টদের সন্ধান, কাউন্টার রেভিউল্যুশনারি কার্যক্রম দমন, সাইবার ওয়ারফেয়ার পরিচালনা, নতুন প্রযুক্তি সংগ্রহ, বিশ্বের বড় করপোরেশনগুলোর নীতিনির্ধারণের চেষ্টা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্পিওনাজ।


এমএসএসের প্রধান বিচরণ এলাকা ম্যাকাও, হংকং, তাইওয়ান, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, পশ্চিম ইউরোপ, রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আমেরিকা, উত্তর ও পশ্চিম আফ্রিকা ও সারা দুনিয়ার চাইনিজ বংশোদ্ভূত জনগণ। এমএসএসের অনেক নামকরা এজেন্ট রয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ল্যারি উ তাইচিন, ক্যাট্রিনা লেউং, পিটার লি, চি মাক, কো সুয়েন মো। ১৯৯৬ সালে এফ-১৫, বি-৫২সহ বহু সামরিক প্রযুক্তি পাচারের অভিযোগে ডং ফ্যাং চ্যু নামে বোয়িং কোম্পানির এক ইঞ্জিনিয়ার ধরা পড়েন। ধারণা করা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউকে, কানাডা, ইউরোপ, ভারত, জাপানে আন-অফিশিয়াল কাভারে যেমন ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, খেলোয়াড়, ব্যাংকার, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ হিসেবে কমপক্ষে ১২০ জন এমএসএস কর্মী অবস্থান করছেন। এমএসএসের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হয় সারা দুনিয়ার বেশিরভাগ গোয়েন্দা সংস্থাকেই।




এফএসবি, রাশিয়া


এফএসবির মূল নাম ফেডারেলনায়া সুলঝবা বেজপাসনোস্তি রাশিস্কয় ফেডেরাটসি। সংক্ষেপে এটি এফএসবি নামে পরিচিত। এটি স্থাপিত হয় ১৯৯৫ সালের ৩ এপ্রিল। তবে এত অল্প বয়স দিয়ে এফএসবির কার্যকারিতার প্রভাব ও ভয়াবহতার কথা মোটেও অনুমান করা যাবে না। অনুমান করতে হবে এর পূর্বসূরি সংস্থার কথা মাথায় রেখে। রাশিয়ার বর্তমান গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির


পূর্বসূরি ছিল দুনিয়া কাঁপানো গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি। আর কেজিবিরও আগে এর নাম ছিল চেকা। এফএসবির কর্মী সংখ্যা আনুমানিক ৩,৫০,০০০।


এফএসবির সদর দফতর রাশিয়ার মস্কো শহরের ল্যুবিয়াঙ্কা স্কোয়ারে। এর জবাবদিহিতা প্রেসিডেন্ট রাশিয়ান ফেডারেশন।


এফএসবির সংস্থা প্রধান মিখায়েল ফার্দকভ। এফএসবির সাহায্যকারী/সহকারী সংস্থার নাম গ্রু।


এফএসবির মোট ১০টি বিভাগ রয়েছে।


এফএসবির মূল দায়িত্ব বৈদেশিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স পরিচালনা, গুপ্তহত্যা, বর্ডার সার্ভেইল্যান্স, রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ, কাউন্টার টেররিজম, নিজস্ব লোক সংগ্রহ ও নেটওয়ার্ক তৈরি, বিদেশি কূটনীতিকদের ওপর নজরদারি।


এফএসবির নামকরা এজেন্টের নাম আন্না চ্যাপম্যান।

Saturday, May 19, 2012

পেট্রোনাস টাওয়ার

0 comments
উচ্চতার দিক থেকে বর্তমান বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মালয়েশিয়ার টুইন টাওয়ার বা পেট্রোনাস টাওয়ার। তবে ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত এ টাওয়ারটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু টাওয়ার ছিল। পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারকে উচ্চতায় প্রথম ছাড়িয়ে যায় তাইওয়ানের ‘তাইপে-১০১’ নামের ১০১ তলার সুউচ্চ ভবনটি। এরপর উচ্চতার দিক দিয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে মাথা তুলে দাঁড়ায় দুবাইয়ের ১৫৮ তলাবিশিষ্ট ভবন ‘বুর্জ খলিফা’। ৮৮ তলাবিশিষ্ট পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারটির অবস্থান মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের কেন্দ্রস্থলে। এ টাওয়ারটি তৈরি করতে সময় লেগেছে একটানা সাত বছর। মালয়েশিয়ার মোবাইল কোম্পানি মাক্সিস ও তেল কোম্পানি পেট্রোনাসের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে এ টাওয়ারটি। এই টুইন টাওয়ারই হচ্ছে পেট্রোনাসের প্রধান কার্যালয়। এটি নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে ১.৬ বিলিয়ন ডলার। আর এই টুইন টাওয়ারটি নির্মাণে আর্জেন্টিনা, ফিলিপাইন ও মালয়েশিয়ার দক্ষ ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করেছেন। টুইন টাওয়ার নির্মাণে মূল কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে স্টিল ও পাথর। যদিও টাওয়াটিকে বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় শুধু স্টিল দ্বারা নির্মিত হয়েছে। টাওয়ারের ৪১ এবং ৪২তম তলাকে সংযুক্ত করেছে একটি ব্রিজ। ব্রিজটির নাম হচ্ছে স্কাই ব্রিজ। এই ব্রিজের সাহায্যেই এক ভবন থেকে অন্য ভবন যেতে হয়। এখানে রয়েছে ৮ তলাবিশিষ্ট শপিংমল। এই শপিংমলটির ৫তলা মাটির নিচে এবং বাকি ৩ তলা সমতলে অবস্থিত। কুয়ালালামপুর শহরের যে স্থানে পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার অবস্থিত তার নাম কেএলসিসি বা কুয়ালালামপুর সিটি সেন্টার। কেএল সেন্ট্রাল থেকে মনোরেলে সরাসরি যাওয়া যায় কেএলসিসিতে। স্টেশনের নামও কেএলসিসি। এটি টুইন টাওয়ারের একদম নিচেই ভূগর্ভে অবস্থিত। পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারের চারপাশ খুব সুন্দর করে সাজানো-গোছানো। টাওয়ারের পেছনের দিকটা শুধুই পর্যটকদের জন্য। এখানে রয়েছে নানা ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা। এখানে বিকাল বেলায় আয়োজন করা হয় ওয়াটার শো’র। এখানে রয়েছে কৃত্রিম একটি সেতু। এই সেতুতে দাঁড়িয়ে পুরো টাওয়ারের ছবি তোলা যায়। পর্যটকদের জন্য স্কাই ব্রিজ হচ্ছে সেরা আকর্ষণ। সেখানে উঠতে পারাটা জীবনের এক বিশাল সংগ্রহ। আর তাই কেউই কুয়ালালামপুরে এসে স্কাই ব্রিজ না ঘুরে যায় না। তবে পর্যটকদের জন্য শুধু ৪১তম তলায়
যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। উপরের অংশটি পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারের কর্মকর্তাদের জন্য সংরক্ষিত। প্রতিদিন সকাল ৯টা পর্যন্ত পর্যটকদের মধ্যে স্কাই ব্রিজ পরিদর্শনের টিকিট
Petronas Towers Night
বিনামূল্যে দেওয়া হয়। ১৯৯৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয় মালয়েশিয়ার টুইন টাওয়ার। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা হাজার
Petronas towers Suria KLCC Twin Towers Kuala Lumpur Malaysia Night Shot Long Exposure
হাজার পর্যটক প্রতিদিন ভিড় করেন টুইন টাওয়ারের সামনে।

সাদিকুল নিয়োগী পন্নী

Thursday, May 17, 2012

ফারাক্কা দিবস

0 comments
১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ১৯৭৪ সালে ভারত পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালুর কথা বলে বাংলাদেশের সমর্থন নিলেও অদ্যবধি তা অব্যাহত আছে। এর ফলে দেশের কৃষি, শিল্প, বন ও ন পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাপক বিপর্যয়ের সম্মুখিন হচ্ছে।
ভয়েজ ওভারঃ
কলকাতা বন্দরকে পলির হাত থেকে রক্ষার জন্য মুর্শীদাবাদ জেলার জঙ্গীপুর গ্রামের ফারাক্কা নামকস্থানে ১২২৪ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২৩ মিটার উচ্চতা সম্পন্ন এই বহুমুথি ব্রীজ সেই সাথে ড্যাম নির্মান করা হয়। চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার উজানে অবস্থিত এ বাধের ১২৩টি গেটের মাধ্যমে পানি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ন্যাটঃ
১৯৭৪ সালের ১৬ মে ইন্দিরা মুজিব চুক্তির মাধ্যমে ফারাক্কা বাঁধ চালু হয়। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী ভারত কখনই পানি দেয়নি। এ বাঁধের কারণে রাজশাহী শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে সরে গেছে পদ্মা। ফলে মরুভূমি পরিনত হয়েছে উত্তরাঞ্চল। এ কারণে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের নদীগুলোও মৃত প্রায়।
ভক্সপপঃ
পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে ১৯৭৬ সালের ১৬ মে মওলানা ভাসানি বিশ্ব জনমত গড়ে তোলার জন্য লংমার্চ করেন। কিন্তু কোন লংমার্চ, বৈঠক বা চুক্তিতেও পানি সমস্যার সমাধান হয়নি।
ন্যাটঃ
আন্তর্জাতিক নদী আইন ও রীতিনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, ভারত বাংলাদেশকে পানি থেকে বঞ্চিত করে আসছে। যৌথ নদী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হেলসিংকি নীতিমালার ৪ ও ৫ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, 'প্রতিটি অববাহিকাভুক্ত দেশ, অভিন্ন নদীর ব্যবহারের ক্ষেত্রে অন্য দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রয়োজন বিবেচনা করবে। এ জন্য অবশ্যই অন্য দেশের যাতে কোন ক্ষতি না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।'

