Friday, November 20, 2009

চম্পা

0 comments
চম্পা
তখন আমি অনেক পিচ্চি। বনানীতে থাকি। ভীষণ চঞ্চল ছিলাম। একদিন হঠাত্ই আমার মাথায় খেয়াল চাপল, পাড়ায় মাতব্বরি করতে হবে। কীভাবে করা যায়, সেটা নিয়ে আলোচনা করতে বান্ধবীদের পরামর্শ চাইতেই ওরা দোকান খোলার পরামর্শ দিল। যেই কথা সেই কাজ। পাড়ার ফওজিয়া আপাকে (বর্তমানে বিখ্যাত আইনজীবী) সঙ্গে নিয়ে নেমে পড়লাম দোকান প্রতিষ্ঠার কাজে। এক বন্ধুর বাড়ির গ্যারেজকেই আমরা আমাদের নিজেদের দোকান মনে করে কাজ শুরু করলাম। নিজেরাই রং করে গ্যারেজের চেহারা পুরোপুরি বদলে ফেললাম। জায়গা তো পাওয়া গেল। সমস্যা হলো, কিসের দোকান দেব? টাকাপয়সাও নেই। দোকান সাজাব কী দিয়ে? উপায়ান্তর না দেখে চৌর্যবৃত্তির পথ বেছে নিলাম। যার বাড়িতে যা আছে, শাড়ি-কাপড় থেকে শুরু করে চুড়ি, কানের দুল, নাকের ফুল, জামা—সব একে একে চুরি করে দোকানে নিয়ে আসা শুরু করলাম আমরা। ক্রেতাও আমাদের দোকানেও আসা শুরু করল। দুর্ভাগ্য, জিনিসপত্রের হাল দেখে কেউ আর কিছুই কেনে না। এদিকে আমাদের প্রত্যেকের বাসায় খবর হয়ে গেল। কারও বাসায় শাড়ি পাওয়া যায় না তো কারও বাসায় জামা, জুতা। একদিন আমাদের দোকানে এসে আমার বান্ধবীর এক বোন এসে দেখল তার ওড়না ঝুলছে। আরেক বান্ধবীর ভাই এসে দেখল তার ময়লা জুতা দোকানে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এরপর আমাদের বাড়িতে কী হয়েছিল, সেটা না-ই বা বললাম! তবে মাতব্বরি করার শখ সেদিনই আমাদের চিরতরে বিদায় নিয়েছিল, এটুকু বলতে পারি।

0 comments:

Post a Comment