Wednesday, July 7, 2010

হোসেনী দালান, ঢাকা

0 comments
১৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে মোগল সম্রাট শাহজাহান তার পুত্র শাহ্ সুজাকে বাংলার সুবেদার করে পাঠান। শাহ্ সুজা শিয়া মতাবলম্বী হওয়ায় তিনি বঙ্গদেশে আসার সময় প্রায় ৩০০ শিয়া পরিবার নিয়ে আসেন। শাহ্ সুজার সামরিক বাহিনীতে স্থান পেয়েছিল শিয়া সম্প্রদায়ের বেশকিছু লোক। এমনি একজন শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত লোক সৈয়দ মীর মুরাদ তৈরি করেছিলেন ঢাকার হোসেনী দালান। সৈয়দ মীর মুরাদ ছিলেন শাহ্ সুজার নৌবাহিনীর প্রধান। এই দালান নির্মাণের পেছনে একটি গল্প চালু রয়েছে। সেটি হচ্ছে_ এক রাতে স্বপ্নে সৈয়দ মীর মুরাদ দেখতে পেলেন হযরত ইমাম হোসেন (রা.) কারবালার যুদ্ধের স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করছেন এবং তাকে অনুরূপ একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করতে বলেন। অতঃপর মীর মুরাদ ১০৫২ হিজরি মোতাবেক ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দে এই ইমামবাড়া নির্মাণ করেন। যথারীতি এটি মোগল সমাধি রীতি অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়। বিশেষ করে সম্রাট জাহাঙ্গীরের স্ত্রী নূরজাহানের পিতা ইতামৌদ্দোলার সমাধির সঙ্গে এর বেশ খানিকটা মিল রয়েছে। ঢাকার নায়েব নাজিমরা শিয়া হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে তারাই এই হোসেনী দালানটির মোতোয়ালি ছিলেন। শেষ নায়েব নাজিম হিসেবে গাজীউদ্দিনের মৃত্যুর (১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দ) পর ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে হোসেনী দালান দেখাশোনা করার জন্য চার সদস্যের একটি বেসরকারি কমিটি করা হয়। এই কমিটির প্রথম প্রধান ব্যক্তি ছিলেন ঢাকার নবাব পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা খাজা আলীমউল্লাহ। পরবর্তীতে নবাব পরিবারই এককভাবে এই ইমামবাড়ার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল। দালানের দুই দিকে দুইটি মিনার, বিশাল পুকুর রয়েছে দালানের দক্ষিণ দিক ঘেঁষে, উত্তর দিকে প্রশস্ত মাঠের পর বিশাল গেটওয়ে। দ্বিতল ভবনটির নিচে রয়েছে কবরখানা, দ্বিতীয় তলায় রয়েছে জরিখানা, হক্কাখানা, নিশিত খাঁ নামের তিনটি কক্ষ। আরো রয়েছে নহবতখানা। চাঁদ দেখার রাত থেকেই এখানে নহবত বাজানো শুরু হতো। এই ইমামবাড়াটি নির্মাণের পর এখান থেকে বের হতো সজ্জিত জাঁকজমকপূর্ণ মিছিল। এখনো সেই মিছিল বের হয় তবে তা অতীত স্মৃতির ক্ষীণ চিহ্নস্বরূপ। -রিদওয়ান আকরাম

0 comments:

Post a Comment