Saturday, December 26, 2009

বিদ্যুৎ ব্যবহারের শুরু যেভাবে

0 comments

আলো ছাড়া জগৎ অন্ধকার। কিন্তু সেই অন্ধকারকে আলোকিত করার জন্য প্রাচীনকাল থেকেই আগুনের সাহায্য নেওয়া হয়, আবিষ্কার করা হয় বিদ্যুৎ এবং বৈদ্যুতিক বাতি। ব্যাটারিও সেই ভাবনা থেকেই আবিষ্কার করা হয়। কিন্তু প্রযুক্তির উৎকর্ষে এগুলোকে আধুনিককালের আবিষ্কার বলে মনে করলেও মোটেই তা আধুনিক নয়। কারণ দুই হাজার বছর আগেই ইরাকে ব্যাটারির ব্যবহার ছিল আর এ ব্যাটারি ব্যবহৃত হতো বাতি জ্বালাতে। বাগদাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি গ্রামে পাওয়া একটি বাক্স থেকে এমনই ধারণা করছে বিজ্ঞানীরা। ব্যাটারির আকৃতি ৬ ইঞ্চি উঁচু। এর ভেতরে আছে ৫ু১ দশমিক ৫ ইঞ্চি আকৃতির একটি সিলিন্ডার এবং তা কপার ও বিটুমিন দিয়ে আটকানো। এটি অ্যাসফাল্ট লেয়ার লোহার দণ্ডের সঙ্গে আটকানো ছিল। এর চেম্বারে ছিল এসিডিক করিসন। আর এসব কিছু মিলিয়েই তৈরি করা হয়েছিল ব্যাটারি, যা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হতো। জার্মান ভূতত্ত্ববিদ উইলহেম কনিগ এ ব্যাটারির ধারণা থেকেই আধুনিক ব্যাটারি তৈরির পরিকল্পনা করেন। তার এ পরিকল্পনা এগিয়ে নেন প্রকৌশলী উইলার্ড এফএম গ্রে। ১৯৪০ সালে তিনি আবিষ্কার করেন আধুনিক বৈদ্যুতিক ব্যাটারি। ব্যবহার করেন প্রাচীন ব্যাটারিতে পাওয়া সব উপাদান। গ্রের আবিষ্কারকে আরও একধাপ এগিয়ে নেন জার্মানের আরনে এগাব্রেচট। ১৯৭০ সালে কপার সালফেটের সঙ্গে অন্য এক ধরনের এসিড ব্যবহার করে সিলভারের বাক্সে তৈরি করেন আরেকটি ব্যাটারি, যা দশমিক ৮৭ ভোল্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। এ পরীক্ষাটিই প্রমাণ করে ১৮০০ বছর আগেও মানুষ বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ব্যবহার করত। সম্প্রতি বাগদাদের ওই গ্রামে আরও এক জোড়া পুরনো ব্যাটারি পাওয়া গেছে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যেই তৈরি করা হয়েছিল। তবে অনেকেই মনে করছেন, ওই বাক্সে বিটুমিনের ব্যবহার প্রমাণ করে, এটি অবৈদ্যুতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে। অধিকাংশ বিজ্ঞানীই মনে করছেন, পিরামিডের চেম্বার সাজসজ্জার জন্য আগে আলোর কোনো উৎস না থাকায় ব্যাটারির সাহায্যে বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালানো হতো। আর এটি সেই প্রাচীন পদ্ধতিতে তৈরি ছিল। এসবই প্রমাণ করে ২ হাজার বছর আগেও বিদ্যুতের ব্যবহার ছিল। ইরাকের ওই ব্যাটারিগুলো রাখা হয়েছে বাগদাদ জাদুঘরে। তবে তৈরির সঠিক সাল নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। মনে করা হচ্ছে, খ্রিস্টপূর্ব ২২৬ থেকে ২৪৮ সালে এগুলো তৈরি করা হয়েছিল।
হ এসআই বাঁধন

0 comments:

Post a Comment