Friday, April 15, 2011

আর কে হাইস্কুল, ময়মনসিংহ

0 comments
১৯১১ সালের ১০ জুলাই গৌরীপুরের তৎকালীন জমিদার ব্রজেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী তার পিতা রাজেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর নামে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বিখ্যাত স্থপতি ও চীনা কারিগর দিয়ে নির্মিত ভবনটি দেখতে অনেকটা ইংরেজি (ই) অক্ষরের মতো। কাঠের ফ্রেমের ওপর ইট বিছানো ছাদ ও ইট-চুন-সুরকির ১৫ ইঞ্চির গাঁথুনি দিয়ে নির্মিত লাল রং করা বিদ্যালয়টিতে হলরুমসহ বড় বড় ১৩টি কক্ষ রয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক বাবু জ্ঞানেন্দ্রনাথ মুখার্জিসহ অদ্যাবধি মোট ২১ জন প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়টির দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের মধ্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি আহসান উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক রাজস্বমন্ত্রী ফখর উদ্দিন, নাট্যকার আশকার ইবনে শাইখ, বর্তমান তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ অন্যতম। বর্তমানে বিদ্যালয়টির প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ৪ বছর যাবৎ সহকারী শিক্ষক দিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাজ চালানো হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টির যাত্রাকাল থেকে এর নামে খেলার মাঠ, ছাত্রাবাস, মসজিদ, জিমনেশিয়াম, জমিদারের খননকৃত ৩৮০ শতকের অনন্ত সাগর নামে বিশাল পুকুর, শিক্ষক ও স্টাফদের বাসভবনসহ মোট জমির পরিমাণ ছিল ১৬ একর। কিন্তু ১৯৯১ সালে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণের সময় জমির পরিমাণ দেখানো হয় মাত্র ১০ একর। আর এই সুযোগে এক শ্রেণীর সুবিধাভোগী লোক তৎকালীন বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের ৬ একর জমি নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। শিক্ষকদের বাসভবনগুলো জাল কাগজে ব্যক্তি মালিকানায় চলে যায়। বিদ্যালয়ের নামে খেলার মাঠের অধিকাংশ জায়গা দখল করে নিয়ে সেখানে নির্মিত হয়েছে বাড়িঘর। বিদ্যালয়ের সম্মুখভাগের সারি সারি নারিকেল গাছ, শান-বাঁধানো ঘাটসহ সুবিশাল জায়গা ভেঙে ভেঙে পুকুরে বিলীন হয়ে গিয়েছে। ২০০৭ ও ২০০৯ সালে ফ্যাসেলিটিজ বিভাগের অর্থায়নে বিদ্যালয়টির মূলভবনের ছাদ সংস্কার করা হলেও বর্ষায় পানি পড়া বন্ধ হয়নি। এরপর থেকে এ যাবৎ এর সংস্কারের কোনো উদ্যোগ বা পুকুর ভাঙন রোধে নেওয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ। ফলে ঐতিহাসিক স্থাপত্যকীর্তিটি ধসে পড়া এখন সময়ের ব্যাপার। তাই এ বিদ্যাপীঠটি রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসা উচিত। হুমায়ুন কবির, গৌরীপুর

0 comments:

Post a Comment