Saturday, April 16, 2011

ক্যাসেল পার্ক, নওগাঁ

0 comments
রাজশাহী জেলা বোর্ডের উদ্যোগে ১৯১১ সালে নওগাঁ শহরে এ পার্কটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন ব্রিটিশ আমল। লর্ড ক্যাসেলের নামানুসারে পার্কটির নাম রাখা হয় ক্যাসেল পার্ক। পার্কের মধ্যে ১.২০ একর জমি খনন করে একটি পুকুর তৈরি করা হয়। এছাড়া ২.৪৫৪৮ একর জমি দেয়াল দিয়ে ঘিরে কয়েকটি পকেট দরজাসহ উত্তর দিকে প্রধান গেট চলাচলের জন্য রাখা হয়। ব্রিটিশ শাসন আমলে নওগাঁর ক্যাসেল পার্কে সাধারণের প্রবেশাধিকার ছিল না। তখন মহকুমা পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিরা প্রবেশ করতে পারতেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর নওগাঁর এ ক্যাসেল পার্কের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় রাজশাহী জেলা বোর্ড উদ্যান। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে নওগাঁ মহকুমা জেলায় রূপান্তরিত হলে নামকরণ করা হয় নওগাঁ জেলা পরিষদ পার্ক। ১৯১১ সালে পার্ক প্রতিষ্ঠার পর এর সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়। সে সময় লাগানো কয়েকটি পাম ও রাঁধাচূড়া গাছ প্রাচীন এ পার্কটির ঠিকানা আজও দূর থেকে জানান দেয়। নওগাঁ জেলা পরিষদের কাগজপত্রে নওগাঁ পার্কের প্রতিষ্ঠার সাল উল্লেখ করা আছে ১৯২০ (সম্ভাব্য)।
স্বাধীনতার পর ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত নওগাঁর এ ঐতিহ্যবাহী পার্কটি অবহেলায় তার সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলে। স্মৃতি হিসেবে থেকে গিয়েছিল কয়েকটি প্রাচীন গাছ, ভাঙা বেঞ্চ আর বাউন্ডারি ওয়াল। ১৯৮৮ সালে নওগাঁ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল হাই খান জেলা পরিষদ পার্কটি আধুনিক ও বর্তমান অবস্থায় ফিরিয়ে আনেন। প্রাচীন সেই ক্যাসেল পার্কের কথা আজ আর কারও মনে নেই। ভুলে যাওয়ার পথে তার ইতিহাস। সেই নিরিবিলি পার্কটি আজ নওগাঁবাসীর একমাত্র প্রশান্তি ও বিনোদনকেন্দ্র। বর্তমানে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলগাছসহ রয়েছে প্রায় শতাধিক প্রজাতির গাছ-গাছালি। বাগানের ভেতরটি বিভিন্ন ফুলগাছ পাতাবাহার, হুইপিং, দেবদারুসহ অনেক মূল্যবান গাছ সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য সজ্জিত রয়েছে। পার্কে কৃষ্ণচূড়া, রাঁধাচূড়া, অশোক, অর্জুন, মেহগনি, কাঞ্চন, ঝাউ, পান্থপাদপ, হরীতকী, বহেড়া ও নারিকেলসহ অন্যান্য গাছ রয়েছে। পুকুরের টলটলে পানিতে রঙিন মাছের ঘোরাফেরা। চারধারে নারিকেল বিথি আর ফুলের ঘ্রাণে সবাই যেন কিছুটা সময়ের জন্য স্বস্তি নিতে আসে নওগাঁর এ ঐতিহ্যবাহী পার্কে। শহরের ব্যস্ততার মাঝে একটু স্বস্তি পেতে ও বিনোদনের জন্য মানুষ সকাল-সন্ধ্যায় ভিড় জমায় এখানে। একটু সময়ের জন্য হলেও মুক্ত বাতাসে ভরে নেয় বুক।

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

বান্দরবান

0 comments
শ্বেতবর্ণের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন পুরো পাহাড়। সকালবেলা মনে হবে মেঘ যেন গড়াগড়ি খাচ্ছে পাহাড়ের গায়ে। লাফিয়ে পড়ে পাখি হয়ে উড়তে চাইবে যে কারও মন। শেষ বিকালে ক্লান্ত সূর্য যখন পাহাড়ের কোলে হেলে পড়ে তখন সৃষ্টি হয় অসাধারণ এক মুহূর্তের। বলছিলাম বান্দরবানের নীলগিরি পাহাড়ের কথা। যানবাহনের শব্দ, মানুষের হট্টগোল আর সবকিছুকে পাশ কাটিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় (২২০০ ফুট ওপরে) উঠলেই পাবেন এমন দৃশ্য। শিল্পীর পটে আঁকা ছবি হয়ে পাহাড়ের ওপর রয়েছে বেশ ক'টি গেস্টহাউজ। নীলগিরির মতো প্রকৃতির এমনই নানা অপূর্ব নৈসর্গিক সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে পুরো বান্দরবানে। রয়েছে স্বর্ণমন্দির (বৌদ্ধ ধাতু জাদী), শৈলপ্রপাত, চিম্বুক পাহাড়, নীলাচল, বগালেখ, মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র, প্রান্তিক লেক। আর দেশের ২য় বৃহত্তম কেওক্রাডং পাহাড় তো থাকছেই। সাংগু, মাতামুহুরী নদীবেষ্টিত আর আঁকাবাঁকা পাহাড়সমৃদ্ধ এ জনপদে বাংলা ভাষাভাষী মানুষসহ রয়েছে ১১টি নৃতাত্তি্বক জাতিগোষ্ঠী। মারমা, চাকমা, মুরং, ত্রিপুরা, লুসাই, থুমি, বোম, খেয়াং, চাক, পাংখো এবং তংচঙ্গা এদের প্রত্যেক জাতিগোষ্ঠীর ভাষা, শিল্প, সংস্কৃতি সমৃদ্ধ করেছে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের এই বাংলাকে। বান্দরবানের বালাঘাট এলাকার পুরপাড়া নামক স্থানে রয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ বৌদ্ধ ধাতু জাদী যা স্বর্ণমন্দির নামে সমধিক পরিচিত। সোনালি রংয়ের অপূর্ব নির্মাণশৈলীর এই স্থানটিকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মানেন তীর্থস্থান হিসেবে। ১৭০টি সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠলে অবলোকন করা যায় সাঙ্গু নদীর সৌন্দর্য। মন্দিরে প্রথমেই চোখে পড়বে বৌদ্ধ মিউজিয়ামে স্তরে স্তরে সাজানো গৌতম বুদ্ধের সময়কার বিভিন্ন ঘটনাপুঞ্জির বাহারি মূর্তি। মন্দিরের নির্মাণে রয়েছে দক্ষতার ছাপ। মিউজিয়াম পেরুলেই প্রার্থনার স্থান জাদীর মূল অংশ। মন্দিরের শীর্ষে উঠলে চারদিকের দৃশ্য মুগ্ধ করে সবাইকে। চূড়ায় থাকা ঘণ্টাধ্বনি প্রকম্পিত করে চারপাশ। চোখে পড়বে দেবনাগ পুকুর। ৩শ ফুট ওপরে হলেও দেবতার পুকুর হওয়ায় এখানে সবসময় পানি থাকে বলে দাবি ভক্তদের। জেলা সদরের ভেতর রয়েছে কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ মন্দির। বান্দরবান-রুমা সড়ক হয়ে চিম্বুক যাওয়ার পথে রয়েছে শৈলপ্রপাত স্পট। জেলা সদর থেকে যার দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। শৈলপ্রপাতের পাহাড়ি ঝর্না দর্শনার্থীদের মন কাড়ে। শৈলপ্রপাতের পাশে উপজাতি তরুণীরা হাতে তৈরি নানা বস্ত্র বিক্রি করে। জেলা সদর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে নীলাচল। দূর থেকে দেখলে মনে হবে নীল আকাশের সঙ্গে মিশে আছে স্থানটি। জনশ্রুতি রয়েছে এ কারণেই নাকি স্থানটির নামকরণ নীলাচল। এই স্থান থেকে সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম বন্দরের অপূর্ব আলোকসজ্জা দেখতে পাওয়া যাবে। থাকার জন্য এখানে রয়েছে রেস্টহাউস ও একটি রেস্তোরাঁ। চিম্বুক পাহাড়ের খ্যাতি তো বাংলার দার্জিলিং হিসেবে। এর আশপাশে আদিবাসী মুরংদের বসবাস। জেলার অন্য উপজেলার সঙ্গে টেলিযোগাযোগের জন্য এখানে রয়েছে টিঅ্যান্ডটি বোর্ডের বেইজ স্টেশন ও টাওয়ার আর সড়ক বিভাগের রেস্টহাউস। আর রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত ব্রিজের স্বাদ নিতে পারেন মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে । উঠতে পারবেন ইলেকট্রিক কারে। চাই থুই অং নামে জাদী পাড়ার এক যুবক বলেন, বান্দরবানের পর্যটন স্পটগুলো এতই সুন্দর যে প্রতিটি স্পটে গেলেই ঘর বেঁধে থাকতে মন চাইবে আপনার । কল্পনার সাগরে ভেসে যাবেন আপনি।
ইউ চৌ প্রৌ নামে সাবেক এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বলেন, বান্দরবানের উন্নয়নে সরকারের আরও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তাহলে পর্যটক যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি বাড়বে রাজস্ব আয়।

সমীর চক্রবর্তী

অ্যাঙ্কর

0 comments
মানব সভ্যতা একদিনে গড়ে উঠেনি। বিভিন্ন সময়ের প্রেক্ষিতে ক্রমে ক্রমে মানব সভ্যতা গড়ে উঠেছে। সভ্যতার বিকাশে বিভিন্ন জাতি অবদান রেখেছে। এশিয়া মহাদেশের দেশ কম্বোডিয়া, সভ্যতার ক্রমবিকাশে এদের অবদানও কম নয়। আজ থেকে প্রায় ২ হাজার বছর আগে অ্যাঙ্কর নামক দ্বীপে কম্বোডিয়া সভ্যতা গড়ে ওঠে। সভ্যতার ক্ষেত্রে অ্যাঙ্করবাসীর সবচেয়ে বড় অবদান হলো গণিত শাস্ত্র চর্চা করা, সাহিত্য চর্চা করা ও কৃষি কাজের উদ্ভব ঘটানো। তৎকালীন কম্বোডিয়ার লোকজন সনাতন ধর্মে বিশ্বাস করত। যদিও অনেকে বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী ছিল, তথাপি অধিকাংশ লোক সনাতন তথা হিন্দু ধর্ম পালন করত। অ্যাঙ্করবাসীর বিভিন্ন প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শনে গবেষণাপূর্বক তথ্য পাওয়া যায় যে, এরা দেব-দেবীর পূজা-অর্চনা করত। আর পূজা করত বিধায় তারা ভিন্ন ভিন্ন দেবীর ও দেবতার মূর্তি নির্মাণ করেছিল, যেসব মূর্তি এখনও বিদ্যমান। সভ্যতার বিনির্মাণে কম্বোডিয়াবাসী যুগের পর যুগ বছরের পর বছর তৈরি করেছে নানা ধরনের স্থাপনা, শৈল্পিক নিদর্শন প্যাগোডা, গির্জা ও মন্দির। ধারণা করা হয় কম্বোডিয়াবাসীর হাত ধরেই দেব-দেবীর পূজা করার রীতি-নীতি পৃথিবীব্যাপী বিস্তৃতি লাভ করেছে।
কম্বোডিয়ার প্রায় ২ হাজার বছরের পুরনো যেসব প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শন তথা দালান-কোঠা, মানুষের মূর্তি, টাওয়ার, স্মৃতি স্মারক ইত্যাদি পাওয়া যায় তার অধিকাংশই পাথরের তৈরি। নিদর্শনগুলো পাথরের তৈরি বিধায় এখনো অবিকল রয়ে গেছে। নিদর্শনগুলো অতি চমৎকার দেখে অনুধাবন করাই যাবে না, যে এগুলো হাজার বছরের পুরনো। প্রাচীন কম্বোডিয়াবাসী যে প্রচুর ধীশক্তি ও বুদ্ধিসম্পন্ন জাতি ছিল তা তাদের প্রাচীন মুদ্রা, ধাতব পদার্থ ও গুহা আবিষ্কারের তথ্য থেকেই অনুধাবন করা যায়। তৎকালীন কম্বোডিয়ায় বিগফুট নামক প্রাণী বসবাস করত। যে প্রাণী দেখতে মানুষের মতো মনে হলেও আসলে তা মানুষ ছিল না, বিগফুট মানুষের মতো হাঁটা, চলা করত। কিন্তু মানুষের মতো এদের বুদ্ধি বা জ্ঞান ছিল না। যদিও অনেক তাত্তি্বক মনে করে থাকে যে, মানুষের এক স্তর নিচের প্রাণী হলো বিগফুট। কম্বোডিয়ার প্রাচীন নানা উপাত্ত বিশ্লেষণ-পূর্ব বিগফুটের অস্তিত্ব কম্বোডিয়ায় ছিল তা নিশ্চিত করা হয়। তবে বর্তমানে কম্বোডিয়ায় বিগফুট নামক প্রাণীর অস্তিত্ব নেই। কম্বোডিয়ার সভ্যতার বিনির্মাণে বিগফুটের অবদানও কম নয়। কম্বোডিয়ায় প্রাচীন যেসব ঐতিহ্য রয়েছে তার মধ্যে রাজা-রানীর (পর্যায়ক্রমে) মূর্তি নির্মাণ, ধাবত মুদ্রা তৈরি, পাহাড়ি মন-মাতানো গির্জা, প্যাগোডা, মন্দির, মানুষের মাথার উপরি অংশ, ছোট-ছোট পুতুল, দলিল দস্তাবেজ, পাথরের নকশা, কৃষি উপকরণ, হাতির দাঁত দিয়ে তৈরি নানা ধরনের অলঙ্কার ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তবে চমৎকার সব আবিষ্কার আর নির্মাণের মাঝে প্রাচীন কম্বোডিয়াবাসী নির্মাণ করেছে সর্প মন্দির বা শিসনাগমন্দির_ এসব মন্দির অবলোকনপূর্বক বলা যায় যে, প্রাচীন কম্বোডিয়াবাসী সাপকে মেরে ফেলত্ না বরং তা রক্ষা করার জন্য নানা উপায় অবলম্বন করত।

