নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার বক্তাবলীতে ১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর ১শ’ ৩৯ জন নিরীহ ঘুমন্ত গ্রামবাসীকে হত্যা করেছিল পাকসেনারা। প্রতি বছর এ দিনটি আসলেই শোকের ছায়া নামে এলাকাবাসীর মধ্যে।
২৯ নভেম্বর’ ১৯৭১, তখনও ভোরের কুয়াশা কাটেনি। নদী বেষ্টিত চরাঞ্চল বক্তাবলীর মানুষ ছিলেন ঘুমিয়ে। এ গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাটি আছে এমন তথ্য পেয়ে দেশীয় দোসর আল-বদর, আল-সামসদের নিয়ে হামলা চালায় পাক সেনারা। সেদিন পাক সেনারা দু’টি ইউনিয়নের ৫/৬টি গ্রামের প্রায় সবকটি বাড়িঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিল।
নির্মম সেই ঘটনার দিনটি ছিল সোমবার আর এর পরের সোমবারেই ছিলো ভাই হাফিজুরের বিয়ে। ভাইয়ের বিয়ে নিয়ে বেশ উচ্ছাসিত ছিলো বোন রোকেয়া। ঘুর্ণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেননি একমাত্র ভাই হারিয়ে যাবে অজানার দেশে। আর দু’ভাই হারানোর ঘটনা বলতে গিয়ে এখনো চোখের জলে ভাসেন অপর স্কুলশিক্ষক ভাই হারুন উর রশিদ দুলাল ।
তার দাবি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত শেষ করে তাদের রায় কার্যকর করার।
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এসেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। স্বাধীনতা রক্তিম সুর্য উদিত করতে দেশের লাখো মুক্তিযোদ্ধার মতো এই অজপাড়া গাঁ বক্তাবলীবাসীরও রয়েছে যথেষ্ট অবদান। আর তারই স্বীকৃতি চায় এ এলাকার মানুষ। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে এখানে একটি স্মৃতি স্তম্ভ নির্মিত হলেও তা পরিপূর্নতা পায়নি।
ভোরের দিকে পাক হানাদাররা দেশীয় আল বদর, আল সামসদের ও রাজাকারদের নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায় ওই দু’টি ইউনিয়নের ৫/৬টি গ্রামের প্রায় সবকটি বাড়িঘরে। সে বাড়িঘর থেকে কিশোর, যুবক ও বয়স্কদের অস্ত্রের মুখে ধরে এনে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে লাইন করে দাড় করায়। পরেতাদেরকে গুলি করে হত্যা করে। এভাবে হত্যা করে ১শ’ ২৯ জনকে। পরে এলাকার বাড়ি ঘরে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এলাকাবাসীর দাবি, পাকহানাদার বাহিনীর হাতে ওই রাতে নিহত শহীদদের পূর্ণাঙ্গ নামের তালিকা প্রকাশ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মান করে তা সংরক্ষনের দাবি জানান।
0 comments:
Post a Comment