Tuesday, June 19, 2012

নাজিমগড় রিসোর্ট, সিলেট

0 comments
সীমান্তের ওপারেই ঘন সবুজ খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়। পাহাড়ের গায়ে হেলান দিয়ে আছে সবুজের গালিচা। ভেসে বেড়াচ্ছে শিমুল তুলার মতো রাশি রাশি মেঘমালা। পাহাড়ের বুক চিরে নেমে এসেছে ঝরনা। জলরাশির উপর সূর্যের আলো চিকচিক করছে। এই বর্ষায় এমন দৃশ্যে চোখ জুড়িয়ে যাবে যে কারোরই। কিন্তু প্রকৃতির এ রূপ দেখতে হলে তো থাকতে হবে! সে ব্যবস্থাও আছে। সীমান্তের ওপারে ছোট ছোট টিলার ওপর গড়ে উঠেছে অপূর্ব সুন্দর এক রিসোর্ট। নাম নাজিমগড়। নাজিমগড় রিসোর্টে বসেই দেখতে পারেন সবুজ পাহাড়, পাহাড়ের গায়ে ঠেস দিয়ে বসা মেঘ কিংবা ঝরনার জলরাশি। এ বর্ষায় পর্যটকদের সিলেটে স্বাগত জানাচ্ছে নাজিমগড় রিসোর্ট।

কেবল বর্ষা নয়, শীতে আরেক অপার্থিব সৌন্দর্যে ফুটে ওঠে নাজিমগড়। নাজিমগড় রিসোর্টের পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদীটির জল তখন ধারণ করে পান্না সবুজ রং। আকাশ নীল। ওপারে পাহাড়। এপারে চা বাগান। সে আরেক নয়নাভিরাম দৃশ্য। ফলে শীত কিংবা বর্ষা- সব সময়ই নাজিমগড় হয়ে উঠতে পারে বেড়ানোর উত্তম স্থান। পাহাড়, মেঘ, ঝরনা, নদী, চা বাগান, খাসিয়া পল্লী, পানপুঞ্জি- এক জায়গা থেকে সবকিছু দেখার সুযোগ আর কোথায় পাবেন?

সিলেট-জাফলং সড়কের পাশে খাদিমনগরে নাজিমগড় রিসোর্টের অবস্থান। নগরী থেকে গাড়িতে ১৫ মিনিটের রাস্তা। অথচ নাগরিক সব কোলাহল থেকেই মুক্ত সবুজঘেরা এ রিসোর্টটি। অপূর্ব নির্মাণশৈলী, চারপাশের প্রাকৃতিক অপার সৌন্দর্যের কারণে অন্যতম সেরা রিসোর্টে পরিণত হয়েছে নাজিমগড়। প্রায় ছয় একর জায়গার ওপর গড়ে ওঠা এই রিসোর্টে রয়েছে দুই শতাধিক লোকের খাওয়া-দাওয়াসহ রাত যাপনের সুবিধা। রিসোর্টটি সব বয়সীদের জন্যই উপযোগী। নাজিমগড়ে রয়েছে মোট ১৫টি কটেজ। রয়েছে বিশাল বাগান, সুইমিং পুল, পিকনিক ও ক্যাম্পিং স্পট, নদীতে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নিজস্ব স্পিডবোট। স্পিডবোটে চড়ে সারি নদী হয়ে লাল খাল ভ্রমণ_ যে কোনো পর্যটকের জন্যই লোভনীয় অফার। লাল খালে রয়েছে নাজিমগড়ের আকর্ষণীয় রেস্টুরেন্ট, সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ও ওপারের মেঘালয় পাহাড় দেখার জন্য পাহাড়ের উপরে ওয়াচ টাওয়ার। রয়েছে বারবিকিউ পার্টি করার জন্য টেন্ট সাইট আর সারি নদীতে কায়াকিংয়ের (বিশেষ ধরনের ছোট নৌকা) ব্যবস্থা। নুড়ি পাথরের রাজ্য জাফলংয়েও নিজস্ব রেস্টুরেন্ট রয়েছে নাজিমগড়ের। নদীর ওপারে ঝুলন্ত সেতু, এপারে নাজিমগড়ের রেস্টুরেন্ট। পাশেই খাসিয়া পল্লী, পান বরজ। নদীতে চলছে পাথর উত্তোলন। এ সৌন্দর্য উপভোগ করা থেকে কে বঞ্চিত থাকতে চায়। নাজিমগড়ে রয়েছে তিন ধরনের কটেজ। টেরেস, ভিলা ও বাংলো। রিসোর্টের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও সুন্দর কটেজ হলো টেরেস। এখানে প্রায় ৩৫টি ডিলাঙ্ রুম রয়েছে। যার প্রতিটিতেই আছে আলাদা বারান্দা। যেখান থেকে দুই চোখ ভরে দেখা যায় সবুজ পাহাড়। নাজিমগড় দেখে মনে হবে এটি যেন শুধু সবুজে ঘেরা নয়, সবুজেই তৈরি। এখানে রয়েছে চার হাজার বর্গফুটের নান্দনিক ডিজাইনের খোলা লবি। ভিলাও দারুণ সুন্দর কটেজ। এর রয়েছে দুটি প্রিমিয়ার সুইট, পাঁচটি ডিলাঙ্ রুম ও একটি এক্সিকিউটিভ সুইট। রয়েছে আলাদা ব্যালকনি। আর বাংলো দেখতে কলোনির মতো। এটি একটি আলাদা বিল্ডিং। এর আছে ছয়টি প্রিমিয়ার রুম। নাজিমগড়ের তিন ধরনের কটেজেই রয়েছে অসাধারণ নির্মাণশৈলী, নান্দনিক ও আরামদায়ক ফার্নিচার, নিজস্ব ড্রয়িং কাম ডাইনিং রুম রয়েছে, আছে টিভি লজ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ, গরম ও ঠাণ্ডা পানির ব্যবস্থা, রঙিন টেলিভিশন ও ডিশ সংযোগ, ফ্রিজ, টেলিফোন, ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংযোগ এবং ইন্টারনেট সুবিধা।

--শাহ দিদার আলম নবেল

0 comments:

Post a Comment