রেজোয়ান করিম
মোহনা সংবাদ

Saturday, May 12, 2012

বাংলা শব্দসংক্ষেপ

0 comments
● আবাস => আশ্রায়ন বাস্তবায়ন সংস্থা।
● আসক => আইন ও সালিশ কেন্দ্র।
● টেশিস => টেলিফোন শিল্প সংস্থা।
● বাচসাস => বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি।
● বাজুসাক => বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন।
● বাটেকশপ => বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ শ্রমিক কর্মচারী পরিষদ।
● বাপা => বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন।
● মূসক => মূল্য সংযোজন কর।
● বাসস => বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা।
● বাসাস => বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি।
● সুজন => সুশাসনের জন্য নাগরিক।

স্বস্তিপুর মসজিদ, ঝিনাইদহ

0 comments
কুষ্টিয়া জেলা শহর থেকে ঝিনাইদহগামী সড়ক ধরে প্রায় ১১ কিলোমিটার এগিয়ে স্বস্তিপুর গ্রামে পৌঁছলাম। সামান্য হাঁটতেই স্বস্তিপুর শাহী মসজিদ। তিন গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটি যে মোগল যুগের, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এটি যে একটি পুরনো মসজিদ, তারও অনেক প্রমাণ রয়েছে। এর দেয়ালের পুরুত্ব ০.৯১ মিটার এবং পিলারসহ তা ১.০১ মিটার। এটি একটি ছোট মসজিদ এবং তাতে মাত্র এক সারি মানুষ দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে পারেন। এখন অবশ্য মসজিদের পূর্ব দেয়াল সংলগ্ন বড় একটি বারান্দা যুক্ত করে আয়তন বাড়ানো হয়েছে। মসজিদটিতে যথেষ্ট সংস্কার কাজ হয়েছে। একজন মুসলি্লর কাছে জানা গেল, মসজিদের পশ্চিম দেয়ালে বর্তমানে যে তিনটি মেহরাব দেখা যাচ্ছে তার মধ্যে কেন্দ্রীয়টি শুধু আদি মেহরাব, অন্য দুটি পরে নির্মিত হয়েছে। তবে এ কথার সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় না। কারণ মোগল আমলের ৩ গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদগুলোর সাধারণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে পূর্ব দেয়ালে ৩টি প্রবেশপথ ও পশ্চিম দেয়ালে ৩টি মেহরাব দেখা যায়। কিন্তু এমন মসজিদের পশ্চিম দেয়ালে একটি মাত্র মেহরাব থাকার ব্যাপারটা খুব স্বাভাবিক নয়।
মসজিদের দেয়ালের গায়ে উত্তর ও দক্ষিণ দিকে ২টি করে মোট ৪টি জানালা এবং প্রতি পাশে দুটি জানালার মাঝখানে এটি করে কুলুঙ্গি আছে। মুসলি্লদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এ জানালা ও কুলুঙ্গি সবই দেয়াল কেটে হাল আমলে বানানো হয়েছে। মসজিদের ৪ কোণে ৪টি মিনার ছিল, যা এখন ধ্বংস হয়ে গেছে। আর পূর্ব দেয়ালের প্রবেশপথগুলোও সংস্কারের সময় দেয়াল কেটে বড় করা হয়েছে। আগেকার প্রবেশপথগুলো এতই ছোট ছিল যে, তা দিয়ে কুঁজো না হয়ে ঢোকা যেত না। তবে মসজিদটির পূর্ব দেয়ালে যে ৩টি প্রবেশপথ রয়েছে, তা পত্রাকার খিলান আকৃতির এবং আধুনিক প্রবেশপথের চেয়ে পুরোপুরি আলাদা। কাজেই দেয়াল কেটে প্রবেশপথ বড় করার ব্যাপারটা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া কঠিন বলে মনে হলো।
'কুষ্টিয়ার ইতিহাস' প্রণেতা শ ম শওকত আলীর মতে, মূল মসজিদে একটি বড় মসজিদের পাশে ৪টি ছোট গম্বুজ ছিল। বাংলাদেশ জেলা গেজেটিয়ার কুষ্টিয়া (১৯৯১, পৃ. ৩৯৪) থেকে জানা যায়, কুষ্টিয়ার আলামপুর ইউনিয়নের স্বস্তিপুর গ্রামে নবাব শায়েস্তা খানের আমলে এ মসজিদটি নির্মাণ সম্পর্কে জনপ্রবাদ আছে। আদি মসজিদটি আকারে ছোট ছিল। সেটি ধ্বংস হয়ে গেলে নতুন করে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। এসব বক্তব্যের সর্বাংশে সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়েও বলা যায়, বর্তমান মসজিদটিও মোগল আদলকে কিছুটা হলেও ধরে রেখেছে।

ইতিহাসের ভয়াবহ সব জাহাজডুবি

0 comments
ভয়াবহ কোনো জাহাজডুবির কথা যদি মনে করতে বলা হয়, তাহলে আমাদের প্রায় সবারই প্রথমে মনে আসে টাইটানিকের কথা। কিন্তু এটা কি জানেন, বেসামরিক লোকের মৃত্যুর দিক থেকে টাইটানিক হচ্ছে ইতিহাসের তৃতীয় ভয়াবহ জাহাজ দুর্ঘটনা? তার মানে টাইটানিকের চেয়েও ভয়াবহ দুটি জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে ইতিহাসে। এ রকম কিছু ইতিহাসখ্যাত ভয়াবহ জাহাজডুবির ঘটনা তুলে ধরছেন ফারজানা ঊর্মি
এমভি উইলহেম গাস্টলফ
১৯৪৫ সালের জানুয়ারি মাসে এই জার্মান জাহাজটিকে উদ্দেশ করে তিনটি টর্পেডো ছোড়া হয়। জাহাজটি তখন বাল্টিক সাগরে অবস্থান করছিল এবং পূর্ব প্রুসিয়ার সেনাবাহিনী দ্বারা ঘেরাওকৃত বেসামরিক লোকজন, সামরিক অফিসার এবং নাৎসি কর্মকর্তাদের সরিয়ে আনার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল। টর্পেডো আঘাত হানার ৪৫ মিনিটেরও কম সময়ে জাহাজটি ডুবে যায় এবং প্রায় ৯,৪০০ লোক মৃত্যুবরণ করে এই দুর্ঘটনায়। সামুদ্রিক ইতিহাসে একটিমাত্র জাহাজ দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি লোকের মৃত্যুর রেকর্ড এই জাহাজ দুর্ঘটনা।

এমভি ডোনা পাজ
ফিলিপাইনের এই যাত্রীবাহী জাহাজটি ১৯৮৭ সালের ২০ ডিসেম্বর এমটি ভেক্টরের সঙ্গে সংঘর্ষের পর ডুবে যায়। এই দুর্ঘটনায় প্রায় ৪,৩৭৫ জন লোক মৃত্যুবরণ করে। দুর্ঘটনার সেই রাতে জাহাজের প্রায় সব যাত্রী ঘুমিয়ে ছিল। সেই সময় জাহাজটি প্রায় ৮,৮০০ ব্যারেল গ্যাসোলিন বহণ করছিল। তাই সংঘর্ষের পরপর জাহাজটিতে অতি দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তা-ই নয়, আশপাশের পানিতে ভেসে যাওয়া গ্যাসোলিনেও ছড়িয়ে পড়ে সেই আগুন। লাইফ জ্যাকেটগুলো আটকা পড়ে যাওয়ায় আগুন থেকে বাঁচতে অনেক যাত্রী হাঙর অধ্যুষিত সাগরের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধ্য হয়। সামুদ্রিক ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বেসামরিক লোক এ দুর্ঘটনায় মারা যায়।

আরএমএস লুসিতানিয়া
এই ব্রিটিশ জাহাজটি আয়ারল্যান্ডের কুইনসটাউন বন্দরসহ নিউইয়র্ক, ইংল্যান্ড ও লিভারপুলের মধ্যে যাতায়াত করত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে অর্থাৎ ৭ মে ১৯১৫ সালে একটি জার্মান টর্পেডো আঘাত হানে জাহাজটিতে। টর্পেডো আঘাত হানার মাত্র ১৮ মিনিটের মাথায় জাহাজটি ডুবে যায়। আটকে পড়া ১,৯৬৯ জন লোকের মধ্যে ১,১৯৮ জন লোকই মৃত্যুবরণ করে এ দুর্ঘটনায়। মূলত এই জাহাজ দুর্ঘটনাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে।