রিয়াজুল ইসলাম

হ্রদ

0 comments
চারদিকে স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত জলভাগকে হ্রদ বা লেক বলা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে অসংখ্য হ্রদ আছে। পৃথিবীর বৃহত্তম প্রাকৃতিক হ্রদগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হ্রদগুলো সাগর হিসেবে পরিচিত। সাগর হিসেবে পরিচিত হ্রদগুলোর মধ্যে ডেড সি, সি অব গ্যালিলি এবং কাসপিয়ান সি'র নাম করতে হয়। কতগুলো হ্রদ সমুদ্র স্তর থেকে উঁচু আর কতগুলো হ্রদ সমুদ্র স্তর থেকে নিচু। উদাহরণ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার লেক টিটিকাকা সমুদ্র স্তর থেকে ৩৮১২ মিটার উঁচু। অন্যদিকে ইসরায়েল-জর্ডানের মধ্যবতী ডেড সি সমুদ্রস্তর থেকে ৩৯৯ মিটার নিচু। খধশব শব্দটি গ্রিক শব্দ খধশশধং, যার অর্থ গহ্বর কিংবা পুকুর থেকে এসেছে। পৃথিবীর বৃহত্তম প্রাকৃতিক হ্রদগুলোর সৃষ্টি ইতিহাসের দিকে নজর দিলে দেখা যায়, অধিকাংশ বড় বড় হ্রদের সৃষ্টি হয়েছে গ্গ্নেসিয়ার থেকে। মেরু অঞ্চল থেকে চলমান গ্গ্নেসিয়ার হিমবাহ যুগে এক উপত্যকায় জমা হয়ে হ্রদের সৃষ্টি করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ফিনল্যান্ডে হাজার হাজার হ্রদ হেগ্নসিয়ার থেকে সৃষ্ঠ। উত্তর আমেরিকার গ্রেট লেকের অংশবিশেষ গ্গ্নেসিয়ার থেকে সৃষ্ঠ। এছাড়া লাইমস্টোন রিজিওনে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে ধীরে ধীরে লাইমস্টোন গলে হ্রদের সৃষ্টি করে। যুগোস্ট্নাভিয়া, ফ্লোরিডায় এ ধরনের হ্রদ সৃষ্ঠ হয়। অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায়, পূর্ব আফ্রিকায় হ্রদের সৃষ্টি হয়। এছাড়া নানা ধরনের প্রাকৃতিক কারণে হ্রদের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ খবর বড় বড় প্রাকৃতিক হ্রদের বিবরণ দেওয়া যেতে পারে। পৃথিবীর বৃহত্তম হ্রদের নাম কাসপিয়ান সি। আয়তন ৩৭২০০ কিলোমিটার। দৈর্ঘ্য ১২০১ কিলোমিটার।
অবস্থান কাজাখস্তান-তুর্কমেনিস্তান, ইরান, আজারবাইজান ও রাশিয়ায়। দ্বিতীয় বৃহত্তম হ্রদের নাম লেক সুপিরিয়র। আয়তন ৮২১০৩ কিলোমিটার। দৈর্ঘ্য ৫৬৩ কিলোমিটার। অবস্থান কানাডা-আমেরিকায়। আয়তন অনুযায়ী কেনিয়া-তাঞ্জানিয়া ও উগান্ডার লেক ভিক্টোরিয়া, কানাডা-আমেরিকার লেক হুরোন, আমেরিকার লেক মিশিগান, কাজাখস্তান-উজবেকিস্তানে এরিয়া লেক, রাশিয়ার লেক বেকাল, কানাডার গ্রেট বিয়ারলেক ইত্যাদির নাম করা যেতে পারে। পৃথিবীর ভূপ্রকৃতিতে বিশেষ খবর বৃহত্তম হ্রদগুলোর অবস্থান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

তৈমুর রেজা

রেড উড ফরেস্ট, ক্যালিফোর্নিয়া

0 comments
এ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন রহস্যময় স্থান, গুহা, বাড়ি, দালালকোঠা ও বন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য থেকে প্রায় ২০০ কি.মি. দূরে অবস্থিত বিস্ময়কর রেড উড ফরেস্ট ট্রি মানুষের কাছে শত শত বছর ধরে আজও রহস্যময়তার বার্তা বহন করে চলছে। বনটি দেখতে অতি চমৎকার ও মনোমুঙ্কর। ভ্রমণকারীদের অতি সহজেই বনটি তার সৌন্দর্যময়তা দিয়ে আকৃষ্ট করতে পারে। বনটি শুধু সৌন্দর্যের জন্যই বিখ্যাত নয় এর মাঝে রয়েছে প্রায় ১ থেকে দেড় হাজার ফুটউচ্চতার গাছ-গাছালি। বিস্ময়কর রেড উড ফরেস্টে রয়েছে হাজার বছরের পুরনো বৃক্ষ। যে বৃক্ষগুলো দেখতে একটু লালচে ধরনের, শুধু লাল তা নয়, এ বনের মধ্যে রয়েছে সবুজ, বাদামি, আকাশী রংয়ের বৃক্ষ। গহীন লাল কাঠের বনে প্রবেশ করার জন্য রয়েছে শত শত পথ, তবে আশ্চর্য ব্যাপার হলো প্রতিটি পথই লালগালিচা দিয়ে ঢাকা। আসলে পথগুলো লালগালিচা দিয়ে ঢাকা মনে হলেও মূলত তা লালগালিচা নয়। এ বনের মাটিকেই লালগালিচা মনে হয়। বিস্ময়কর রেড উড ফরেস্টের আয়তন প্রায় ১০০ বর্গ কি.মি.। এর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট ছোট নদনদী। নদীগুলোর উৎপত্তি সাগর, মহাসাগর থেকে। লাল বনের পাশেই রয়েছে বিখ্যাত রেড উড ন্যাশনাল পার্ক। দর্শনার্থীরা বনে প্রবেশ করার আগে ন্যাশনাল পার্ক থেকে লাল কাঠের বন সম্পর্কে তথ্য নেয়। লাল কাঠের বনের মাঝে রয়েছে অসংখ্য ছোট ছাউনির ঘর, যে ঘরে কাঠুরীরা বসবাস করে। তবে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো_ বনের ঠিক মাঝখানে রয়েছে হামবোল্ট পয়েন্ট, যে পয়েন্টকে ঘিরে যুগ যুগ ধরে মানুষের মনে বয়ে বেড়াচ্ছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কথিত আছে হামবোল্ট পয়েন্ট থেকে ৫০ গজ দূরে গেলে কোনো মানুষ আর বন থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। এ পর্যন্ত প্রায় ২০ জন লোক নিজেদের যোগ্য প্রমাণার্থে হামবোল্ট পয়েন্ট গিয়ে আর ফিরে আসেনি। অনেকে মনে করেন, যারা ফিরে আসেনি তারা ছোট ছোট রেড উড ট্রি হয়ে গেছে। তবে স্থানীয় বন কর্মকর্তারা মনে করেন হামবোল্ট পয়েন্ট থেকে ৫০ গজ পরেই রয়েছে চোরাগলি, যে গলিতে একবার পা পড়লে ফিরে আসা সম্ভব নয়। বিভিন্ন সময়ে লাল কাঠের বনটি ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যেকে ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডোসহ নানা বিপর্যয় থেকে রক্ষা করে আসছে। রেড উড ফরেস্ট কাঠের বনের হামবোল্ট পয়েন্ট ছাড়া বনটির বাকি স্থানগুলো বেশ নিরাপদ।

রিয়াজুল ইসলাম

মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব

0 comments
পুরনো বছরকে বিদায় এবং নতুন বছর বরণ করে নেওয়াকে মারমারা সাংগ্রাই পোয়ে বলে। এটি তাদের প্রধান সামাজিক উৎসবও।
মারমাদের সাংগ্রাই উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী পানি খেলা। তরুণ-তরুণীরা একে অপরের প্রতি পানি ছুড়ে মেরে পুরনো গ্লানি ধুয়ে ফেলে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়।

