Friday, July 9, 2010

পুমা পুনকু

1 comments
পুমাপুঙ্কুকে অনেকে পুমাপুমকু বা পুমাপুঞ্চু নামে বলে। ১০০ টন ওজনের পাথরের মাঝে ছিদ্র করে কিভাবে একেক্টি পাথর আরেক পাথরের সাথে ইন্টারলকিং করা হয়েছে তা বিস্ময়।
বলিভিয়ার তেওয়াঙ্কু অঞ্চলে টিটিকাকা হ্রদ হতে অল্প দূরে এর অবস্থান। aymara ভাষায় পুমাপুঙ্কুর অর্থ কুগ্যারের দরজা.পুমাপুঙ্কু আসলে একটা কম্পলেক্সের একটা অংশ ।অপর অংশগুলো-আকাপানা পিরামিড, কালাসাসিয়া প্লাটফর্ম এবং সাবটেরানিয়ান মন্দির।
                                                                      কুগ্যারের দরজা
কমপ্লেক্সের বয়স নিয়েও বিভ্রান্তি রয়েছে, বর্তমানের বিজ্ঞান অনুযায়ী- বিভিন্ন পাথরের কার্বন টেস্ট অনুযায়ী এর বয়স ২০০ খৃষ্টাব্দ।কিন্তু পোলিশ ইঞ্জিনিয়ার ডঃ আর্থার পসনান্সকি(যিনি ৫০ বছর ধরে এই স্থাপত্য নিয়ে কাজ করছেন)মনে করেন এর বয়স ১৫০০০ খৃষ্টপূর্ব।
আধুনিক বিজ্ঞান মনে করে, পুমাপুঙ্কু ধংসের সাথেই মিশে গেছে এর স্থাপত্য কৌশল। শ শ টনের একেকটি পাথর কিভাবে ছিদ্র করে জোড়া দেয়া হত, আধুনিক ইঞ্জিনিয়াররা বিভ্রান্ত।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে-
১। কারা এইটা তৈরি করলো?
২। কিভাবে তৈরি হলো?
৩। কেনই বা তৈরি করা হলো?
১ম প্রশ্নে আসা যাক, এ প্রসঙ্গে আরেকটি প্রশ্ন আসে, এটা কিভাবে ধংস হলো? ভুমিকম্প কিংবা বড়ধরনের বন্যা? এই ছবিটা দেখে কি মনে হয় এখানে ভুমিকম্প হয়েছে-
                                                          সাবটেরানিয়ান মন্দির
তাহলে কি বন্যা? কিন্তু এ অঞ্চলের ব্যাবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি,হাঁড়,জিওগ্রাফিকেল ডাটা অনুযায়ী সবচেয়ে বড় আকারের বন্যার পূর্বেই এই সভ্যতা ধ্বংশ হয়ে গেছে।এই সভ্যতার কারিগররা হারানো ইতিহাস হয়েই রয়ে গেছে।

এবার ২য় প্রশ্নের উত্তর সন্ধান করি, পুমাপুঙ্কুর পাথরগুলি গ্রানাইট আর ডায়োরাইটের।এদের চেয়ে শক্ত পদার্থ হীরা,এক্অমাত্র হীরা দিয়েই পাথরগুলি কাটা সম্ভব।তাহলে কি বিশালাকার হীরা দিয়ে এইসব পাথর কাটা হয়েছে যদি হীরা দিয়ে কাটা না হয়ে থাকে তাহলে কি তখন হীরার চেয়েও কঠিন পদার্থ ছিলো? এত নিখুত ভাবে কাটা আধুনিক যুগে হীরা ছাড়া সম্ভব না 
শুধু তাই নয় পাথর গুলোর ওজন প্রায় ৮০০ টন।নিকটস্থ কোয়ারী ১০ মাইল দূরে। সেখান থেকে পাথরগুলো এনে কিভাবে এই স্থাপত্য গড়ে ওঠলো?
কেনই বা তৈরি হলো- উওর হতে পারে মহাজাগতিক কোন অজানা প্রানীর জন্য কোন সংকেত বা তাদের তুষ্ট করার এক অদম্য আবাস্তব চেষ্টা। আরেকটি হতে পারে -অরেকর্ডভুক্ত কোন বন্যা এই অঞ্চলে ধ্বংসাত্বক প্রলয় ঘটিয়েছে,সে সময়ের এমন বন্যা তো নুহ(আঃ) এর আমলে,তাহলে কি নুহ(আঃ) এর সময় গজবে পতিত কোন জাতি এরা।
 লিখেছেন : বেলের কাঁটা  

