Saturday, April 16, 2011

ক্যাসেল পার্ক, নওগাঁ

0 comments
রাজশাহী জেলা বোর্ডের উদ্যোগে ১৯১১ সালে নওগাঁ শহরে এ পার্কটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন ব্রিটিশ আমল। লর্ড ক্যাসেলের নামানুসারে পার্কটির নাম রাখা হয় ক্যাসেল পার্ক। পার্কের মধ্যে ১.২০ একর জমি খনন করে একটি পুকুর তৈরি করা হয়। এছাড়া ২.৪৫৪৮ একর জমি দেয়াল দিয়ে ঘিরে কয়েকটি পকেট দরজাসহ উত্তর দিকে প্রধান গেট চলাচলের জন্য রাখা হয়। ব্রিটিশ শাসন আমলে নওগাঁর ক্যাসেল পার্কে সাধারণের প্রবেশাধিকার ছিল না। তখন মহকুমা পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিরা প্রবেশ করতে পারতেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর নওগাঁর এ ক্যাসেল পার্কের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় রাজশাহী জেলা বোর্ড উদ্যান। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে নওগাঁ মহকুমা জেলায় রূপান্তরিত হলে নামকরণ করা হয় নওগাঁ জেলা পরিষদ পার্ক। ১৯১১ সালে পার্ক প্রতিষ্ঠার পর এর সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়। সে সময় লাগানো কয়েকটি পাম ও রাঁধাচূড়া গাছ প্রাচীন এ পার্কটির ঠিকানা আজও দূর থেকে জানান দেয়। নওগাঁ জেলা পরিষদের কাগজপত্রে নওগাঁ পার্কের প্রতিষ্ঠার সাল উল্লেখ করা আছে ১৯২০ (সম্ভাব্য)।
স্বাধীনতার পর ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত নওগাঁর এ ঐতিহ্যবাহী পার্কটি অবহেলায় তার সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলে। স্মৃতি হিসেবে থেকে গিয়েছিল কয়েকটি প্রাচীন গাছ, ভাঙা বেঞ্চ আর বাউন্ডারি ওয়াল। ১৯৮৮ সালে নওগাঁ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল হাই খান জেলা পরিষদ পার্কটি আধুনিক ও বর্তমান অবস্থায় ফিরিয়ে আনেন। প্রাচীন সেই ক্যাসেল পার্কের কথা আজ আর কারও মনে নেই। ভুলে যাওয়ার পথে তার ইতিহাস। সেই নিরিবিলি পার্কটি আজ নওগাঁবাসীর একমাত্র প্রশান্তি ও বিনোদনকেন্দ্র। বর্তমানে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলগাছসহ রয়েছে প্রায় শতাধিক প্রজাতির গাছ-গাছালি। বাগানের ভেতরটি বিভিন্ন ফুলগাছ পাতাবাহার, হুইপিং, দেবদারুসহ অনেক মূল্যবান গাছ সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য সজ্জিত রয়েছে। পার্কে কৃষ্ণচূড়া, রাঁধাচূড়া, অশোক, অর্জুন, মেহগনি, কাঞ্চন, ঝাউ, পান্থপাদপ, হরীতকী, বহেড়া ও নারিকেলসহ অন্যান্য গাছ রয়েছে। পুকুরের টলটলে পানিতে রঙিন মাছের ঘোরাফেরা। চারধারে নারিকেল বিথি আর ফুলের ঘ্রাণে সবাই যেন কিছুটা সময়ের জন্য স্বস্তি নিতে আসে নওগাঁর এ ঐতিহ্যবাহী পার্কে। শহরের ব্যস্ততার মাঝে একটু স্বস্তি পেতে ও বিনোদনের জন্য মানুষ সকাল-সন্ধ্যায় ভিড় জমায় এখানে। একটু সময়ের জন্য হলেও মুক্ত বাতাসে ভরে নেয় বুক।

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

0 comments:

Post a Comment