Tuesday, June 8, 2010

চারুকলা শিক্ষা

0 comments
তৎকালীন সময় শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সালে শিল্পী আনোয়ারুল হক, শিল্পী শফিউদ্দিন আহমেদ, শিল্পী কামরুল হাসান, শিল্পী মোঃ কিবরিয়াকে সঙ্গে নিয়ে পুরাতন ঢাকায় জংশন রোড ন্যাশনাল মেডিক্যাল স্কুলের একটি পুরাতন জীর্ণ বাড়ীতে প্রথম চারুকলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৮৩ সালে ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চারুকলা ইনষ্টিটিউট নামে পরিচিতি লাভ করে। সে সময় সনাতন পদ্ধতিতে বিএফএ ও মাস্টার্স ডিগ্রি প্রদান করা হত। ১৯৯২-৯৩ সালে চারুকলা শিক্ষা ব্যবস্থায় সম্মানসহ মাস্টার্স চালু হয়। গত বছর থেকে এই চারুকলা ইনষ্টিটিউট চারুকলা অনুষদ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এখানে বর্তমানে ৮টি অনুষদ চালু রয়েছে। যার মধ্যে পেইন্টিং গ্রাফিক ডিজাইন, প্রিন্ট মেকিং, প্রাচ্যকলা, ভাস্কর্য, সিরাসিম, কারুশিল্প ও আর্ট এন্ড হিস্ট্রি। প্রতিটি অনুষদের সরাসরি শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ছাড়াও দেশের বিভাগীয় পর্যায়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগ, অনার্স, মাস্টার্স, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগ অনার্স, মাস্টার্স। সদ্য চালু হওয়া খুলনা চারুকলা ইনষ্টিটিউটে অনার্স, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগ রয়েছে। যেখানে ইচ্ছে করলেই চারুকলা অনুরাগী শিক্ষার্থী সম্মানসহ মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করতে পারেন।
চারুকলায় কেন পড়বেন: বিশ্বের সকল দেশেই নন্দনতত্ত্বের বিকাশ ঘটেছে, পাশাপাশি বাংলাদেশেও এর কমতি নেই। আধুনিককালে শিল্পচর্চার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে সফলও হওয়া যায় ক্রিয়েটিভ কাজের মাধ্যমে। শিল্পকর্ম চর্চা ছাড়াও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে চাকরির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে এই চারুকলা ডিগ্রিধারীদের। দেশের বড় বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে অনেক ভাল সুযোগ রয়েছে যা চারুশিল্পীদের সহজেই অর্থনৈতিক যুক্তি এনে দেয়। এছাড়া ইচ্ছে করলে কেউ নিজেই একটি ক্রিয়েটিভ প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে পারেন। যেখানে গ্রাফিক্সডিজাইন, ফ্যাশন হাউজ, বুটিক শপ এর অনন্য উদাহরণ। তবে সবচেয়ে বড় কথা হল একজন চারুকলা শিক্ষার্থীর উদ্দেশ্য থাকা চাই শিল্পচর্চা করা। দেশের প্রথিতযশা শিল্পীরা নিজ নিজ কর্মের মাধ্যমে সফল হয়েছেন। শিল্প-সংস্কৃতির চর্চার মাধ্যমে দেশকে ভালোবাসা আত্মনির্ভরশীল হওয়া এবং নিজের প্রতিভা দেশ-বিদেশে তুলে ধরা।

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও এই চারুকলা শিক্ষার বিস্তার ঘটেছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে চারুকলা শিক্ষার কলেজ গড়ে উঠেছে। এই কলেজগুলোতে ভর্তি হতে হলে এসএসসি পাসের পর কলেজের নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি হতে হবে।

একটি কথা জানা প্রয়োজন যে, চারুকলা যারা পড়তে চান তাদের অবশ্যই ড্রইং জানা জরুরি। শিল্পমান থাকলে ছোটবেলা থেকে যারা আর্ট বা আঁকাআঁকি করেন মনের মধ্যে এক ধরনের আর্ট বা শিল্পবোধ কাজ করে তারাই এ লাইনে ভালো করবেন। চারুকলায় একটি সৌখীন বিষয় যা জোর করে মুখস্থ করে সম্ভব নয়।

কোথায় কোথায় চারুকলা বিষয়ক পড়ালেখা করতে পারবেন- ১. ঢাকা বিশ্ববিশ্বদ্যালয় চারুকলা অনুষদ (অনার্স, মাষ্টার্স), ২. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা বিভাগ (অনার্স, মাষ্টার্স), ৩. চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা বিভাগ (অনার্স, মাষ্টার্স), ৪. কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় (ত্রিশাল) চারুকলা বিভাগ (অনার্স), ৫. খুলনা চারুকলা ইনষ্টিটিউট (অনার্স), ৬. ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (অনার্স, মাষ্টার্স), ৭. শান্তমারিয়ম ক্রিয়েটিভ আর্ট এন্ড ডিজাইন, ৮. নারায়ণগঞ্জ আর্ট কলেজ (অনার্স), ৯. রাজশাহী আর্ট কলেজ, ১০. বগুড়া আর্ট কলেজ (বগুড়া) বিএফএ, ১১. যশোর আর্ট কলেজ বিএফএ, ১২. ময়মনসিংহ আর্ট কলেজ বিএফএ।

0 comments:

Post a Comment