Monday, October 11, 2021

পটেটো চিপস যেভাবে এলো

0 comments

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ছোট শহর সারাটোগা। জর্জ ক্রাম এই শহরেরই একটি রিসোর্টে বাবুর্চি হিসেবে কাজ করতেন। ১৮৫৩ সালের এক দুপুরে কথা, সেই রিসোর্টের কোনো একজন অতিথি খাওয়ার সময় ক্রামের বানানো ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ফেরত দিয়ে বসেন। তাঁর অভিযোগ, আলু অতিশয় পাতলা করে ভাজা হয়েছে! এমন অভিযোগ শুনে ক্রামও কম গেলেন না। 

লোকটিকে রাগানোর জন্য আরও পাতলা করে শিকে ভরলেন আলু, তারপর মচমচে করে ভাজলেন। ক্রামের সেই কাণ্ড থেকেই তৈরি হয় সে সময়ের সারাটোগা চিপস, যা আজকের পটেটো বা আলুর চিপস নামেই পরিচিত। 

দিনে দিনে ক্রামের তৈরি চিপস বেশ জনপ্রিয়তা পেতে থাকে। এরপর আলু ভাজার এই নতুন সংস্করণ নিয়ে ১৮৬০ সালে ক্রাম নিজেই রেস্টুরেন্ট খুলে বসেন। তবে প্রথমবারের মতো মুদি দোকানে চিপস বিক্রি শুরু হয় ১৮৯৫ সালে। 

যুক্তরাষ্ট্রের ওহিও রাজ্যের ক্লিভল্যান্ডের শহরের বাসিন্দা উইলিয়াম ট্যাপেনডন নিজের দোকানে পটেটো চিপস বিক্রি শুরু করেন। বিশ শতাব্দীর গোড়ার দিকটা ছিল পটেটো চিপসের বাণিজ্যিকীকরণের সময়। এ সময় চিপস তৈরির অনেক প্রতিষ্ঠান চালু হয়। ১৯১৩ সালে যুক্তরাজ্যে প্রথম চিপস তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপরই অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি হয়ে সারা বিশ্বের মানুষের কাছেই পৌঁছে যায় জর্জ ক্রামের আলুর চিপস। শুরু থেকে আজ অবধি চিপসের স্বাদ ও উৎপাদনে গতি বাড়ানোর জন্য যুক্ত হচ্ছে নতুন সব প্রযুক্তি।


 

সূত্র: আইডিয়া ফাইন্ডার | প্রথম আলো

Tuesday, July 6, 2021

ফোন চার্জ করতে কত টাকার বিদ্যুৎ খরচ হয়

0 comments

 স্মার্টফোন একবার শূন্য থেকে পূর্ণ চার্জ করতে কত টাকার বিদ্যুৎ খরচ হয়, তা বের করা। আর সে জন্য, আপনার স্মার্টফোন এবং যে চার্জার দিয়ে চার্জ করেন, সে সম্পর্কে গোটা কয়েক তথ্য দরকার। যেমন স্মার্টফোনের ব্যাটারিটি কত মিলিঅ্যাম্পিয়ারের, চার্জারটি কত ওয়াটের এবং ওই চার্জার দিয়ে শূন্য থেকে শতভাগ চার্জ হতে কতক্ষণ সময় লাগছে।

স্মার্টফোনের মোড়কে কিংবা নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে ব্যাটারির মিলিঅ্যাম্পিয়ার আওয়ার (এমএএইচ) সম্পর্কে তথ্য পাবেন। আর চার্জারের গায়ে সচরাচর ওয়াট সম্পর্কে তথ্য লেখা থাকে। এবার স্মার্টফোনের ব্যাটারির চার্জ কোনোভাবে শূন্য করে ফেলুন। ভিডিও দেখুন, ইন্টারনেট ব্রাউজ করুন, গেম খেলুন। চার্জশূন্য হয়ে বন্ধ হয়ে গেলে এবার চার্জিং কেব্‌ল যুক্ত করুন। দেখুন শতভাগ চার্জ পূর্ণ হতে ঠিক কত সময় লাগে।



এবার খাতা-কলমে একটু হিসাব কষলেই উত্তর পেয়ে যাবেন। মনে করুন, ৪০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারির একটি স্মার্টফোন ৫ ওয়াট চার্জার দিয়ে শতভাগ চার্জ করতে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা। এবার ওয়াট আর ঘণ্টা গুণ করুন। আমাদের উদাহরণে সেটি হবে ১৫ ওয়াট। তবে বিদ্যুৎ বিলের হিসাব হয় কিলোওয়াট ঘণ্টায়। আর এক কিলোওয়াটে ১০০০ ওয়াট। অর্থাৎ ১৫ ওয়াট মানে ০.০১৫ কিলোওয়াট।

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের ২০২০ সালের ১ মার্চ থেকে কার্যকরী বিদ্যুতের মূল্যহার দেওয়া আছে। আমরা এখানে দ্বিতীয় শ্রেণির আবাসিক গ্রাহকের মূল্যহার বিবেচনায় নিচ্ছি। এই শ্রেণির গ্রাহকদের প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় বিদ্যুৎ বিলের খরচ ৫ টাকা ৭২ পয়সা। তাহলে ০.০১৫ কিলোওয়াট বিদ্যুতের খরচ হবে ০.০৮৫৮ টাকা।

অর্থাৎ আমরা বলতে পারি, ৪০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারির একটি স্মার্টফোন ৫ ওয়াট চার্জার দিয়ে চার্জ করতে যদি ৩ ঘণ্টা লাগে, তবে মোট বিদ্যুৎ খরচ হবে ৯ পয়সার মতো। আপনি যদি প্রতিদিন একবার করে বছরে ৩৬৫ বার চার্জ করেন, তবে মোট খরচ হবে ৩২ টাকার কম। এর সঙ্গে অবশ্য বিদ্যুতের অপচয় থাকতে পারে, বিদ্যুতের বিলের সঙ্গে অতিরিক্ত খরচ থাকতে পারে। আবার সব সময় যে শতভাগ চার্জ হলেই আমরা চার্জারের সঙ্গে স্মার্টফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করি, তা-ও তো নয়। তবু সব মিলিয়ে খরচটা নগণ্যই বলতে হয়।

4000 mah = 4Ah , Battery 3.7V 

so, 4 X 3.7= 14.8 wh


1 ইউনিট এর বিল ধরেছেন ৫.৭২ টাকা
1 ইউনিট = 1000 w/h
1000 w/h এর বিল ৫.৭২ টাকা
14.8 wh এর বিল (৫.৭২ X ১৪.৮)/১০০০ = ০.০৮৪৬ টাকা


Saturday, June 26, 2021

মেন্সট্রুয়াল কাপ

0 comments

 আগে মেয়েরা ঋতু চলাকালে কাপড় ব্যবহার করত। এরপর এল স্যানিটারি ন্যাপকিন, তারপর ট্যাম্পন। তবে এগুলো একই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর এবং আরামদায়ক নয়। বর্তমানে এই প্রোডাক্টটি সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হলেও অনেকেই মেন্সট্রুয়াল কাপ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখেন না। আবার অনেকে এর সম্পর্কে জেনেও ব্যবহার করতে ভয় পান, দ্বিধায় ভোগেন। 

 


মেন্সট্রুয়াল কাপ কী?

এটি মূলত ফানেলের মতো আকৃতির মেডিকেল গ্রেড সিলিকনের কাপ। এটি স্যানিটারি ন্যাপকিনের মতো রক্ত শুষে না নিয়ে কাপে জমা রাখে। ভাঁজ করে যোনিপথ দিয়ে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। সেটা ভেতরে গিয়ে প্রসারিত হয়ে জরায়ু মুখে আটকে যায়। ইকো ফ্রেন্ডলি হওয়ায় অন্যান্য সব পদ্ধতি থেকে এটি বেশি স্বাস্থ্যকর। ফ্লোর ওপর ভিত্তি করে এটি ১২ ঘণ্টা পর্যন্তও ব্যবহার করা যায়। তবে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা পরপর বের করে পরিষ্কার করা শ্রেয়।



 

যেভাবে ব্যবহার করবেন মেন্সট্রুয়াল কাপ

* প্রথমেই আপনার হাত ভালো করে ধুয়ে নিন। কাপের খোলা অংশটি ওপরে রেখে নিচের অংশ শক্ত করে ধরে যোনিপথে ঢোকাতে হবে।

* কাপটি সি শেপে ফোল্ড করে ভাঁজ করে নিতে পারেন। নানা ধরনের শেপে ভাজ করা যায় যেমন—সি ফোল্ড, পাঞ্চ ডাউন, সেভেন ফোল্ড, ট্রায়াঙ্গেল, ডায়মন্ড শেপ ইত্যাদি। ভেতরে ঢোকানোর পর কাপটি ছাতার মতো খুলে যাবে। তারপর সেটিকে ঘুরিয়ে মুখ আটকে দিতে হবে, যাতে রক্ত বাইরে বেরিয়ে না আসে। এভাবে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত লিকেজের টেনশন ছাড়া এবং চেঞ্জ করা ছাড়া ব্যবহার করা যাবে। ৮ ঘণ্টা পরে টান দিয়ে খুলে রক্ত পরিষ্কার করে নিতে হবে। এ ছাড়া ইউটিউবে নানা ধরনের ভিডিও পেয়ে যাবেন।

* গাইনোকোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন। আপনার বয়স, ফ্লোর পরিমাণ, কাপের ধারণক্ষমতা ছাড়াও সন্তান ধারণ করেছেন কি না এর ওপরও নির্ভর করে আপনার কাপের সাইজ। সন্তান জন্মের পর ভ্যাজাইনার পেশি শিথিল হয়ে যায়। তখন বড় সাইজের কাপ ব্যবহার করতে হয়। আবার কিশোরী বয়সে সেই মাপটা ছোট হয়। তা ছাড়া আপনার যদি ফাইব্রোয়েডস বা জরায়ুতে ইনফেকশন থাকে, তাহলে এটি না ব্যবহার করাই শ্রেয়।

* প্রতিবার পিরিয়ড শেষে কাপটি গরম পানিতে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। এরপর মুছে শুকনো জায়গায় রাখুন। পরে এটিকে পরিষ্কার হাতে ধরুন। সঠিকভাবে ব্যবহার করলে একটি কাপ ৮-১০ বছর ব্যবহারের উপযোগী হবে।

 

মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা


পশ্চিমা দেশের নারীদের কাছে বর্তমানে মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহার সব থেকে নিরাপদ ও আরামদায়ক। একবার কিনে অনেক দিন ব্যবহার করা যায়। মাসিকের যন্ত্রণা থেকে অনেকখানি মুক্তি দেয়।
তুলনামূলকভাবে কম ঝামেলাহীন ও পরিবেশের ক্ষতি হয় না।

এমা কক্সের মেন্সট্রুয়াল কাপের কোম্পানি কিছুদিনের মধ্যেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কেননা নিম্নবিত্ত বা হোমলেস নারীরা এই কাপ নিয়ে বেশ কিছু ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছিলেন। তিনজনকে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছিল। কারণ, এই কাপ ব্যবহারে প্রয়োজন সঠিক স্যানিটেশন। বেশির ভাগ সময়ই ভালো জিনিসের মন্দ দিকগুলো আমরা গোপন রাখি কিংবা বলতে চাই না। তবে ভালো জিনিস বলেই যে তার খারাপ দিক থাকবে না, এমনটা নয়। মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহারেও আপনার বেশ কিছু অসুবিধা হতে পারে।

এই কাপ ব্যবহারে প্রয়োজন বাড়তি যত্ন। কাপ ৫-৬ ঘণ্টার মধ্যে খুলে তা পরিষ্কার করতে হয়; যা ঘরের বাইরে থাকলে করা খুবই কষ্টসাধ্য। সব সময় ব্যবহারের পর ফুটন্ত পানিতে ফুটিয়ে তুলে রাখতে হবে। পরিষ্কার হাতে এই কাপ ধরতে হয়। তাই হুটহাট চাইলেই কাপ খুলে পরিষ্কার করা যায় না। হাত ভালো করে ধুয়ে কাপ ধরতে হয়।

মেন্সট্রুয়াল কাপ সম্পর্কিত কিছু কুসংস্কার

অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা আছে যে মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহারে হাইমেন পর্দা ছিঁড়ে যায়, ফলে ভার্জিনিটি নষ্ট হয়। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কারণ, কাপটি যোনিপথের সামনের দিকেই থাকে, হাইমেন পর্দার কাছেও যায় না। তাই ছেঁড়ার প্রশ্নই ওঠে না। অনেকে ভাবেন যে ব্যথা পাবেন, এটিও ঠিক নয়।

এটিকে একটু ব্যয়বহুল মনে হলেও হিসাব মেলালে দেখা যাবে এটি একটি লাইফ টাইম ইনভেস্টমেন্ট। কারণ, একটি কাপ সঠিকভাবে ব্যবহারে ৮ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত ব্যবহার উপযোগী; যা আপনার মাসে মাসে স্যানিটারি ন্যাপকিন কেনার টাকার তুলনায় খুবই নগণ্য।  

 

 সংগৃহীত: প্রথম আলো

Tuesday, June 15, 2021

বায়তুল মোকাররম মসজিদ নির্মাণের ইতিকথা

0 comments

বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদের নাম ‘বায়তুল মোকাররম’। এটি ঢাকায় অবস্থিত। এর বর্তমান ধারন ক্ষমতা ৪০,০০০। কিন্তু যখন এটি নির্মাণ করা হয়েছিল তখন এর ধারন ক্ষমতা ছিল ৩০,০০০। বায়তুল মোকাররম মসজিটি পৃথিবীর ১০ম বৃহত্তম মসজিদ হিসেব বিখ্যাত। বায়তুল মোকাররম মসজিদ নির্মাণের পিছনে কিছু চমকপ্রদ ঘটনা আছে যা আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা। এখানে কিছু তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হলো মাত্র:

 
কথিত আছে যে, পঞ্চাশ/ষাট দশকে তৎকালীন ঢাকার এক শ্রেনীর অভিজাত নাগরিকদের বসবাস ছিল পুরানা পল্টন, সেগুন বাগিচা এলাকায়। ঐ সময় দ্রুত ঢাকা শহরের বিস্তার ঘটছিল, বিশেষ করে শহরের উত্তরাংশে। তখনকার ঢাকার মূল নক্সা অনুসারে সদর ঘাট থেকে সোজা উত্তর দিকে যে নবাবপুর রোডটি গুলিস্থান এলাকা হয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদ এর দিকে চলে গেছে , সেটি ডানে বামে কোথাও মোড় না নিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদ বরাবর (তখনও মসজিদ নির্মাণ হয়নি) পুরানা পল্টন-সেগুন বাগিচা এলাকার উপর দিয়ে আরো উত্তরে চলে যাবার কথা ছিল, এতে অভিজাত শ্রেনীর অনেক নাগরিকের আবাস্থলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এমতাবস্থায় উক্ত এলাকায় বসবাসরত অবাঙ্গালী ধনিক শ্রেনীর নেতৃত্বস্থানীয় কিছু ব্যাক্তি রাতারাতি বর্তমান স্থানে মসজিদ নির্মাণ করার পরিকল্পনা গ্রহন করে তৎকালীন সামরিক শাসক আইয়ুব খানের নিকট একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করে। যুক্তি হিসেব তারা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বোঝায় যে, পুরাতন এবং নতুন ঢাকার সংযোগস্থলেই ঢাকা শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদ নির্মাণ করা অধিকতর যুতসই হবে। এতে নতুন ও পুরাতন ঢাকার সকলেই এই মসজিদের সুবিধা ভোগ করতে পারবে।উল্লেখ্য গুলিস্থান হতে দক্ষিনে ঢাকার মূল শহর যা পুরাতন ঢাকা হিসেবে পরিচিত ছিল এবং গুলিস্থান হতে উত্তরে তখন নতুন শহর অর্থাৎ নতুন নতুন আবাসিক এলাকা এবং অফিস ও বানিজ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছিল। সামরিক প্রশাসন এই প্রস্তাব গ্রহন করে মসজিদ নির্মাণের সকল খরচ ব্যাবসায়ী মহলকেই বহন করতে অনুরোধ করে।
 

এ প্রেক্ষিতে বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী আব্দুল লতিফ ইব্রাহীম বাওয়ানী সর্বপ্রথম মসজিদটি নির্মাণের সম্পূর্ণ অর্থ যোগানের দায়িত্ব গ্রহনে আগ্রহ প্রকাশ করেন। সে মোতাবেক এটি নির্মাণের কাজ তদারকি ও সমন্ময় সাধনের জন্যে ১৯৫৯ সালে ‘ বায়তুল মোকাররম মসজিদ সোসাইটি’ নামে একটি কমিটিও গঠন করা হয়।
 
ঢাকায় বসবাস করেন তখনকার অনেক বিশিষ্ঠ জনের ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে এবং তাঁদের বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, বায়তুল মোকাররম মসজিদটি যেস্থানে নির্মিত হয়েছে সে স্থানটিতে একটি বড় পুকুর ছিল এবং পুকুরটির নাম ছিল ‘ পল্টন পুকুর ‘।এছাড়া পুকুরটির পার্শ্ববর্তী খোলা জায়গাটি মূল শহরের সীমানার বাইরে ছিল বিধায় (তখনও নতুন শহর গড়ে ওঠা শুরু হয়নি) পুরাতন শহরের সকল ময়লা আবর্জনা এখানে ফেলা (Dumping Place) হতো। কালের আবর্তে ময়লা ফেলতে ফেলতে পুকুরটিও প্রায় ভরাট হয়ে গিয়েছিল।
 

