প্রেমিকের মায়ের মানসিক নির্যাতনে অভিমান করে রুবিনা আক্তার (১৫) আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশকে না জানিয়ে লাশ দাফন করায় দাফনের ৩ দিন পর আজ রবিবার ময়না তদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ শরীয়তপুর সদর
হাসপতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রেমিক রাসেলের মা নাছিমা বেগম (৪০) কে গ্রেফতার করেছে পালং থানা পুলিশ। রুবিনার ভাই মনির হোসেন সরদার বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেছে।
নিহত রুবিনার মা ছকেনা বেগম ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, শরীয়তপুর জেলার সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের পশ্চিম চরসন্ধি গ্রামের প্রতিবেশী ফরিদ সরদারের ছেলে রাসেল সরদারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে একই গ্রামের মৃত হাফিজ সরদারের মেয়ে রুবিনা আক্তারের (১৫) প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত বৃহস্পতিবার রাসেল মাদারীপুরের শিবচর বাহাদুরপুর হাজী শরীয়তুল্লাহ দরবার শরীফে গেলে রুবিনা আক্তার রাসেলের চাচতো বোন হাবিবার কাছে রাসেলের মোবাইল নাম্বার চাইলে সে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। হাবিবা বিষয়টি রাসেলের মায়ের কাছে জানালে রাসেলের মা রুবিনা আক্তারকে বকাবকি করে। অপমান সইতে না পেরে রুবিনা গত শুক্রবার (১৮ ফেব্র“য়ারি) সকালে নিজ ঘড়ে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। ময়না তদন্তের ভয়ে পরিবারের লোকজন ডায়রিয়া হয়ে মারা গেছে প্রচার করে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় রুবিনাকে দাফন করেফেলে। রুবিনার ভাই মনির হোসেন সরদার বাদী হয়ে পরদিন শনিবার পালং থানায় নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগ এনে প্রতিবেশী রাসেল সরদার, রাসেলের চাচা নিজাম সরদার, রাসেলের মা নাছিমা বেগম ও রাসেলের বাবা ফরিদ সরদারকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর ঘটনা তদন্তের জন্য আজ রবিবার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আবি আবদুল্লাহর নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ আবদুল সালামের উপস্থিতিতে আজ রবিবার বিকেলে লাশ উত্তোলন করা হয়। লাশ উত্তোলন শেষে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রেমিক রাসেলের মা নাসিমা বেগমকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
নিহতের বড় ভাই মামলার বাদী মনির হোসেন সরদার বলেন, রাসেল আমার বোনকে সবসময় উত্ত্যক্ত করতো। রাসেলের পরিবারের মানসিক নির্যাতনে আমার বোনের জীবন দিতে হলো। আমি এর বিচার চাই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পালং থানার এসআই বুলবুল বলেন, প্রেমিক রুবিনাকে নির্যাতন করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ করায় এবং প্রশাসনকে না জানিয়ে লাশ দাফন করায় ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করেছি।
পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রবিউল আলম বলেন, পুলিশ প্রশাসনকে না জানিয়ে রুবিনার লাশ দাফন করা হয়েছে। পরে মামলা দায়ের করলে আদালতের নির্দেশে আমরা লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তৈরীর জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছি।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন তালুকদার বলেন, প্রথমে শুনেছি রুবিনা ডায়রিয়া হয়ে মারা গেছে। পরে শুনেছি গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
সূত্রঃ ইউ.কে.বিডি
0 comments:
Post a Comment