আরএমএস ল্যানকাস্ট্রিয়া
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক জোরপূর্বক ব্যবহৃত এই জাহাজটি ডুবে যায় ১৭ জুন ১৯৪০ সালে। এই দুর্ঘটনায় ৪,০০০-এর বেশি লোক মৃত্যুবরণ করে। টাইটানিক ও লুসিতানিয়া এ দুটি জাহাজ দুর্ঘটনা মিলে মোট যত লোক মৃত্যুবরণ করেছে, তার চেয়ে বেশি লোক ল্যানকাস্ট্রিয়া দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করে বলে ধারণা করা হয়। তাই একে সবচেয়ে ভয়াবহ ব্রিটিশ জাহাজ দুর্ঘটনা বলে আখ্যায়িত করা হয়।

আরএমএস ইমপ্রেস অব আয়ারল্যান্ড
২৯ মে ১৯১৪ সালে এই কানাডিয়ান জাহাজটি সেন্ট লরেন্স নদীতে একটি নরওয়ের জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। এই দুর্ঘটনায় ৮৪০ জন যাত্রী এবং ১৭২ জন ক্রুসহ মোট ১,০১২ জন লোকের প্রাণহানি ঘটেছে বলে ধারণা করা হয়। ২৯ মে ভোরবেলা কুয়াশার করণে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নরওয়ের জাহাজটি ইমপ্রেস অব আয়ারল্যান্ডকে ডানদিক থেকে আঘাত হানে এবং জাহাজের নিচের দিকে অবস্থান করা প্রচুর যাত্রী প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ডুবে যায়। জাহাজটি এত দ্রুত একদিকে কাত হয়ে যায় যে, লাইফ বোটগুলো ব্যবহার করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। মাত্র ৪৬৫ জন লোক সেই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরে আসতে পেরেছিল।

এমভি গয়া
নাম অন্তর্ভুক্ত করা ৬,১০০ জন যাত্রী (অন্তর্ভুক্তিহীন আরও প্রায় ১০০ জন) নিয়ে এই এই জার্মান জাহাজটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে বাল্টিক সাগরে সোভিয়েত সাবমেরিন দ্বারা আক্রান্ত হয় ১৬ এপ্রিল ১৯৪৫ সালে। টর্পেডো জাহাজটিতে আঘাত হানার মাত্র সাত মিনিটের মাথায় জাহাজটি পুরোপুরি ডুবে যায় এবং মারা যায় ভেতরে আটকে পড়া প্রায় সব যাত্রী ও ক্রু। যে অল্প কয়েকজন যাত্রী লাফিয়ে পড়তে পেরেছিল তাদের মধ্যেও অধিকাংশ মারা যায় বরফ ঠাণ্ডা পানিতে হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হয়ে। সামুদ্রিক ইতিহাসে এই জাহাজ দুর্ঘটনাকে দ্বিতীয় ভয়াবহ জাহাজ দুর্ঘটনা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। দুর্ঘটনার সময় জাহাজটিতে ছিল প্রচুর নারী এবং শিশু। বেঁচে যাওয়া ১৮৩ জন যাত্রীর মধ্যে মাত্র দু'জন ছিল শিশু।

এমভি লি জোলা
সেনেগালের সরকারি এই জাহাজ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০২ সালে জাম্বিয়ার সমুদ্র উপকূলে উল্টে যায়। এই দুর্ঘটনায় ১,৮৬৩ জন লোক মৃত্যুবরণ করে। বেসামরিক লোক মৃত্যুর দিক থেকে এটি সামুদ্রিক ইতিহাসে দ্বিতীয় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার সময় জাহাজটি ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছিল। তাই ঝড়ো বাতাসে মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে জাহাজটি উল্টে যায়। জাহাজটিতে অবস্থানরত ২,০০০ যাত্রীর মধ্যে মাত্র ৬৪ জন বেঁচে আসতে পেরেছিল। এই ৬৪ জনের মধ্যে গর্ভবতী ম্যারিয়ামা ডিওফ ছিলেন একমাত্র বেঁচে যাওয়া নারী যাত্রী।

আরএমএস টাইটানিক
সামুদ্রিক ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত হচ্ছে টাইটানিক দুর্ঘটনা। ১৫ এপ্রিল ১৯১২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যাওয়ার পথে আটলান্টিক মহাসাগরে বিশাল আকৃতির বরফখণ্ডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায় জাহাজটি। এই দুর্ঘটনায় ১,৫১৪ জন লোক মারা যায়। বেসামরিক লোকের মৃত্যুর দিক থেকে টাইটানিক দুর্ঘটনা সামুদ্রিক ইতিহাসে তৃতীয় ভয়াবহ দুর্ঘটনা। বরফখণ্ডের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পরবর্তী আড়াই ঘণ্টা জাহাজটি ধীরে ধীরে পানিপূর্ণ হয়। পুরোপুরি ডুবে যাওয়ার আগ মুহূর্তে জাহাজটি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। কিছুসংখ্যক যাত্রী ও ক্রু লাইফ বোটে উঠে বেঁচে আসতে পেরেছিল। যারা পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তাদের অধিকাংশই বরফ ঠাণ্ডা পানির কারণে হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।


Friday, May 11, 2012

চিনি মসজিদ, সৈয়দপুর

0 comments
ঐতিহাসিক চিনি মসজিদটি নীলফামারী সদর থেকে ২০ কি. মি. দূরে সৈয়দপুরে অবস্থিত। মসজিদটি ১৮৬৩ সালে নির্মাণ করা হয়। চিনি মসজিদের রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস,১৮৬৩ সালে হাজী বাকের আলী ও হাজী মুকু ইসলামবাগ ছন ও বাঁশ দিয়ে একটি মসজিদ নির্মান করেন। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সহায়তায় টিন দিয়ে এটি রূপান্তরিত করা হয়।এলাকার মানুষেরা মাসিক আয়ের একটি অংশ দিয়ে মসজিদের জন্য ফাণ্ড গঠন করে। পরবর্তীতে শঙ্কু নামের এক হিন্দু ব্যক্তি দৈনিক ১০ আনা মজুরীতে মসজিদ নতুনভাবে নির্মান শুরু করেন। এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে তাকে সাহায্য করতে থাকেন। মসজিদের গাত্রে চিনামাটির থালার ভগ্নাংশ, কাঁচের ভগ্নাংশ বসিয়ে ইট ও সুরকি দিয়ে নির্মান কাজ করা হতে থাকে। এই পদ্ধতিকে বলা হয়ে থাকে চিনি করা বা চিনি দানার কাজ করা। এ থেকেই এই মসজিদের নাম চিনি মসজিদ বা চীনা মসজিদ। চীনা মাটির থালার ভগ্নাংশ দিয়ে গোটা মসজিদ মোড়ানো বলে একে অনেকেই চীনা মসজিদও বলে থাকে। আর এই চিনামাটির তৈজসপত্র নিয়ে আসা হয়েছিল কলকাতা থেকে। মসজিদ নকশা করেন মো. মোখতুল ও নবী বক্স। মসজিদের অনন্য কারুকার্যে সত্যিই মুগ্ধ হতে হয়। ফুলদানি, ফুলের ঝাড়, গোলাপফুল, একটি বৃন্তে একটি ফুল, চাঁদ তারা মসজিদের গাত্রে খঁচিত রয়েছে। এছাড়াও মুগ্ধ হতে হয় তত্‍কালিন আরবীয় ক্যালিপ্ট্রা দেখে। এ মসজিদ তৈরিতে প্রচুর মার্বেল পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। ২৭টি মিনার রয়েছে মসজিদটিতে। চিনি মসজিদের সৌন্দয্য দেশ বিদেশের প্রচুর পর্যটককে আকর্ষন করে বলেই তারা ছুটে আসেন। নিজ চোখে না দেখলে চিনি মসজিদের সৌন্দর্য উপলব্ধি করা যাবে না। এ মসজিদের পিছনেই রয়েছে খ্রিষ্টানদের প্রাচীন একটি কবরস্হান।