বায়তুল মোকাররম মসজিদের নক্সা ও নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় ‘ আব্দুল হোসেইন এম. থারিয়ানি এন্ড কোম্পানী ‘ কে। থারিয়ানি এন্ড কোম্পানী সে সময়ে বেশ সুনামধন্য একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত ছিল। এ প্রতিষ্ঠানটি ‘ঢাকা নিউ মার্কেট, ‘শাহবাগ হোটেল’ (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় বা পিজি হাসপাতাল ), তৎকালীন আদমজী গ্রুপের হেড অফিস ‘ আদমজী কোর্ট বিল্ডিং’ এবং ‘ডিআইটি বিল্ডিং(বর্তমানে রাজউক) নির্মাণ করে সুনাম অর্জন করে।
 
বায়তুল মোকাররম মসজিদের নক্সা করার সময় মসজিদকে কেন্দ্র করে বায়তুল মোকাররম মার্কেট , অফিস, লাইব্রেরি, গাড়ী পার্কিং এবং দক্ষিন প্রান্তে আগ্রার তাজমহলের সম্মুখভাগের একাধিক ছোট ফোয়ারা শোভিত পানির আধারের ন্যায় লম্বা পানির আধার সম্বিলিত মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। 
পবিত্র কাবা শরীফ প্রতিটি ধর্মপ্রান মুসলিমের নিকট অতি পবিত্র একটি স্থান বিবেচিত। কাবা শরীফ কে কেন্দ্র করেই মুসলমানগন পৃথিবী যে যে প্রান্তেই অবস্থান করুন না কেন নামাজ আদায় করে থাকেন।এছাড়া কাবাঘরের ছবিটি সকলেই নিজ নিজ অন্তরে ধারন করে থাকেন যেন চক্ষু বন্ধ করলে চোখের ভেতর পবিত্র কাবা শরীফের দৃশ্যটি ভেসে উঠে।যেহেতু বায়তুল মোকাররম মসজিদটি হবে ঢাকার কেন্দ্রীয় মসজিদ এবং পবিত্র স্থান; এ কথা চিন্তা করেই বায়তুল মোকাররমের বহি:দৃশ্যটি (Out look) যেন কাবা ঘরের মত দৃশ্যমান হয় এবং দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিম স্থাপত্যের ঐতিহ্যেরও যেন প্রতিফলন ঘটে সে কথা বিবেচনায় রেখে পবিত্র কাবা শরীফ ও মোঘল স্থাপত্য কলার সমন্ময় ঘটিয়ে বায়তুল মোবারক মসজিদের স্থাপত্য নক্সাটি করা হয়। কাবা শরীফের ন্যায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের মূল অংশে কোন ডোম নেই, কিন্তু দক্ষিণ এশিয়া সহ পৃথিবীর অন্যান্য অন্চলে সাধারণত ডোম সম্বলিত মসজিদ হয়ে থাকে, একথা ভেবে মূল কাঠামোয় ডোম না রাখলেও ডোমের অভাব পূরনের জন্য বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণের প্রবেশ পথে দুটি ডোম সম্বিলিত প্রবেশ দ্বার নির্মাণ করা হয়। যদিও মূল নক্সা অনুযায়ী মসজিদের প্রধান প্রবেশ পথটি পূর্বদিক থেকেই হবার কথা ছিল।
 
বায়তুল মোবারক মসজিদ ৮ তালা বিশিষ্ট এবং এর উচ্চতা ৯৯ ফুট। মসজিদের নীচ তালার মূল নামাজের স্থানটি ২৬,৫০৭ বর্গফুট। এর পূর্বদিকে আরও ১৮৪০ বর্গফুট জায়গা রাখা হয়েছে নামাজ পড়ার জন্য। এছাড়াও মূল কাঠামোর বাইরে পূর্বদিকে আরও ২৮,৯৮৭ বর্গফুট খোলা জায়গা নামাজ পড়ার জন্য রাখা হয়েছে।
 

১৯৬০ সালের ২৭ জানুয়ারী বায়তুল মোকাররম মসজিদের নির্মাণ কাজের উদ্ভোধন করে প্রথম পর্যায়ে দোতালা পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়। পরবর্তিতে বিভিন্ন চড়াই উতরাই পেড়িয়ে ১৯৬৮ সালে বায়তুল মোকাররম মসজিদের কাজ সম্পূর্ণ হয়।বায়তুল মোকাররম মসজিদের প্রধান স্থপতি ছিলেন ‘ আব্দুল হোসেইন এম. থারিয়ানি এন্ড কোম্পানী ‘ এর স্বত্বাধিকারী মি: আব্দুল হোসেইন মোহাম্মদ থারিয়ানি’র পুত্র মো: সেলিম থারিয়ানি । ১৯৬৩ সালে বায়তুল মোকাররম মসজিদে প্রথম নামাজ পড়া শুরু হয় এবং ১৯৬৪ সাল হতে বায়তুল মোকাররম মার্কেট চালু হয়।
 
লিখেছেনঃ একেএম সামসুদ্দিন

Monday, June 14, 2021

গ্রাফোলজিঃ হাতের লেখায় মানুষ চেনা (পর্ব-৩) [মৃগাঙ্ক চক্রবর্তী]

0 comments

 

বদমেজাজি মানুষদের হাতের লেখা দেখে চেনা যায়। কেউ বদমেজাজি কীনা দেখতে গেলে, হাতের লেখায় লক্ষ্য করবেন t এর ক্রসবারটার দিকে। যদি দেখেন t এর ক্রসবারটা t-কে ছাড়িয়ে ডানদিকে সরে গেছে, তার মানে মানুষটা বদমেজাজি, শর্ট টেম্পারড। 
 
নীচের ছবিতে toy লেখাটায় t এর ক্রসবারটা লক্ষ্য করুন। দেখবেন ডানদিকে সরে গেছে।
 

একজন মানুষ খুব সহজেই ইরিটেট ফিল করে কীনা সেটাও কারো হাতের লেখা দেখে বোঝা সম্ভব। এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে i আর j এর ডটের দিকে। 
 
সাধারণত এই ডটটা ছোটো একটা বিন্দু হয়। কিন্তু যদি দেখা যায় i এবং j এর ওপরের ডটটা একটা ছোট্টো বিন্দুর বদলে স্ল্যাস মতোন আকার নিয়েছে, তার মানে সেই মানুষটা সহজেই ইরিটেট ফিল করে, সহজেই ইরিটেট হয়ে যায়। নীচের joy আর Indian শব্দদুটোতে j আর i এর মাথার ওপরের ডটটা দেখো। দেখবে বিন্দুর বদলে স্ল্যাস আকার নিয়েছে। এর মানে মানুষটা সহজেই ইরিটেট হয়ে যায়। 
 
🖋️ Mriganka Chakraborty
Source:
BOOKS:
1) HANDWRITING ANALYSIS PUTTING IT TO WORK FOR YOU: ANDREA MCNICHOL (CONSULTED BY THE FBI, THE U.S DEPARTMENT OF JUSTICE, SCOTLAND YARD, TGE U.S DEPARTMENT OF DEFENCE, AND FORTUME 500 COMPANIES) WITH JEFFREY A. NELSON
2) HANDWRITING ANALYSIS : P. SCOTT HOLLANDER
3) HANDWRITING ANALYSIS TGE COMPLETE BASIC BOOK: KAREN KRISTIN AMEND AND MARY STANSBURY RUIZ
4) BART BAGGETT'S HANDWRITING ANALYSIS SECRETS OF LOVE SEX AND RELATIONSHIP: BART BAGGETT
VIDEO TUTORIAL:
1) A TO Z GRAPHOLOGY BY ZUBIN VEVAINA
2) GRAPHOLOGY BY FIONA MACKAY YOUNG
3) HANDWRITING ANALYSIS TUTORIAL BY BART BAGGETT

গ্রাফোলজিঃ হাতের লেখায় মানুষ চেনা (পর্ব-২) [মৃগাঙ্ক চক্রবর্তী]

