Tuesday, September 25, 2012

পঞ্চায়েত প্রথা

0 comments

পঞ্চায়েত বহু বছর ধরে প্রচলিত একটি সমাজ পরিচালনা প্রথা। প্রাচীনকাল থেকেই ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে এই প্রথার মাধ্যমে সমাজ পরিচালিত হতো। পঞ্চায়েত প্রথায় সাধারণত পাঁচ বা তাঁর চেয়ে অধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি পর্ষদ গঠন করা হয়ে থাকে। পঞ্চায়েতের এই পর্ষদই সমাজের নানা সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকে। পঞ্চায়েত পর্ষদের সদস্যরা সাধারণত গ্রামের জনগণ বা পঞ্চায়েত রাজাদের দ্বারা নির্বাচিত। পঞ্চায়েতগুলোতে সব শ্রেণী ও বর্ণের মানুষের প্রতিনিধিত্ব ছিল। পঞ্চায়েত গ্রামের নানা বিবাদ ও সমস্যাদির সমাধান ছাড়াও ভূমি বণ্টন এবং সরকারের প্রাপ্য রাজস্ব আদায় করতে সহযোগিতা করত। একসময়ে এই পঞ্চায়েত খুবই শক্তিশালী ভূমিকা রাখা একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। সমাজে নানা অনুশাসন, রীতিনীতি, আচার-অনুষ্ঠান প্রবর্তন ও সেগুলোর সংরক্ষণে পঞ্চায়েত ব্যাপক প্রভাবশালী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। ধীরে ধীরে সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষা আর মানুষের কল্যাণের লক্ষ্যে গঠিত হওয়া পঞ্চায়েত তার নানা ভূমিকার কারণে বিতর্কিত হতে থাকে। সমাজের ধনিক শ্রেণীর মানুষ গরিব, অশিক্ষিতদের নানা নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে পঞ্চায়েতকে ব্যবহার করতে শুরু করে। নানা কুসংস্কার আর পশ্চাৎপদ ধ্যান-ধারণা আঁকড়ে থাকার ফলে বহু মানুষ পঞ্চায়েতের নির্যাতনের শিকার হয়। আধুনিক যুগের সঙ্গে পঞ্চায়েতগুলো তাল মিলিয়ে চলতে না পারার ফলে সাধারণ মানুষের কাছে পঞ্চায়েতের গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পায়। শত শত বছর ধরে চলে আসা প্রথাটির প্রতি মানুষ বিমুখ হয়ে পড়ে। ১৯১৯ সালে 'বেঙ্গল ভিলেজ সেলফ গভর্নমেন্ট অ্যাক্ট' পাসের পর বাংলায় পঞ্চায়েত প্রথার আনুষ্ঠানিক বিলুপ্তি ঘটে।

0 comments:

Post a Comment