Monday, October 25, 2010

বিখ্যাতদের ফোবিয়া

0 comments
হ্যারিয়েট মার্টিনু, এডমন্ড ইয়েটস, উইকি কলিন্স এবং গিয়াকোমো মেয়ারবিয়ার :
এদের সবাই ট্যাফো ফোবিয়ায় (অকাল মৃত্যুর ভয়) ভুগতেন। ভাবতেন তাদের জ্যান্ত কবর দেওয়া হবে। এ ধরনের ভয় উনিশ শতকে অনেকের মাঝে এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল যে, বিষয়টির ওপর দুশ'রও বেশি বই লেখা হয়েছে। এ ভয়কে জয় করার জন্য গঠিত হয়েছিল বিশেষ সমাজ। লেখিকা হ্যারিয়েট মার্টিনু নিজের ডাক্তারকে ১০ পাউন্ড দিয়ে উপদেশ দিয়েছিলেন তাকে কবর দেওয়ার আগে যেন ভালোভাবে শরীর পরীক্ষা করে দেখা হয় তিনি বেছে আছেন কিনা। পরীক্ষার পর যদি জানা যায়_ না, তিনি সত্যি মারা গেছেন, তখন যেন ধড় থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয় মুণ্ডু।

উপন্যাসিক এডমন্ড ইয়েসিও ২০ গিনি ফি রেখে যান এ জন্য যে, কবর দেওয়ার আগে জুগুলার ভেইন কেটে ফেলার সময় যেন ডাক্তার যথেষ্ট সতর্কভাবে পরীক্ষা করে দেখেন তার সত্যি মৃত্যু হয়েছে কিনা। আরেক বিখ্যাত উপন্যাসিক উইকি কলিন্সের সঙ্গে সবসময় একটি চিঠি থাকত। তাতে লেখা ছিল, তাকে মৃত বলে ঘোষণা করার আগে অবশ্যই যেন কোনো ডাক্তার তার শরীর পরীক্ষা করে দেখেন।



নিকোলাই চসেস্কু ও মার্লিন ডিয়েট্রিচ : বার্সিলো ফোবিয়া (জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ভয়) :

প্রাক্তন রুমানিয়ান স্বৈরশাসক চসেস্কু ও তার স্ত্রীকে একবার পাবলিসিটির কারণে বেশকিছু শিশুর সঙ্গে হ্যান্ডশেক করতে হয়েছিল, চুমু খেতে হয়েছিল তাদেরকে। এর আগে সিক্রেট পুলিশ কয়েকটি শিশুকে বিশেষ একটি জাযগায় আটকে রেখে নিয়মিত তাদের পরিচ্ছন্ন থাকতে বাধ্য করে ওই বিশেষ দিনটির জন্য। তারপর তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠানে হ্যান্ডশেক করেছিলেন চসেস্কু ও তার স্ত্রী। আর অভিনেত্রী মার্লিন ডিয়েট্রিচও একই ফোবিয়ায় ভুগতেন। সব সময় শঙ্কিত থাকতেন লোকের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করতে গিয়ে না আবার জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে পড়েন। বলিউড নায়িকা আমিশা প্যাটেল ও ব্যাসিলো ফোবিয়ার রোগী। তিনি কারও সঙ্গে হ্যান্ডশেক করার পর প্রথম ডেটল, তারপর সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলেন।



জর্জ বার্নাডশ : কোইটোফোবিয়া (যৌন মিলনের ভয়) :

বিশ্ববিখ্যাত এই নাট্যকার ২৯ বছর বয়সে এক প্রৌঢ়া বিধবার কাছে কৌমার্য হারান। কিন্তু অভিজ্ঞতাটা মোটেই সুখপ্রদ ছিল না তার কাছে। ফলে অন্তত দেড় দশক কোনো মেয়ের ধারে- কাছেও ঘেঁষেননি তিনি।



রাজা পঞ্চদশ লুই : সাইপ্রিডোফোবিয়া (সিফিলিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয়) :

রাজা পঞ্চদশ লুই শয্যাসঙ্গিনী হিসেবে সবসময় বেছে নিতেন ১৪ থেকে ১৯ বছরের কিশোরীদের, যাদের সিফিলিস রোগ নেই বলে বিশ্বাস করতেন তিনি।



সুইডেনের রানী ক্রিস্টিনা : এনটোমোফোবিয়া (মাছির ভয়) :

সতেরো শতকের মানসিক প্রতিবন্ধী এ রানী মাছি খুব ভয় পেতেন। শোবার ঘরে যেন মাছি ঢুকতে না পারে, মাছি তাড়ানোর জন্য তিনি বিশেষ অর্ডার দিয়ে তৈরি করেছিলেন চার ইঞ্চি লম্বা একটি কামান। বেশিরভাগ সময় তাকে ব্যস্ত থাকতে দেখা যেত কামানটি নিয়ে; গোলা ছুড়ছেন জানের শত্রু মাছির গায়ে!

স্যামুয়েল জনসন : লিসোফোবিয়া (পাগল হওয়ার ভয়):

জনসন প্রায়ই তার স্ত্রীকে বলতেন, তাকে ঘরে আটকে রেখে পায়ে শিকল পরিয়ে দিতে। জনসন ভাবতেন, তিনি পাগল হয়ে যাবেন।



সিগমুন্ড ফ্রয়েড, বিখ্যাত দার্শনিক : সাইডারোড্রমোফোবিয়া (ট্রেনের চড়ার ভয়)। ফ্রয়েড পারতপক্ষে ট্রেনে চড়তে চাইতেন না।



ম্যাক্সিমিলিয়ান রবেসপিয়েরে : হেমাটোফোবিয়া (রক্তের ভয়) : রবেসপিয়েরে রক্ত দেখতেই পারতেন না। রক্ত দেখলে হয় বমি করতেন, নয়তো অজ্ঞান হয়ে যেতেন।



রবার্ট শুম্যান, মেটালোফোবিয়া :

(ধাতব জিনিসে ভয়) : খ্যাতিমান এই জার্মান সুরকার লোহার চাবি দেখলেই ভয় পেতেন।



নাটালি উড, আমেরিকান অভিনেত্রী : হাইড্রোফোবিয়া (পানিতে ডুবে মরার ভয়) :

তিনি ১৯৮১ সালে পানিতে ডুবে মারা যান ।



-শামীম শিকদার

0 comments:

Post a Comment