0 comments

গ্রাফোলজিতে বলা হয়, হাতের লেখায় ক্যাপিটাল S দেখে বোঝা যায়, মানুষটা চাইল্ডিশ স্বভাবের, নাকি ম্যাচিওর মেন্টালিটির।
নীচের ছবির প্রথম S টার দিকে নজর দিলে দেখবেন S এর ওপরের অংশটা নীচের অংশের থেকে বেশী বড়ো। S এর এরকম গঠন হাতের লেখায় দেখা গেলে, এর মানে লোকটার মধ্যে এখনো বাচ্চামো স্বভাব আছে। চাইল্ডিশ স্বভাব সম্পর্ক কিংবা ওয়ার্ক প্লেস, সবক্ষেত্রেই এফেক্ট ফেলে।
ছবির দ্বিতীয় S টা দেখলে দেখা যায়, S এর ওপর এবং নীচের দুটো অংশই সমান। এদের মাইন্ডসেট চাইল্ডিশ নয়, আবার পুরোপুরি ডেভেলপড ম্যাচিওর নয়। বরং ডেভেলপিং পর্যায়ে আছে। মানে, এখনো ডেভেলপ করছে।
ছবির তৃতীয় S এ দেখা যাচ্ছে ওপরের অংশের থেকে নীচের অংশটা বড়ো। এরকম S দেখা গেলে, সেই মানুষটার মাইন্ডসেট ডেভেলপড। সে পুরোপুরি ম্যাচিওর স্বভাবের।
🖋️ কলমেঃ চক্কোত্তির শ্লো-Gun
Source:
BOOKS:
1) HANDWRITING ANALYSIS PUTTING IT TO WORK FOR YOU: ANDREA MCNICHOL (CONSULTED BY THE FBI, THE U.S DEPARTMENT OF JUSTICE, SCOTLAND YARD, TGE U.S DEPARTMENT OF DEFENCE, AND FORTUME 500 COMPANIES) WITH JEFFREY A. NELSON
2) HANDWRITING ANALYSIS : P. SCOTT HOLLANDER
3) HANDWRITING ANALYSIS TGE COMPLETE BASIC BOOK: KAREN KRISTIN AMEND AND MARY STANSBURY RUIZ
4) BART BAGGETT'S HANDWRITING ANALYSIS SECRETS OF LOVE SEX AND RELATIONSHIP: BART BAGGETT
VIDEO TUTORIAL:
1) A TO Z GRAPHOLOGY BY ZUBIN VEVAINA
2) GRAPHOLOGY BY FIONA MACKAY YOUNG
3) HANDWRITING ANALYSIS TUTORIAL BY BART BAGGETT

গ্রাফোলজিঃ হাতের লেখায় মানুষ চেনা (পর্ব-১) [মৃগাঙ্ক চক্রবর্তী]

0 comments

 

গ্রাফোলজিতে আরো তিনরকম ক্যাপিটাল S দেখা যাক বরং। 
প্রথম S-টা লক্ষ্য করলে দেখবে, S এর ওপরে একটা দাগ মতো আছে। এরকম S যারা লেখেন তারা অনেকসময় বেশী বিনয়ী হতে গিয়ে মানুষ তাদের ফেক মনে করেন। হয়তো তিনি নিজের সাধারণ ভদ্রতা দেখাচ্ছেন। কিন্তু বেশী বিনয়ী বা গ্রেটফুল হতে গিয়ে লোকটাকে সবাই ফেক, মনে করে।
দ্বিতীয় S-টা প্রথম S এর মতোই। কিন্তু ওপরের বদলে দাগটা নীচে আছে। এরকম লোকগুলো একটা ব্যাপার হওয়ার পর, সেই ব্যাপারটা নিয়ে ডিটেইলসে মানুষজনকে বলতে ভালোবাসেন। ধরো, লোকটা অনেকক্ষণ চেষ্টাচরিত্র করার পর একটা কাজ সফলভাবে করলেন বা কোনো একটা জিনিস রিসিভ করলেন। তারপর তিনি কীভাবে কতোটা চেষ্টাচরিত্র করেছেন, কতোটা সাধ্যসাধনা করার পর জিনিসটা উনি রিসিভ করেছেন, সেটা লোকটা সবাইকে ডিটেইলসে জানাতে পছন্দ করেন।
তৃতীয় S-এর ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে S-এর নীচের দিকে লুপ মতো একটা আকার দেখা যাচ্ছে। অনেকটা "ু"-কারের মতো। এই ধরনের মানুষগুলো খুব মেটারিয়ালিস্টিক স্বভাবের হয়। একটা কিছু পাওয়ার পরও, আরো চাই, আরো যদি পেতে পারি, এই মনোভাবটা ওদের মধ্যে থাকে। এদের সবসময় টার্গেট থাকে, এরা কতোটা কম টাকায়, কতো বেশী বেশী জিনিস পেতে পারে।
Source:
BOOKS:
1) HANDWRITING ANALYSIS PUTTING IT TO WORK FOR YOU: ANDREA MCNICHOL (CONSULTED BY THE FBI, THE U.S DEPARTMENT OF JUSTICE, SCOTLAND YARD, TGE U.S DEPARTMENT OF DEFENCE, AND FORTUME 500 COMPANIES) WITH JEFFREY A. NELSON
2) HANDWRITING ANALYSIS : P. SCOTT HOLLANDER
3) HANDWRITING ANALYSIS TGE COMPLETE BASIC BOOK: KAREN KRISTIN AMEND AND MARY STANSBURY RUIZ
4) BART BAGGETT'S HANDWRITING ANALYSIS SECRETS OF LOVE SEX AND RELATIONSHIP: BART BAGGETT
VIDEO TUTORIAL:
1) A TO Z GRAPHOLOGY BY ZUBIN VEVAINA
2) GRAPHOLOGY BY FIONA MACKAY YOUNG
3) HANDWRITING ANALYSIS TUTORIAL BY BART BAGGETT
🖋️ Mriganka Chakraborty

Sunday, June 13, 2021

গ্রাফোলজিঃ হাতের লেখায় মানুষ চেনা [মৃগাঙ্ক চক্রবর্তী]

0 comments

 গ্রাফোলজি কথাটার মানে হলো, মানুষের হাতের লেখা অ্যানালাইসিস করে, সেই মানুষটার স্বভাব চরিত্র সব বলে দেওয়া। যদিও এটা একটা সিউডো সায়েন্স। তবে সম্প্রতি এই গ্রাফোলজি নিয়ে চর্চা বেশ বেড়েছে।

হাতের লেখা দেখে কীভাবে মানুষ চেনা, সেসব নতুন নতুন ফান্ডা এখানে আলোচনা করবো।
আজকে আলোচনা করবো, হাতের লেখা দেখে কীভাবে মিথ্যাবাদী চেনা যায়। কীভাবে বোঝা যায় একজন মানুষ মিথ্যা কথা বলে নাকি? মানুষটা কতোটা সিক্রেটিভ? কে স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড না?
এই সমস্তটাই বোঝা যায়, ছোটো হাতের লেখা O এর লুপ দেখে। আর ছোটো হাতের C এর লুপ দেখে।
১) প্রথম ছবিটা ভালো করে দেখুন। Luck শব্দটার C-টায় লুপটা লক্ষ্য করুন। এরকম লুপ যদি, কোনো হাতের লেখায় ছোটো হাতের C তে দেখা যায়, তার মানে এই যে, ওই মানুষটা স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড না। ইনিয়েবিনিয়ে বা ঘুরিয়ে কথা বলতে সে ভালোবাসে।
 
২) দ্বিতীয় ছবিতে দেখুন, Love শব্দটায় ছোটো হাতের O তে বাঁদিকে লুপ আছে। এরকম কোনো হাতের লেখায়, O-এর বাঁদিকে লুপ থাকার মানে, যার হাতের লেখা, সেই মানুষটা নিজে এমন সব জিনিস স্বজ্ঞানে অজ্ঞানে বিশ্বাস করে, যেগুলো পুরোপুরি কিংবা একেবারেই সত্যি না। অথচ তারা নিজের মনে মনেই এসব মিথ্যাকে সত্যি বলে বিশ্বাস করে এসেছে। এবং সামনের মানুষটাকে বলার সময় সেই মিথ্যাটাই সত্যি হিসেবে রিপ্রেজেন্ট করে। এর মানে এই নয় যে সে মিথ্যাবাদী। এর মানে মানুষটা নিজে মিথ্যাটাকে সত্যি বলে অ্যাকসেপ্ট করে। 
 
৩) তৃতীয় ছবিতে Son শব্দটায় O তে দুদিকে দুটো লুপ দেখা যাচ্ছে। এরকম হাতের লেখার মানে, মানুষটা মিথ্যাবাদী। লোকটার মিথ্যা কথা বলাটা একটা অভ্যাস। 
 
৪) চতুর্থ ছবিতে Pond লেখায় O-তে ডানদিকে লুপ তৈরি হয়েছে। এরকম ডানদিকে লুপওয়ালা O, কারো হাতের লেখায় দেখা গেলে, এর মানে মানুষটা সিক্রেটিভ। যেকোনো কিছু সবার সামনে প্রকাশ না করে, নিজের মনে চেপে রাখতে পছন্দ করে। 
 
🖋️ Mriganka Chakraborty
Source:
BOOKS:
1) HANDWRITING ANALYSIS PUTTING IT TO WORK FOR YOU: ANDREA MCNICHOL (CONSULTED BY THE FBI, THE U.S DEPARTMENT OF JUSTICE, SCOTLAND YARD, TGE U.S DEPARTMENT OF DEFENCE, AND FORTUME 500 COMPANIES) WITH JEFFREY A. NELSON
2) HANDWRITING ANALYSIS : P. SCOTT HOLLANDER
3) HANDWRITING ANALYSIS TGE COMPLETE BASIC BOOK: KAREN KRISTIN AMEND AND MARY STANSBURY RUIZ
4) BART BAGGETT'S HANDWRITING ANALYSIS SECRETS OF LOVE SEX AND RELATIONSHIP: BART BAGGETT
VIDEO TUTORIAL:
1) A TO Z GRAPHOLOGY BY ZUBIN VEVAINA
2) GRAPHOLOGY BY FIONA MACKAY YOUNG
3) HANDWRITING ANALYSIS TUTORIAL BY BART BAGGETT