লেখাঃ মেষ তাড়ুয়া
ছবিঃ সামছা আকিদা জাহান

Thursday, May 10, 2012

রক্ত পরীক্ষা করেই জানা যাবে একজন মানুষ কতদিন বাঁচবে

0 comments
রক্ত পরীক্ষা করেই জানা যাবে একজন মানুষ কতদিন বাঁচবে। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষার মাধ্যমে মানুষের বুড়িয়ে যাওয়ার গতি বের করবেন এবং তার সম্ভাব্য আয়ুও বলে দিতে পারবেন। আর এর জন্য খরচ হবে মাত্র ৪৩৫ পাউন্ড (ব্রিটিশ মুদ্রা), বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫২ হাজার টাকা।
এই রক্ত পরীক্ষার ফলাফল বিশেষ করে জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর জন্য জরুরি। অকাল মৃত্যু, দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু ইত্যাদি তথ্য বীমা কোম্পানিগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চলতি বছর শেষের দিকে বিতর্কিত এই পরীক্ষা ব্রিটেনের বাজারে উন্মুক্ত করা হবে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ খবর বেরিয়েছে।
এই পরীক্ষায় একজন ব্যক্তির ক্রোমোসোমের প্রান্তে থাকা ফিতাকৃতি টেলোমেয়ারসের গঠন পরিমাপ করা হবে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, বুড়িয়ে যাওয়ার গতি পরিমাপ করার নির্ধারক উপাদান হচ্ছে টেলোমেয়ারস।
বিজ্ঞানীদের মতে, একজন ব্যক্তির জৈবিক (বায়োলজিক্যাল) বয়স প্রকৃত কালানুক্রমিক (ক্রনোলজিক্যাল) বয়সের তুলনায় তরুণ নাকি প্রবীণ তা জানা যাবে তার টেলোমেয়ারসের দৈর্ঘ্য পরিমাপ করে।
মাদ্রিদের স্প্যানিশ ন্যাশনাল ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টারের মারিয়া ব্লাসকো বলেন, ‘আমরা জানি, যেসব মানুষ স্বল্পদৈর্ঘ্যরে টেলোমেয়ারস নিয়ে জন্ম নেয়, তাদের আয়ু কম।’ তিনি বলেন, ‘তবে আমরা জানি না, দীর্ঘ টেলোমেরেসসম্পন্ন মানুষ বেশিদিন বাঁচে কি না। মানুষের ক্ষেত্রে জানা যায়নি।’
তবে বিজ্ঞানীরা মানুষের আয়ু জানার আগ্রহ মেটাতে পারবেন বলে আশা করছেন। মানুষ তা আয়সীমা জেনে নিয়ে জীবনের পরিকল্পনা করবেন। তবে তারা মনে করেন না যে, মাস বা বছর ধরে মানুষের আয়ুর নিখুঁত হিসেব কষা যাবে।
ডঃ ব্লাসকো বলেন, ‘এই পরীক্ষার নতুনত্ব হচ্ছে, এটা অত্যন্ত নির্ভুল। টেলোমেয়ারের দৈর্ঘ্যরে অত্যন্ত অল্প পার্থক্য আমরা নির্ণয় করতে পারি। একইসঙ্গে রক্তের অনেক নমুনা জড়ো করতে সম্ভব হওয়ায় এটা অত্যন্ত সহজ ও দ্রুত সেরে ফেলা যায়।’
ডঃ ব্লাসকোর কোম্পানি লাইফ লেংথ ইউরোপের বিভিন্ন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করছে। ব্রিটেনসহ বিভিন্ন দেশে এর বাজারজাতকরণ হবে। রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হবে এবং স্পেনে এর গবেষণা চলবে। ব্রিটেনের একটি কোম্পানির সঙ্গে এক বছরের মধ্যে এসংক্রান্ত চুক্তি হতে যাচ্ছে বলেও ডঃ ব্লাসকো জানান।

মাডিরা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, পর্তুগাল

0 comments
এটা পর্তুগালের ফুনচাল এলাকাতে অবস্হিত। ১৯৬৪ সালে যখন প্রথম তৈরী করা হয় তখন এটার রানওয়ের দৈর্ঘ ছিল ১৬০০ মিটার যা মাঝারি প্লেনের জন্যও ছোট ছিল।
১৯৭৭ সালে একটা ৭২৭ বোয়িং রানওয়ের দৈর্ঘ্য কম হওয়ার দরুন এখানে দুর্ঘটনায় পড়ে আর ১৩১ জন আরোহী নিহত হন। তখন কতৃপক্ষের টনক নড়ে। ৮ বছরে এটার রানওয়ের দৈর্ঘ্য ২০০ মিটার বাড়ানো হয় আর ২০০০ সালের মধ্যে এটার রানওয়ে লম্বায় আগের দ্বিগুন করা হয়। তবে মজার ব্যাপার হল এই লম্বায় বাড়ানোটা সম্পুর্ণ করা হয় শ্রেফ পিলারের উপর, কোন মাটি ভরাট করে নয়। মোট ১৮০ টা কংক্রীট পিলার দেয়া হয় আর প্রত্যেকটা পিলার ২২০ ফিট উচু করে বানানো হয় আর তার উপর দাড়িয়ে থাকে রানওয়ের অতিরিক্ত দৈর্ঘ্যটুকু।



এই অপুর্ব নির্মান কাজের জন্য ২০০৪ সালে এটা International Association of Bridge and Structural Enfineering (IABSE) এর পুরষ্কার লাভ করে।

লিখেছেন: ঢাকাবাসী

Monday, May 7, 2012

সুস্থ ঠোঁটের জন্য

0 comments
সৌন্দর্যের একটি অপরিহার্য অংশ মসৃণ সুস্থ ঠোঁট। মসৃণ ও সুস্থ ঠোঁট পেতে চাইলে নিচের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করুন।
প্রতিদিন সকালে নরম টুথব্রাশ দিয়ে ঘষে ঠোঁটের মরা চামড়াগুলো তুলে ফেলুন। ঠোঁটো আর্দ্রতা ধরে রাখতে লিপবাম ব্যবহার করুন।

দাঁত দিয়ে কখনোই ঠোঁট কামড়াবেন না। এতে করে ঠোঁটের মরা চামড়া উঠে আসে এবং ঠোঁট আরও শুষ্ক ও খসখসে হয়ে যায়।

লিপস্টিক লাগানোর আগে অবশ্যই ঠোঁটে লিপবাম দিয়ে নিবেন। এতে করে কোমল ঠোঁটকে লিপস্টিকের কৃত্রিম রঙের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা করবে লিপ বাম।

শাক-সবজি ও প্রচুর ফলমূল খান সবসময়। ভিটামিন শরীর ও ঠোঁটের জন্য খুবই ভালো।

প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।

সবসময় ঠোঁট আর্দ্র রাখতে লিপবাম ব্যবহার করুন।

রাতের বেলায় ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভালো করে ঠোঁটে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ভেসলিন অথবা লিপবাম ব্যবহার করুন। এতে করে আপনার ঠোঁটের প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা বজায় থাকবে এবং প্রতিদিন সকালে আপনি অনুভব করবেন নরম, কোমল এবং মসৃণ ঠোঁট।

ইত্তেফাক

শান্তিনিকেতন

0 comments
রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন সারা বিশ্বে পরিচিত। ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে দেবেন্দ্রনাথ বোলপুর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে রায়পুর গ্রামের জমিদার ভুবনমোহন সিংহের বাড়িতে উপাসনা করতে এসেছিলেন। এ সিংহ পরিবারের জমিদার ভুবনমোহনের নামেই আজকের শান্তিনিকেতনের গা ঘেঁষে ভুবনভাঙা গ্রাম। এ গ্রামেই তৈরি হয় শান্তিনিকেতন। ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দের ৮ মার্চ তিনি তার শান্তিনিকেতন জাতিকে দান করে দেন। দানপত্রের অন্যান্য শর্তাবলীর মধ্যে ছিল একটি বিদ্যালয় স্থাপন করা। রবীন্দ্রনাথের ভ্রাতুষ্পুত্র বলেন্দ্রনাথ ঠাকুর বিদ্যালয় স্থাপনের প্রাথমিক উদ্যোগ নেন। কিন্তু তার অকাল মৃত্যুতে বিদ্যালয় স্থাপন স্থগিত হয়ে যায়। তারপর বাংলা ১৩০৮ সালের ৭ পৌষ ইংরেজি ১৯০১ সালের ২২ ডিসেম্বর রবীন্দ্রনাথ মাত্র পাঁচজন ছাত্র নিয়ে 'ব্রাহ্মচর্যাশ্রম' নাম নিয়ে নতুন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ওই ঐতিহাসিক ৭ পৌষকে স্মরণ করে আজও শান্তিনিকেতনে প্রতি বছর পৌষমেলা হয়।
ব্রাহ্মচর্যাশ্রম নিয়ে কিছু বিতর্কেরও সূত্রপাত হয় শিক্ষকদের বেতন ও ছাত্রদের খরচ ইত্যাদির কারণে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের উদ্দেশ্য ছিল বিদ্যায়তন আশ্রমের ভাবে অনুপ্রাণিত হয়ে অগ্রসর হবে। তিনি বলেন, '... ভারতবর্ষে যদি সত্যিই বিদ্যালয় স্থাপিত হয় তবে গোড়া হতেই সে বিদ্যালয় তাহার অর্থশাস্ত্র, তাহার কৃষিতত্ত্ব, তাহার স্বাস্থ্যবিদ্যা, তাহার সমস্ত ব্যবহারিক বিদ্যাকে আপন প্রতিষ্ঠা স্থানের পল্লীর মধ্যে প্রয়োগ করিয়া দেশের জীবনযাত্রার কেন্দ্রস্থান অধিকার করিবে। এই বিদ্যালয় আদর্শ চাষ করিবে, গো-পালন করিবে, কাপড় বুনিবে এবং নিজের আর্থিক সম্বল লাভের জন্য সমবায় প্রণালী অবলম্বন করিয়া ছাত্র, শিক্ষক ও চারদিকের অধিবাসীদের সঙ্গে জীবিকারযোগে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হইবে। এইরূপ আদর্শ বিদ্যালয়কে আমি 'বিশ্বভারতী' নাম দিবার প্রস্তাব করিয়াছি।'

