Monday, February 21, 2011

ভালোবেসে বিয়ের পর বুঝলেন মানুষটি বর্বর

0 comments
আঠারো বছর বয়সী গৃহবধূটি হাসপাতালের বিছানায় শোয়ে কাতরাচ্ছিলেন। তাঁর বাঁ হাতে রডের ছেঁকার ক্ষত। শরীরে মারধরের চিহ্ন। মুখমণ্ডল ফোলা। গতকাল রোববার হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে স্বামী পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ হোসেন মৃধার নির্যাতনের কাহিনীর বর্ণনা করছিলেন তিনি।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ তানিয়া আক্তার বলেন, ‘ওকে আমি ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম। কিন্তু জানতাম না ও (স্বামী) এমন বর্বর। আমি এর বিচার চাই।’
তানিয়ার পরিবার জানায়, বরগুনার আমতলী উপজেলার আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের হাসান মীরের মেয়ে তানিয়ার সঙ্গে আমতলী পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত কাউন্সিলর ফরহাদের গত বছরের ১০ অক্টোবর বিয়ে হয়। মাস ঘুরতে না ঘুরতেই যৌতুকের জন্য মেয়েটির ওপর শুরু হয় নির্যাতন। তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন ফরহাদ। তানিয়ার পরিবার গত পৌর নির্বাচনের সময় নগদ এক লাখ টাকা দেয় তাঁকে। কিন্তু এর পরও নির্যাতন চলতে থাকে। গত রোববার তানিয়াকে প্রচণ্ড মারধরের পর ছেঁকা দেওয়া হয়। সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। রাতে তাঁকে দ্বিতীয় দফা মারধর করে ঘরের বাইরে বের করে দেন ফরহাদ। সারা রাত অচেতন হয়ে পড়ে থাকার পর সকালে প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে তাঁর বাবা গিয়ে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা সতীন্দ্রনাথ গাইন বলেন, ‘তানিয়ার শরীরে ক্ষত ও জখমের চিহ্ন রয়েছে। গত বুধবার থেকে আমরা চিকিৎসা করছি।’
তানিয়ার বাবা হাসান মীর বলেন, ‘ফরহাদ ও তাঁর লোকজন আমাকে শাসাচ্ছে, এমনকি খুনের হুমকি দিয়েছে। আমতলীতে ওরা (ফরহাদ) ভীষণ প্রভাবশালী। তাই মামলা করারও সাহস পাইনি।’
এদিকে সব অভিযোগ অস্বীকার করে কাউন্সিলর ফরহাদ বলেন, ‘আমি ওকে (তানিয়া) কোনো মারধর করিনি। সেদিন সে এমনিই অচেতন হয়েছিল। আমি বাড়ির বাইরে থাকা অবস্থায় তানিয়ার বাবা গিয়ে তাকে এনে হাসপাতালে ভর্তি করান। আমতলীতে খোঁজ নিয়ে দেখেন, আমি জীবনে কোনো অন্যায় করিনি। মেয়র সাহেব মীমাংসা করে দেওয়ার কথা বলেছেন। দেখি কী হয়।’
আমতলী পৌরসভার সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর মাসুদা কাদের বলেন, সামাজিক অবস্থানে থাকা একজন জনপ্রতিনিধি এভাবে স্ত্রীকে নির্যাতন করতে পারেন, ভাবাই যায় না। এটা কোনো সুস্থ মানুষের কাজ নয়। ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া প্রয়োজন। পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, ‘মেয়েটিকে মারধরের কথা আমি শুনেছি। এ নিয়ে দুই পক্ষের সঙ্গে বসার চিন্তা করছি।’
সূত্রঃ প্রথম আলো

0 comments:

Post a Comment