Sunday, March 10, 2013

কালাজ্বর

0 comments
বিশ্বে ৮৮টি দেশের প্রায় এক কোটি ২০ লাখ মানুষ কালাজ্বরের জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত। প্রায় তিন কোটি ৫০ লাখ মানুষ এ রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। পৃথিবীতে যে সাতটি দেশ কালাজ্বরের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে তার অন্যতম বাংলাদেশ। ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল, পাবনা, রাজশাহী, দিনাজপুর, পঞ্চগড়সহ কয়েকটি জেলার বহু মানুষ কালাজ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছে।
কালাজ্বর ছড়ায় বেলে মাছির মাধ্যমে। লিস্মেনিয়া ডনোভানি নামের প্যারাসাইট দিয়ে এটি হয়। কালাজ্বর একটি জীবন সংহারী রোগ, যাতে শরীরে জ্বর, ওজন কমে যাওয়া, লিভার-স্প্লিন বড় হওয়া, মারাত্মক রক্তশূন্যতা, রক্তপাত, সেপটিসেমিয়া ইত্যাদি হয়। এ রোগের সঠিক চিকিৎসা না করালে জীবন সংকটে পড়তে পারে। কালাজ্বরের চিকিৎসাকালীন বা এর পরে রোগীর ত্বকে কখনো কখনো এক ধরনের জটিলতা দেখা দেয়, যাকে পোস্ট কালাজ্বর ডার্মাল লিস্মেনিয়াসিস বা পিকেডিএল (PKDL) বলে। পিকেডিএলে রোগী কালাজ্বর থেকে সুস্থ হলেও ত্বকে লিস্মেনিয়া ডনোভানি জীবাণু লক্ষণহীনভাবে বসতি করে থাকে। কালাজ্বরের চিকিৎসার কয়েক মাস বা বছর পরে রোগীর ত্বকে এক ধরনের ছোপ ছোপ সাদা-কালো দাগ দেখা দেয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছোট গুটির মতো দেখা দিতে পারে, যাতে কোনো ব্যথা বা চুলকানি থাকে না। কখনো কখনো কালাজ্বরের চিকিৎসাকালীনই পিকেডিএল দেখা দিতে পারে। পিকেডিএল হলে যদিও রোগীর মারাত্মক শারীরিক অসুবিধা হয় না, তবে যেসব ক্ষেত্রে রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মারাত্মকভাবে ঘাটতি থাকে_যেমন এইডস রোগী, সেসব ক্ষেত্রে রোগীর আবার কালাজ্বর দেখা দিতে পারে।
পিকেডিএল রোগীর ত্বকে অসংখ্য জীবাণুর বসতি থাকায় বেলে মাছির কামড়ে জীবাণু সুস্থ মানুষের শরীরে ছড়ায়। আমাদের দেশে কালাজ্বর ও পিকেডিএল রোগীই লিস্মেনিয়া জীবাণুর উৎস। তাই কালাজ্বর প্রতিরোধে কালাজ্বর ও পিকেডিএল রোগীর চিকিৎসা এবং বেলে মাছি নিয়ন্ত্রণই প্রধান উপায়। কালাজ্বর বা পিকেডিএল নিশ্চিত হলে ইনজেকশন সোডিয়াম স্টিবোগ্লুকনেট অথবা মিল্টেফোসিন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। আমাদের দেশে সরকারিভাবে বিনা মূল্যে কালাজ্বরের চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাই সম্ভাব্য পিকেডিএল রোগীকে অবহেলা না করে কাছের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত।  সূত্র: কালের কন্ঠ

0 comments:

Post a Comment