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯২১ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২২ সালের মে মাসে 'বিশ্বভারতী সোসাইটি' রেজিস্ট্রিভুক্ত সংস্থায় পরিণত হয়। এ বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের একটি ব্যতিক্রমী বিদ্যাপীঠ। শিশু শ্রেণী থেকে পিএইচডি পর্যন্ত এখানে শিক্ষা লাভ করা যায়। এর প্রাকৃতিক শোভা, বিচিত্র বৃক্ষরাজি, ঐতিহ্যের প্রবল উপস্থিতি, প্রাণের উচ্ছ্বাস, অকৃত্রিম আতিথেয়তা মানুষকে বারবার কাছে টানে।
শান্তিনিকেতনে তথা বিশ্বভারতীর অতি যত্নে সুরক্ষিত ঐতিহ্যগুলো হলো_ ছাতিম তলা, বকুল বীথি, আম্রকুঞ্জ, শান্তিনিকেতন গৃহ, উপাসনা গৃহ, কাঁচমন্দির, তালধ্বজ, তিন পাহাড়, নতুন বাড়ি, দেহলী, ঘণ্টাতলা, গৌর প্রাঙ্গণ, শমীন্দ্র শিশু পাঠাগার, পূর্ব ও পশ্চিম তোরণ, সিংহ সদন, পাঠভবন, চৈতি, বেনুকুঞ্জ, দিনয়নিকা মুকুটঘর, চীন ভবন, হিন্দি ভবন, কেন্দ্রীয় পাঠাগার, কালোবাড়ি পান্থশালা, উত্তরায়ন, কোনার্ক, শ্যামলী, পুনশ্চ, গুহাঘর, চাম্পা লেক, উদীচী, গুরুপল্লী, দ্বিজচিরাম, রবীন্দ্র মিউজিয়াম (বিচিত্রা) ইত্যাদি। রবীন্দ্রনাথ একেশ্বরবাদী ছিলেন বিধায় কোনো দেবদেবীতে তার বিশ্বাস ছিল না। তাই বিশ্বভারতীর কোথাও কোনো দেবদেবীর মূর্তি নেই। বিখ্যাত কিছু শিল্পীর বিখ্যাত কিছু মূর্তি আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো_ রামকিঙ্কর বেইজের 'মায়ের কোলে সন্তান' ভাস্কর্যটি শান্তিনিকেতন গৃহের ঠিক সামনে স্থাপিত। তার আরও দুটি কালজয়ী ভাস্কর্য 'সাঁওতাল পরিবার' ও সাঁওতাল রমণীদ্বয়ের স-পুত্র মিল অভিমুখে গমনকালের 'বাঁশি'। এ ছাড়াও মহাত্দা গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ ও বুদ্ধদেব বসুর আবক্ষ ভাস্কর্য রয়েছে। শান্তিনিকেতনের উল্লেখযোগ্য ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আছেন_ ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্ধিরা গান্ধী, ভারতের সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি সুধীররঞ্জন দাস, রাজ্যপাল শ্রী গোপাল রেড্ডি, অস্কারপ্রাপ্ত চিত্রপরিচালক সত্যজিৎ রায়, নোবেল বিজয়ী প্রফেসর অমর্ত্য সেন, পৃথিবীর মধ্যে সর্বাধিক ভোটে বিজয়ী হয়ে ওয়ার্ল্ড গিনেস বুকে নাম লেখার অধিকারী গায়ত্রী দেবী, জয়পুরের মহারানী-১৯৬১ ও আফ্রিকা মহাদেশের ঘানার সাবেক রাষ্ট্রপতি জন কুফুয়োর-২০০১ প্রমুখ। কবি তার মৃত্যুর কিছু দিন আগে শান্তিনিকেতন সম্পর্কে লিখেছিলেন_ 'যখন রব না আমি মর্ত্যকায়ায়/তখন স্মরিতে যদি হয় মন/তবে তুমি এসো হেথা নিভৃত ছায়ায়/যেথা এই চৈত্রের শালবন।' আজও বাঙালির শিক্ষা ও শিল্পচর্চার প্রধান কেন্দ্র হয়ে আছে এ প্রতিষ্ঠান। প্রতি বছর দেশ- বিদেশের বহু মানুষ বেড়াতে আসে এখানে।

* মির্জ্জা মেহেদী হাসান

রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভ্রমণ

0 comments
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মোট ১২ বার বিশ্বভ্রমণে বেরিয়ে ছিলেন। ১৮৭৮ থেকে ১৯৩২ সালের মধ্যে তিনি পাঁচটি মহাদেশের ৩০টিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেন। প্রথম জীবনে দুই বার (১৮৭৮ ও ১৮৯০ সালে) তিনি ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন। ১৯১২ সালে ব্যক্তিগত চিকিৎসার জন্য তৃতীয়বার ইংল্যান্ডে গিয়ে ইয়েটসসহ কয়েকজন ইংরেজ কবি ও বুদ্ধিজীবীর কাছে সদ্যরচিত গীতাঞ্জলি কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ পাঠ করে শোনান। এই ভ্রমণের সময়ই দীনবন্ধু চার্লস ফ্রিয়ার অ্যান্ড্রুজের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের পরিচয় ঘটে। ১৯১৩ সালে সুইডিশ একাডেমী তাকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করে। ১৯১৬-১৭ সালে জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ সাম্রাজ্যবাদ ও উগ্র জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি বক্তৃতা দেন। এসব বক্তৃতাও সংকলিত হয় তার ন্যাশনালিজম (১৯১৭) গ্রন্থে। ১৯২০-২১ সাল নাগাদ আবার ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান কবি। ওই সফরে পাশ্চাত্য দেশগুলোতে তিনি সংবর্ধিত হয়েছিলেন। ১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথ যান চীন সফরে। এরপর চীন থেকে জাপানে গিয়ে সেখানেও জাতীয়তাবাদবিরোধী বক্তৃতা দেন কবি। ১৯২৪ সালের শেষের দিকে পেরু সরকারের আমন্ত্রণে সে দেশে যাওয়ার পথে আর্জেন্টিনায় অসুস্থ হয়েছে কবি ভিক্টোরিয়া ও কাম্পোর আতিথ্যে তিন মাস কাটান। স্বাস্থ্যের কারণে পেরু ভ্রমণ তিনি স্থগিত করে দেন। ১৯২৬ সালে বেনিতো মুসোলিনির আমন্ত্রণে ইতালি সফরে গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। প্রথমে মুসোলিনির আতিথেয়তায় মুগ্ধ হলেও পরে লোকমুখে তার স্বৈরাচারের কথা জানতে পেরে মুসোলিনির কাজকর্মের সমালোচনা করেন কবি। ফলে উভয়ের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে ছেদ পড়ে। পরে রবীন্দ্রনাথ গ্রিস, তুরস্ক ও মিসর ভ্রমণ করে ভারতে ফিরে আসেন। ১৯২৭ সালে চার সঙ্গীকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ গিয়েছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফরে। ওই সময় তিনি ভ্রমণ করেন বালি, জাভা, কুয়ালালামপুর, মালাক্কা, পেনাং, সিয়াম ও সিঙ্গাপুর। ১৯৩০ সালে কবি শেষবার ইংল্যান্ডে যান অঙ্ফোর্ডে হিবার্ট বক্তৃতা দেওয়ার জন্য। এরপর তিনি ভ্রমণ করেন ফ্রান্স, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, সোভিয়েত রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৩২ সালে ইরাক ও পারস্য ভ্রমণে গিয়েছিলেন কবি। এরপর ১৯৩৪ সালে সিংহলে যান রবীন্দ্রনাথ। এটিই ছিল তার সর্বশেষ বিদেশ সফর। রবীন্দ্রনাথ যেসব বইয়ে বিদেশ ভ্রমণে তার অভিজ্ঞতাগুলো লিপিবদ্ধ করে রাখেন সেগুলো হলো_ য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র (১৮৮১), য়ুরোপ-যাত্রীর ডায়রি (১৮৯১, ১৮৯৩), জাপান-যাত্রী (১৯১৯), যাত্রী (পশ্চিম-যাত্রীর ডায়রি ও জাভা-যাত্রীর পত্র, ১৯২৯), রাশিয়ার চিঠি (১৯৩১), পারস্যে (১৯৩৬) ও পথের সঞ্চয় (১৯৩৯)। ব্যাপক বিশ্বভ্রমণের ফলে রবীন্দ্রনাথ তার সমসাময়িক অরিঁ বের্গসঁ, আলবার্ট আইনস্টাইন, রবার্ট ফ্রস্ট, টমাস মান, জর্জ বার্নার্ড শ, এইচ জি ওয়েলস, রোম্যাঁ রোলাঁ প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছিলেন। জীবনের একেবারে শেষ পর্বে পারস্য, ইরাক ও সিংহল ভ্রমণের সময় মানুষের পারস্পরিক ভেদাভেদ ও জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে তার বিতৃষ্ণা আরও তীব্র হয়েছিল। অন্যদিকে বিশ্বপরিক্রমার ফলে ভারতের বাইরে নিজের রচনাকে পরিচিত করে তোলার এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে রাজনৈতিক মতবিনিময়ের সুযোগও পেয়েছিলেন তিনি।


