ডায়ারিয়া বা পাতালা পায়খানা হলে রোগীকে স্যালাইন খেতে দিতে হবে। অল্প অল্প করে বারে বারে খাওয়াতে হবে। প্রতিবার দাস্তের পর দেড়-দুই আউন্স পরিমাণ অর্থাত্ যে পরিমাণ পানি পায়খানার সঙ্গে বেরিয়ে যাবে সে পরিমাণ খাবার স্যালাইন রোগীকে খাইয়ে দিতে হবে। এক সঙ্গে বেশী পরিমাণে স্যালাইন খাওয়ালে রোগী বমি করতে পারে; সে জন্য নিয়ম হলো: রোগীকে খাওয়াতে হবে অল্প অল্প করে, বারে বারে। স্যালাইন খাওয়ানোর পাশাপাশি স্বাভাবিক খাবার সবকিছুই খেতে দিতে হবে; খাবার বন্ধ করা যাবে না। তরল খাবার বেশী করে দিতে হবে। স্যালাইনের প্যাকেট বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এই প্যাকেটের স্যালাইন ১ সের বা (যে পরিমাণ পানি প্যাকেটের গায়ে লিখা থাকে) সিদ্ধ করা ঠাণ্ডা পানিতে মিশিয়ে খাবার স্যালাইন তৈরী করা হয়। একবার তৈরী করা খাবার স্যালাইন ১২ ঘন্টা পর্যন্ত রেখে খাওয়ানো যেতে পারে, এর পর আরও স্যালাইনের প্রয়োজন হলে উপরোক্ত নিয়মে আবার নতুন করে বানাতে হবে। স্যালাইনের প্যাকেট বাজারে কিনতে পাওয়া না গেলে কিংবা কিনার সামথ্য না থাকলে দুশ্চিন্তার কিছই নেই; আজকাল ঘরে বসেই খাবার স্যালাইন বানানো যায়। তিন আঙ্গুলের প্রথম ভাঁজের এক চিমটি লবণ, চার আঙ্গুলের এক মুষ্ঠি গুড় (বা চিনি) আধা সের বিশুদ্ধ পানিতে মিশিয়ে এ স্যালাইন বানানো যায়। অতি সমপ্রতি চালের গুঁড়ো দিয়ে আরো উন্নতমানের খাবার স্যালাইন তৈরীর পদ্ধতি এ-দেশেই আবিষ্কৃত হয়েছে। এ স্যালাইন আধিকতর ফলপ্রসূ ও কার্যকর; ডায়রিয়ার সফল চিকিত্সার সাথে সাথে তা শরীরে বাড়তি শক্তি যোগায়; আর চালের গুঁড়ার এই স্যালাইন বানানোও খুব সোজা। প্রথমে একটি পরিষ্কার পাত্রে আধা সেরেরও কিছু বেশী (আড়াই পোয়া) বিশুদ্ধ পানি (ডিউবওয়েলের পানি হলেও চলবে) নিতে হবে, এতে পাঁচ সমানচামচ (ওষুধের চামচে) চালের গুঁড়ো মিশাতে হবে। এরপর তা ৩ থেকে ৫ মিনিট জ্বাল দিয়ে সিদ্ধ করতে হবে এবং সাথে সাথে একটি পরিষ্কার চামচ দিয়ে বার বার নাড়াতে হবে, যেন চাল-গুঁড়া দলা না পাকিয়ে যায়। ৩-৫ মিনিট পর পাত্রটি চুলো থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে এতে তিন আঙ্গুলের প্রথম ভাঁজের সমান এক চিমটি লবণ মিশিয়ে দিতে হবে। এবারে এই স্যালাইন খাওয়ার উপযোগী হলে গেল। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখযোগ্য যে, তৈরীর পর কোন স্যালাইন ১২ ঘন্টার বেশী রাখা উচিত নয়; ১২ ঘন্টা পর, প্রয়োজনে, আবার নতুন করে খাবার স্যালাইন বানাতে হবে।
উৎসঃ ইত্তেফাক
0 comments:
Post a Comment