বাংলাদেশে আলোচিত ৫ পরকীয়া কাহিনী

0 comments

একটি সুখী পরিবারকে চোখের পলকে তছনছ করে দিতে পারে পরকীয়া সম্পর্ক। কেউ নিজের ইচ্ছায় এই নিষিদ্ধ সম্পর্কে জড়ান, আবার কেউ পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়েন। আবার জীবনসঙ্গী মনের মতো না হলে কেউ কেউ সচেতনভাবেই পরকীয়া প্রেম করেন। প্রতিনিয়ত পত্র পত্রিকায় পরকীয়ার সম্পর্ক নিয়ে নানা সংবাদ ছাপা হচ্ছে । বর্তমানে এর প্রবণতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে আলোচিত ৫ টি পরকিয়া সমাজকে নাড়া দেয়। আবেদন করে ব্যবস্থা নেয়ার।



১.  খুকু আর মনিরের পরকীয়ার কারণে যে মৃত্যু মানুষকে হতবিহ্বল করে তেমন মৃত্যু ঘটেছিল শারমীন রীমার। ১৯৮৯ সালে বিয়ের মাত্র তিন মাস পর খুন হন শারমীন রীমা। স্বামী মনিরের সাথে  চট্টগ্রাম বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। ফেরার পথে স্বামী মনির হোসেন রীমাকে হত্যা করে লাশ নারায়ণগঞ্জের মিজমিজি গ্রামের কাছে ফেলে রেখে আসে। বাড়ি থেকে এত দূরে কোনো মেয়ের লাশ পাওয়া গেলে যে কেউই সবার আগে ধরে নেয় হয় স্বামী নিজেও খুন হয়েছে বা নিজেই খুন করেছে। ঘটনার পরদিন ১০ মে গ্রেফতার হন মুনির। মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। ১৯৯০ সালের ২১ মে ঢাকার জেলা ও দায়রা আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এরপর দীর্ঘদিন মামলা চলার পরে নিম্ন আদালতে অপরাধী মুনির হোসেন এবং হত্যাকাণ্ডে প্ররোচনাদানকারী তার প্রেমিকা হোসনে আরা খুকু দুজনেরই ফাঁসির রায় হলেও উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগের রায়ে খুকুকে খালাস দেওয়া হয়।



২. চট্টগ্রামের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকর ডাক্তার ছেলে মোস্তফা মোরশেদ আকাশ এর বিয়ের কার্ড বিলি শেষ। এমন সময় জানতে পারেন তার হবুস্ত্রীর পুরাতন প্রেমিক রয়েছে। বিয়ের পর জানতে পারে অন্য আরেক একজনের সংগে  তানজিলা হক চৌধুরী মিতু’র চলছে পরকীয়া। বারংবার নিষেধ স্বস্ত্বেও সংশোধন হয়নি মিতু। অবশেষে ২০১৯ সালে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজেই নিজেকে শেষ করে দেন আকাশ।

৩. ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম (মিতু)। স্বামী পুলিশের এএসআই বাবুল আক্তার বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। পাঁচ বছর পর পিবিআইর তদন্তে এ খুনের সঙ্গে বাবুল আক্তারের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।

তদন্তসংশ্লিষ্টদের দাবি, আলোচিত মিতু হত্যা মামলার অন্যতম ইন্ধনদাতা মনে করা হচ্ছে ভারতীয় নাগরিক গায়ত্রী অমর সিংহকে। তিনি ২০১৩ সালে ইউএনএইচসিআরের ফিল্ড অফিসার (প্রটেকশন) হিসেবে কর্মরত ছিলেন কক্সবাজারে। একই সময় ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন সঙ্গে বাবুল আক্তার।

ওখানেই তাদের বন্ধুত্ব হয়। পরে তা রূপ নেয় পরকীয়ায়। গায়ত্রী বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার আগে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম এবং ঢাকায় বিভিন্ন হোটেলে বাবুল আক্তারের সঙ্গে একান্তে দেখা করেছেন।

৪. ২০১৯ সালে বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যার পিছনেও রয়েছে পরকীয়ার মত বিষয়। বিয়ের পরও আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি তার আগের প্রেমিক নয়ন বন্ডের সাথে নিয়মিত সম্পর্ক রাখত। তা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের অবনতির এক পর্যায়ে প্রকাশ্যে খুন করা হয় রিফাতকে। যদিও এর সাথে মাদক ও ছিনতাইয়ের একটি যোগসূত্র রয়েছে। কিন্তু সব ছাপিয়ে বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কই বড় ঘটনার জন্ম দেয়।

৫.  ২০২১ সালের জুন মাসে কুষ্টিয়ায় পুলিশের এএসআই সৌমেন রায়ের ছোঁড়া গুলিতে স্ত্রী-সন্তানসহ পরকীয়া প্রেমিক নিহত হয়। পুলিশ জানায়,  দেড় বছর আগে সৌমেন কুষ্টিয়া থাকাকালীন সময়ে আসমার সাথে পরিচয় হয়।  আসমা তার আগের স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে সৌমেনের সাথে গোপনে বিয়ে করে। পরবর্তী পর্যায়ে সৌমেন বদলি হয়ে কুষ্টিয়া থেকে চলে গেলে আসমার সাথে বাড়ির পাশের সাকিলের পরকিয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে।



পশ্চিমা বিশ্বে পরকীয়া নিয়ে গবেষণা ও জরিপ হলেও বাংলাদেশে তা দৃশ্যমান নয়। ফলে জানা যায় না সঠিক তথ্য। তবে ২০১৯ এর একটি পরিসংখ্যানে জানা যায়, প্রতি ৫৫ মিনিটে ঢাকা সিটি করোর্পরেশনে একটি করে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন জমা পড়ে।

বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ মুসলমান। ইসলাম ধর্মে পরকীয়া কঠিনভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে । ইসলামি আইন শাস্ত্রে পরকীয়ায় জড়িত নারী পুরুষের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে, যা হলো পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদন্ডের শাস্তি।
বাংলাদেশে পরকীয়া সংক্রান্ত আইনের ৪৯৭ ধারায় বলা হয়েছে যে কোন বিবাহিত ব্যক্তি যদি অন্য কোন বিবাহিত নারীর সাথে জেনেশুনে যৌন সম্পর্ক করে তাহলে তা ব্যভিচার বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে সেই পুরুষটির পাঁচ বছরের কারাদন্ড, অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডের বিধান আছে। তবে যে নারীর সাথে ব্যভিচার করা হয়েছে - তার ক্ষেত্রে আইনে কোন শাস্তির বিধান নেই, ব্যভিচারকারী নারী ও পুরুষ উভয়ের শাস্তির কথাও বলা নেই।  


Saturday, June 12, 2021

বিলেত শব্দটির উৎপত্তি

0 comments

‘বিলাত’ শব্দটির অর্থ ইংল্যান্ড, ইউরোপ। বস্তুত ‘বিলাত’ অর্থ ইংল্যান্ড। বাঙালির কাছে বিলাত শব্দটা যখন বহুল প্রচলিত ছিল তখন ‘বিলাত’ বলতে শুধু ইংল্যান্ড নয়, পুরো ইউরোপকেই বোঝাত। এখন অবশ্য ‘বিলাত’ শব্দটি আগের মত বহুল প্রচলিত নয়। এখন ইংল্যান্ডকে আর বিলাত বলা হয় না, ইংল্যান্ডই বলা হয়।

তবে বাঙালির বিলাত শব্দটি বিলাতি নয়, আরবি। আরবি ‘ওয়ালাত’ শব্দ ফারসি, উর্দু ও হিন্দি ভাষায় আরবি বর্ণ ‘ওয়াও’-এর উচ্চারণজনিত কাঠিন্যে পড়ে বিলায়ত হয়ে যায়। বাংলা ভাষায় এসে ‘বিলায়ত’ আরও বিকৃত হয়ে ‘বিলাত’ হয়ে যায়। আরবি ওয়ালাত শব্দের মূল অর্থ ওয়ালি বা গভর্নর-শাসিত দেশ বা প্রদেশ। এক সময় মিশর, ইরানসহ অনেক দেশ ছিল আরবদের ‘ওয়ালাত’। ভারতের মুসলমান রাজত্বের প্রথম দিকে ভারতীয় মুসলমানগণ পারস্য ও মধ্য এশিয়ার দেশসমূহকে ‘বিলায়ত’ বলত । তাদের কাছে ঐসব এলাকার অধিবাসীরা ছিল আহলে বিলায়ত বা দেশি লোক। ভারতের ব্রিটিশ শাসনামলে আকস্মিকভাবে শব্দটির অর্থ পাল্টে যায় এবং বিলায়ত ভারতীয়দের কাছে হয়ে পড়ে ইংল্যান্ড বা ইউরোপ।
[উৎস : (১) হরেন্দ্রচন্দ্র পাল : বাঙলা সাহিত্যে আরবী-ফারসী শব্দ, ঢাকা, বাঙলা ও সংস্কৃত বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে রেনেসাঁস প্রিন্টার্স, ১৯৬৭
(২) হরিচরণ বন্দোপাধ্যায়, বঙ্গীয় শব্দকোষ, নতুন দিল্লি, সাহিত্য অকাদেমী, ১৯৬৬]
 