নিউপোর্ট টাওয়ার

0 comments
বিশ্বে রয়েছে নানা ধরনের রহস্যঘেরা জায়গা, স্থাপত্য কিংবা ভবন। রহস্যঘেরা নিউপোর্ট টাওয়ার তার মধ্যে অন্যতম। রোড দ্বীপে অবস্থিত এই পুরনো টাওয়ারটি সম্পূর্ণ পাথরের তৈরি। রোড দ্বীপের অধিবাসীরা এ জন্য এই টাওয়ারকে old Stone Mill, Viking Power, land mark Power ইত্যাদি নামে অভিহিত করে থাকে। রহস্যময় এই টাওয়ারটির উচ্চতা ২৪ ফুট, যদিও টাওয়ারটি সংলগ্ন ছোট ছোট আরও অনেক টাওয়ার রয়েছে। টাওয়ারটি ১৭ শতকের দিকে পুনরায় সংস্কার করা হলেও তৈরি করা হয়েছে ১১ শতকের দিকে। আটটি পিলার, ৬টি দরজার সমন্বয়ে নিউপট্ টাওয়ারটি তৈরি করা হয়েছে। পিলারগুলোর গায়ে ডোরাকাটা দাগে অঙ্কন করা হয়েছে নানা প্রজাতির প্রাণীর ছবি, নাম ও আরও অনেক কিছু। জিম ব্রানডন নামক একজন আমেরিকান গবেষক ও প্রকৌশলী নিউপোর্ট টাওয়ারকে কেন রহস্যজনক টাওয়ার বলা হয় এর কারণ অনুসন্ধান করার চেষ্টা করেছেন। ব্রানডন প্রাচীন এই টাওয়ারের নানা উপকরণ, লেখা, কারুকার্য নিয়ে প্রায় ১ বছর গবেষণা করে দেখেছেন যে, নিউপট্ টাওয়ারটি যে পাথর দ্বারা তৈরি করা হয়েছে তা প্রাচীন ম্যাগনেট জাতীয় পাথর। এই ম্যাগনেট জাতীয় পাথরের গায়ে রয়েছে চৌম্বক ক্ষমতা যা সহজেই লৌহ জাতীয় পদার্থকে আকৃষ্ট করতে পারে। ম্যাগনেট ছাড়াও টাওয়ারের ৩য় ও ৪র্থ তলার মানুষের পায়ের চিহ্ন, প্রাচীন নকশা, মানুষের মাথার খুলি ইত্যাদি পাওয়া যায়। এ থেকে অনুমান করা যায় যে, প্রাচীনকালে এই টাওয়ারটিতে মানুষ হত্যা করা হতো। কোনো পাপাচার বা অপরাধের জন্য অপরাধী ব্যক্তিকে এখানেই ফাঁসিতে ঝুলানো হতো বলে একাধিক সূত্রে তথ্য পাওয়া যায়। ১৯৪৬ সালে অধ্যাপক P. Lovfold নামক একজন গবেষক সুইডেন ও নরওয়েতে ১৪ ফুট উচ্চতা সমমানের টাওয়ারের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন। নিউপট্ টাওয়ারের সঙ্গে এদের অন্তঃমিল হলো একই ধরনের ও একই সময়ের তৈরি বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। নিউপোর্ট টাওয়ারের মাঝে যেসব হস্তলিখিত পাথর পাওয়া গেছে তা চীনা ভাষায় লিখিত বলে তাত্তি্বকরা একমত পোষণ করেন। পর্যটকদের প্রশ্ন হতে পারে নিউপোর্ট টাওয়ারটি আসলে কোথায় অবস্থিত? নিউপোর্ট টাওয়ারের অবস্থান আমেরিকায় কিন্তু তৈরি করেছেন চীনা শাসকরা। রহস্যজনক এই টাওয়ারের মাঝে এখনো মানুষের শরীরের আভাস পাওয়া যায়। কাছে থেকে মনে হয় ভেতরে কোনো যুবক দাঁড়িয়ে কাউকে কাছে ডাকছে...।

রিয়াজুল ইসলাম

শরীরে তিলের তাৎপর্য

52 comments
মানুষের শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রকম তিল হতে পারে। স্থানভেদে এসব তিল বিভিন্ন তাৎপর্য বহন করে। কারও ক্ষেত্রে শুভ। আবার কারও ক্ষেত্রে অশুভ। এ তাৎপর্য নির্ভর করে চারটি বিষয়ের ওপর। সেগুলো হলো_ আয়তন, রং, কেশময়তা ও আকার। অর্থাৎ চারটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে ফলাফল। তিল খুব বেশি গাঢ় রংয়ের হলে ফল অশুভ। তিলের ওপর লোম বেশি হলে লক্ষণ অশুভ। স্থানভেদে এসব তিলের তাৎপর্য পাল্টে যায়। বিভিন্ন জার্নাল, পঞ্জিকা এবং এ সংক্রান্ত সর্বশেষ গবেষণালব্ধ তথ্যাদি নিয়ে লিখেছেন_ শামছুল হক রাসেল

গাল : ডান গালে তিল সৌভাগ্যের প্রতীক। বিবাহিত জীবনে এরা খুব সুখী হয়। অপরদিকে কোনো নারীর বাঁ গালে তিল থাকলে দাম্পত্য জীবন নিরানন্দে কাটে। এদের কারও কারও কাছে সাফল্য ধরা দেয় ঠিকই, কিন্তু তা বহু কাঠখড় পোড়ানোর পর। ততদিনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য অনেক দূর চলে যায়।

চিবুক : চিবুকের যে কোনোদিকে তিল থাকা অতি সৌভাগ্যের লক্ষণ। চিবুকে তিলধারীরা খুব সহজে জনপ্রিয়তা পায়। রাজনীতিতে তাদের শক্ত অবস্থান হয়। পাশাপাশি তারা আর্থিক সৌভাগ্যবান হন। তারা প্রেমিক মনের হন। তবে অতিরঞ্জিত হওয়ার কারণে প্রেমিক-প্রেমিকার দূরত্ব বাড়ে।

কান : ডান কানে তিলধারীরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত হন। বিশেষ করে পিতা-মাতার প্রতি একনিষ্ঠ হন। বাঁ কানে তিল দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নির্দেশ করে।

চোখ : ডান চোখের ভেতরে কিংবা আশপাশে তিল তীক্ষ্ন বুদ্ধি-বিবেচনা বোঝায়। তারা আবার কখনো কখনো নিষ্ঠুরও হন। তবে বৈষয়িক কর্মকাণ্ডে সফল হন। বাঁ চোখে তিলধারীকে সাধারণত কর্ম ও ব্যক্তিজীবনে দুর্ভোগে পড়েন। বা চোখে তিলের কারণে দাম্পত্যে সন্দেহ বাড়তে পারে। শেষ বয়সে স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে।

পিঠ : পিঠে তিল থাকা উদারতার লক্ষণ। এরা দয়ালু ক্ষমতাবান সাহসী ও দৃঢ়চেতা হন। এরা যেমন পরামর্শ শোনেন, অন্যকে পরামর্শ দিতেও পছন্দ করেন। যুক্তিতর্কে তাদের সঙ্গে পেরে ওঠা কঠিন। আর পিঠের নিচের দিকে তিল থাকলে এরা কিছুটা আরামপ্রিয় হন; বিপরীত লিঙ্গের প্রতি দুর্ণিবার আকর্ষণ থাকে। পিঠের নিচ দিকে তিলধারী মেয়েরা হন যথেষ্ট আবেদনময়ী।

বাহু : ডান বাহুতে তিল থাকা সৌভাগ্যের পরিচায়ক। এরা বুদ্ধি ও শক্তিতে বেশ এগিয়ে থাকেন। আর্থিকভাবেও স্বাচ্ছন্দ্যে থাকেন। এদের দাম্পত্য জীবন হয় মধুর। বাম বাহুতে তিল থাকলে দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়তে চায় না।

গোড়ালি : গোড়ালিতে তিলধারীরা পণ্ডিত মনষ্ক হন। মেয়েদের গোড়ালিতে তিল থাকলে কাজ-কর্মে চটপটে হন। বিশেষ করে রান্না-বান্নায় পারদর্শী হন।

পেট : পেটে তিল থাকা শুভ নয়। সাধারণত পেটে তিলধারীরা অলস ও কামুক স্বভাবের হন। তাদের আচার-আচরণে সুরুচির ছাপ থাকে না। কখনো কখনো তারা ভোজনরসিকও হন। তলপেটে তিল থাকলে গোপনাঙ্গে বিভিন্ন অসুখের আশঙ্কা থাকে। কখনও কখনও এর উল্টোও ঘটে।

বুক : বুকের ডানদিকে তিল থাকলে অর্থ ও সুখ্যাতি দুই-ই অর্জিত হয়। এরা উদার স্বভাবের হন। তবে সতর্ক না হলে অর্জিত সম্পদ বেহাত হতে পারে। বুকের বাঁ দিকে তিল থাকলে সাফল্য অর্জন কম হলেও তা দীর্ঘায়িত হয়। এরা জীবনে খুব বড় হতে না পারলেও জীবন সুখেই কাটে। বুকের মাঝখানে তিল দুর্ভাগ্যের পরিচায়ক। দাম্পত্য জীবনে পরকীয়া সমস্যা হতে পারে। মাঝে-মধ্যে অর্থ-কষ্টও হতে পারে।

পায়ের পাতা : ডান পায়ের পাতায় তিল ভ্রমণের সম্ভাবনা ইঙ্গিত করে। বাঁ পায়ের পাতায় যাদের তিল থাকে তারাও জীবনে ভ্রমণের সুযোগ পান, কিন্তু প্রায়ই তারা নিস্ফল ভ্রমণে সময় ও অর্থ অপচয় করেন।

কপাল : কপালের ডানদিকে তিল থাকা বিশেষ সৌভাগ্যের পরিচায়ক। প্রবল মানসিক শক্তিতে বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করতে পারেন তারা। সাধারণত এরা হন সৌভাগ্যবান। কপালের বাঁ দিকে তিল থাকলে দুর্ভাগ্য হাতছানি দেয়। প্রচুর অর্থোপার্জন করেও তারা সঞ্চয়ী হন না। কখনো কখনো নৈতিক স্খলনও ঘটে। কপালের মাঝখানে তিলধারীরা বিশ্বস্ত প্রেমিক হন। খুব সুখী হন বিবাহিত জীবনে।

হাত : ডান হাতে তিল থাকলে কর্মোদ্যমী হন। কিন্তু বাঁ হাতে তিল থাকলে কর্মোদ্যমী হলেও কাজের যথাযথ মূল্যায়ন প্রায়ই হয় না।

নিতম্ব : পুরুষের নিতম্বে তিল কামুক ও আবেদনময় স্বভাবের পরিচায়ক। অন্যদিকে মহিলাদের ক্ষেত্রে তা বেশি সন্তান প্রজননের ইঙ্গিত দেয়। এরা পুরুষের চাইতেও বেশি কামুক হন। অনেক ক্ষেত্রে এ কারণটাই তাদের দাম্পত্য জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ায়।

নাক : নাকে তিল থাকা বিশেষ সৌভাগ্যের লক্ষণ। ডানে তিল সৌভাগ্যের মাত্রা ইঙ্গিত করে। নাকের বাঁ দিকে তিলধারীরা সৌভাগ্যের দেখা পান। আর নাকে তিলধারী নারীরা স্বামীর ভালোবাসা বেশি পান।

কাঁধ : ডান-বাঁ, যে কাঁধেই তিল থাকুক তা কঠোর পরিশ্রমের নির্দেশনা দেয়। ডান কাঁধে তিল থাকলে পরিশ্রমে সাফল্যের দেখা মেলে। কিন্তু বা কাঁধের তিল কিছুটা দুর্ভাগ্যেরও ইংগিত দেয়।

গলা : গলায় তিল সৌভাগ্যের নির্দেশনা দেয়। ডান দিকে থাকলে এর পূর্ণ কার্যকারিতা দেখা যায়; গলার বাঁ দিকে থাকলেও কখনো কখনো সম্পদহানি ঘটে। বৈবাহিক জীবনে জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। পুরুষের গলায় তিল থাকলে স্ত্রীর ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়।

আঙুল : ডান হাতের বুড়ো আঙুলে তিল থাকলে বিপরীত লিঙ্গের মাধ্যমে আর্থিক সচ্ছলতা আসার সম্ভাবনা থাকে। আর তর্জনির তিল কর্মস্থলে সাফল্য নির্দেশ করে।

সূত্র:

Friday, April 15, 2011

চাকাচুয়া

0 comments
সৃষ্টির বিবর্তনের রেশ ধরে আস্তে আস্তে সমাজে পুরনো রীতি বদলে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন রীতি।
এক সময় গোষ্ঠীগত লড়াইয়ে প্রতিপক্ষকে হত্যা করাই ছিল মানুষের মূল লক্ষ্য। কিন্তু পরবর্তী সময় তা থেকে সরে আসে মানবসমাজ। নতুন সমাজে লড়াইয়ে বিজিতকে হত্যা না করে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে নিতে থাকে বিজয়ীরা। উদ্দেশ্য ছিল পশুপালন ও কৃষিকাজে তাদের কাজে লাগানো। ঠিক ওই সমাজের প্রতিচ্ছবিই আমরা খুঁজে পাই লোকখেলা 'চাকাচুয়া'য়। এ খেলায় দুটি পক্ষ নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে যায়। একপক্ষের একজন 'ডাক' দিয়ে প্রতিপক্ষকে ছুঁয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, অন্যপক্ষ পালিয়ে বেড়ায়। ডাক দিয়ে ছুঁয়ে দিতে পারলে তাকে সেই পক্ষে যোগ দিতে হয়। এ খেলায় কোনো খেলোয়াড় 'মরা' হয় না। এভাবেই খেলতে খেলতে একপক্ষের সব খেলোয়াড়কে অন্যপক্ষ জিতে নেয়।