* হাসান ভূইয়া



এ ধরনের আরেকটা পোষ্ট
রবীন্দ্রনাথের বাংলাদেশে বসবাস স্থানগুলি

Sunday, May 6, 2012

তীর-ধনুক আবিস্কারের কাহিনী

0 comments

সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। তবে সৃষ্টির আদিতে এমন শ্রেষ্ঠত্ব ছিল না মানুষের। ভয়ঙ্কর পৃথিবীতে বিশালাকারের সব হিংস্র প্রাণীর রাজত্ব ছিল একসময়। কিন্তু মেধা-মনন আর বুদ্ধির জোরে সেসব হিংস্র প্রাণীকে হারিয়ে মানুষ ঠিকই তার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে নেয়। প্রথমদিকে বিশাল সব প্রাণীর চেয়ে শারীরিক দিক থেকে দুর্বল মানুষ নিজেকে বাঁচাতে তুলে নেয় ভারী ভারী পাথরের টুকরো। সেই পাথরের টুকরো ছুঁড়ে তাকে বাঁচতে হয়েছে বিশালাকার প্রাণীদের হাত থেকে। তখনই অস্ত্রের ধারণা আসে মানুষের। একসময় বাঁচার তাগিদে মানুষ আবিষ্কার করে তীর-ধনুক। হয়তো কোনো বেঁকে যাওয়া গাছের ডালে নিজেদেরই শিকার করা প্রাণীর অস্ত্র দিয়ে তৈরি ছিল, আর ভেঙে যাওয়া বর্শার সামনের অংশটুকু দিয়ে কোনো একজনের আবিষ্কৃত তীর-ধনুক মানুষ ব্যবহার করতে শিখল। সেদিন থেকেই মানুষ সভ্যতার আরেক ধাপে এগিয়ে গেল।
ধনুবিদ্যা অর্থাৎ ধনুক দিয়ে তীর ছোঁড়া হলো মানুষের প্রাচীন কলাকৌশলের অন্যতম। প্রাগৈতিহাসিককাল থেকেই ধনুক ছিল যুদ্ধ ও শিকারের প্রধান অস্ত্র। যদিও ১৫ শতাব্দীতে যুদ্ধক্ষেত্রে ধনুকের ব্যবহার লুপ্ত হয়, তবুও শিকারের অস্ত্র হিসেবে এর ব্যবহার অক্ষুণ্ন থাকে। শুরুতে ধনুক তৈরি হতো সাধারণত কাঠ দিয়ে কিন্তু পরবর্তী সময়ে কাঠসহ অন্যান্য অনেক বস্তুর ব্যবহার শুরু হয়। এগুলোকে বলা হয় কম্পোজিট বা যৌগিক ধনুক। ১৯৫০-এর দশকের পর ক্রীড়াযন্ত্র হিসেবে ক্রসবো অর্থাৎ আড় ধনুকের ব্যবহার শুরু হয়। ঠিক তখন থেকেই ধনুকের ছিলারও (দড়ি) অনেক পরিবর্তন ঘটে। ধনুকের ছিলার উপকরণগুলোর মধ্যে রয়েছে পশুর গায়ের লোম, শাকসবজির অাঁশ, শন, রেশম, লিনেন পাক দেওয়া তন্ত্র এবং পশুর চামড়া, বাঁশ বা বেতের ফালি। তখন থেকেই ধীরে ধীরে বিকাশের মাধ্যমে তীরের উদ্ভব হয়। আগে যে তীর ব্যবহার করা হতো তা সম্ভবত কোনো ধরনের নলখাগড়া বা ক্রেন দিয়ে তৈরি হতো। তীর দিয়ে বিদ্ধ করার জন্যও তীরের অগ্রভাগে ধাতু বা পাথরের ফলার ব্যবহার করা হতো। লৌহ ও ইস্পাত আবির্ভাবের পর তীরের বিভিন্ন রকম ডিজাইন বিকাশ লাভ করে। দীর্ঘ ধনুকের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে সংগঠিত আধুনিক ক্রীড়া হিসেবে ধনুবিদ্যা ক্রীড়ার সূত্রপাত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে লাটুকেটে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মধ্যে যে প্রতিযোগিতা হয় তখন থেকেই আন্তর্জাতিক ধনুবিদ্যা প্রতিযোগিতার সূত্রপাত ঘটে। প্রতিযোগিতা পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক আরচারি ফেডারেশন গঠিত হয়। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পুরুষদের জন্য দীর্ঘতম দূরত্ব হলো ৯০ মি. (৯৮.৪ গজ) এবং স্ত্রীলোকদের জন্য ৭০ মি. (৭৬.৫ গজ)। এ ক্রীড়ার প্রতি পৃথিবীব্যাপী আগ্রহ বেড়ে যাওয়ার ফলে ১৯৬৯ সালে ফিল্ম আরচারিকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং দীর্ঘতম তীর ছোঁড়ার দূরত্ব স্থির করা হয় ৬০ মি. (৬৫.৬ গজ) এবং চারটি লক্ষ্যস্থলের বৃহত্তমটির আকৃতি স্থির করা হয় ৬০ সে. মি.। বিংশ শতাব্দীর প্রথম-তৃতীয়াংশে ইউরোপে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে টার্গেট আরচারি একটি জনপ্রিয় ক্রীড়া হিসেবে প্রচলিত হয়। ১৯৩১ সাল থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীরা আসত ফ্রান্স, বেলজিয়াম, সুইডেন, পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও চেকোস্লোভাকিয়া থেকে। ১৯০০, ১৯০৪, ১৯০৮, ১৯২০ সালে আরচারি অলিম্পিক প্রতিযোগিতার অন্তর্ভুক্ত ছিল। তারপর আবার ১৯৭২ সালের অলিম্পিক ক্রীড়ায় আবার এটি প্রচলিত হয়।



* রকমারি ডেস্ক

সুজা মসজিদ, চাঁদপুর

0 comments
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার ওয়ালিপুর গ্রামে শাহ সুজা মসজিদটির অবস্থান। ভবনটির অনেক কিছুই এখন ধ্বংস হয়ে গেছে। তারপরও অতীতের কিছু স্মৃতিচিহ্ন এখনো রয়ে গেছে। তবে মসজিদটির কোনো শিলালিপি পাওয়া যায়নি। জানা যায়, শাহ সুজার এক অফিসার শাহরিয়ার আবদুল্লাহ ১৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে এটি নির্মাণ করেন। শাহরিয়ার তার প্রভুর সম্মানে এর নাম দেন 'সুজা মসজিদ'।
Suza Mosque
সম্পূর্ণ ইটে নির্মিত মসজিদটি আয়তাকার। বাইরের দিক থেকে ১৪.০২ মিটার ী ৬.৮৬ মিটার। চার কোণে রয়েছে চারটি অষ্টভুজাকার, পাশর্্ববুরুজ, যেগুলোর ভিত্তিমূল এখনো ধ্বংসস্তূপে রয়েছে। মসজিদে পাঁচটি প্রবেশপথ রয়েছে। তিনটি পূর্বদিকে এবং উত্তর ও দক্ষিণে একটি করে। পূর্ব পাশ্বর্ের সব প্রবেশ পথই অর্ধ-গম্বুজ ভল্টের নিচে উন্মুক্ত। কেবলা দেয়ালে প্রবেশ পথের অক্ষ বরাবর আছে তিনটি মিহরাব। অর্ধ-অষ্টভুজাকার কেন্দ্রীয় মিহরাবটি অপেক্ষাকৃত প্রশস্ত এবং পেছনের দিকে প্রক্ষিপ্ত। পাশর্্ববর্তী মিহরাব কুলঙ্গিগুলো আয়তাকার। কেন্দ্রীয় প্রবেশপথ ও মিহরাবটির অভিক্ষিপ্ত ছোট মিনারগুলো বিলীন হয়ে গেছে। মসজিদ অভ্যন্তর দুটি প্রশস্ত খিলান দ্বারা তিন ভাগে বিভক্ত। মাঝের অংশটি বর্গাকার এবং পাশ্বর্বর্তী আয়তাকার অংশ দুটি অপেক্ষা বড়। এগুলো অষ্টভুজাকার ড্রামের ওপর স্থাপিত গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। মাঝের গম্বুজটি পাশের দুই গম্বুজ অপেক্ষা বড়। পদ্মচূড়া সংবলিত সব গম্বুজের নির্মাণ কৌশল ঢাকার ইসলাম খান মসজিদের (১৬৩৫-৩৯) নির্মাণ পদ্ধতি লক্ষণীয়। মসজিদটি খুবই জরাজীর্ণ ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা সম্প্রতি এটি সংস্কার করেছেন।

* শাম্মী শিল্পী তুলতুল

Saturday, May 5, 2012

দিনাজপুর, বাংলাদেশ

0 comments
দিনাজপুরের আয়তন ৩,৪৩৭ বর্গকিলোমিটার। প্রধান নদী : ঢেপা, পুনর্ভবা, কাঞ্চন, যমুনা ও আত্রাই।

দিনাজপুরের লিচু আকার আর স্বাদে অনন্য। আর ক’দিন বাদেই সেখানকার গাছে গাছে পাকতে শুরু করবে ফলটি। দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায় লিচু বাগান থাকলেও আমাদের ভ্রমণ কাহারোলের লিচু বাগানে। কারণ লিচু ছাড়াও জায়গাটিতে আছে বাংলাদেশের প্রাচীন স্থাপনা__গোরা শহীদের মাজার, সিংহদুয়ার প্রাসাদ, সীতার কুঠরি, হাবড়া জমিদারবাড়ি, বারদুয়ারি (চিরিরবন্দর), নয়াবাদ মসজিদ।