অন্যমতে, প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সৈন্যরা ইংল্যান্ডের লোকেদের blighty বলত ।
Blighty থেকে বিলেত কথাটি এসেছে ।

Friday, June 4, 2021

চুরি যাওয়া নেপোলিয়নের লিঙ্গ

0 comments
মৃতদেহ সংরক্ষণ কিংবা নির্দিষ্ট কোনো অঙ্গ মমি করার চল শুরু করেছিল মিশরীয়রা। তাদের আবিষ্কৃত মমি রহস্য এখনো বিজ্ঞানীদের কাছে রহস্যে ঘেরা। তবে বিখ্যাত ব্যক্তিদের অঙ্গ সংগ্রহ করা হয়েছিল কোন উদ্দেশ্যে, তা কি জানা গেছে আজো। 

নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বা নাপোলেওঁ বোনাপার্ত ছিলেন ফরাসি বিপ্লবের সময়কার একজন জেনারেল। সাধারণ একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও স্বপ্ন দেখেছেন ব্রিটিশ শাসন করার। সেনাবাহিনী প্রধান থেকে শুরু করে ফ্রান্সের শাসক। শেষ জীবনে নির্বাসনে কাটিয়েছেন এই শাসক। ১৮২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে নেপোলীয়ন ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকে। তিনি ৫ ই মে তে মৃত্যুবরণ করেন।

সম্রাটের মৃত্যুর পর এক ব্রিটিশ চিকিৎসক তার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করেছিলেন। তখনই তিনি নেপোলিয়নের লিঙ্গ দেহ থেকে আলাদা করে নিয়েছিলেন। ১৯৬৯ সালে ২৯০০ ডলারে আমেরিকার একজন ইউরোলজিস্ট সেটি কিনেছিলেন। ২০০৭ সাল পর্যন্ত সেটি তিনি বাক্সবন্দি করে নিজের বিছানার নীচে রাখতেন। ২০০৭-এ তাঁর মৃত্যু হয়। এবং ২০১৬ সালে ফের একবার নিলামে ওঠে নেপোলিয়নের লিঙ্গ। 

ডেইলি বাংলাদেশ

Thursday, May 27, 2021

Venom আর Poison কি এক জিনিস

0 comments

 “Venom” মানে বিষ। "Poison" মানেও বিষ।

কিন্তু Venomআর Poisonএক জিনিস নয়। Venom আর poison এর একটা মজাদার সংজ্ঞা আছে।
"If something bites and you die, you die because of venom"
"If you bite something and you die, you die because of poison"
অর্থাৎ বাংলায় অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, কোনো কিছু যদি রক্তে মিশে গিয়ে বিষক্রিয়া হয় তাহলে সেটা "Venom"। এই জন্যে সাপের বিষকে Venom বলা হয়, Poison নয়।
অন্যদিকে, কোনো কিছু যদি পেটে গিয়ে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে তাহলে সেটাকে বলা হয় Poison। যেমন, ইঁদুর মারা বিষ বা কীটনাশক জাতীয় পদার্থ।



কেউ সাপের বিষ খেয়ে ফেললে কী হবে?
অধিকাংশ বিষাক্ত সাপের বিষ এক ধরণের জটিল প্রোটিন, যার প্রধান উপাদানের নাম হলো নিউরোটক্সিন(Neurotoxin)। এই রাসায়নিকটি শুধুমাত্র রক্তের সাথে মিশে গিয়েই বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে। পেটে গেলে পেপসিন বা ট্রিপসিন(প্রোটিন হজমে সাহায্যকারী উৎসেচক), এটিকে রাসায়নিক ভাবে ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। অর্থাৎ যে পরিমাণ বিষ রক্তে গেলে মৃত্যু ঘটে, সেই পরিমাণ বিষ পেটের মধ্যে গেলে হয় তো কিছুই হবে না। এক্ষেত্রে মনে রাখা উচিত পেটে যাওয়ার আগে মুখ বা খাদ্যনালীতে ঘা বা কাটা অংশ থাকলে সেখান দিয়ে বিষ রক্তে মিশে গেলে বিপর্যয় ঘটতে পারে।

Wednesday, May 26, 2021

তাজমহল বিক্রি

0 comments

'তাজমহল বিক্রি’ এই ধরনের শিরোনামে যারা অবাক হয়ে বলছেন, এও কি সম্ভব? তাদের কাছে ‘নটবরলাল’ নামটি আশা করি অজানা। নটবরলাল এক কুখ্যাত নাম যা পুরো ভারতবর্ষকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল এক সময় নিজের বুদ্ধি, কুটিলতা, চুরি আর লোক ঠকানোর নজিরবিহীন ক্ষমতা দিয়ে। তিন তিনবার তাজমহলের মতো অপূর্ব ও নান্দনিক স্থাপত্য অবলীলায় বিক্রি করে দিয়েছিলেন এই ব্যক্তি। কথা বলার ধরন এবং লোক ঠকানোর নতুন নতুন চক্রান্তে নিজেকে প্রায় অধরা করে তুলেছিলেন। অনেকবার ধরা পড়ার পরও বারবার জেল থেকে পালিয়েছেন সুচারু পরিকল্পনায়। জানার ইচ্ছে হচ্ছে নিশ্চয়ই, কে ছিলেন এই নটবর? কী করেই বা তাজমহল বিক্রির মতো অসাধ্য সাধন করেছিলেন তিনি?

তাজমহলের সৌন্দর্য দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে রয়েছেন এক মার্কিন নবদম্পতি। এই অপার্থিব সৌন্দর্যের আটকাহন শুনছেন আর ভাবছেন এই তাজমহল যদি নিজেদের হতো। নিজেরাই যদি এই সৌন্দর্যের একমাত্র দাবিদার হতে পারতেন! ভালবাসার এই অমর চিহ্ন যদি নিজেদের নামে রাখা যেত। হঠাৎ পেছন থেকে একটা কণ্ঠ ভেসে এল, “চাইলেই আপনি হতে পারেন এই পুরো তাজমহলের ভাগিদার!” এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। সামান্য কৌতূহলে জিজ্ঞেস করা, “কি করে?” অমনি মখমলি পসরা সাজানো বিছানায় নটবরলালের বিচক্ষণ পদচারণ। উত্তরে, “আপনার স্বামী চাইলেই কিনে নিতে পারেন এই পুরো তাজমহল। আমি ভারত সরকারের সরকারি কর্মচারি। আমাদের মতো আরো কয়েকজনের হাতে এই তাজমহল বিক্রির দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। আর সেই মোতাবেক আমরা কাজ করছি।” শুনতে সামান্য খটকা লাগছে ঠিকই, কিন্তু মনের মধ্যে তো পুরো তাজমহল নিজের করে পাওয়ার স্বপ্ন। কিন্তু খটকা তো দূর করতে হয়। তাই জিজ্ঞেস করে নেওয়াই ভালো, “কেন আপনাদের সরকার এই তাজমহল বিক্রি করতে চাইছেন?” বাঘ যখন তার শিকারে নেমে পড়েছে আর শিকার যখন হাতের সীমানার মধ্যে তখন কি আর বাঘের উদরপূর্তি না ঘটে পারে? উত্তর এলো, “আমাদের সরকারের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা তো আর কারও অজানা নয়। আশেপাশে তাকিয়ে দেখুন কত না খেতে পাওয়া মানুষজন। এই অনাহারে থাকা লোকগুলোর খাবার যোগাতেই আমাদের সরকার হিমশিম খাচ্ছে। তার উপর হাজার হাজার টাকা খরচ করে এই তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণ করা কি আমাদের দ্বারা সম্ভব?”এই উত্তরেই গলে গেল নব দম্পতি। হাতে রয়েছে টাকা, আর দেরি কেন? হানিমুনে এসে এর চাইতে চমকপ্রদ উপহার আর কী-ই বা হতে পারে? তারা কিনে নিলেন তাজমহল, আর বাঘ তার শিকার ধরে পেট পূজো করে বেমালুম হাওয়া।