হাডুডু খেলায় একপক্ষের খেলোয়াড় মরা হলে অন্যপক্ষের খেলোয়াড় জীবিত হন; কিন্তু চাকাচুয়া খেলায় কোনো খেলোয়াড় মরা না হয়ে একদল আরেক দলে মিলে গিয়ে বড় একটি দলের সৃষ্টি হয়।

তৈমুর রেজা

আর কে হাইস্কুল, ময়মনসিংহ

0 comments
১৯১১ সালের ১০ জুলাই গৌরীপুরের তৎকালীন জমিদার ব্রজেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী তার পিতা রাজেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর নামে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বিখ্যাত স্থপতি ও চীনা কারিগর দিয়ে নির্মিত ভবনটি দেখতে অনেকটা ইংরেজি (ই) অক্ষরের মতো। কাঠের ফ্রেমের ওপর ইট বিছানো ছাদ ও ইট-চুন-সুরকির ১৫ ইঞ্চির গাঁথুনি দিয়ে নির্মিত লাল রং করা বিদ্যালয়টিতে হলরুমসহ বড় বড় ১৩টি কক্ষ রয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক বাবু জ্ঞানেন্দ্রনাথ মুখার্জিসহ অদ্যাবধি মোট ২১ জন প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়টির দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের মধ্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি আহসান উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক রাজস্বমন্ত্রী ফখর উদ্দিন, নাট্যকার আশকার ইবনে শাইখ, বর্তমান তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ অন্যতম। বর্তমানে বিদ্যালয়টির প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ৪ বছর যাবৎ সহকারী শিক্ষক দিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাজ চালানো হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টির যাত্রাকাল থেকে এর নামে খেলার মাঠ, ছাত্রাবাস, মসজিদ, জিমনেশিয়াম, জমিদারের খননকৃত ৩৮০ শতকের অনন্ত সাগর নামে বিশাল পুকুর, শিক্ষক ও স্টাফদের বাসভবনসহ মোট জমির পরিমাণ ছিল ১৬ একর। কিন্তু ১৯৯১ সালে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণের সময় জমির পরিমাণ দেখানো হয় মাত্র ১০ একর। আর এই সুযোগে এক শ্রেণীর সুবিধাভোগী লোক তৎকালীন বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের ৬ একর জমি নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। শিক্ষকদের বাসভবনগুলো জাল কাগজে ব্যক্তি মালিকানায় চলে যায়। বিদ্যালয়ের নামে খেলার মাঠের অধিকাংশ জায়গা দখল করে নিয়ে সেখানে নির্মিত হয়েছে বাড়িঘর। বিদ্যালয়ের সম্মুখভাগের সারি সারি নারিকেল গাছ, শান-বাঁধানো ঘাটসহ সুবিশাল জায়গা ভেঙে ভেঙে পুকুরে বিলীন হয়ে গিয়েছে। ২০০৭ ও ২০০৯ সালে ফ্যাসেলিটিজ বিভাগের অর্থায়নে বিদ্যালয়টির মূলভবনের ছাদ সংস্কার করা হলেও বর্ষায় পানি পড়া বন্ধ হয়নি। এরপর থেকে এ যাবৎ এর সংস্কারের কোনো উদ্যোগ বা পুকুর ভাঙন রোধে নেওয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ। ফলে ঐতিহাসিক স্থাপত্যকীর্তিটি ধসে পড়া এখন সময়ের ব্যাপার। তাই এ বিদ্যাপীঠটি রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসা উচিত। হুমায়ুন কবির, গৌরীপুর

Tuesday, April 12, 2011

রাংকুট বিহার, কক্সবাজার

0 comments
ছায়া সুনিবিড় সবুজ অরণ্যে ঘেরা পাহাড়। নিচে বিশালাকৃতির শতবর্ষী বটবৃক্ষের পা-ঘেঁষে থরে থরে সাজানো সিঁড়িগুলো উঠে গেছে পাহাড়চূড়ায়। ওপরে উঠেই দেখা যায়, ছোট-বড় পাশাপাশি চারটি বৌদ্ধমূর্তি। যার একটি হচ্ছে মহাকারণিক গৌতম বুদ্ধের (বুড়া গোঁয়াই) মূর্তি। কক্সবাজারের রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের রাংকুট (রামকোট) বনাশ্রম বৌদ্ধবিহারে গেলে দেখা যাবে এ দৃশ্য। এখানে বেড়াতে আসা দর্শকেরা নিজের অজান্তেই যেন চলে যান সুদূর অতীতের বৌদ্ধ সভ্যতার দিনগুলোতে। পূরাকীর্তি ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের পুণ্যভূমি রামুতে আরও প্রায় ৩০টি বৌদ্ধবিহার থাকলেও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে রাংকুটের গুরুত্ব এ কারণেই বেশি।


জানা গেছে, প্রায় দুই হাজার বছর আগে ভারতবর্ষের সম্রাট অশোক এ মন্দির নির্মাণ করেন। এ প্রসঙ্গে ধন্যবতী রাজবংশ বইতে উল্লেখ আছে, গৌতম বুদ্ধ ধন্যবতীর রাজা চাঁদসুরিয়ার সময়ে সেবক আনন্দকে নিয়ে আরাকানের রাজধানী ধন্যবতী আসেন। সেখানে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গৌতম বুদ্ধ আনন্দকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘হে আনন্দ, ভবিষ্যতে পশ্চিম সমুদ্রের পূর্বপাশে পাহাড়ের ওপর আমার বক্ষাস্থি স্থাপিত হবে। তখন এর নাম হবে রাংউ।’
‘রাং’ অর্থ বক্ষ, আর ‘উ’ অর্থ অস্থি অর্থাৎ ‘রাংউ’ শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘বক্ষাস্থি’। ধারণা করা হচ্ছে ভাষার বিবর্তন হয়ে রাংউ থেকে রামু শব্দটি এসেছে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী লোকজনের বিশ্বাস বর্তমানে রামুর রামকোট বৌদ্ধবিহারেই মহাকারণিক গৌতম বুদ্ধের বক্ষাস্থি স্থাপিত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেশকিছু পুরোনো স্মৃতিচিহ্ন মূর্তির ধ্বংসাবশেষ, সেকালের ইটের টুকরা করে কাচের বক্সে সংরক্ষণ করা হয়েছে। বিহারের অধ্যক্ষ প্রজ্ঞাবংশ মহাথের জানান, ব্যাপকভাবে খননকাজ চালালে এখান থেকে আরও অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কার করা যাবে।
‘রামকোটের ইতিহাস’ শিরোনামের একটি বাঁধাই করা প্রচারপত্র থেকে জানা গেছে, খ্রিষ্টপূর্ব ২৬১ অব্দে সংঘটিত ইতিহাসের বিভীষিকাময় কলিঙ্গ যুদ্ধের সময় মানবতার ধ্বংস এবং যুদ্ধের ভয়াবহতা সম্রাট অশোকের মনে দারুণ রেখাপাত করে। মানবসেবায় আত্মনিয়োগের জন্য এ সময় তিনি বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে বৌদ্ধধর্মের প্রচার এবং শ্রীবৃদ্ধিকল্পে তিনি ভারতীয় উপমহাদেশে ৮৪ হাজার ধর্ম স্কন্ধ (মন্দির) নির্মাণ করেন। ধারণা করা হয়, রামুর রামকোট বনাশ্রম বৌদ্ধবিহার তার মধ্যে একটি। খ্রিষ্টপূর্ব ৩০৮ সালে এ মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। মন্দিরের প্রধান ফটকের উপরেও এমন সময়ের কথা উল্লেখ আছে।
এ প্রচারপত্রে আরও উল্লেখ আছে, ‘বিহারটি নির্মাণের পরবর্তী সময়ে এখানে ৭০০ বৌদ্ধ ভিক্ষু বসবাস করতেন। প্রাচীন চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং-এর ভ্রমণ কাহিনিতেও এর উল্লেখ পাওয়া যায়। ১৬৬৬ সালে মোগলদের আক্রমণে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায় ঐতিহাসিক রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধবিহার। ওই সময় বিহারটি ধ্বংসস্তূপ ও বন জঙ্গলে পরিণত হয়েছিল। মোগল আক্রমণের প্রায় ২৬৩ বছর পর ১৯২৯ সালে আবার নতুন করে বিহারটি আবিষ্কৃত হয়।’
দক্ষিণ চট্টগ্রামের বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু, রামু মেরংলোয়া সীমা বিহারের অধ্যক্ষ পণ্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের জানান, ‘১৯২৯ সালের দিকে বিহারের ধ্বংসাবশেষ দেখে তৎকালীন জগৎচন্দ্র মহাস্থবির নামের এক বৌদ্ধধর্ম সংস্কারক এটি পুনর্প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসেন। ওই সময় রাংকুটের পাহাড়ের পাদদেশে মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ এবং প্রাচীন বুদ্ধমূর্তির অসংখ্য টুকরা পাওয়া যায়। স্থানীয় জমিদার মতিসিং মহাজনের আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে জগৎচন্দ্র মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করেন। সেই থেকে আবার রাংকুট বৌদ্ধবিহারে ব্যূহচক্র মেলা (পেঁচঘর), ৮৪ হাজার ধর্ম স্কন্ধ পূজাসহ নানা উৎসব উদ্যাপন করা হচ্ছে।’ তিনি আরও জানান, জগৎচন্দ্র মহাস্থবিরের অনুপ্রেরণায় বাংলা নববর্ষের বৈশাখ মাসের প্রথম দিকে সাত দিনের ব্যূহচক্র মেলার (পেঁচঘর) আয়োজন করা হতো। যা পরবর্তীকালে রামকোটের মেলা নামে পরিচিতি লাভ করে।
রাংকুট (রামকোট) বনাশ্রম বৌদ্ধবিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুরেশ বড়ুয়া জানান, ‘১৯৬৬ সালে প্রজ্ঞাজ্যোতি মহাথের নামের এক ধর্মসংস্কারক এ মন্দিরের সংস্কারকাজ করেন। সুদীর্ঘ ২০ বছরের বেশি সময় তিনি এখানে অবস্থান করেন। ১৯৮৮ সালে মন্দিরে অবস্থান কালে গভীর রাতে তিনি ডাকাতদলের আক্রমণের শিকার হন। এ সময় ডাকাতেরা মন্দিরের বহু প্রাচীন বুদ্ধমূর্তি ভাঙচুর করে।’ দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সুস্থ হলে প্রজ্ঞাজ্যোতি মহাথের রামকোট থেকে চলে যান। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রতিবছর বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে অনুষ্ঠিত ‘৮৪ হাজার ধর্ম স্কন্ধ পূজা’ প্রজ্ঞাজ্যোতি মহাথের প্রবর্তন করেন।
স্থানীয় সঞ্জয় বড়ুয়া জানান, গৌতমবুদ্ধের মূর্তির সামনে ৮৪ হাজার ধর্ম স্কন্ধ পূজাকে ঘিরে প্রতিবছর বৈশাখী পূর্ণিমার আগের রাত থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বৌদ্ধ নর-নারীরা এ বিহারে ছুটে আসেন। রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ প্রজ্ঞাবংশ মহাথের বলেন, ‘ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এ মন্দিরের গুরুত্ব খুব বেশি। আর এখানে সংরক্ষিত বুড়ো গোঁয়াই মূর্তি বৌদ্ধদের কাছে অতি পূজনীয়।’ তিনি জানান, যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বিহারটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা যাচ্ছে না। বিহারটিকে দৃষ্টিনন্দন করে সাজানো হলে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর পুরাকীর্তি হিসেবে পরিচিতি পাবে।