1 comments:

  • July 9, 2010 at 12:33 PM

    বেশ কিছু ভুল আছে। ( মাইন্ড কইরেন না প্লিজ :P )
    প্রথমত কম্পলেক্সের বয়স নিয়ে বর্তমানে কোন বিতর্ক নাই। রেডিও কার্বন ডেটিং এ এর বয়স নির্নয় করা হয়েছে অনধিক ৪৪০ খ্রীষ্টাব্দ যা পরে ক্যালিব্রেশন করে আরো সঠিক ভাবে রেঞ্জ দেয়া হয় ৫৩৬ থেকে ৬০০ খ্রীষ্টাব্দ। ১৫০০০ খ্রীষ্টপূর্ব হওয়ার কোন চান্স ই নাই। আর পস্নান্সকি একজন শখের আর্কিওলজস্ট। তাও তার দাবী ছিলো ১৯৪৩ সালের, কোন রকম পরীক্ষা নীরিক্ষা ছাড়াই।
    দ্বিতীয়ত পাথরগুলো গ্র্যনাইট বা ডায়োরাইটের নয়, লাল বেলেপাথরের। বেলে পাথরে কাজ করা তেমন একটা অসম্ভব কাজ নয়।
    আর পাথরের যে ওজনের কথা বললেন, তাও নিছক গুজব। সর্ববৃহত পাথরের ওজন হচ্ছে ১৩১ টন, আর দ্বীতিয় বৃহত্তম হচ্ছে প্রায় ৮৫ টন। (যদিও এগুলো অনেক ভারী, কিন্তু বহনযোগ্য)। অন্য পাথরখন্ডগুলো এর চেয়ে আরো অনেক ছোট।
    তিওয়ানাকু সভ্যতা তাদের শীর্ষে পৌছায় ৭০০-১০০০ খ্রীষ্টাব্দে। এরপরেই তাদের দ্রুত পতন ঘটে। এর কারন ও বর্তমানে অনেকাংশেই অনুধাবন করা যায়। তারা মূলত কৃষি নির্ভর জাতি ছিল। সেই এলাকায় বিস্তৃত এলাকা জুড়ে সেচ নালার অস্তিত্ব প্রমান করে যে সেগুলোর সাহায্যে জমিতে সেচ দিয়ে কৃষি কাজ করা হতো। কিন্তু বাসস্থান, কৃষিকাজ আর নির্মান স্থাপনার জন্য ব্যপক বৃক্ষ নিধন এবং ফলশ্রুতিতে টানা ক্ষরায় এক সময় তারা বাধ্য হয় সেই এলাকা ছেড়ে বাসযোগ্য এলাকা খোজার জন্য।
    এটা কোন নতুন ঘটনা না, বেশীর ভাগ সভ্যতা ধ্বংসের পেছনে মূল ঘটনাই হচ্ছে মানব সৃষ্ট পরিবেশ বিপর্যয়। এরা বিকল্প বাসস্থানের খোজে বিভিন্নদিকে বিস্তৃত হয়ে গেলে একটা আলাদা জাতসত্বা হিসেবে তাদের অবলুপ্তি ঘটে। তবে অনেকে মনে করেন যে তাদের বংশধরদের একাংশ থেকেই হয়তো ইনকা রা এসেছে।

    আর শেষ বিষয়টা হচ্ছে এরকম নির্মানশৈলির কারন। কারন টা খুবই স্পষ্ট, সেটা হচ্ছে ধর্ম ও লোকজ বিশ্বাস। তারা মানব বলিতে বিশ্বাস করতো। তাদের বিশ্বাস ছিলো ঈশ্বর বা দেবতাদের উদ্দেশ্যে এসব বড় বড় স্থাপনা বানিয়ে তাদের তুষ্ট রাখতে হবে। মানব বলি না পেলে দেবতারা রুষ্ঠ হবেন, ফসল হবেনা, রোগ-অসুস্থতা দেখা দেবে, শত্রু আক্রমন করবে, অপদেবতারা অনিষ্ট করবে। তাই বলা যায় ধর্মীয় বিশ্বাস থেকেই তাদের এই বিশাল সব নির্মান স্থাপনা যা আমরা ইনকা বা অ্যাজটেকদের মধ্যেও দেখতে পাই।

    আশা করি কিছুটা হলেও ভ্রান্তি দূর করতে পেরেছি।

Post a Comment