গরমের সাথে সাথে মশার যন্ত্রণায় দিশেহারা
অনেকেই। বিরক্তিকর এক প্রানী এই মশা। পুচকে এই মশার জন্য হয় কত রকমের
রোগ। এ মশা নিধনের জন্য কয়েল আর এরোসল দিয়ে ঘরে ঘরে হচ্ছে বায়ু দূষণ।
ঘরে থাকা অবস্থায় মশার থেকে বাঁচার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে মশারি
টাঙ্গানো। অনেকে জানালায় নেট লাগিয়ে নেন বাড়তি সুরক্ষার জন্য। মশারি তো
শুধু মশাকে আপনার কাছ থেকে দূরে রাখে, তাই নয় কি? এমন যদি হতো মশারি মশা
মারতে পারতো! তখন ব্যাপারটি কেমন দাড়াতো, একবার ভেবে দেখুন তো? আর ভাবার
দরকার নেই কারণ এ ধরণের মশারি বাজারে এসে পড়েছে।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় রাসায়নিক দ্রব্য প্রস্তুতকারী জার্মানির বিএএসএফ (BASF) নামক প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় নতুন এক ধরণের মশারি বানাচ্ছে গ্রামীণ সামাজিক ব্যবসা (Grameen Social Business)
নামের প্রতিষ্ঠান। নতুন এ মশারির গায়ে এমন এক রাসায়নিক দ্রব্য ব্যহার
করা হয়েছে যার কারণে এতে মশা বসলে কিছুক্ষণ পর তা মারা যাবে। এ রাসায়নিক
দ্রব্য মানুষের জন্য ক্ষতিকারক নয়। এমনকি নবজাতকও যদি এ মশারিতে মুখ
লাগায় তবুও কোনো সমস্যা হবে না। মশারিটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization) কর্তৃক অনুমোদিত তাই এটি নিরাপদ।
বিএএসএফ ও গ্রামীণ সামাজিক ব্যবসার যৌথ
উদ্যোগে গঠিত বিএএসএফ গ্রামীণ লিমিটেড ২৫ শে মার্চ থেকে আশ্চর্য মশারি
বাজারজাত করা শুরু করেছে। এটির উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের দায়িত্বে আছে
গ্রামীণ ফেব্রিক্স অ্যান্ড ফ্যাশনস লিমিটেড। প্রকল্পটি ক্ষুদ্র পরিসরে শুরু
হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বৃহৎ প্রকল্প গড়ে তোলার সাথে সাথে দেশের বাইরে
রপ্তানি করার চিন্তা করছেন ড. ইউনূস। বর্তমানে প্রতিদিন তিন হাজার পিস
মশারি তৈরি হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ পরিমাণ দাঁড়াবে নয় হাজারে।
বিএএসএফ গ্রামীণের সামাজিক ব্যবসায়ের প্রথম প্রকল্প এই মশারির বাজারজাতকরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণ ব্যাংকের (Grameen Bank)
প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, আশ্চর্য মশারির উৎপাদন ও
বাজারজাতকরণের ফলে এখন মানুষ অল্প খরচে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া থেকে রক্ষা
পাবে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত
হলগার মিশায়েল, বিএএসএফ’এর এশিয়া অঞ্চলের সভাপতি সাওরি ডুবোর্গ এবং
বিএএসএফ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সারিয়া সাদিক।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে সারিয়া সাদিক ও
আশরাফুল হাসান জানান, আশ্চর্য মশারিটি বহুবার অর্থাৎ ২০ বার ধোয়ার পরও এর
কার্যকারিতা সক্রিয় থাকবে। বড় একটি মশারির দাম পড়বে প্রায় ৬৫০ টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, দুটি ইউনিটের মধ্যে স্বল্প পরিসরে একটি
চালু হয়েছে। পুরোপুরি চালু না হওয়ায় এখন দেশি বাজার থেকে মশারির কাপড়
কিনে প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। এ বছরের মধ্যেই পুরোদমে কারখানা চালু হবে। এ
ছাড়া বিএএসএফের অনুমোদন পেলে আগামী বছরই রপ্তানির জন্য দ্বিতীয় ইউনিট
চালু করা হবে।
নেয়া হয়েছে__বিডি ব্লগারজ থেকে
0 comments:
Post a Comment