-Source: Daily Prothom Alo

Saturday, April 9, 2011

রাসায়নিকের প্রভাবে পুরুষদের উর্বরতা কমে যাচ্ছে

0 comments
রাসায়নিকের প্রভাবে পুরুষের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ার পাশাপাশি শুক্রাণুর স্বাস্থ্য ও সংখ্যা কমে সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ফিনল্যান্ডের এক গবেষণায় একথা বলা হয়েছে।
শুক্রবার বিবিসি জানিয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব অ্যান্ড্রোলোজিতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে ফিনল্যান্ডের গবেষকরা বলেছেন, এ দুই ধরনের প্রবণতার জন্য পরিবেশগত কারণ বিশেষত শিল্প-কারখানার বর্জ্যরে প্রভাব রয়েছে। ১৯৭৯ ও ১৯৮৭ সালে জন্ম নেওয়া পুরুষদের ওপর গবেষণা চালিয়ে তাদের শুক্রাণুতে রাসায়নিকের এ প্রভাবের প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকরা।
আশির দশকের শুরুর দিকে জন্ম নেওয়া পুরুষের চেয়ে ওই দশকের শেষের দিকে জন্ম নেওয়া পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা কম বলে জানান তারা।
১৯৭৯-৮১ সালে জন্ম নেওয়া পুরুষের মোট শুক্রাণুর সংখ্যা যেখানে ২২ কোটি ৭০ লাখ সেখানে ১৯৮২-৮৩ সালে জন্ম নেওয়া পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা ২০ কোটি ২০ লাখ এবং ১৯৮৭ সালে জন্ম নেওয়া পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা ১৬ কোটি ৫০ লাখ।
এছাড়া, ১৯৫০ সালের দিকে জন্ম নেওয়া পুরুষের তুলনায় ১৯৮০ সালের দিকে জন্ম নেওয়া পুরুষের প্রজননতন্ত্রে ক্যান্সার (টেস্টিকুলার ক্যান্সার) বেশি হয়েছে।
প্রফেসর জরমা টোপ্পারির নেতৃত্বাধীন গবেষকরা বলেন, "এ স্বতঃস্ফূর্ত ও দ্রুত দেখা দেওয়া বৈরী প্রবণতাগুলো থেকে বোঝা যায়, এগুলো পরিবেশগত কারণে হয়ে থাকে যা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

--আমার হেলথ

Sunday, April 3, 2011

টাঙ্গাইলের কাঁসা শিল্প

0 comments
বাঙালির গৃহস্থালি ও সংস্কৃতির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে তামা, কাঁসা ও পিতলশিল্প। বিয়ে, খাৎনা, অন্নপ্রাসন, জন্মদিন, আকিকা প্রভৃতি অনুষ্ঠানাদিতে প্রধান উপহারসামগ্রী ছিল কাঁসার গ্লাস, বাটি, ফুলদানি, চামচ, রেকাব শানকে, গামলা, বেলিবগি, পানদানি, থালা, পিতলের টব, কলসি, বালতি, কড়াই, পানের থালা, ধূপদানি, তামার কলস, হাঁড়িপাতিল, পুষ্পপাত্র ইত্যাদি। সেসব উপহারসামগ্রীর স্থান দখল করে নিয়েছে আধুনিক ডিজাইনের মেলামাইন, প্লাস্টিক, কাঁচ ও স্টিলসামগ্রী। কাঁচামালের অভাবে তামা, কাঁসা, পিতলশিল্প এদেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।

একসময় টাঙ্গাইলের কাঁসা, তামা ও পিতলশিল্প বিশ্ববিখ্যাত ছিল। টাঙ্গাইলের কাগমারিতে তৈরি 'কাগমারি কলস' নামে বিখ্যাত একটি পণ্যের চাহিদা ছিল দেশজুড়ে। এসব শিল্পের অন্যান্য পণ্যের মধ্যে ছিল পূজার ঘট, ঘণ্টা, তাম্রকুণ্ড, জাহাজের ঘণ্টা, গামলা, প্রদীপ গাছা, পিতলের মূর্তি, সংগীতের যন্ত্রপাতি, সন্দেশ পেয়ালা, বেলিবগি, টেডিগ্লাস, রাজভোগ, রাধাকান্তী, হাতঘণ্টা, স্কুলের ঘণ্টা, চাদরে ঘটি, গিনি গ্লাস, বেলেশ্বরী ইত্যাদি। বর্তমানে ঢাকা জেলার ধামরাই, জামালপুর, ইসলামপুর, নবাবগঞ্জ ও বিক্রমপুরের ঘোড়দৌড় বাজার, টাঙ্গাইল জেলার কাগমারি, বাঘিল, মগড়া ও বল্লায় বেশকিছু ক্ষুদ্র ও বড় কারখানা রয়েছে।

১৫৭৬-১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে মোঘল শাসনামলে এদেশে তামা, কাঁসা ও পিতলের ব্যবহার শুরু হয়। এসব ধাতু দিয়ে তারা ঢাল, তলোয়ার, তীর-ধনুক, বন্দুক ও কামান তৈরি করত। ব্রিটিশ শাসনামলে এই শিল্পের প্রসার ঘটে এবং বাংলার ঘরে ঘরে এর ব্যবহার শুরু হয় এবং খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আর এই শিল্পের ছোট-বড় বহু কারখানা গড়ে উঠে।


টাঙ্গাইল জেলার কাগমারির মহাদেব কর্মকার ও দুর্গাচরণ কর্মকার জানান, অনুন্নত কাঁচামাল ও এর উচ্চমূল্যের ফলে ধাতব পণ্য তৈরি দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কাঁসা, পিতল ও তামার তৈরি বাসন-কোসনের ব্যবহার ও চাহিদা কমে যাওয়ায় এই শিল্প এখন হুমকির মুখে। অভিমান করে দুলাল চন্দ্র কর্মকার বলেন, 'এসব লেইখা কি করবেন? ভাঙা মাল সব ভারতে চইলা যাইতাছে। তাই তো কাঁসা পেতল দুর্লভ অইয়া গ্যাছে।' সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, কাগমারীতে এখন মাত্র দু'টি, বাঘিলে দু'টি, মগড়াতে ৬টি ও বল্লাতে ১২টি ক্ষুদ্র পিতল শিল্পের কারখানা রয়েছে। বর্তমানে টাঙ্গাইলের কোথাও কাঁসা শিল্প নেই। এটি অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। জাপান ও ইতালিসহ অন্যান্য দেশ থেকে আগে এসব আমদানি করা হতো। ডলারের মূল্য বৃদ্ধি, শিল্পীদের পেশা বদল ও ধাতব পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় এ শিল্প বিলুপ্তির পথে। এছাড়া একবস্তা কয়লা যেখানে ১০০ টাকা ছিল, এখন তা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। ১ কেজি ভাঙা কাঁসার দাম ছিল ১৬০ টাকা, এখন তা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ব্যবসায় দারুণ প্রভাব ফেলছে। ফলে কারিগররা পেশা বদল করে অন্য পেশায় ঝুঁকছে। দুলাল চন্দ্র কর্মকার জানান, টাঙ্গাইলে আর মাত্র একযুগ এই শিল্প টিকে থাকতে পারে। কেননা, আমরা এ পেশায় জড়িত থাকলেও অলাভজনক হওয়ায় আমাদের সন্তানরা এ কাজে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। অপরদিকে অত্যাধুনিক ও বৈচিত্র্যময় প্লাস্টিক ও মেলামাইন পণ্যসামগ্রীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগুতে পারছে না তামা, কাঁসা ও পিতলশিল্প। ফলে আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ শিল্প এখন বিলুপ্তির পথে।

-সৈয়দ সরোয়ার সাদী, ভূয়াপুর

বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন

0 comments

বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন 'বুর্জ খলিফা'


বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল পাঁচতারা হোটেল বুর্জ আল দুবাইয়ের পর ১৫০ কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মিত 'বুর্জ খলিফা' আরেক শ্রেষ্ঠ স্থাপত্য নিদর্শন হিসেবে আবির্ভূত হলো। এই একুশ শতকে সবচেয়ে উঁচু ভবনটি দেখতে এখন দুবাইতেই যেতে হবে। রকেটের মতো দেখতে এ ভবনটি দুই হাজার ৭১৭ ফুট উঁচু। ৬০ মাইল দূর থেকেও ভবনটি দেখা যায়। ভবনের ৭৬ তলায় রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থিত সুইমিংপুল ও ১৫৮ তলায় সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থিত মসজিদ। নির্মাণের সময় নাম ছিল বুর্জ দুবাই। তবে আবুধাবির শাসক শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সম্মানে ভবনের নাম বুর্জ দুবাইয়ের পরিবর্তে বুর্জ খলিফা রাখা হয়েছে। ১৬৯ তলাবিশিষ্ট 'বুর্জ খলিফা'র আগে তাইওয়ানের তাইপে ১০১ তলা ছিল বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন। ছয় লাখ বর্গফুটবিশিষ্ট এই ভবনে একসঙ্গে ১২ হাজারেরও বেশি লোকের সমাবেশ হতে পারে। বুর্জ ভবনে ৫৪টি এলিভেটর বা লিফট আছে। এগুলোর গতি ঘণ্টায় ৪০ মাইল। ভবনটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইমার প্রপার্টিস জানায়, এরই মধ্যে ভবনের ৯০ শতাংশ ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি হয়ে গেছে। দুবাইয়ে এখন শত শত ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রির অপেক্ষায় থাকলেও ক্রেতারা এই ভবনের দিকেই আকৃষ্ট হচ্ছে।

তাইপে ফিনান্সিয়াল সেন্টার

তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেতে অবস্থিত এ ভবনটির অপর নাম তাইপে ফিনান্সিয়াল সেন্টার। ১০১ তলাবিশিষ্ট এ ভবনটির উচ্চতা ১৬৭১ ফুট (৫০৯ মিটার)। ২০০৩ সালে পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারকে পরাজিত করে তাইপে-ফিনান্সিয়াল সেন্টার বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবনের মর্যাদা লাভ করে। ভবনটির ডিজাইন করেছেন সিওয়াইলি অ্যান্ড পার্টনারস। ইস্পাত এবং কাচনির্মিত এ ভবনটি অনেকটা ঐতিহ্যবাহী চাইনিজ প্যাগোডার আদলে তৈরি।

পেট্রোনাস টাওয়ার


মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার বিশ্বের অন্যতম সুদৃশ্য ভবন। উচ্চতা ১৪৮৩ ফুট (৪৫২ মি.) ডিজাইন করেছেন আর্জেন্টাইন-আমেরিকান স্থপতি মিজার পেলি্ল। ১৯৯৭ সালে নির্মাণকাজ শেষ হলে এটি শিকাগোর সিয়ার্স টাওয়ারকে ছাড়িয়ে যায়। পেট্রোনাস টাওয়ার হচ্ছে মালয়েশিয়ার সরকার-নিয়ন্ত্রিত তেল কোম্পানি পেট্রোনাসের সদর দফতর। এর অবস্থান মালয়েশিয়ার হাইটেক শহরাঞ্চল মালয়েশিয়া মাল্টিমিডিয়া সুপার করিডরে স্টেইনলেস স্টিল এবং কাচনির্মিত এ ভবনে ৮৮টি তলা রয়েছে।

সিয়ার্স টাওয়ার

শিকাগোর সিয়ার্স টাওয়ার বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম ভবন। নির্মাণকাল ১৯৭০ থেকে ১৯৭৪। সিয়ার্স রোইবাক অ্যান্ড কোং ১১০ তলাবিশিষ্ট এবং ১৪৫০ ফুট উচ্চতার এ ভবন নির্মাণ করেছেন স্কিডমোর, ওয়িংস এবং মেরিল। ঝালাই ইস্পাতের তৈরি চৌকোনা টিউবের ওপর দাঁড়িয়ে আছে সিয়ার্স টাওয়ারের কাঠামো। এ সুদৃশ্য ভবনের ডিজাইন করেছেন বাংলাদেশের স্থপতি ফজলুর রহমান খান।

এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং


নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটনের কেন্দ্রে পঞ্চম এভিনিউতে দাঁড়িয়ে আছে ১২৫০ ফুট উঁচু বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এ ভবন। ১৯৩০-৩১ সালে নির্মিত এ ভবনের ডিজাইন করেছেন শ্রেভ, ল্যাম্ব এবং হার্মন ফার্ম। ১০২ তলাবিশিষ্ট এ ভবন দীর্ঘদিন বিশ্বের উচ্চতম ভবনের মর্যাদা দখল করেছিল। টুইন টাওয়ার নির্মিত হলে এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং সেই মর্যাদা হারায়। ২০০১ সালে সন্ত্রাসী হামলায় টুইন টাওয়ার ধ্বংস হয়ে গেলে এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং পুনরায় যুক্তরাস্ট্রের সর্বোচ্চ ভবনে পরিণত হয়। এটি একটি অফিস ভবন। এতে ২৫ হাজার লোক কর্মরত।

-মাহমুদ আহমেদ

কোন প্রাণী কতদিন বাঁচে

0 comments
প্রাণীর নাম আয়ু
মানুষ ১১৪ বছর
গরিলা ৩৯.৩ বছর
বাঘ ৩১.১০ বছর
কচ্ছপ(টরটয়েড) ১১৬ বছর
কাছিম (টার্টল) ৫০০ বছর
তিমি ৮৭ বছর
কন্ডুর শকুন ৭২ বছর
দাঁড় কাক ৬৯ বছর
স্বাদু পানির মুসেল ৬০ বছর
গন্ডার ৪০ বছর
নোয়া জাতের অজগর ৩৯ বছর
পায়রা ৩৫ বছর
ফিতাকৃমি বা টেপওয়াম ৩৫ বছর
হাতি ৭০ বছর

ম্রো আদিবাসীদের গো-হত্যা উৎসব

0 comments
বান্দরবানের টংগাবতী ইউনিয়নের ম্রো পাড়ায় গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হয়েছে ম্রো আদিবাসীর গো-হত্যা উৎসব। অতি প্রাচীনকালের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী আয়োজিত এ উৎসবে কোনো আদিখ্যেতা না দেখা গেলেও আনন্দ ও উচ্ছ্বাসের কমতি ছিল না। এবারের উৎববে তাদের উচ্ছ্বাসকে একধাপ বাড়িয়ে দিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন ও পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বীর বাহাদুর ঊশৈ সিং যোগ দিয়ে। উৎসবে ম্রো উপজাতি ছাড়াও আশপাশের অন্য উপজাতি ও বাঙালিরাও যোগ দিয়েছেন উৎসাহের সঙ্গেই।

গো-হত্যার প্রচলিত বিশ্বাস ও ম্রো উপজাতির আদি উপাখ্যান থেকে জানা যায়, সৃষ্টিকর্তা যখন প্রত্যেক জাতির উন্নয়নের জন্য নিজস্ব অক্ষর বা বর্ণমালা প্রদান করতে ধরণীতে নেমে আসেন, তখন সব জাতি উপস্থিত থাকলেও ম্রো জাতি ছিল না। তারা সেদিন আমোদ-প্রমোদে ব্যস্ত থেকে নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করেই দিন কাটায়। সৃষ্টিকর্তা গরুকে দূত হিসেবে ডুমুরপাতায় লেখা ম্রো ভাষার বর্ণমালা পাঠান। পথিমধ্যে ভীষণ ক্ষুধা পেলে গরুটি ডুমুর গাছের পাতাসহ ম্রোদের অক্ষরগুলো খেয়ে ফেলে। পরে বিধাতার কাছে ম্রোরা জানতে চাইলে তাদের বলেন, 'তোমরা নাচ, গান, আনন্দ-উল্লাসের মধ্যদিয়ে গরু হত্যা কর, যাতে সৃষ্টিকর্তাকে সন্তুষ্ট করা যায়।'

উৎসবের মূল আয়োজক ও গো-হত্যাকারী এলাকার হেডম্যান পূর্ণচন্দ্র ম্রো চেয়ারম্যান উৎসব সম্পর্কে বলেন, আমাদের ধর্মে অন্যায়ভাবে বা ইচ্ছাকৃতভাবে গরুকে হত্যা করা যায় না। বৈদ্য গণনা অনুসারে অথবা জুমের বিভিন্ন পূজার মধ্যে গো-হত্যা করা হয়। এবারও তাই যথারীতি নিয়ম মেনে গো-হত্যা করা হয়েছে। গতবছর দুটি গরু হত্যা করা হয়েছে, এবার একটি।

সরেজমিন দেখা গেছে, একটি গরুকে হেডম্যানের উঠানে বাঁশ দিয়ে তৈরি করা একটি ছোট্ট ঘেরার মধ্যে আটকে রাখা হয়েছে। তার উপরে বাঁশের আঁশ তুলে তৈরি করা একটি বিশাল রঙিন চাটাই দেওয়া হয়েছে। গত শনিবার সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় চাটাইয়ের নিচে গরুকে ঘিরে ম্রোদের নিজস্ব ধারায় তৈরি বাঁশের বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে তরুণ-তরুণীদের নৃত্য। এভাবে একেকটি দল রাতব্যাপী পালা করে নাচতে থাকে। পাশাপাশি আগত অতিথিদের জন্য গরুর মাংস, মুরগি, শূকর, মাছ ও বিভিন্ন ভর্তা দিয়ে আপ্যায়ন এবং চোলাইমদ পানের ব্যবস্থা করা হয়। রবিবার সূর্যাস্তের পর শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। হেডম্যান ভোর ৭টার দিকে একটি বিষ মাখানো সেল দিয়ে পরপর তিনবার আঘাত করে গরুটিকে হত্যা করে। এরপর শুরু হয় ভাগ-বাটোয়ারা ও রান্না-বান্নার আয়োজন এবং নাচ-গান। এভাবেই সারাদিন চলতে থাকে উৎসব।

তবে আশির দশকে ম্রো উপজাতির এক সাধারণ সন্তান হঠাৎ চারদিকে হৈচৈ ফেলে দেন। তার নাম মেনলে ম্রো। তিনি এক ধ্যানী কিশোর ছিলেন। একদিন হঠাৎ তিনি ম্রোদের জন্য একটি ভিন্ন বর্ণমালা আবিষ্কার করেন এবং একটি নতুন ধর্মীয় রীতি চালু করেন, যার নাম ক্রামা ধর্ম। বর্ণমালা আবিষ্কারের তিন-চার বছরের মধ্যে তিনি হঠাৎ উধাও হয়ে যান। তার প্রবর্তিত ক্রামা ধর্ম ও বর্ণমালা খুমি ও ম্রো উপজাতির অনেকেই অনুসরণ করেন। তাদের ধারণা, মেনলে ম্রো একদিন দেবতা হিসেবে আবির্ভূত হবেন। ফলে এই অংশটি এখন আর গো-হত্যা করেন না।

-ফারুক তাহের ও নাজিম উদ্দিন

লস্ট ডাচম্যান মাইন

0 comments
পৃথিবীর অন্যতম বিতর্কিত গুপ্তধন হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার The lost Dutchman mine বা [লস্ট ডাচম্যান মাইন]। এটি বিশ্বব্যাপী সুপারস্টিশন বা কুসংস্কার পর্বত হিসেবে পরিচিত। একটি সোনার খনি হিসেবেও এর পরিচিতি ছিল ব্যাপক। এই খনি নিয়ে শোনা যায় ৬০টির মতো গল্প । সবগুলো গল্পই বেশ তাৎপর্যপূর্ণ এবং রহস্যমণ্ডিত।
১৫৪০ সালে স্পেনের ফ্রান্সিসকো ভাসকুয়েজ Seven cities of Cibola খুঁজতে এসে অ্যারিজোনার সুপারস্টিশন বা কুসংস্কার পর্বতে স্বর্ণখনির গল্প শুনতে পেলেন। কিন্তু সেখানকার অ্যাপাচি ইন্ডিয়ানরা এই পর্বতটিকে পবিত্র হিসেবে মনে করত। তারা ফ্রান্সিসকোকে তাদের পবিত্র পর্বতে যাওয়া থেকে বিরত রাখল। আরও বলল এরপরও যদি সেখানে যায়, তাহলে বজ্র দেবতা রুষ্ট হয়ে শাস্তি দেবেন। হলোও তাই। ফ্রান্সিসকো তাদের কথা না শুনে অভিযান চালালেন সেই পর্বতে। কিন্তু শেষে পুরো দলের সবাই নিখোঁজ হয়ে গেল।

এরপর ১৭৪৮ সালে এক মেক্সিকান পেরেল্টা পরিবার এই সুপারস্টিশন পর্বতের পাশে এসে বসবাস করতে শুরু করল। পাহাড়টি ততদিনে সোনার খনি হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছে। পেরেল্টা পরিবার ও তাদের কর্মচারীরাও মাঝে মাঝে ওই পাহাড় থেকে সোনার আকর আনতে শুরু করেন। এক বছর পর মেক্সিকোতে যুদ্ধ শুরু হলে পেরেল্টা পরিবারের লোকজন সবাই মেক্সিকোতে চলে যান। কিন্তু একজন রয়ে যান শুধু সোনার লোভে। তিনি আর তার দল অ্যাপাচি ইন্ডিয়ানদের নিষেধ অমান্য করে আবার খনিতে গিয়েছিলেন। তবে ঘোড়া বোঝাই করে সোনার আকর নিয়ে ফেরার পথে ইন্ডিয়ানরা তাদের আক্রমণ করেছিল। ইতিহাসে এই দুর্ধর্ষ আক্রমণের গল্পও লেখা আছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে পেরাল্টা ম্যাসাকার।

মেক্সিকো যুদ্ধের পর আরেকটি গল্প শোনা যায় ডা. আব্রাহাম থ্রোনকে নিয়ে। তিনি এক অ্যাপাচি ক্যাপ্টেনের চোখের চিকিৎসা করেছিলেন। পুরস্কার হিসেবে তাকে চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় সোনার খনিতে। চোখের বাঁধন খুলে, অ্যাপাচি চিফ তাকে বলে যত খুশি তুলে নাও। ডা. থ্রোন অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে যতটুকু পেরেছিলেন তুলে নিয়েছিলেন। তারপর আবারও তাকে চোখ বেঁধে তার বাসায় পেঁৗছে দেওয়া হয়েছিল। ডা. থ্রোন মনে মনে ঠিক করলেন, তিনি আবারও ওই খনিতে যাবেন। দু'জন সঙ্গীও যোগাড় করলেন। কিন্তু বর্জ্র দেবতার আক্রোশেই হোক কিংবা অজানা কোনো কারণেই হোক শেষ পর্যন্ত খুন হয়ে গেলেন তিনজনই।

এই খনির নাম যে জার্মান ভদ্রলোকের কারণে উঁঃপযসধহ হয়েছে বলে ধারণা করা হয়, তার নাম-জ্যাকব ওয়াল্টজ পেরাল্টা পরিবারের বন্ধু ছিলেন তিনি। ৬০ বছর বয়সে ১৮৭০ সালে তিনি উঁঃপযসধহ খনিতে প্রথম হানা দেন। ব্যর্থ হয়ে ওয়াইজনার নামের আরেক জার্মানকে সঙ্গে নিয়ে আবারও গিয়েছিলেন ওয়াল্টজ্। কিন্ত বিধি বাম। মারা গেলেন ওয়াইজনার। আর এদিকে জ্যাকব ওয়াল্টজও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পৃথিবী ত্যাগ করলেন। এরপর থেকেই আলোচিত এই খনিটির নাম পাল্টে যায়। The lost Dutchman সরহব এর গল্প এভাবেই চিরদিন চলে আসছে। যে ব্যক্তিই এই গুপ্তধনের পেছনে ছুটেছে, বজ্র দেবতার অভিশাপ যেন তার পেছন পেছন ধাওয়া করেছে।

