Tuesday, November 16, 2010

গৌরনদীর দধি

0 comments
ভোজনবিলাসী মানুষের কাছে বরিশালের গৌরনদীর দধি-মিষ্টি ছাড়া ভোজন রসনা যেন অতৃপ্ত। ঐতিহ্যগত কারণেই ক্রেতা সাধারণের কাছে এখানকার দধি-মিষ্টি লোভনীয় সামগ্রী। প্রায় ২০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্য বহন করছে এখানকার দই-মিষ্টি।

জানা গেছে, প্রায় ২০০ বছর আগে ডাওরী ঘোষ নামে এক ঘোষ গৌরনদীতে তৈরি করেন এ লোভনীয় খাবার। পরবর্তীতে গৌরনদীর ঐতিহ্যবাহী ভোজ্যপণ্যের ধারা ধরে রাখার মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন সুশীল ঘোষ। পর্যায়ক্রমে গৌরনদীর ঐতিহ্যবাহী ভোজ্যপণ্যের ধারা ধরে রেখেছিলেন সুশীল ঘোষ, গেদু ঘোষ, শচীন ঘোষ, জীবন ঘোষ, ঝন্টু ঘোষ ও দিলীপ ঘোষ। তারা ঐতিহ্যবাহী দধি, মিষ্টি, ঘি তৈরি করে সারাদেশে সরবারাহ করে সুনাম কুড়িয়েছেন। পরে তাদের পাশাপাশি কিছু কিছু মুসলিম ব্যবসায়ী ঘোষ কারিগরের সহায়তায় এ ব্যবসা শুরু করে সুনাম ধরে রাখেন। সারাদেশে গৌরনদীর দধি, মিষ্টি, ঘির যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। বিয়ে, বউভাত, জন্মদিন, মৃত্যুবার্ষিকীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এবং বিভিন্ন তদবিরে দধির জন্য দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসেন গৌরনদীতে। দেশের বাইরেও ব্যাপকভাবে গৌরনদীর দধি, মিষ্টি, ঘির সুনাম রয়েছে। গৌরনদীর দধির প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ১০/১৫ দিনেও স্বাভাবিক আবহাওয়ায় নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যে কোনো যানবাহনে সহজে বহন করা যায়। শুকনো মিষ্টি ১ মাসেও নষ্ট হয় না। ঘি ১ বছরেও নষ্ট হয় না বলে সুশীল ঘোষের ছেলে বলরাম ঘোষ জানান। বলরাম ঘোষ বলেন, বাবার পাশাপাশি ১৫ বছর ধরে আমি নিজেকে এ পেশায় জড়িয়ে নিয়েছি। বয়স বেড়ে যাওয়ায় বাবা অসুস্থ থাকায় গত ১০ বছর থেকে আমিই বাবার পেশাকে আঁকড়ে রেখেছি। তিনি আরও বলেন, আমার বাবা সুশীল ঘোষ ১২০ ধরনের লোভনীয় মিষ্টি তৈরি করতে পারেন। তবে বর্তমানে ১৫ প্রকারের মিষ্টান্ন দ্রব্য তৈরি করা হয়। এর মধ্যে দধি, চমচম, কালোজাম, শুকনো মিষ্টি, বড় রসগোল্লা, রসমালাই, ছানার সন্দেশ, ক্ষীরপুরী, মাওয়া, ছানার জিলাপি উল্লেখযোগ্য।

এম মিরাজ হোসাইন, বরিশাল

0 comments:

Post a Comment