Sunday, February 13, 2011

ওয়াহেদ বক্স মিলনায়তন

0 comments
বগুড়ার প্রাচীন শহর সান্তাহারের রেলওয়ে ওয়াহেদ বক্স মিলনায়তন অবহেলায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। হারিয়ে গেছে এর জৌলুস, বন্ধ হয়ে গেছে সব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। এখন এটি শুধু পরিত্যক্ত জরাজীর্ণ ভবন। সান্তাহার পৌর এলাকার ইয়ার্ড কলোনিতে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত মিলনায়তনকে এলাকার সবাই 'রেলওয়ে ইনস্টিটিউট' নামে চেনে। ৯০ দশক পর্যন্ত সান্তাহারের সব সভা-সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এই মিলনায়তনকে জমজমাট রাখত। মিলনায়তনের চারদিকে আলোকসজ্জা, বর্ণাঢ্য গেট, সাউন্ড বক্স আর মাইকের শব্দে পুরো সান্তাহার শহর থাকত মুখরিত। স্থানীয় ও জাতীয় শিল্পীদের সংগীত, নাটক-নাটিকা, কৌতুকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো। প্রতি বছর সারাদেশের একাধিক নাট্যদল নাট্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিত। দেশবরেণ্য চিত্রপরিচালক আজিজুর রহমান, নাজমুল হুদা মিন্টু ও অভিনেতা কামরুজ্জামান বাহাদুরের গ্রামের বাড়ি সান্তাহারে হওয়ায় তাদের পদচারণায় এক সময় মুখরিত থাকত ওয়াহেদ বক্স মিলনায়তন। এছাড়া সান্তাহারের নাটকপাগল মানুষ হিসেবে পরিচিত শহিদুল্লাহ, ওয়াদুদ, আলম খান, পূর্ণিন্দ, বেবী, কিবরিয়াসহ আরও অনেক নাট্যশিল্পীর নাটক দেখে মুগ্ধ হতো এলাকাবাসী। প্রতিষ্ঠানের বাহিরে সুপরিসর একটি খেলার মাঠও রয়েছে। মাঝেমধ্যে রাজনৈতিক জনসভা কিংবা ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিল হতো এ মাঠে। সবকিছু মিলিয়ে ব্রিটিশ আমল থেকে ৯০ দশক পর্যন্ত এ ইনস্টিটিউট ছিল উপজেলার প্রাণকেন্দ্র। মিলনায়তনে দর্শক আসন সংখ্যা ছিল ৪শ'। এখন সব কিছুই বিলীন হওয়ার পথে। ভবনটি কেউ দেখলে বিশ্বাস করবে না এর অতীত ইতিহাস। অবহেলায় যেন রুগ্ন, জীর্ণ এক পরিত্যক্ত ভবনে পরিণত হয়েছে। খেলার মাঠেও খেলাধুলা হয় না। নাট্য অভিনেতা আলম খান আক্ষেপ করে বলেন, নাটক করার জন্য আর মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরাও নাটক পছন্দ করে না। নাটক নেই বলে সমাজের যুবক শ্রেণী অবক্ষয়ের দিকে পা বাড়াচ্ছে। সান্তাহার রেলওয়ে ইনস্টিটিউট পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে এ ভবনের আশপাশ এলাকা গো-চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ওয়াহেদ বক্স মিলনায়তনকে সংস্কার করে ব্যবহার উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন সান্তাহারবাসী।

-নাজমুল হক ইমন

0 comments:

Post a Comment