Monday, October 18, 2010

অভিশপ্ত মমি-রহস্য

0 comments
অলোকিক মনে হলেও পৃথিবীতে এমন কিছু ঘটনা রয়েছে যা বিশ্বাস করার অযোগ্য নয়। মিসরীয় রাজা-রানী বিশ্বাস করত মৃত্যুর পর আত্মা পুনরায় দেহে ফিরে আসে। তাই তাদের মৃত্যুর পর মৃতদেহ মমি করে কফিনে রেখে দেওয়া হতো। মমি আজো মানুষের কাছে এক বিস্ময়কর অধ্যায়। (মমিকে নিয়ে আজো মানুষের মনে রয়েছে হাজারো জল্পনা-কল্পনা। এ মমিকে নিয়ে বেশ কিছু অবিশ্বাস্য সত্য ঘটনা রয়েছে।

প্রথম ঘটনা : মিসরীয় ফারাওদের মধ্যে তুতেম খামেনের নাম খুবই উল্লেখযোগ্য। তিনি খুব অল্প বয়সে মারা গিয়েছিলেন। মৃত্যুর পর তার মৃতদেহ যথারীতি একটি সোনার কফিনে মুড়ে বহু মূল্যবান ধনরত্নসহ রেখে দেওয়া হয়। ১৯২২ সালের ২৬ নভেম্বর, প্রত্মতাত্তি্বক মি. হাওয়ার্ড এবং তার পার্টনার ও অর্থ জোগানদার কর্নারভান আবিষ্কার করেন ধনরত্ন, মণিমুক্তা খচিত ফারাও তুতেনের কফিন। সে এক পৃথিবী কাঁপানো ঘটনা। কিন্তু আসল ঘটনার উদ্ভব ঘটে এরপর থেকে। তুতেন খামেনের গুপ্তধন আবিষ্কারের ৫ মাসের মাথায় কর্নারভানের মৃত্যু হয়। কিভাবে বা কেন কর্নারভানের মৃত্যু হলো তা সম্পূর্ণ অস্পষ্ট। ডাক্তাররাও এ রোগ নির্ণয়ে ব্যর্থ হন। তার মৃত্যু আরেক বিস্ময়কর ঘটনার সৃষ্টি করে। যে মুহূর্তে তিনি মারা যান তখন কায়রোর সবগুলো বাতি নিভে যায়। শুধু তাই নয়, লন্ডনে তার কুকুরটিও গোটা তিনেক ডিগবাজি দিয়ে মারা যায়। এরপর বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, মমিটির গায়ে যেসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র ছিল, কর্নারভানের গায়েও ঠিক সে রকম ছিদ্র ছিল। কিন্তু এর প্রধান আবিষ্কারক মি. হাওয়ার্ড ৭০ বছর বয়সে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন।

ঘটনা দুই :

খ্রিস্টপূর্ব একাদশ শতকে মিসরে আমেনরা নামে এক রাজ কুমারী মারা যান। তাকে যথা নিয়মে সমাধিস্থ করা হয়। অনেক বছর পর ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে তার মমিটি কেনার জন্য চারজন ইংরেজ মিসরে আসেন এবং তারা রাজকুমারী আমেনরার মমিটি ক্রয় করেন। কিন্তু এর জন্য তাদের নিদারুণ দুর্ভাগ্য বরণ করতে হয়। মমিটি কিনে নিয়ে যাওয়ার সময় চারজনের মধ্যে একজন মরুভূমিতে ঝড়ের কবলে পড়ে মারা যান। তারপর ইংল্যান্ডে ফেরার পর তাদের একজন দেখেন তার সব সম্পত্তি কেউ একজন আত্মসাৎ করেছে। অপরজন ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তার চাকরি চলে যায়। মমিটির পরবর্তীতে স্থান হয় ব্রিটিশ মিউজিয়ামে। কিন্তু যেই একবার মমিটিকে স্পর্শ করেছে তাকেই কোনো না কোনো দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এমন কি এক দর্শনার্থী যে কিনা কাপড় দিয়ে মমিটির মুখ পরিষ্কার করেছিল এক সপ্তাহের মধ্যে তার ছেলে মারা যায়। আর একবার এক ফটো সাংবাদিক মমিটির ছবি তুলেছিলেন। ছবিটি ডেভেলপ করে তিনি দেখেন রাজকুমারীর মুখের বদলে এক বীভৎস ও বিৃকত মুখ। সে রাতেই তিনি আত্মহত্যা করেন। এরপর মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ মমিটির প্রদর্শন বন্ধ করে দেন এবং এটি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেন। পরের দিনই কর্মকর্তারা দেখেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার লাশ পড়ে আছে টেবিলের ওপর। কিন্তু মানুষের শখ চিরন্তন। এত কিছুর পরও এক আমেরিকান পর্যটক মমিটি কিনে স্বদেশে ফেরার জন্য নিউইয়র্কগামী একটি জাহাজের কেবিন ভাড়া নেন। কিন্তু এ যাত্রাই ছিল জাহাজটির প্রথম ও শেষ যাত্রা। এ যাত্রাপথেই জাহাজটি ডুবে যায় এবং এটিই ছিল বিশ্ব বিখ্যাত জাহাজ টাইটানিক।



-প্রীতম সাহা সুদীপ

0 comments:

Post a Comment