শুধু তাজমহল নয়, লালকেল্লা, সংসদভবন সব বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এই গল্প শুনলে অনেকেই শোরগোল তুলবেন, “আরে, এটা কখনো হয় নাকি? মানুষ এতো বোকা কিভাবে হতে পারে?” কিন্তু বাস্তবিকই এই ধরনের কারসাজি শুধু একবার নয়, তিন তিনবার করেছেন তাজমহল বিক্রেতা ঠগ শিরোমণি নটবরলাল। শুধু ক্রেতাদের বোকামি বললে নটবরলালকে ছোট করে দেখানো হবে। তার কথার কারসাজি, বিভিন্ন কৌতূহল দমনে তীক্ষ্ণ বুদ্ধিদীপ্ত উত্তরের সম্মোহন যে কারও উপর খুব সহজেই প্রভাব বিস্তার করতো। আর সেই কারণে শুধু কি তাজমহল? ৫৪৫ জন সাংসদসহ পুরো সংসদভবন, লালকেল্লা, রাষ্ট্রপতি ভবন- এই সবকিছুই বিক্রি করেছিলেন তিনি চড়া দামে বিভিন্ন খদ্দেরের কাছে। শুধু সাধারণ মানুষই নন, টাটা, বিড়লা, আম্বানি, মিত্তলও এই ঠগবাজের শিকার হয়েছিলেন নানাভাবে। এভাবেই দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ এই নটবরলালের দুষ্কর্মের শিকার।

এবার জানাই, কে এই নটবরলাল?

বিহারের সিওয়ান জেলার বানগ্রা গ্রামে ১৯১২ সালে নটবরলালের জন্ম। তার আসল নাম কিন্তু নটবরলাল নয়। মিথিলেশ কুমার শ্রীবাস্তব হলো তার প্রকৃত নাম। ছেলেবেলা থেকেই নটবরলালের একটি বিশেষ গুণ ছিল। আর সেটি হলো অন্যের সই নিখুঁত জাল করা। তার প্রথম চুরির ঘটনাটাও বেশ মজার। গ্রামের এক বৃদ্ধ তাকে শহরের ব্যাংক থেকে চেকে সই দিয়ে টাকা ওঠানোর জন্য পাঠাতেন। একদিন মিথিলেশ এর মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি চেপে গেল। অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত মিথিলেশ চেক বইয়ের কয়েকটা পাতা চুরি করে নিল। ব্যাংকে সই নকল করে ১,০০০ টাকার চেক লিখলো এবং একটু ভয়ে ভয়ে ব্যাংকে জমা দিল। আশাতীত ভাবে সেই চেক ব্যাংকে গ্রহণ করলো এবং তাকে এক হাজার টাকা দিল। এই তার অপরাধ জীবনের শুরু। নটবরলাল কে দেখতে খুব একটা আলাদা করে বলার মতো কিছু নয়। সাদামাটা আর পাঁচটা লোকের মতোই তিনি। তা হলেও বুদ্ধি আর চাতুরিতে তার জুড়ি মেলা ভার।


তার নটবরলাল হয়ে ওঠার গল্পটাও বিচিত্র। মিথিলেশ যখন ঠগবাজি শুরু করে তখন তার এক শাগরেদ ছিল, তার নাম নটবরলাল। একদিন কিছু সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ধরা পড়ে যায় মিথিলেশ, কিন্তু তার শাগরেদ পালিয়ে যায়। তখন মিথিলেশ নিজেকে নটবরলাল নামে পরিচয় দেয় আর তার পালিয়ে যাওয়া বন্ধুর পরামর্শেই ঠগবাজি করতো বলে জানায়। সেই থেকে মিথিলেশ হয়ে যায় ‘নটবরলাল’। কয়েদি নটবরলাল ঠগবাজি করে প্রচুর অর্থ সম্পত্তির মালিক হয় এই নটবরলাল। তাবড় তাবড় গোয়েন্দা, অপরাধ বিশেষজ্ঞদের ঘোল খাওয়ানো এই নটবরলাল শুধু টাকার জন্যই ঠগবাজি করতো না। এটা যেন তার নেশা। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে পুলিশের তাবড় তাবড় অফিসারদের পর্যন্ত তার তীক্ষ্ণ বুদ্ধির কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হতে হয়েছিল। আর এই নেশাই তাকে তার ওকালতি পেশা থেকে স্থায়ীভাবে এই ঠগবাজি পেশায় আনতে বাধ্য করে। তবে তার এই ঠগবাজি জীবন যে একেবারে সরলভাবে মসৃণতায় চলেছিল তা কিন্তু নয়। অনেক ঘাত প্রতিঘাতও পোহাতে হয়েছিল তাকে। অন্তত ১০০টি প্রতারণার কেস ও জোচ্চুরির মামলায় নটবরলালের পিছনে আঠার মতো লেগেছিল ৮টি রাজ্যের বিশাল পুলিশ বাহিনী। বিভিন্ন মামলায় তার সাজা'র সম্মিলিত মেয়াদ হয় প্রায় ১১৩ বছর। কিন্তু নটবরলালের বয়েই গেছে আদালতের রায় মেনে নিয়ে জেলের মধ্যে বন্দী হয়ে থাকতে। পুলিশ আর জেলারদের বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ৯ বার ধরা পড়েও জেল ভেঙে পালিয়েছে এই নটবর, চলে গিয়েছে পুলিশের নাগালের বাইরে। ফের ধরা পড়েছে, ফের পালিয়েছে। জেল ভাঙা যেন তার কাছে কোনও ব্যাপারই না। সর্বসাকুল্যে ১১৩ বছরের জেলের পরিবর্তে শুধুমাত্র ২০ বছরের মতো জেল জীবন কাটাতে হয়েছিল তাকে। বয়স বাড়ার ফলে অনেকে ভেবেছিল বুড়িয়ে গেছে নটবর। তার বুদ্ধিতে বুঝি জং ধরে গিয়েছে। কিন্তু না, সবাইকে অবাক করে দিয়ে ১৯৯৬ সালে ৮৪ বছর বয়সে সর্বশেষ নটবরলাল ধরা পড়েছিল। অসুস্থতার ভান করে হাসপাতালে থাকার অনুমতি জোগাড় করে নটবরলাল। কানপুর জেল থেকে হুইল চেয়ারে পুলিশ পাহারায় ‘অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স’ (AIMS)-এ যাওয়ার মাঝেই ভোজবাজির মতো মিলিয়ে গিয়েছিল ঠগ শিরোমনি। সেই শেষবার তাকে দেখা গিয়েছিল। আর দেখা যায়নি নটবরলালকে! পরিবারের দাবি তার মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বাস করতে পারেনি পুলিশ। তবে আর কোনোদিন কোথাও দেখাও যায়নি নটবরলালকে। ২০০৯ সালে তার উকিল আদালতে আবেদন দাখিল করেন যেন নটবরলালের নামে সকল মামলা তুলে নেওয়া হয়। তিনি আরও উল্লেখ করেন ওই বছরের জুলাইয়ের ২৫ তারিখ নটবরের মৃত্যু হয়। যদিও তার ভাই গঙ্গা প্রসাদ শ্রীবাস্তব দাবি করেন ১৯৯৬ সালেই নটবরের মৃত্যু হয়। তাই তার মৃত্যু নিয়ে এখনও রয়ে গেছে বিশাল রহস্য। তার ভাই বর্তমানে বিহারের গোপালগঞ্জে বাস করেন। নটবরের এক মেয়ে আছে যিনি একজন সিপাহীকে বিয়ে করেন।

তবে আজও অপরাধ জগত নিয়ে গবেষকদের কাছে নটবরলাল চূড়ান্ত কৌতূহলের কেন্দ্র। কোন জাদুতে সে লোক ঠকিয়ে তাজমহল, লালকেল্লা, রাষ্ট্রপতি ভবন ও সংসদ ভবন বিক্রি করে মোটা টাকা রোজগার করেছিল তা-ও এক অবাক বিস্ময়। নটবরলালের নাম নিয়ে হিন্দিতে দুটো সিনেমাও হয়েছে। একটিতে অমিতাভ বচ্চন এবং অন্যটিতে ইমরান হাশমি অভিনয় করেন। নটবরলালের চুরিগুলোর ধারণা বিভিন্ন সিনেমায় বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার এতো বড় নাটের গুরু, যার চালাকি ও বুদ্ধিতে বাঘা বাঘা লোকজন থেকে অনেকেই তটস্থ থাকতো, এই ধরনের একজনকে তার গ্রামের লোকজন কিন্তু পর করে দেয়নি। গ্রামের লোকজন সকলেই নটবরের স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলার ব্যাপারে খুব সচেষ্ট। তারা নটবরকে নিয়ে রীতিমত গর্ব করে। প্রতারণার ধরনের কারণে তাকে অনেক সময় ‘ফ্র্যাঙ্ক অ্যাবাগনেল’ এবং ‘ভিক্টর লুস্টিগ’-এর সাথে তুলনা করা হয়। প্রকৃত অর্থেই নটবর ছিল তার সময়ের চোরদের মধ্যে সেরাদের সেরা।