-নবাব আমিন

Friday, April 1, 2011

ষাটগম্বুজ মসজিদ, বাগেরহাট

0 comments
ষাটগম্বুজ বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। মসজিদটির গায়ে কোনো শিলালিপি নেই। তাই এটি কে নির্মাণ করেছিলেন বা কোন সময়ে নির্মাণ করা হয়েছিল, সে সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী দেখলে এটি যে খান-ই-জাহান নির্মাণ করেছিলেন, সে সম্পর্কে কোনো সন্দেহ থাকে না। ধারণা করা হয়, তিনি ১৫০০ শতাব্দীতে এটি নির্মাণ করেন। এ মসজিদটি বহু বছর ধরে এবং বহু অর্থ খরচ করে নির্মাণ করা হয়েছিল। পাথরগুলো আনা হয়েছিল রাজমহল থেকে। এটি বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের একটি। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো এ সম্মান প্রদান করে। মসজিদের চার কোণে চারটি মিনার আছে। মসজিদের ভেতরে ৬০টি স্তম্ভ আছে। এগুলো উত্তর থেকে দক্ষিণে ছয় সারিতে অবস্থিত এবং প্রত্যেক সারিতে ১০টি করে স্তম্ভ আছে। প্রতিটি স্তম্ভই পাথর কেটে বানানো, শুধু পাঁচটি স্তম্ভ বাইরে থেকে ইট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এই ৬০টি স্তম্ভ ও চারপাশের দেয়ালের ওপর তৈরি করা হয়েছে গম্বুজ। মসজিদটির নাম ষাটগম্বুজ (৬০ গম্বুজ) হলেও এখানে গম্বুজ মোটেও ৬০টি নয়, গম্বুজ ১১টি সারিতে মোট ৭৭টি।
Source: Somokal

কসবা ওয়াল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

0 comments
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কসবা রেলওয়ে স্টেশনের নিরাপত্তা দেয়াল ঐতিহাসিক কসবা ওয়াল নামে পরিচিত। চীনের গ্রেট ওয়ালের সমান না হলেও কসবা ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষের হৃদয়ে প্রোথিত কসবা ওয়ালের অনেক স্মৃতি, যা আজো অম্লান। কসবা ওয়ালের আয়তন প্রায় ৫০০ গজ লম্বা। তার পূর্ব পাশে ১৫ গজ দূরে ভারতীয় ত্রিপুরা রাজ্যের সীমানা। সীমান্তের ওপারে রয়েছে ঐতিহাসিক কমলা রানীর দীঘি, তার পূর্ব পাড়ে শ্রী শ্রী কালী মাতার মন্দির ও ভারতীয় পর্যটন কমপ্লেক্স। জানা যায়, ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় কসবা স্টেশনকে ভারতীয় আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য কসবা ওয়াল নির্মাণ করে এক রাতে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি আজো কসবা ওয়াল বয়ে বেড়াচ্ছে।

জানা যায়, ২১ অক্টোবর, ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধা আবেদকে (মাইজখার) হত্যা করে পাক হানাদার বাহিনী কসবা ওয়ালের উপর বাঁশে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখে। তখন পাক হানাদার বাহিনী কসবা ওয়ালের পশ্চিম পাশ থেকে চেঁচিয়ে বলতে থাকে, 'মুজিব কা ছাওয়াল কেয়া করতা হে তুম? হাতিয়ার বি ঢাল দাও'। ল্যান্সনায়ক সামছুল হকের নেতৃত্বে এফ এফ জমসিদ মিয়া (গাববাড়ি), মো. বেগর আলী (চাপিয়া), আবু তাহের (নেমতাবাদ), আনোয়ার হোসেন (ষোলঘর)সহ ৪০/৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে কসবা ওয়ালের পূর্ব পাশের দু'প্রান্তে অবস্থান নেয়। পাকবাহিনী স্টেশনমাস্টারের রুমের পূর্ব পাশের জানালা দিয়ে মর্টার শেল তাক করে রেখেছিল। যাতে মুক্তিযোদ্ধারা কসবা স্টেশন এলাকা দখলে আসতে না পারে। আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে ভেরেন্ডাসেল ফাটিয়ে ওয়ালের দক্ষিণ পাশ ভেঙে মুক্তিযোদ্ধারা দখলে নেয় কসবা স্টেশনসহ আশপাশের এলাকা। এই যুদ্ধে সে. ল্যা. আজিজ জীবিত এক পাঞ্জাবিকে পাকড়াও করেছিল বলে জানা যায়। কিন্তু পাশের এক পাঞ্জাবির গুলির আঘাতে সে. ল্যা. আজিজ ও ধৃত পাঞ্জাবি মৃত্যুবরণ করেন। ওই যুদ্ধে ৩ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং সে. ল্যা. আজিজ ও আবেদ দু'জন শাহাদাতবরণ করেন। কসবা ওয়ালটি নোম্যান্স ল্যান্ডে হওয়ায় পর্যটকদের জন্য বেশি আকর্ষণীয়। কসবা ওয়ালের পূর্ব পাশে গেলেই দেখা যায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ের সারি যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে। ঐতিহাসিক কমলা রানীর দীঘিও আন্তর্জাতিক সীমায় হওয়াতে সীমানায় নরমাল কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে, যা দেয়ালের পূর্ব পাশে গেলেই দীঘির সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। ভারতীয় অনেক পর্যটক আসেন কসবা ওয়ালকে দেখার জন্য। বিশেষ করে রবি ও সোমবার কমলা রানীর দীঘির পশ্চিম পাড়ে শত শত পর্যটক দাঁড়িয়ে কসবা ওয়াল ও কসবা স্টেশনকে উপভোগ করেন। কসবা ওয়ালের বর্তমান অবস্থা নাজুক। মেরামতের অভাবে অনেক জায়াগা ভেঙে গেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাঙা জায়গাটি আজো রয়েছে অক্ষত। কসবা ওয়াল তার ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলবে যদি মেরামত করা না হয়। হারিয়ে যাবে মুক্তিযুদ্ধের একটি গর্বিত স্মৃতি। এ ব্যাপারে কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহম্মদ কবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ জায়গাটি রেলওয়ে ডিপার্টমেন্টের। এখানে সিভিল প্রশাসনের কিছু করার নেই। তিনি আরও জানান, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে যদি কোনো চিঠি ইস্যু করা হয় ওয়ালটি সংরক্ষণ করার জন্য, তাহলে ওয়ালটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে পারব আমরা।

সাইদুর রাহমান খান, কসবা

কানা রাজার গুহা, কক্সবাজার

0 comments
কক্সবাজারের 'কানা রাজার গুহা' দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে অন্যতম দর্শনীয় স্থান হতে পারে। জনশ্রুতি আছে, গুহাটি প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো। তবে গুহাটির নেই কোনো সংস্কার বা রক্ষণাবেক্ষণ। এতে পাহাড় ভেঙে গুহার মুখ অনেকখানি ভরাট হয়ে গেছে। এ কারণে ঐতিহাসিক এ গুহাটি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। গুহাটির মুখ প্রায় ১০০ বর্গফুট এবং গুহার দৈর্ঘ্য প্রায় তিন কিলোমিটার। এ গুহা কিভাবে এবং কেনইবা তৈরি করা হয় সেসব কাহিনী অজানাই রয়ে গেছে। ইনানী সমুদ্র সৈকত দর্শনে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকরা হাতে সময় থাকলে রহস্যঘেরা এ গুহাটিও এক নজর দেখে যান। কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন জালিয়াপালং। এই ইউনিয়নের ইনানী থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দক্ষিণে সাগরের কূলঘেঁষা পাটুয়ার টেকের সুউচ্চ পাহাড়ের পাদদেশে 'কানা রাজার গুহা'র অবস্থান। গুহাটির একেবারে কাছে যাওয়ার তেমন কোনো সুযোগ নেই। অনেক কষ্ট করে গুহাটির কাছে গেলে শোনা যায় বানর আর পাখির কিচিরমিচির শব্দ। এ সময় গা শিউরে ওঠে। জেলে ও স্থানীয়দের মুখ থেকে 'কানা রাজার গুহা' নিয়ে অনেক কথা শোনা যায়। কানা রাজার আসল পরিচয় কী তা উদ্ধার করা সম্ভব না হলেও এলাকায় জনশ্রুতি আছে, তিনি ছিলেন আধ্যাত্মিক শাসক। প্রায় ৩০০ বছর আগে কানা রাজা তার দলবলসহ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে পাটুয়ার টেকের পাহাড়ে অবস্থান নেন। সেখানে তিনি একটি গুহা খনন করান। পরবর্তীতে এটি 'কানা রাজার গুহা' নামে পরিচিতি লাভ করে। ৩০০ বছর আগে এখানকার একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল সমুদ্র পথ। সে সময় বঙ্গোপসাগরে দেশি-বিদেশি মালবাহী জাহাজ ও বিভিন্ন জলযান চলাচল করত। এসব জলযান থেকে কর আদায় করতেন কানা রাজা। অনেকে তাকে সমীহ করে দিয়ে যেত মূল্যবান সামগ্রী। এসব মালামাল গুহায় এনে রাখা হতো। তাই অনেকের ধারণা, এ গুহায় এখনো অনেক মূল্যবান সামগ্রী রয়েছে।
প্রায় ১০০ বছর আগে স্থানীয় চাক সম্প্রায়ের লোকজন পাহাড়ে জুম চাষ করার সময় এ গুহার সন্ধান পায়। পরবর্তীতে রহস্যঘেরা এ গুহা একনজর দেখার জন্য আসতে থাকে হাজার হাজার মানুষ। প্রত্যক্ষদর্শী অনেকের মতে, 'কানা রাজার গুহা'টি সম্ভবত দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ গুহা।

