Saturday, April 16, 2011

অ্যাঙ্কর

0 comments
মানব সভ্যতা একদিনে গড়ে উঠেনি। বিভিন্ন সময়ের প্রেক্ষিতে ক্রমে ক্রমে মানব সভ্যতা গড়ে উঠেছে। সভ্যতার বিকাশে বিভিন্ন জাতি অবদান রেখেছে। এশিয়া মহাদেশের দেশ কম্বোডিয়া, সভ্যতার ক্রমবিকাশে এদের অবদানও কম নয়। আজ থেকে প্রায় ২ হাজার বছর আগে অ্যাঙ্কর নামক দ্বীপে কম্বোডিয়া সভ্যতা গড়ে ওঠে। সভ্যতার ক্ষেত্রে অ্যাঙ্করবাসীর সবচেয়ে বড় অবদান হলো গণিত শাস্ত্র চর্চা করা, সাহিত্য চর্চা করা ও কৃষি কাজের উদ্ভব ঘটানো। তৎকালীন কম্বোডিয়ার লোকজন সনাতন ধর্মে বিশ্বাস করত। যদিও অনেকে বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী ছিল, তথাপি অধিকাংশ লোক সনাতন তথা হিন্দু ধর্ম পালন করত। অ্যাঙ্করবাসীর বিভিন্ন প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শনে গবেষণাপূর্বক তথ্য পাওয়া যায় যে, এরা দেব-দেবীর পূজা-অর্চনা করত। আর পূজা করত বিধায় তারা ভিন্ন ভিন্ন দেবীর ও দেবতার মূর্তি নির্মাণ করেছিল, যেসব মূর্তি এখনও বিদ্যমান। সভ্যতার বিনির্মাণে কম্বোডিয়াবাসী যুগের পর যুগ বছরের পর বছর তৈরি করেছে নানা ধরনের স্থাপনা, শৈল্পিক নিদর্শন প্যাগোডা, গির্জা ও মন্দির। ধারণা করা হয় কম্বোডিয়াবাসীর হাত ধরেই দেব-দেবীর পূজা করার রীতি-নীতি পৃথিবীব্যাপী বিস্তৃতি লাভ করেছে।
কম্বোডিয়ার প্রায় ২ হাজার বছরের পুরনো যেসব প্রত্নতাত্তি্বক নিদর্শন তথা দালান-কোঠা, মানুষের মূর্তি, টাওয়ার, স্মৃতি স্মারক ইত্যাদি পাওয়া যায় তার অধিকাংশই পাথরের তৈরি। নিদর্শনগুলো পাথরের তৈরি বিধায় এখনো অবিকল রয়ে গেছে। নিদর্শনগুলো অতি চমৎকার দেখে অনুধাবন করাই যাবে না, যে এগুলো হাজার বছরের পুরনো। প্রাচীন কম্বোডিয়াবাসী যে প্রচুর ধীশক্তি ও বুদ্ধিসম্পন্ন জাতি ছিল তা তাদের প্রাচীন মুদ্রা, ধাতব পদার্থ ও গুহা আবিষ্কারের তথ্য থেকেই অনুধাবন করা যায়। তৎকালীন কম্বোডিয়ায় বিগফুট নামক প্রাণী বসবাস করত। যে প্রাণী দেখতে মানুষের মতো মনে হলেও আসলে তা মানুষ ছিল না, বিগফুট মানুষের মতো হাঁটা, চলা করত। কিন্তু মানুষের মতো এদের বুদ্ধি বা জ্ঞান ছিল না। যদিও অনেক তাত্তি্বক মনে করে থাকে যে, মানুষের এক স্তর নিচের প্রাণী হলো বিগফুট। কম্বোডিয়ার প্রাচীন নানা উপাত্ত বিশ্লেষণ-পূর্ব বিগফুটের অস্তিত্ব কম্বোডিয়ায় ছিল তা নিশ্চিত করা হয়। তবে বর্তমানে কম্বোডিয়ায় বিগফুট নামক প্রাণীর অস্তিত্ব নেই। কম্বোডিয়ার সভ্যতার বিনির্মাণে বিগফুটের অবদানও কম নয়। কম্বোডিয়ায় প্রাচীন যেসব ঐতিহ্য রয়েছে তার মধ্যে রাজা-রানীর (পর্যায়ক্রমে) মূর্তি নির্মাণ, ধাবত মুদ্রা তৈরি, পাহাড়ি মন-মাতানো গির্জা, প্যাগোডা, মন্দির, মানুষের মাথার উপরি অংশ, ছোট-ছোট পুতুল, দলিল দস্তাবেজ, পাথরের নকশা, কৃষি উপকরণ, হাতির দাঁত দিয়ে তৈরি নানা ধরনের অলঙ্কার ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তবে চমৎকার সব আবিষ্কার আর নির্মাণের মাঝে প্রাচীন কম্বোডিয়াবাসী নির্মাণ করেছে সর্প মন্দির বা শিসনাগমন্দির_ এসব মন্দির অবলোকনপূর্বক বলা যায় যে, প্রাচীন কম্বোডিয়াবাসী সাপকে মেরে ফেলত্ না বরং তা রক্ষা করার জন্য নানা উপায় অবলম্বন করত।

রিয়াজুল ইসলাম

0 comments:

Post a Comment