খাৎনা বা মুসলমানী কি?:
পুরুষাঙ্গের সামনের বা মাথার দিকে যে অতিরিক্ত স্কীন পুরুষাঙ্গের সংবেদনশীল মাথাকে ঢেকে রাখে তা কর্তন করাকে বুঝায়।
খাৎনা বা মুসলমানী করার প্রয়োজনীয়তা: (ক) ধর্মীয় কারণে মুসলমান ও খ্রীষ্টানরা খৎনা করিয়ে থাকে।
(খ) ফাইমোসিস বা প্যারা ফাইমোসিস রোগ হলে খাৎনা বা মুসলমানী করাতে হয়।
ফাইমোসিস: ফাইমোসিস হলো পুরুষাঙ্গের মাথার দিকের চামড়া যদি এমনভাবে মুত্রনালীকে ঢেকে রাখে যে বাচ্চা বা রোগীর প্রশ্রাবের সময় মাথাটা ফুলে উঠে। এই ভাবে বেশিদিন চলতে থাকলে প্রশ্রাবে ইনফেকশন ও কিডনি ফেইলিওর হতে পারে।
প্যারা ফাইমোসিস: পুরুষাঙ্গের মাথার দিকের চামড়া উল্টে টাইট হয়ে যায়, যার ফলে চামড়াটাকে আর সামনে ও পিছনের দিকে নাড়াচাড়া করা যায় না। এক্ষেত্রে মাথার দিকে ফুলে যায় এবং রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। এই উভয় ক্ষেত্রেই জরুরী ভিত্তিতে খাৎনা করা প্রয়োজন। আরো নানাবিধ কারণে খাৎনা দরকার হয় যেমন-পুরুষাঙ্গের চামড়া অনেক সময় পেন্টের চেইনের সাথে আটকে গেলে। রোগী চাইলেও যে কোন ধর্মাবলম্বী লোকের খৎনা করা হয়।
খাৎনা বা মুসলমানী করালে কি উপকারীতা: পুরাষাঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়। পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার মুসলমান ও খ্রীষ্টানদের মধ্যে নাই বললেই চলে। তার প্রধান কারণ খাৎনা। পুরুষাঙ্গের মাথার বাড়তি চামড়ার নীচে সাদা এক ধরনের পদার্থ (স্মেগমা) জমে এবং এই স্মেগমাই পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার এর জন্য দায়ী।
কখন খাৎনা করা যাবে না: হাইপোষ- পেডিয়াসিস রোগ। এটা পুরুষাঙ্গের জন্মগত ত্রুটি। এখানে মনে হবে বাচ্চা জন্মগতভাবে খাৎনা হয়ে এসেছে। এই ক্ষেত্রে পুরুষাঙ্গের বাড়তি চামড়া এই জন্মগত ক্রটি মেরামতের সময় প্রয়োজন হয়। তাই খাৎনা করানো নিষেধ।
খাৎনা করার পূর্বে রক্তপরীক্ষা করার প্রয়োজন আছে কি?: অবশ্যই আছে। খাৎনার পর কিছু খাৎনার রোগীর বিস্নডিং বন্ধ হয় না এবং মরণাপন্ন অবস্থায় আমাদের কাছে হাজামরা পাঠায়। তাই খাৎনার পূর্বে বাচ্চার অবশ্যই রক্তক্ষরণজনীত সমস্যা (জন্মগত) আছে কি না তা দেখে নিতে হবে।
খাৎনা করার পর কি কি জটীলতা দেখা দিতে পারে:
০০ রক্ত ক্ষরণ বন্ধ না হওয়া
০০ হাজাম বা অনভিজ্ঞতার কারণে অতিরিক্ত বা কম চামড়া কেটে ফেলা
০০ পুরুষাঙ্গের সংবেদনশীল মাথা কেটে ফেলা। হাজমরা খাৎনা করে বস্নাইন্ডলি অর্থাৎ মাথার অগ্রভাগে চামড়া মাথা থেকে সঠিকমত না ছাড়িয়ে না দেখে কেটে ফেলতে গিয়ে এই ধরনের মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটিয়ে থাকে।
ইংল্যান্ড সহ পৃথিবীর সমস্ত দেশে এই খাৎনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয় এবং খাৎনা কনসালটেন্ট সার্জন ছাড়া করা হয় না। কারণ খাৎনা করতে গিয়ে যে কোন দূর্ঘটনা বাচ্চার ভবিষ্যৎ জীবন জটীল করে তুলতে পারে।
০০ ডা: এম এ হাসেম ভূঁঞা, অধ্যাপক সার্জারী, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
0 comments:
Post a Comment