Sunday, June 6, 2010

বেহুলা সুন্দরীর স্মৃতি

0 comments
কিংবদন্তি নায়িকা বেহুলা সুন্দরীর স্মৃতিবিজড়িত জিয়ন্ত কূপ ও চান্দেরবাজার হতে পারে একটি পিকনিক স্পট বা পর্যটন কেন্দ্র । ষোলশ' শতাব্দীর প্রাচীন এই লোককাহিনীর বিশ্বনন্দিত সতীসাবিত্রী নায়িকা বেহুলা সুন্দরী জন্মস্থান সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার তৎকালীন নিচানীনগর বর্তমানে বিনসাড়া গ্রামে। বাছোবানিয়ার একমাত্র রূপসী কন্যা বেহুলা সুন্দরী। রূপে-গুণের অধিকারিণী বেহুলা সুন্দরী বাবা বাছোবানিয়ার সঙ্গে প্রায়ই বাজার করত। বেহুলা যে বাজারে যেত তার নাম চান্দেরবাজার। প্রায় ৩০০ বিঘা জমির উপর চান্দেরবাজার লাগোয়া তাড়াশের বস্তুল গ্রামে। অপরদিকে বগুড়ার মহাস্থানগড়ের গোকুলের গ্রাম থেকে চাঁদ সদাগর তার ছেলে লক্ষ্মীন্দরকে সঙ্গে নিয়ে চান্দেরবাজারে আসত। হঠাৎ একদিন চান্দেরবাজারে বেহুলা সুন্দরীর সঙ্গে দেখা হয় লক্ষ্মীন্দরের।
প্রথম দেখাতেই দু'জনের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। যে বট গাছের নিচে বসে দু'জন গল্প করত সেই বট গাছটি এখনো বিশাল জায়গাজুড়ে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চান্দেরবাজার বস্তুলে এখন স্কুল-কলেজ, ভূমি অফিস, হাটবাজার গড়ে উঠছে। তাড়াশ উপজেলার মধ্যে বস্তুলে খাসজমির পরিমাণ প্রায় ৭০০ বিঘা। একশ্রেণীর প্রভাবশালী খাসজমিগুলো দখল করে নিয়েছে। কেউ কেউ নিজের নামে ওইসব খাসজমির কাগজপত্র তৈরি করে নিয়েছে। অনেকেই এসব সম্পত্তির উপর অট্টালিকা তৈরি করে বসবাস করছে। বস্তুলের ৭০০ বিঘা খাসজমির মধ্যে কিছু আশ্রয়ন কেন্দ্র তৈরি করলেও অধিকাংশ জমি প্রভাবশালীদের দখলে। সরকারিভাবে এসব খাসজমি লিজ দিলেও সেখান থেকে প্রতি বছর সরকারের ঘরে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হবে। প্রতি বছর চান্দেরমেলায় হাজার হাজার মানুষ আসত এবং বট গাছের মাঝখানে শিবমন্দিরে মানত করে অনেকেই পূজা করত। ৫৬০টি বর দ্বারা বেহুলা ও লক্ষ্মীন্দরের বসে থাকার আসন ঘিরে রেখেছে। বট গাছের বরগুলো দেখতে অপরূপ সৌন্দর্যেঘেরা। দর্শনার্থীরা বট গাছের বরগুলো ঘুরে ঘুরে দেখে; কিন্তু বসার জায়গা না থাকায় আগত দর্শকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ইতোমধ্যে প্রভাবশালীরা কিছু বর কেটে নিয়ে গেছে। সরকারিভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে চান্দেরমেলার ঐতিহ্য। এখনো বহু দূর থেকে ওই বট গাছটি দেখা যায়। তাছাড়া বেহুলার স্মৃতিবিজড়িত নিচানীনগর বিনসাড়াতে জিয়ন্ত কূপ এখনো কালের সাক্ষী হয়ে আছে। জিয়ন্ত কূপের বৈশিষ্ট্য হলো_ একের ভিতর ৩টি কূপ বিদ্যমান। যা দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে। প্রতিদিন শত শত দর্শক জিয়ন্ত কূপ দেখার জন্য তাড়াশের বিনসাড়া গ্রামে আসে। এখানেও প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসে ৩ দিনব্যাপী চান্দেরমেলা বসে। বহু দূর থেকে দর্শনার্থীরা জিয়ন্ত কূপে এসে দুধ-কলা মানত দিয়ে যায়। এলাকাবাসী তাড়াশের এ দুটি স্থানকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সরকারিভাবে প্রাচীন প্রত্নতাত্তি্বক সম্পদ সংরক্ষণের মাধ্যমে আকর্ষণীয় করে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।

0 comments:

Post a Comment