Thursday, November 11, 2010

পুরুষের রুপচর্চা

0 comments
প্রতিটি ছেলেই চায় আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে। এ জন্য সে যদি হঠাৎ একদিনেই বিউটি ট্রিটমেন্ট, ডায়েট, এক্সারসাইজ সব এক সঙ্গে শুরু করে দেয় তাহলে কিন্তু হবে না। এর জন্য প্রয়োজন নিয়মিত পরিচর্যা এবং অনুশীলনের। এসব নিয়ে সুপার কাট ম্যান অ্যান্ড ওমেন সেলুনের বিউটি এক্সপার্ট সাইফুল ইসলাম রচির সঙ্গে কথা বলেছেন

মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদের ত্বকের জন্যও প্রয়োজন নিয়মিত যত্নের। কেননা অফিস বা বাড়ির কেনাকাটা, গুরুত্বপূর্ণ খবরা-খবর পেঁৗছানো ইত্যাদি কাজ ছেলেরাই করে থাকে। ফলে রোদে পুড়ে, ধুলা-বালির প্রলেপে ত্বকের রং তামাটে ও রুক্ষ হয়ে যায়। ত্বকের এই রুক্ষতা দূর করতে প্রয়োজন নিয়মিত যত্নের। আজকাল অনেক ছেলেই ত্বকের যত্নের ব্যাপারে বেশ সচেতন। চুল কাটানোর পাশাপাশি তারাও আজকাল মেনিকিউর, পেডিকিউর, হেয়ার কালার, ফেসিয়াল ইত্যাদি করাচ্ছে। তবে ত্বকের যে প্রতিদিন বিউটি এক্সপার্টের কাছেই যেতে হবে, তা কিন্তু নয়। ঘরে বসেই সাধারণ ঘরোয়া জিনিসের সাহায্যে নিতে পারেন আপনার ত্বকের যত্ন। চাল মিহি করে, নিম পাতা গুঁড়ো করে একটি কৌটায় রেখে দিতে পারেন। সপ্তাহে একদিন এ মিশ্রণটি টক দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। চমৎকার স্ক্রাবের কাজ করবে।

ত্বকের ড্রাইসেল উঠানোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন আধা চা চামচ আতপ চাল, শসার রস এবং লেবুর রসের মিশ্রণ। এতে মুখের ড্রাইসেল উঠে গিয়ে ত্বক পরিষ্কার, উজ্জ্বল এবং সতেজ দেখাবে। ত্বক সতেজ রাখতে পেঁপেও খুব উপকারী। সকালে ঘুম থেকে উঠে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত নিজেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন। বাইরে যাওয়ার আগে এবং বাইরে থেকে ফিরে গোসল করুন। প্রতিবার গোসলের পর শরীর নরম তোয়ালে দিয়ে এমনভাবে চেপে মুছুন, যেন ভেজা ভাব বজায় থাকে। এতে শরীরে এক ধরনের প্রশান্তি ছড়িয়ে পড়বে। শীতের এই রুক্ষ আবহাওয়ায় যদি ত্বক বেশি শুষ্ক হয়ে পড়ে তবে নিয়মিত এর যত্ন নিন। শুষ্কতা দূর করতে সপ্তাহে একদিন দুধের সঙ্গে মধু মিশিয়ে ১০-১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে পরিষ্কার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। শীতে ত্বকের ক্লিনজিং, টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজিং এই তিনের প্রয়োজন হয় খুব বেশি। প্রথমে ত্বকে ক্লিনজিং মিল্ক দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। তুলা টোনারে ভিজিয়ে ত্বকে লাগান এবং সব শেষে ময়েশ্চারাইজিং লোশন দিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। এছাড়াও মাসে একবার বিউটি এক্সপার্টের কাছে গিয়ে ফেসিয়াল করান। বাইরে বেশি ঘোরাঘুরি করার ফলে ছেলেদের ত্বকে দেখা দেয় সানট্যানের কালো কালো ছোপ। সানট্যানের কালো ছোপ দূর করতে ঘরে বসেই নিতে পারেন কিছু যত্ন_ ত্বকের জন্য টমেটোর রস একান্ত জরুরি। মুখে লাগিয়ে ৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। আপনার ত্বক হয়ে উঠবে সুস্থ ও সতেজ। টমেটোর রসের সঙ্গে শসার রসও ব্যবহার করতে পারেন। সাধারণ ত্বকের জন্য শসা কুচির সঙ্গে দই মিশিয়ে মুখে লাগান। ৫মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। বাঁধাকপির রস ২ চা চামচ পানিতে ফুটিয়ে ভেজা মুখে ৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। পরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। পানি গরম করে তাতে এক মুঠো পুদিনা পাতা সেদ্ধ করে নিন। এই পানি ঠাণ্ডা করে নিয়মিত মুখে লাগালে সানট্যান কমে আসবে। নিয়মিত জুতা ব্যবহারের ফলে অনেক ছেলের পায়েই দুর্গন্ধ হয় সে ক্ষেত্রে নিয়মিত পেডিকিউর করান। সুতির মোজা ব্যবহার করুন। ঘাম এবং দুর্গন্ধ কমানোর জন্য বাজারে ফুটক্রিম এবং পারফিউম পাওয়া যায় সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন। গোড়ালির শক্ত চামড়া তুলতে ক্যাস্টার ওয়েল, অলিভ ওয়েল ও নারকেল তেল সমপরিমাণে নিয়ে দুই চা চামচ লেবুর রসের সঙ্গে মিশান। মিশ্রণটি পায়ের শক্ত চামড়ায় ঘষতে থাকুন, এক সময় তা নরম হয়ে উঠে আসবে। সারাদিন বাইরে থাকার ফলে এক ধরনের ক্লান্তি যেন ভর করে শরীরে। সেই ক্লান্তি দূর করতে ঠাণ্ডা পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে তোয়ালে ভিজিয়ে পায়ের পাতায় চেপে ধরুন। দেখবেন ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাচ্ছে সব ক্লান্তি। মনে রাখুন, বাইরে বের হওয়ার সময় বড় হ্যাট ও সানগ্লাস ব্যবহার করুন। যতটা সম্ভব ফুলহাতা পোশাক পরার চেষ্টা করুন। হাত-পা ও ঘাড়ে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। এক ঘণ্টার বেশি সময় রোদে থাকলে দ্বিতীয়বার অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগিয়ে নেবেন। পকেটে অবশ্যই একটি লিপজেল রাখতে ভুলে যাবেন না। শুধু ত্বকের যত্নই সব নয়, সেই সঙ্গে প্রয়োজন শরীরের যত্নও। দিনে অন্তত ৮ লিটার পানি পান করার চেষ্টা করবেন। নিয়মিত মৌসুমি ফল খাওয়ার চেষ্টা করবেন। বেশি পিঁয়াজ-রসুন দিয়ে রান্না করা মাংস এড়িয়ে পাতলা ঝোল করে রান্না করা মাংস খাওয়া ভালো। ঠাণ্ডা দুধে গোলাপ জল মিশিয়ে খেলে শরীরও থাকে ঠাণ্ডা, ত্বকও হয় উজ্জ্বল এবং মসৃণ। এছাড়া দুধ চায়ের বদলে লাল চা পান আপনাকে এনে দেবে অনেক স্বস্তি।

এসব কিছু মেনে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন আকর্ষণীয়, রুচিশীল, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন পুরুষ।

খুরশীদা রহমান চৈতী
সুপার কাট ম্যান অ্যান্ড ওমেন বিউটি সেলুন
ডিওএইচএস, মহাখালী, ঢাকা।

0 comments:

Post a Comment