Monday, March 11, 2013

পারমাণবিক অস্ত্র

0 comments
জঙ্গলে বাস করা কাঁচা মাংস খাওয়া মানুষ আগুন আবিষ্কারের মাধ্যমে সভ্য হতে শেখে। পৃথিবীতে মানুষের পদচারণা শুরু হওয়ার পর থেকেই নিজের ছায়ার মতো তার সঙ্গে লেগে থেকেছে নানা ধরনের বিপদ-আপদ। বিভিন্ন সময়ে মানুষ সেই সব বিপদের মোকাবিলা করেছে নিজের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ব্যবহার করে। পুরোপুরি সভ্য হয়ে ওঠার পর মানুষ নিজেদের সুরক্ষার অজুহাত দেখিয়ে, প্রতিপক্ষকে হত্যার উদ্দেশ্যে যত মারণাস্ত্র তৈরি করেছে তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহতম অস্ত্রটির নাম পারমাণবিক অস্ত্র। ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞে বা জীব হত্যায় সক্ষম এ অস্ত্রটি বিজ্ঞানের অভিশাপের উৎকৃষ্টতম উদাহরণ এবং নিকৃষ্টতম আবিষ্কার। পারমাণবিক অস্ত্র মূলত এক ধরনের বিস্ফোরক যন্ত্র। নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাপ্ত প্রচণ্ড শক্তিই এ অস্ত্রের কল্পনাতীত ধ্বংসযজ্ঞের মূল সূত্র। দুটি পদ্ধতিতে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া ঘটানো হয়ে থাকে। একটি হলো ফিসান এবং ফিউশনের সংমিশ্রণ। একটি এক হাজার ১০০ কেজি ওজনের পারমাণবিক বোমা প্রচলিত এক বিলিয়ন কেজি ওজনের বোমার সমপরিমাণ বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম। প্রচলিত অন্যান্য বোমার চেয়ে আকারে ছোট একটি পারমাণবিক বোমা একটি সম্পূর্ণ শহরকে ধ্বংস করে ফেলার জন্য যথেষ্ট। পৃথিবীর ইতিহাসে মাত্র দুবার পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে দুটি বোমাই ফেলা হয় জাপানে। এ বোমা দুটির বিস্ফোরণের ফলে প্রায় ২০ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। যুক্তরাষ্ট্র 'লিটল বয়' ও 'ফ্যাট ম্যান' নামের এ বোমা দুটির বিস্ফোরণ ঘটায়। এ যুদ্ধে ব্যাপক প্রাণহানির পরে পারমাণবিক বোমার ব্যবহার বন্ধে সতর্ক অবস্থান নেয় আন্তর্জাতিক মহল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এ অস্ত্র আর ব্যবহৃত না হলেও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, ভারত, পাকিস্তান এবং উত্তর কোরিয়ার হাতে এ অস্ত্রের মজুদ রয়েছে। ইসরায়েলের কাছেও পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে ধারণা করা হলেও তারা দাবি করে তাদের কাছে এ ধরনের কোনো অস্ত্র নেই।

0 comments:

Post a Comment