লেখা: বিশ্বজিৎ দেবনাথ (মলাট)

Wednesday, May 19, 2021

যুগে যুগে ইসরায়েলকে যেভাবে রক্ষা করেছে যুক্তরাষ্ট্র

0 comments
গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত বোমা হামলায় বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাইডেনের ভূমিকা নিয়ে দেশে-বিদেশে ক্ষোভ বাড়ছে। কিন্তু জো বাইডেনই যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র প্রেসিডেন্ট নন যিনি সমালোচনা সত্ত্বেও ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরায়েলের হামলা ও নির্যাতন সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন।

যুগে যুগে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটে শর্তহীনভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন ও সামগ্রিকভাবে দেশটিকে ‘রক্ষা’ করেছেন।

২০২১ সালের চলতি মাসে ফিলিস্তিন অঞ্চলে ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলা চলাকালে জো বাইডেন দুই বার বিবৃতি দিয়ে ইসরায়েলের প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, গাজা থেকে রকেট ছোড়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার’ অধিকার আছে।

বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারাও ‘ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের’ প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন। এ ছাড়া, হামলার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি বিবৃতিও প্রচার করতে দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। যেটি সংঘাত বন্ধে কার্যকর হতে পারত।

২০১৮ সালের মে মাসে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েল ও এর প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভক্ত ছিলেন। সেই মাসে ফিলিস্তিনে হামলা চালিয়ে বহু মানুষকে হত্যার পরও ইসরায়েলকে নিন্দার চেষ্টা বাতিল করে দিয়েছিলেন তিনি। সে সময় ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুসালেমে সরিয়ে নিলে বিক্ষুব্ধ হন ফিলিস্তিনিরা। তারা ‘মহা সমাবেশের’ ডাক দিয়ে মিছিলে অংশ নিলে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের ওপর গুলি চালায়।

ইসরায়েলের সেই হামলার দায় হামাসের ওপর চাপিয়ে হোয়াইট হাউজের তৎকালীন ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি রাজ শাহ বলেছিলেন, ‘এই নির্মম হত্যার দায় হামাসকে নিতে হবে।’ তিনি ‘উসকানি’ দেয়ার জন্য ফিলিস্তিনি মুক্তি সংগ্রামী সংগঠন হামাসকে দায়ী করেন। তিনি তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে’ উদ্ধৃতিটিও স্মরণ করিয়ে দেন।

২০১৪ সালের জুলাইয়ে গাজা উপত্যকায় স্থল হামলার আগে টানা ১০ দিন বোমাবর্ষণ করেছিল ইসরায়েল। সে মাসের ১৮ তারিখে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘কোনো দেশেরই সীমান্ত থেকে রকেট হামলা বা তার সীমান্তে সন্ত্রাসীদের সুড়ঙ্গ তৈরি মেনে নেয়া উচিত নয়। এটা নিশ্চিত যে, যুক্তরাষ্ট্র, আমাদের বন্ধু ও মিত্রশক্তি আরও বেশি সংঘাত এবং সাধারণ নাগরিকদের প্রাণহানির বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’

জাতিসংঘের হিসাবে, ওই সময় ইসরায়েলি হামলায় গাজায় দেড় হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ৫০০-র বেশি শিশু ছিল।

২০১২ সালের নভেম্বরে ফিলিস্তিনি মুক্তি সংগ্রামী সংগঠন হামাসের মিলিটারি কমান্ডার আহমেদ জাবারিকে গুপ্ত হত্যার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অভিযান চালিয়ে ১০০ জনেরও বেশি বেসামরিক লোককে হত্যা করে। বারাক ওবামা তখনো ইসরায়েলকে সমর্থন করে বলেছিলেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশই সীমান্তের বাইরে থেকে তার ভূখণ্ডে মিসাইল নিক্ষেপ সহ্য করবে না। সুতরাং, মানুষের বাড়িতে মিসাইল নিক্ষেপের হাত থেকে ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার অধিকারের’ প্রতি আমরা পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।’

২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর সকাল থেকে গাজায় ‘অপারেশন কাস্ট লিড’ নামে আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ২২ দিন ধরে চলা ওই আক্রমণে ১,৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত হন, তাদের অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক। এ ছাড়া, দেশটির বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।


 

২০০৯ সালের ২ জানুয়ারি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ হোয়াইট হাউসে তার মেয়াদের শেষ সপ্তাহে ওই হামলার জন্য শুধু হামাসকেই দায়ী করেছিলেন। তখন এনবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সাম্প্রতিক সময়ে ছড়িয়ে পড়া সংঘাতের জন্য হামাসের উসকানি দায়ী বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বুশ।

২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলের নেতা অ্যারিয়েল শ্যারন জেরুসালেমের আল-আকসা মসজিদ পরিদর্শনে গেলে তার বিরুদ্ধে গণপ্রতিবাদ জানায় ফিলিস্তিনিরা। এতে ইসরায়েলি নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে সাত ফিলিস্তিনি নিহত হন। এরপর ‘আল-আকসা ইন্তিফাদা’ নামে দ্বিতীয় গণজাগরণের ডাক দেয়া হয়। সে সময় আত্মঘাতী হামলা চালানো ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠনগুলো ও ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী নির্বিচারে মানুষ হত্যা করায় তারা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়। গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ৩,০০০ ফিলিস্তিনি ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠনগুলোর হামলায় অন্তত ১,০০০ ইসরায়েলি নিহত হন।

যুক্তরাষ্ট্রে সেসময় নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ইসরায়েলি আগ্রাসনকে সমর্থন না দিলেও টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পর অ্যারিয়েল শ্যারনের সঙ্গে জোট করে ‘ওয়ার অন টেরর’ অভিযান শুরু করেন। এ ছাড়া, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতের সঙ্গে চুক্তির ব্যাপারে শ্যারনের প্রত্যাখ্যানকেও সমর্থন করেছিলেন প্রেসিডেন্ট বুশ।

১৯৯৬ সালের এপ্রিলে দক্ষিণ লেবাননের কানায় জাতিসংঘের অফিস চত্বরে আশ্রয় নেওয়া নিরীহ মানুষের ওপর ইসরায়েলের সামরিক হামলাকে সমর্থন করেছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। ওই হামলায় ১০০-র বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন এবং আহত হয়েছিলেন কয়েকশ। ইসরায়েল দাবি ছিল, ভুলবশত ওই হামলা করা হয়েছে।

১৯৭৩ সালের অক্টোবরে মিশর ও সিরিয়ার নেতৃত্বে কয়েকটি আরব দেশ এক যোগে অভিযান চালিয়ে ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে দখল করা সিনাই উপদ্বীপ ও গোলান মালভূমি উদ্ধারের চেষ্টা করে। পাল্টা আক্রমণে ব্যর্থ হলে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে বিমান হামলা চালানোর জন্য অস্ত্র সরবরাহ করে। দ্রুততম সময়ে সেসব অস্ত্র সরবরাহ করায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী গোল্ডে মেয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের প্রশংসা করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা অস্ত্রের কারণে যুদ্ধের ফলাফল ঘুরে গিয়েছিল। দ্রুত অস্ত্র সরবরাহ করায় নিক্সন তার দেশের কংগ্রেসের প্রশংসা করেছিলেন।

১৯৬৭ সালের জুনে মিশরে বিমান হামলা করে ইসরায়েল। যার ফলে ‘ছয় দিনের যুদ্ধ’ শুরু হয়। সেই যুদ্ধে জর্ডান ও সিরিয়াও জড়িয়ে পড়ে। যুদ্ধে গাজা, পশ্চিম তীর ও সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রের সে সময়কার প্রেসিডেন্ট লিন্ডোন বি জনসন ১৯৭১ সালে নিউইয়র্ক টাইমস-এ এক প্রতিবেদনে লিখেছিলেন, ‘আমি বুঝতে পারি, যখন শত্রুপক্ষ তাদের সীমান্তে সৈন্য জড়ো করে, গুরুত্বপূর্ণ বন্দরের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং যখন রাজনৈতিক নেতারা একটি জাতিকে ধ্বংস করার হুমকি দিয়ে বাতাস ভারি করে তোলে, তখন লোকেরা অবশ্যই তাদের নিজেদের মতো করেই সিদ্ধান্ত নেয়।’

১৯৪৮ সালের ১৪ মে জুইশ অ্যাজেন্সির প্রধান স্বাধীন ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের ঘোষণা দেন যখন সেই ভূমিতে ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের সমাপ্তি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস ট্রুম্যান তখনই এই সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। ট্রুম্যানের সই করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই সরকার জানতে পেরেছে যে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইহুদি রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়েছে, এবং অস্থায়ী সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি চাওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র নব গঠিত ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্থায়ী সরকারকে ডি-ফ্যাক্টো কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে।

ঢাকা-টাইমস