নবাব আমিন

বৈসাবি

0 comments
চৈত্র মাসে আদিবাসীদের এই প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি নিয়ে চাকমা সমপ্রদায়ের একটি গান আছে_ 'টুরু টুরু বাজি র-অ, বাজি বাজেত্তে, পাড়ায় পাড়ায় বেড়েবং বেক্কুন মিলিনেই, ইচ্ছা বিজু, ইচ্ছা বিজু' (টুরু টুরু বাঁশির সুর, বাঁশি বাজছে, পাড়ায় বেড়াব সবাই মিলে আজ বিজু, আজ বিজু)। বৈসাবি আসছে তাই আবারও এই গান বাজবে পাহাড়ে। কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী হাতে হাত ধরে পাড়ায় পাড়ায় বেড়াবে। বাড়িতে বাড়িতে চলবে খানাপিনা। বৈসাবিকে বরণ করার জন্য অস্থির হয়ে আছে পাহাড়ের কিশোর-কিশোরীরা। তারা বৈসাবিকে বলছে বৈসাবি তুমি আসবে বলে আমি বাবাকে নতুন জামার কথা বলে রেখেছি। ক্ষণগণনা অব্যাহত রয়েছে তাদের মনে। ভুলে গেলে বড় জনের কাছ থেকে জিজ্ঞাসা করবে বিজু কবে? কোন দিন? কি বার? পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিবেশ শান্ত থাকলে এ বছর বৈসাবি জাঁকজমকভাবে পালিত হবে বলে আশা করছেন সংস্কৃতি কর্মীরা। চৈত্র মাসের ২৯ তারিখ ফুল বিজুর মধ্য দিয়ে শুরু হবে পাহাড়ে আনন্দ উৎসবের বন্যা। চলবে পহেলা বৈশাখ পর্যন্ত।
আদিবাসীরা মূলত একটি দিনকে ফুল বিজু দিন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে তা হলো চৈত্র মাসের ২৯ তারিখ। এই দিনে ফুল দিয়ে পুরানো বছরকে বিদায় জানায় আদিবাসীরা। আর এই পুরনো বছরকে বিদায় জানাতে আদিবাসী কিশোর-কিশোরীরা এগিয়ে। তাদের ফুলে ভরে যায় চেঙ্গি, মাইনী, কর্ণফুলীসহ কাপ্তাই হ্রদের পাড়। বলা যায় ২৮ চৈত্র আদিবাসী কিশোর-কিশোরীর রাত জেগে থাকার দিন। সেদিন ভাসা ভাসা ঘুমে ভোরে পাখি ডাকার আগে ফুল চুরি করতে প্রস্তুত থাকে তারা। সময় এলে ফুল চুরি করতে নেমে পড়ে। ফুল তোলা শেষ হলে দাদিমাকে ডাকে, বলে চলো দাদিমা নদীতে ফুল দিতে যাই। নদীতে ফুল দেওয়ার পর গোসল করানোর প্রলোভন....। এই দিনে কিশোর-কিশোরীরা বুড়ো-বুড়িদের গোসল করায়, গ্রামের খামারগুলোর হাঁস-মুরগিকে খাবার দেয় তারা। ফুল বিজুর পর অর্থাৎ ৩০ চৈত্র বৈসাবির মূল উৎসব। এটি পাহাড়ের আদিবাসীদের প্রধান সামাজিক উৎসব। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে পুরনো বছরের গ্লানি মুছে ফেলে নতুনকে বরণ করে আদিবাসীরা। এই দিনে তাদের কারও মনে কোনো দুঃখ থাকবে না। সারাদিন বাড়িতে বাড়িতে চলে খানাপিনা। রান্না হয় পাচন, বিরিয়ানি, সেমাই, পিঠাসহ নানা ধরনের খাবার। গজ্যাপজ্যা দিন শব্দটি চাকমাদের ভাষা। যার অর্থ নতুন বছরের প্রথম দিন বা পহেলা বৈশাখ। এই দিনে আদিবাসীরা ধর্মীয় পুরোহিত বাড়িতে আনে। তাদের মাধ্যমে এবং নিজেদের পুণ্য কাজের মধ্য দিয়ে আত্মপরিশুদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করে আদিবাসীরা। বৈসাবির প্রস্তুতি হিসেবে রাঙামাটিতে বিশেষ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল শাখা। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে নানা ধরনের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নদীতে ফুল ভাসানো, র‌্যালি, আলোচনা সভা। ৯ এপ্রিল থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে।

হিমেল চাকমা, রাঙামাটি

ভেষজ উপায়ে রূপচর্চা

26 comments
সুস্থ আর সুন্দর ত্বক কে না চায়। আর সুন্দর ত্বকের জন্য দরকার হয় আলাদা যত্নের। প্রত্যেক মানুষের ত্বকের ধরন আলাদা আর ত্বকের ভিন্নতার কারণে যত্নও নিতে হয় একটু ভিন্ন উপায়ে। যাঁদের ত্বক কিছুটা সংবেদনশীল, তাঁদের জন্য রাসায়নিক দ্রব্যাদি দিয়ে তৈরি প্রসাধনসামগ্রী ত্বক সহ্য করতে পারছে না। তাঁদের জন্য রয়েছে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক গুণসমৃদ্ধ ও ভেষজ উপায়ে তৈরি রূপচর্চার নানা উপকরণ। চাইলে ঘরে বসে কিংবা পার্লারে গিয়েও আপনি ভেষজ উপায়ে রূপচর্চা করতে পারেন। ভেষজ উপায়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া সম্পর্কে বলছিলেন হারমনি স্পার পরিচালক ও রূপবিশেষজ্ঞ রহিমা সুলতানা

তিনি বলেন, ত্বক সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে—তৈলাক্ত, শুষ্ক ও সাধারণ। এই তিন ধরনের ত্বকের জন্য চাই তিন ধরনের রূপচর্চা।
ত্বক যখন তৈলাক্ত
যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত, তাঁদের বারবার মুখ ধুতে হবে। কেননা, পানি ত্বকের জন্য উপকারী। মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে শসার রস, মেথির গুঁড়া ও চালের গুঁড়া দিয়ে প্যাক তৈরি করে লাগানো যায়। নিয়ম করে সকালে আর বিকেলে প্যাক ব্যবহার করলে মুখের তৈলাক্ত ভাব কেটে যাবে। এতে ব্রণ হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়।
শুষ্ক ত্বকের জন্য
যাঁদের ত্বক শুষ্ক, তাঁদের জন্য রয়েছে রূপচর্চার অন্য উপায়। কাঠবাদাম, সয়াবিন পাউডার ও দুধ দিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখে দিনে অন্তত একবার মাখলে ত্বক অনেক মসৃণ হয়ে যায়। এতে শুষ্ক ভাবটা কমে যায়।
স্বাভাবিক ত্বকের বিশেষ যত্ন
অনেকে মনে করেন, যাঁদের স্বাভাবিক ত্বক, তাঁদের হয়তো রূপচর্চার দরকার নেই। বিষয়টি কিন্তু একদমই তেমন নয়। স্বাভাবিক ত্বকের জন্য রয়েছে বিশেষ যত্ন। আমলকী, সয়াবিনের গুঁড়া ও সামান্য একটু কাঁচা হলুদ আর মধু মিশিয়ে ঘরে প্যাক তৈরি করে লাগাতে পারেন।
ত্বক থাকুক তরুণ
ত্বকে বয়সের ছাপ যেন না পড়ে, সে জন্য তিল, পুদিনাপাতা, সয়াবিন পাউডার, কাঁচা হলুদ আর মধু দিয়ে প্যাক তৈরি করে মুখে নিয়ম করে সকালে মাখুন। এসব প্যাক ঘরে তৈরি করে ফ্রিজে রেখে অনায়াশেই কয়েক দিন ব্যবহার করতে পারেন।
চুলের যত্ন
নিয়ম করে চুলে তেল দেওয়ার পরামর্শও দেন রহিমা সুলতানা। তবে শুধু নারকেলের তেল নয়, নারকেলের সঙ্গে তিলের তেল মিশিয়ে নিলে চুল ভালো থাকে। আমলকী, হরীতকী, বহেড়া, ভৃঙ্গরাজ আর মেথি একসঙ্গে মিশিয়ে পিষে পেস্ট করে চুলে মেখে রাখুন। এরপর কলাপাতায় চুল পেঁচিয়ে কিছু সময় রেখে শ্যাম্পু করলে চুল হবে ঝরঝরে। আলাদা করে কন্ডিশনার ব্যবহার না করে আমলকী সেদ্ধ করে পানি ছেঁকে ওই পানি দিয়েও কন্ডিশনারের কাজ করা যায়। এই ভেষজ উপকরণগুলো বাজারে কিনতে পাওয়া যায়।
শুধু প্যাক তৈরি করে ত্বকে আর চুলে মাখলেই হবে না; খাবারের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। ত্বক সুন্দর রাখতে ভেতর থেকে ভালো থাকা প্রয়োজন। এ জন্য প্রচুর পানি আর ফল খেতে হবে। সকালে খালি পেটে থানকুনিপাতার রস কিংবা কাঁচা হলুদের রস খেলে পেট পরিষ্কার হয়, ত্বক ভালো থাকে।
নগরের বিভিন্ন পার্লার আজকাল ভেষজ বা হারবাল রূপচর্চার সেবা দিয়ে থাকে। ভেষজ রূপচর্চায় ফল একটু ধীরে পাওয়া যায়। তবে এটি সম্পূর্ণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত পদ্ধতি।

-প্রথম আলো

নবজাতকের টিকা

44 comments
একটি টিকা। সে আর এমন কী। দিলেই হবে একসময়। এভাবে মনে করতে করতে হয়তো আপনার নবজাতকটিকে সময় মতো আর টিকা দেওয়া হলো না। কিন্তু এই টিকাগুলোই নবজাতকের জীবন বাঁচাতে যথেষ্ট। ধনুষ্টংকার, হাম, যক্ষ্মার মতো রোগগুলোকে রাখবে দূরে সরিয়ে। আপনার সন্তানকে সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করবে।
জাতীয় রোগ প্রতিরোধ ও সামাজিক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানের (নিপসম) রোগতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইকবাল কবীর বলেন, ‘শিশুদের জীবননাশকারী কিছু রোগ আছে। এই রোগগুলোকে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। এই রোগগুলো থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্যই যথাসময়ে কটি টিকা দেওয়া উচিত।’
এক বছরের মধ্যে মোট সাতটি রোগের টিকা নিতে হবে। সরকারি উদ্যোগে টিকাগুলো দেওয়া হয়। এর জন্য আপনাকে আলাদাভাবে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। টিকার মাধ্যমে প্রতিটি শিশুকে সুরক্ষিত শিশুতে পরিণত করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জানালেন ইকবাল কবীর—

বিসিজি টিকা
জন্মের পরপরই যে টিকাটি দেওয়া হয়, তা হলো বিসিজি টিকা। এটি যক্ষ্মা প্রতিরোধ করে। জন্মের ৪২ দিন অর্থাৎ প্রায় দেড় মাসের মধ্যেই এ টিকা দেওয়া উচিত। এই টিকা দেওয়ার পর একটু ফুলে থাকতে পারে, হালকা জ্বরও হতে পারে। এতে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।

ডিপিটি টিকা
ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি ও ধনুষ্টংকার (টিটেনাস)—এই তিনটি রোগকে প্রতিরোধ করবে ডিপিটি টিকা। এখানে তিনটি ডোজ দেওয়া হয় প্রথমটি শিশুর দেড় মাস বয়সে। তার পরেরটি আড়াই মাস বয়সে এবং শেষেরটি সাড়ে তিন মাস বয়সে। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে টিকাগুলো পরপর নিতে হবে।
ডিপিটির এই তিনটি ডোজের সঙ্গে পোলিও থেকে বাঁচতে প্রতিবার দুই ফোঁটা করে টিকা খাওয়ানো হয়।

হেপাটাইটিস-বি টিকা
ডিপিটি টিকার তিনটি ডোজের সঙ্গে সরকারিভাবে আরও একটি টিকা দেওয়া হয়। এটি হলো হেপাটাইটিস-বি। ডিপিটির সঙ্গে এটিরও পরপর তিনটি ডোজ নিতে হয়।

হামের টিকা
নয় মাস বয়সে হামের টিকা দিতে হবে। এ সময় ‘ভিটামিন এ’ ক্যাপসুল ও পোলিওর চতুর্থ ডোজ দেওয়া হয়।

উপরিউক্ত সাতটি টিকা ছাড়াও সরকারি উদ্যোগে বর্তমানে হেমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা বি (হিব) নামক অষ্টম টিকা দেওয়া হবে সামনে। শিশুর এক বছর হওয়ার পর মামস, মিসেলস, রুবেলা থেকে বাঁচাতে এমএমআর টিকাটি নিতে হবে। এ ছাড়া চিকেন পক্সের টিকা দিয়ে দিন।

টিটেনাসের টিকা
১৫-৪৫ বছর বয়সের নারীদের ধনুষ্টংকার রোধে পাঁচটি টিকা নিতে হবে। এটি ভবিষ্যতের নবজাতকদেরও ধনুষ্টংকার থেকে রক্ষা করবে।
প্রথম ডোজটি দেওয়ার ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজটি দিতে হবে। তৃতীয় ডোজটি নিতে হবে এক বছর পর। চতুর্থ ডোজটি নিতে হবে পরবর্তী দুই থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে। তার ঠিক এক বছর পর নিতে হবে পঞ্চম ডোজটি। এ ছাড়া গর্ভবতী অবস্থায় দুবার এই টিকা নেওয়া যায়।
টিটেনাসের দ্বিতীয় টিকাটি তিন বছরের জন্য সুরক্ষা দেয়। তৃতীয় টিকাটি সুরক্ষা দেবে পাঁচ বছর পর্যন্ত। ১০ বছরের জন্য সুরক্ষিত করবে চতুর্থ টিকাটি। পঞ্চম টিকাটি অর্থাৎ সর্বশেষ টিকাটি ৩০ বছরের জন্য ধনুষ্টংকার থেকে আপনাকে রক্ষা করবে।

-রয়া মুনতাসীর