মশা, অতিকায় ক্ষুদ্র এ প্রাণীটি আজ রীতিমত এ আতঙ্কের নাম। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ১১ প্রজাতীর মশার উপস্থিতি পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে এডিস মশা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর।
এই জাতীয় মশার দেহে সাদা কালো ডোরাকাটা দাগ থাকে, যে কারণে একে টাইগার মশা বলা হয়। মাঝারি আকারের হয়ে থাকে এবং এর অ্যান্টেনা বা শুঙ্গটি কিছুটা লোমশ দেখতে হয়।
এডিস মশার অ্যান্টেনায় অনেকটা দাড়ির মত থাকে। পুরুষ মশার অ্যান্টেনা স্ত্রী মশার চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি লোমশ। ফিমেল এডিস ইজিপ্টাই মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ভাইরাস মানুষের দেহে প্রবেশ করে। অন্য মশা যখন কোথাও বসে, তখন ৪৫ ডিগ্রি কোণ করে বসে; কিন্তু ডেঙ্গু মশা বসলে সমান্তরালভাবে বসে।
এ মশাগুলোর সমুদ্রপৃষ্ঠে যেমন থাকতে পারে, তেমনই ৪০০ থেকে ৬০০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায়ও নিমেষে উড়ে বেড়াতে পারে। প্রায় তিন মাইল পর্যন্ত উড়তে পারে ডেঙ্গুর মশারা। প্লেন, ট্রেন বা যেকোনো গণপরিবহনে করে এক জায়গা থেকে অন্যত্র চলেও যেতে পারে। আফ্রিকা থেকে উৎপন্ন এ মশা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ডেঙ্গু জ্বর ছড়াচ্ছে।
গবেষণা থেকে জানা যায়, ৫০ মিটার দূর থেকেই মানুষের নিশ্বাসের সঙ্গে বের হওয়া কার্বন ডাই-অক্সাইডের গন্ধ চিনতে পারে মশা। এদিকে মানুষের কাছাকাছি চলে এলেই ২০ সেন্টিমিটার দূর থেকে মশা ঘামের গন্ধ পায়। ঘামের মধ্যে মিশে থাকা ল্যাকটিক এসিড শনাক্ত করেই কামড়াতে আসে। এর মধ্যে রয়েছে রঙেরও প্রভাব। অন্তত ১০ মিটার দূর থেকেই মশা গাঢ় লাল, গাঢ় নীল, কালো ও অতি গাঢ় রংগুলো ভালোভাবে বুঝতে পারে। এসব রঙের দিকে ছুটে আসে মশা। তাই হালকা রঙের পোশাক মশা এড়াতে অনেকটাই সাহায্য করে।
এই মশা সাধারণত দিনেই কামড়ায়। তবে রাতেও যে কামড়ায় না তা অনিশ্চিত।
এডিস মশা সাধারণত একাধিক ব্যক্তিকে কামড়ায়। তাই ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির শরীর থেকে এডিস মশার মধ্যে ভাইরাস সংক্রমিত হলে তখন ঐ মশা সুস্থ মানুষকে কামড়ালে ডেঙ্গু হতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বর যা ব্রেকবোন ফিভার নামেও পরিচিত, একটি সংক্রামক ট্রপিক্যাল ডিজিজ যা ডেঙ্গু ভাইরাস-এর কারণে হয়। স্বল্প ক্ষেত্রে অসুখটি প্রাণঘাতী ডেঙ্গু হেমোর্যাজিক ফিভার-এ পর্যবসিত হয় ,যার ফলে রক্তপাত, রক্ত অনুচক্রিকার কম মাত্রা এবং রক্ত প্লাজমার নিঃসরণ অথবা ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম-এ পর্যবসিত হয়, যেখানে রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে কম থাকে।
যাদের বয়স ১৫ এর নীচে তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সব থাকে বেশি।
ডেঙ্গু জ্বরের ধরন: ডেঙ্গু ২ ধরনের ।
১। সাধারণ ডেঙ্গু
২। জটিল ডেঙ্গু
সাধারণত জুন ও সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুর প্রভাব দেখা যায়।
0 comments:
Post a Comment