কান্তজিউ মন্দির
দিনাজপুর শহর থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে কাহারোল থানার কান্তনগর গ্রামে অবস্থিত কান্তজিউ মন্দির। অনেকের মতে কান্তনগরে স্থাপিত বলে এর নাম কান্তজিউ মন্দির। জনশ্রুতি আছে, শ্রী কৃষ্ণের বিগ্রহ অধিষ্ঠানের জন্য এ মন্দির নির্মিত হয়েছিল। দিনাজপুরের তত্কালীন জমিদার প্রাণনাথ রায় ১৭২২ খ্রিস্টাব্দে পোড়ামাটির অলঙ্করণসমৃদ্ধ এ মন্দিরটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। তবে তার জীবদ্দশায় এ মন্দিরের নির্মাণ কাজ শেষ করে যেতে পারেননি। পরে ১৭৫২ খ্রিস্টাব্দে তারই পালক পুত্র রামনাথ রায় মন্দিরের নির্মাণ কাজ শেষ করেন। এর পরে তিনি এ মন্দিরটি শ্রী কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করেন।

প্রায় ৩ ফুট উঁচু এবং ৬০ ফুট বাহুবিশিষ্ট প্রস্তর নির্মিত বর্গাকৃতি সমান্তরাল জায়গার উপর মন্দিরটি দণ্ডায়মান। সৌধ পরিকল্পনায় মন্দিরটি তিন ধাপে নির্মিত। দেখতে অনেকটা বড় আকারের রথের মতো। তিনতলাবিশিষ্ট এবং বর্গাকারে নির্মিত এ মন্দিরটির প্রত্যেক দিকের দৈর্ঘ্য ৫২ ফুট এবং উচ্চতা ৭০ ফুট। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে কিছু অংশ ভেঙে যাওয়ায় উপরের গম্বুজ ঘরের আকৃতি ধারণ করেছে। ভূমিকম্পে ভেঙে যাওয়ার আগে গম্বুজ ঘরের উপরে ৯টি সুদৃশ্য চূড়া ছিল। বারান্দার সামনে রয়েছে ইটের তৈরি দুটি করে স্তম্ভ। এই স্তম্ভের সাহায্যে দেয়ালের সঙ্গে প্রত্যেক পাশে সংযুক্ত রয়েছে তিনটি করে খোলা দরজা। দ্বিতীয় তলার দক্ষিণ পাশের দরজা দুটি বেশি চোখে পড়ে। এই দরজার পরে, ভেতরে মূল কক্ষটি, সেখানে আছে মোট ১৮টি কক্ষ। বড় কক্ষগুলোর চারদিকে আছে ছোট ছোট কক্ষ। মন্দিরের বেদির নিচে এবং দেয়ালের গায়ে পোড়ামাটি খচিত প্রায় লক্ষাধিক ছবি রয়েছে। পৌরাণিক চিত্র সংবলিত টেরাকোটা ছাড়াও মন্দিরের দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন মূর্তির টেরাকোটাও রয়েছে। এসব টেরাকোটার মধ্যে নারী-পুরুষ, দেবতা ও কিন্নর, গায়ক ও বাদক, যোদ্ধা ও শিকারি, গৃহিণী, নৌকার মাঝি, নৃত্যরতা রমণী, পালকি বাহক, গাছপালা, ফল ও ফুল, লতাপাতা ইত্যাদির ছবি মূর্তমান। কান্তজিউ মন্দিরের পাশেই রয়েছে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত এক চূড়া বিশিষ্ট একটি মন্দির। এটিও নির্মাণ করেন মহারাজা প্রাণনাথ। রাজা প্রাননাথ এই মন্দির নির্মাণ করে এখানে কৃষ্ণের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। এই মূর্তি তিনি এনেছিলেন বৃন্দাবন থেকে। এ মন্দিরটি ছিল ১৬ পার্শ্ব সংবলিত সৌধ এবং ৪০ ফুট উচ্চতায়।

নয়াবাদ মসজিদ

কান্তজিউ মন্দির থেকে মাইলখানেক পশ্চিমে রয়েছে ঐতিহাসিক নয়াবাদ মসজিদ। তিন গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদটিও কান্তজি’র সমসাময়িক মসজিদ। এ মসজিদটিতে তিনটি প্রবেশপথ এবং একটি মিহরাব রয়েছে। মসজিদের বাইরে চারপাশ সামান্য উঁচু দেয়ালে ঘেরা এবং দেয়ালের ভেতরের খোলা জায়গা পাকা করা।

Nayabad Masjid in Dinajpur
An oath-ta on the middle doorway

Nayabad Masjid in Dinajpur


কান্তনগরের লিচু বাগান

কান্তজিউ মন্দির থেকে নয়াবাদ মসজিদ যাবার পথে পড়বে বেশ কয়েকটি লিচু বাগান। এখানকার গাছগুলো খুব একটা উঁচু নয়। তবে বেশ বিস্তৃত। গাছগুলো এ সময়ে লিচুতে পরিপূর্ণ। ফল পাকা শুরু হলে গাছগুলো লাল টকটকে হয়ে যায়। থোকায় থোকায় লিচু মাটি ছুঁই ছুঁই করে। ইচ্ছে হলে কোনো বাগান মালিককে বলে লিচু কিনে স্বাদ নিতে পারেন বাগানেই। সঙ্গেও নিয়ে আসতে পারেন। দামেও ঢাকার চেয়ে অনেক কম, তা ছাড়া সরাসরি বাগান থেকে কিনে আনার মজাটাও কম নয়।


রাজবাড়ি
শহরের উত্তর-পূর্ব পাশে এ বাড়ি। এখন ধ্বংসপ্রায়। প্রবেশপথ পেরিয়ে ডান দিকে একটি পুরনো কৃষ্ণমন্দির। বাড়িটি ১৭ একর জায়গার ওপর। তিনটি প্রধান অংশ_আয়নামহল, রানিমহল ও ঠাকুরবাড়ি মহল। এ ছাড়া আছে অতিথিশালা, চিকিৎসালয়, কর্মচারীদের আবাসস্থল ও দিঘি। মহারাজ প্রাণনাথ রায় ও তাঁর পোষ্যপুত্র রামনাথ অষ্টাদশ শতাব্দীতে এগুলো নির্মাণ করেন। শহরের ঢাকা বাসস্ট্যান্ড থেকে রাজবাড়ি যেতে রিকশাভাড়া লাগে ৩৫ টাকা।

রামসাগর দিঘি
শহর থেকে আট কিলোমিটার দক্ষিণে আউলিয়াপুর ইউনিয়নে দিঘিটি। রামসাগর নামটি শুনলে মনে হয় এটি বুঝি কোনো সাগরের নাম। প্রকৃতপক্ষে রামসাগর কোনো সাগর নয়, এটি একটি দিঘি। দারুণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এই দিঘিটি মানুষের খনন করা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দিঘি। দিনাজপুর শহর থেকে পাঁচ মাইল দক্ষিণে এই দিঘিটির অবস্থান। বর্তমানে এখানে গড়ে উঠেছে একটি মনোরম পার্ক। পলাশী যুদ্ধের কিছুকাল আগে দিনাজপুরের বিখ্যাত রাজা রামনাথ দিঘিটি খনন করান। রাজা রামনাথের নামেই এই দিঘির নামকরণ করা হয় রামসাগর। পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোর পানির চাহিদা পূরণের জন্য দিঘিটি খনন করা হয়। বলা হয়ে থাকে, সে সময় (১৭৫০-১৭৫৫ খ্রি.) দিনাজপুর অঞ্চলে প্রচণ্ড খরা ও দুর্ভিক্ষ চলছিল। রাজা রামনাথ অভাবী মানুষদের সাহায্য করার জন্য 'কাজের বিনিময়ে খাদ্য' এমন বন্দোবস্তের মাধ্যমে দিঘিটি খনন করান। এতে প্রায় ১৫ লাখ শ্রমিক অংশ নেন এবং সে সময়ের মুদ্রায় ব্যয় হয় ৩০ হাজার টাকা। দিঘিটির চারপাশে সবুজ গাছপালায় ভরা। দিঘিটি উত্তর-দক্ষিণে লম্বা। এর জলভাগের দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার। দিঘির পশ্চিম পাড়ের বিপরীতে একটি ছোট কৃত্রিম চিড়িয়াখানা আছে। বর্তমানে রামসাগর দিঘিটি পর্যটন বিভাগ তত্ত্বাবধান করে থাকে। পর্যটন করপোরেশন দিঘিটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য এখানে একটি মনোরম ও আধুনিক বিশ্রামাগার স্থাপন করেছে। শহরের ঈদগার টেম্পোস্ট্যান্ড থেকে অটো বাইকে দিঘি পর্যন্ত যেতে ভাড়া লাগে ২০ টাকা।


কীভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী বাসগুলো সাধারণত ছাড়ে গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে। ভাড়া ৫০০-৫৫০ টাকা। এ পথে ভালো বাস সার্ভিস হলো—হানিফ এন্টারপ্রাইজ, এস আর ট্রাভেলস, কেয়া পরিবহন, এসএ পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন ইত্যাদি। এ ছাড়া কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর দ্রুতযান এক্সপ্রেস ছাড়ে সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে। আর আন্তঃনগর একতা এক্সপ্রেস ছাড়ে সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে। ভাড়া শোভন সিট ১৮৫, শোভন চেয়ার ২৫০, প্রথম শ্রেণী চেয়ার ৩৫০, প্রথম শ্রেণী বার্থ ৫৩৫, এসি চেয়ার ৬১৮, এসি বার্থ ৮৯৭ টাকা। দিনাজপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ছাড়ে সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে আর একতা এক্সপ্রেস ছাড়ে সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে।

দিনাজপুর কেন্দ্রীয় বাস স্টেশন থেকে পীরগঞ্জগামী বাসে কান্তনগর নামতে হবে। ভাড়া জনপ্রতি ২০-২৫ টাকা। সেখানে নেমে ঢেপা নদী পার হয়ে একটু সামনেই মন্দিরটি। শীতের সময় নদী পায়ে হেঁটে পার হতে পারলেও বর্ষায় নৌকায় পার হতে হবে।

কোথায় থাকবেন

দিনাজপুর শহরে থাকার জন্য ভালো মানের হোটেল হচ্ছে পর্যটন মোটেল (০৫৩১-৬৪৭১৮)। এ ছাড়া ঢাকায় পর্যটনের প্রধান কার্যালয় থেকেও এ মোটেলের বুকিং দিতে পারেন। ফোন :৯৮৯৯২৮৮-৯১। দিনাজপুরের পর্যটন মোটেলে এসি টুইনবেড ১৫০০ টাকা এবং এসি টুইনবেড ডিলাক্স কক্ষ ১৮০০ টাকা। এ ছাড়া দিনাজপুরের অন্যান্য সাধারণ মানের হোটেলে ১০০-১২০০ টাকায় রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা আছে। কয়েকটি সাধারণ মানের হোটেল হলো—মালদহ পট্টিতে হোটেল ডায়মন্ড (০৫৩১-৬৪৬২৯), নিমতলায় হোটেল আল রশিদ (০৫৩১-৬৪২৫১), হোটেল নবীন (০৫৩১-৬৪১৭৮), হোটেল রেহানা (০৫৩১-৬৪৪১৪), নিউ হোটেল (০৫৩১-৬৮১২২)।


উৎসঃ ইত্তেফাক
ছবিঃ পয়গম্বর কাঊসার রুশো'র ব্লগ
আরো জানতে চাইলে এখানে দেখুন

ডায়রিয়া হলে কি করবেন

0 comments
ডায়ারিয়া বা পাতালা পায়খানা হলে রোগীকে স্যালাইন খেতে দিতে হবে। অল্প অল্প করে বারে বারে খাওয়াতে হবে। প্রতিবার দাস্তের পর দেড়-দুই আউন্স পরিমাণ অর্থাত্ যে পরিমাণ পানি পায়খানার সঙ্গে বেরিয়ে যাবে সে পরিমাণ খাবার স্যালাইন রোগীকে খাইয়ে দিতে হবে। এক সঙ্গে বেশী পরিমাণে স্যালাইন খাওয়ালে রোগী বমি করতে পারে; সে জন্য নিয়ম হলো: রোগীকে খাওয়াতে হবে অল্প অল্প করে, বারে বারে। স্যালাইন খাওয়ানোর পাশাপাশি স্বাভাবিক খাবার সবকিছুই খেতে দিতে হবে; খাবার বন্ধ করা যাবে না। তরল খাবার বেশী করে দিতে হবে। স্যালাইনের প্যাকেট বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এই প্যাকেটের স্যালাইন ১ সের বা (যে পরিমাণ পানি প্যাকেটের গায়ে লিখা থাকে) সিদ্ধ করা ঠাণ্ডা পানিতে মিশিয়ে খাবার স্যালাইন তৈরী করা হয়। একবার তৈরী করা খাবার স্যালাইন ১২ ঘন্টা পর্যন্ত রেখে খাওয়ানো যেতে পারে, এর পর আরও স্যালাইনের প্রয়োজন হলে উপরোক্ত নিয়মে আবার নতুন করে বানাতে হবে। স্যালাইনের প্যাকেট বাজারে কিনতে পাওয়া না গেলে কিংবা কিনার সামথ্য না থাকলে দুশ্চিন্তার কিছই নেই; আজকাল ঘরে বসেই খাবার স্যালাইন বানানো যায়। তিন আঙ্গুলের প্রথম ভাঁজের এক চিমটি লবণ, চার আঙ্গুলের এক মুষ্ঠি গুড় (বা চিনি) আধা সের বিশুদ্ধ পানিতে মিশিয়ে এ স্যালাইন বানানো যায়। অতি সমপ্রতি চালের গুঁড়ো দিয়ে আরো উন্নতমানের খাবার স্যালাইন তৈরীর পদ্ধতি এ-দেশেই আবিষ্কৃত হয়েছে। এ স্যালাইন আধিকতর ফলপ্রসূ ও কার্যকর; ডায়রিয়ার সফল চিকিত্সার সাথে সাথে তা শরীরে বাড়তি শক্তি যোগায়; আর চালের গুঁড়ার এই স্যালাইন বানানোও খুব সোজা। প্রথমে একটি পরিষ্কার পাত্রে আধা সেরেরও কিছু বেশী (আড়াই পোয়া) বিশুদ্ধ পানি (ডিউবওয়েলের পানি হলেও চলবে) নিতে হবে, এতে পাঁচ সমানচামচ (ওষুধের চামচে) চালের গুঁড়ো মিশাতে হবে। এরপর তা ৩ থেকে ৫ মিনিট জ্বাল দিয়ে সিদ্ধ করতে হবে এবং সাথে সাথে একটি পরিষ্কার চামচ দিয়ে বার বার নাড়াতে হবে, যেন চাল-গুঁড়া দলা না পাকিয়ে যায়। ৩-৫ মিনিট পর পাত্রটি চুলো থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে এতে তিন আঙ্গুলের প্রথম ভাঁজের সমান এক চিমটি লবণ মিশিয়ে দিতে হবে। এবারে এই স্যালাইন খাওয়ার উপযোগী হলে গেল। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখযোগ্য যে, তৈরীর পর কোন স্যালাইন ১২ ঘন্টার বেশী রাখা উচিত নয়; ১২ ঘন্টা পর, প্রয়োজনে, আবার নতুন করে খাবার স্যালাইন বানাতে হবে।

Friday, May 4, 2012

ওজিল ও আমলা

1 comments
আজ আপনাদের দুজন চমৎকার মুসলিম খেলোয়াড়ের সাথে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেব।
উপরের ছবিতে যাকে দেখছেন, তিনি স্পেনের বিখ্যাত ফুটবল ক্লাব রিয়েল মাদ্রিদ ও জার্মানির হয়ে খেলা মুসলিম খেলোয়াড় ওজিল। ওজিল জন্মগত ভাবে একজন তুর্কি মুসলিম। আভিজাত্যর মধ্যে থেকেও ওজিল ভুলেননি সৃষ্টিকর্তা আল্লাকে।এখনও প্রতি ম্যাচে মাঠে নামার আগে ওজিল নফল নামায আর কোরআন শরীফ পড়ে মাঠে নামেন, খেলা শুরু হবার আগে মাঠেই মোনাজাত করেন।

নিচের ছবিতে যাকে দেখছেন, তিনি দক্ষিন আফ্রিকার সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হাশিম আমলা, সাথে রয়েছেন দক্ষিন আফ্রিকার আরেক ব্যাটসম্যান জ্যাক ক্যালিসের। ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে মানার চেষ্টা করেন আমলা। মুসলমানদের ইঙ্গিত করে উনাকে "সন্ত্রাসী" আখ্যা দেওয়ায় তিনি এক টিভি কমেন্টেটর এর বিরুদ্ধে মুসলিম বিদ্বেষের অভিযোগ ও আনেন। তিনি রোজার রাখার জন্য ও এক সফর থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন একবার। আইপিলে লাভের অংশ থেকে টাকা দেওয়ার কিছু নিয়ম নীতি মুসলিম বিধানের সাথে সাংঘর্শিক হওয়াতে তিনি আইপিএল এর মতো বিপুল টাকার এই আসর থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন। এখন ছবিতে ভালো করে লক্ষ্য করুন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে ক্যালিসের জার্সিতে ক্যাসল নামক একটি বিয়ার কোম্পানির লোগো থাকলেও আমলার জার্সিতে তা অনুপস্থিত। কারন ইসলামে মদ জাতীয় যেকোন পানিয়র বিক্রি, তৈরি এমনকি তার প্রচার সম্পুর্ন নিষিদ্ধ। আর তাই আমলা দক্ষিন আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড ও দক্ষিন আফ্রিকা ব্রিউয়ার্স এর অনুমতি নিয়ে ক্যাসল এর লোগো তার জার্সিতে লাগান না।অবশ্য এ জন্য তাকে প্রতি মাসে ৫০০ ডলার করে জরিমানা গুনতে হয়।

[পোস্টটি ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে,তাদের দেখার সুযোগ করে দিন ]