মধু
একটি উত্তম খাদ্য ও পানীয়। বহু শতাব্দী ধরেই বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক
দেশে সাধারণ খাদ্য ও ঔষধি খাদ্য হিসেবে মধু ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মধু একটি
ভালো বলকারক ও উত্তেজক খাদ্য। অনেকে দীর্ঘসূত্রী সর্দি-কাশিতে বা যাদের ঘন
ঘন ঠাণ্ডা লাগে তাদের জন্য উপকারী বলে দাবি করে আসছেন। যে কারণেই খাওয়া
হোক না কেন ডায়াবেটিক রোগীদের বেলায় মধু খাওয়া কতটা এবং কিভাবে
স্বাস্থ্যকর তা নিয়ে মৃদু বিতর্ক চলছে।
মধুতে যথেষ্ট পরিমাণে শর্করা আছে। মধুতে ২৫-৩৭% গ্লুকোজ, ৩৪-৪৩% ফ্রুকটোজ,
০.৫-৩% সুক্রোজ এবং ৫-১২% ম্যাটোজ থাকে। গ্লুকোজ তো আছেই, বাকি
শর্করাটুকুও রেচন প্রক্রিয়ায় শেষ পর্যন্ত গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয়।
অর্থাৎ গৃহীত মধুর প্রায় ৭৫ থেকে ৮০% গ্লুকোজে পরিণত হচ্ছে। প্রতি গ্রাম
মধু থেকে ২.৮৮ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। এতে সমান পরিমাণে প্রোটিন
পাওয়া যায়। মধু একটি ঘন শর্করাজাতীয় খাদ্য।
কেউ কেউ বলে থাকেন, মধু
মিষ্টিজাতীয় খাদ্য হলেও ডায়াবেটিক রোগীরা স্বচ্ছন্দে তাদের ইচ্ছেমাফিক
মধু খেতে পারেন। কোনো ডায়াবেটিক রোগী যদি সত্যি সত্যিই তা করে থাকেন, তবে
তিনি নিজের জন্য বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনবেন। আর তা বাজারের অন্য কোনো
মিষ্টিদ্রব্য যেমন- রসগোল্লা, চমচম বা সন্দেশ খাওয়ার চেয়ে বড় মাত্রায়
হবে। কেন হবে এমন, তা আমরা ওপরে দেখানো মধুর উপাদানের দিকে তাকালেই বুঝতে
পারি। ডায়াবেটিক রোগীরা মধু একেবারেই খেতে পারবেন না তা নয়। তবে যতটুক
মধু খাবেন, তার সমতুল্য পরিমাণ শর্করাজাতীয় খাদ্য ওই বেলা কম খেতে হয়। আর
একসাথে বেশি পরিমাণে মধু কোনোভাবেই খাওয়া উচিত হবে না। এক চামচ মধু
খাওয়ার জন্য প্রায় দেড় কাপ ভাত বা ছোট একটি রুটি খাওয়া বাদ দিতে হবে।
কেউ যদি এরূপ হিসাব মেনে নিয়ে মধু খেতে পারেন, তবে তার জন্য খুব ক্ষতিকর
হবে না। তবে এটা করা বেশির ভাগ ডায়াবেটিক রোগীর পক্ষেই কঠিন হয়ে
দাঁড়াবে। আর তাই ডায়াবেটিক রোগীর জন্য মধু বর্জন করাই ভালো।
সুত্র- দৈনিক নয়া দিগন্ত
0 comments:
Post a Comment