Monday, May 24, 2010

সাধু থমাস চার্চ

0 comments
ঢাকার আয়তন প্রায় ১,৪৭১ কি.মি. আর এর পুরো এলাকাজুড়েই রয়েছে ঐতিহাসিক সব স্থাপত্য নিদর্শন। আদিকাল থেকেই পুরান ঢাকা, রাজধানী ঢাকার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হিসেবে মাথা উঁচু করে আছে। কারণ ঢাকার ঐতিহাসিক স্থাপত্য নির্দশনগুলোর বেশিরভাগই পুরান ঢাকায় অবস্থিত। পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক ভিক্টোরিয়া পার্ক (বর্তমান বাহাদুর শাহ্ পার্ক) এর উত্তর দিকে ৫৪ জনসন রোডে অবস্থিত গির্জাটি পুরান ঢাকার স্থাপত্য নিদর্শনগুলোর অন্যতম। এটি ঢাকার সবচেয়ে পুরনো গির্জাগুলোর একটি। যার বয়স প্রায় ২০০ বছর। গির্জাটি 'সাধু থমাস চার্চ' নামে পরিচিত। গির্জাটি ঢাকার কারাগারের কয়েদিদের শ্রমে গড়ে তোলা হয়েছিল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে বেশ কিছু ইংরেজ কর্মচারী-কর্মকর্তারা এ অঞ্চলে বসবাস করতে শুরু করে। তাদেরই প্রার্থনার প্রয়োজন বোধে ১৮১৯ সালে ঢাকার কারাগারে বেশ কিছু কয়েদির মাধ্যমে এ গির্জাটি গড়ে তোলা হয়। ১৮২৪ সালে প্রেরিত সাধু থমাস যিনি তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশে খ্রিস্টধর্ম প্রচার করেছিলেন, তার নামানুসারেই এ গির্জাটির নামকরণ করা হয় 'থোমাস গির্জা'। কলকাতার লর্ড বিশপ 'রেজিনাল্ড হেবার' এ গির্জাটিকে তার নামে উৎসর্গ করেন। ১৮৬৩ সালে এ গির্জাটির চূড়ায় একটি ঘড়ি স্থাপন করা হয়। একসময় পুরান ঢাকাবাসী এ বিশাল ঘড়িতেই সময় দেখত। কিন্তু কালের আবর্তে পর্যাপ্ত যত্ন ও মেরামতের অভাবে ঘড়িটি আজ বন্ধ হয়ে আছে। বর্তমানে 'চার্চ অব বাংলাদেশ' নামক একটি সংগঠনের তত্ত্বাবধানে গির্জাটির দেখাশোনার কাজ চলছে। 'চার্চ অব বাংলাদেশ' মিরপুর-২ এ অবস্থিত একটি গির্জা ও সংগঠন। এ সংগঠনটি স্থানীয় গরিব শিশুদের জন্য 'থমাস গির্জাতে' বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করে আসছে। অনেকদিন থেকে।প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে গির্জা প্রাঙ্গণে গরিব শিশুদের পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। এছাড়াও সংগঠনটি এসব শিক্ষার্থীদের জন্য টিফিন, স্কুল ড্রেস, পাঠ্যপুস্তক ইত্যাদির ব্যবস্থাও করে থাকে। সাম্প্রতিক এ গির্জাটিতে একটি বাইবেল স্কুল চালু হয়েছে। এখানে স্থানীয় খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের সঠিক ও নির্ভুল ভাবে বাইবেল পাঠ শিখানো হয়। প্রতি সপ্তাহে রোবববার গির্জাটিতে স্থানীয় খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা প্রার্থনা করে।এছাড়াও ইস্টার সানডে, ক্রিস্টমাস ডে ইত্যাদি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

0 comments:

Post a Comment