Monday, July 5, 2010

পিসার হেলানো টাওয়ার

0 comments
পৃথিবীর পরম আশ্চর্যগুলোর মধ্যে পিসার টাওয়ার অন্যতম। ১১৭৩ খ্রিস্টাব্দে এ ঐতিহ্যবাহী টাওয়ারটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। অভিজ্ঞ স্থাপত্যকর্মী এবং শত শত শ্রমিকের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে গড়ে উঠে আকাশচুম্বী এ টাওয়ার। ভূমি থেকে শীর্ষ পর্যন্ত এ টাওয়ারটির মোট উচ্চতা ১৭৯ ফুট (প্রায় ৫৪ মিটার)। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় এই যে, টাওয়ারটির নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কিছুদিন পর দেখা গেল টাওয়ারটি একদিকে একটু হেলে পড়েছে। অক্লান্ত পরিশ্রম ও অর্থ ব্যয় করে তৈরি করা এ টাওয়ারটি যদি হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে তাহলে বড় কেলেঙ্কারি।

আর তাই সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের ডেকে আনা হয় এর সম্পর্কে নিশ্চিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বিচার-বিশ্লেষণ করার জন্য। মাপজোক ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেল যে, টাওয়ারটি খাড়াভাবে অবস্থান না করে লমাা রেখা থেকে প্রায় ৫ মিটার সরে গেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বছরে ১.২৫ সে.মি. করে হেলতে হেলতে যেকোনো সময় বিপজ্জনক পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে। টাওয়ারটি কেন হেলতে হেলতে বিপদের চরম সীমায় পেঁৗছাচ্ছে তা জানার জন্য বিশ্বের স্বনামধন্য সব স্থপতিদের ডাকা হলো। শুরু হয় আবার নতুন করে মাপজোক ও খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। দীর্ঘদিন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তারা বের করেন যে, পিসার টাওয়ারটির প্রায় ৫০ মিটার তলায় অবস্থান করছে পানির স্তর আর এর চাপেই টাওয়ারটি হেলে পড়েছে। তারা পরামর্শ দিলেন যে বৈদ্যুতিক পাম্পের সাহায্যে ভূগর্ভস্থ পানির স্তরের সমতা রক্ষা করে টাওয়ারটির হেলে পড়ার প্রবণতা বন্ধ করা যেতে পারে। টাওয়ারটি তৈরির পর থেকে এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানী ও গবেষকরা এটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য গবেষণা করে চলেছেন।

১৯৮২ সালে পিসার টাওয়ারটির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নতুন করে গবেষণা শুরু হয়েছিল। গবেষকদের মতে যদি ক্রমেই এভাবে টাওয়ারটি হেলে পড়তে থাকে এবং তৎপরতার সঙ্গে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা যায় তাহলে ২০২০-২০২৫ সালের মধ্যে টাওয়ারটি অবশ্যই ভূমিসাৎ হবে।

0 comments:

Post a Comment