ভূবিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাচীন এক লুপ্ত মহাদেশের কিছু টুকরো হয়তো শায়িত আছে ভারত মহাসাগরের তলায়।
তারা প্রমাণ পেয়েছেন, সাড়ে আট কোটি থেকে দুশো কোটি বছর আগে পৃথিবীর বুকে এই ভূখন্ডের অস্তিত্ত্ব ছিল – কিন্তু তারপর তা আস্তে আস্তে খন্ড খন্ড হয়ে বিলীন হয়ে যায়, জন্ম নেয় আধুনিক পৃথিবীর চেহারা।
আসলে লক্ষ কোটি বছর আগে পৃথিবীর সমগ্র স্থলভাগ একটাই অখন্ড সুপারকন্টিনেন্টের আকারে ছিল, যার নাম রডিনিয়া। আর আজকের ভারত আর মাদাগাস্কারের মাঝে এখন এক মহাসমুদ্রের ব্যবধান থাকলেও একদিন এদুটো জায়গা ছিল পাশাপাশিই!
নেচার জিওসায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, এই দুই ভূখন্ডের মাঝখানে যে মহাদেশ ছিল তারা তার অস্তিত্ত্বের প্রমাণ পেয়েছেন।
নরওয়েতে অসলো ইউনিভার্সিটির ভূবিজ্ঞানী ড: ট্রন্ড টর্সভিক বলছিলেন, সেই লুপ্ত মহাদেশেরই একটা অংশ হয়তো আজও টিঁকে আছে – আর সেটা হল আজকের সেশেলস দ্বীপ।
আসলে মরিশাসের সমুদ্রসৈকতে পাওয়া বালুকণা পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা আশ্চর্য হয়ে দেখেছেন, তাতে এমন সব খনিজ আছে যেগুলোর বয়স যা ভাবা হয়েছিল তার চেয়েও লক্ষ লক্ষ বছর বেশি!
তারা ধারণা করছেন, সমুদ্রের নিচে অগ্ন্যুৎপাতের কারণেই এই ছোট কণিকাগুলো ভূপৃষ্ঠে উঠে এসেছে – আর সেগুলো এসেছে এমন এক প্রাচীন ভূখন্ড থেকে, যা আজ ভারত মহাসাগরের নিচে প্রায় দশ কিলোমিটার গভীরে শায়িত।
বিজ্ঞানীরা এই ক্ষুদ্র মহাদেশের নাম দিয়েছেন মরিশিয়া, পৃথিবীর বুকে লক্ষ কোটি বছর যেটি টিঁকে ছিল – প্রাক-কাম্ব্রিয়ান যুগে যখন মাটিতে কোনও প্রাণের অস্তিত্ত্ব ছিল না, তখন থেকে যে যুগে ডায়নোসররা চরে বেড়াত তখন পর্যন্ত!
তবে আজ থেকে সাড়ে কোটি বছর আগে যখন ভারতীয় ভূখন্ড ধীরে ধীরে মাদাগাস্কার থেকে দূরে সরে যেতে থাকে, তখন ভেঙে যেতে থাকে এই ক্ষুদ্র মহাদেশও – আর তারপর একদিন তা বিলীন হয়ে যায় সমুদ্রগর্ভে।
তবে তার কতটুকু অবশেষ আজও টিঁকে আছে, তা জানতে দরকার সাইসিমিক সার্ভে আর সমুদ্রের গভীরে ব্যাপক ড্রিলিংয়ের অভিযান!
পরিবেশনা: শুভজ্যোতি ঘোষ
0 comments:
Post a Comment