দেশের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত চা-বাগান-খ্যাত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি মৌলভীবাজার জেলা। পাহাড়ের গায়ে ঢেউ খেলানো বাগানের নৈসর্গিক সৌন্দর্য রয়েছে মৌলভীবাজার জেলায়। আরো আছে দেশের একমাত্র জলপ্রপাত, মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত।
নামকরণের ইতিহাস
১৮১০ সালে মৌলভী সৈয়দ কুদরত উলস্নাহ মনু নদীর পশ্চিম তীরে জনসাধারণের সুবিধার্থে নিজস্ব মিরাসদারিভুক্ত জমির উপর একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করেন। তার প্রতিষ্ঠিত বাজারটি মৌলভী সাহেবের বাজার নামে পরিচিতি লাভ করে। যা পরবতর্ীতে মৌলভীবাজার নামে পরিচিত হয়।
আয়তন ও অবস্থান
আয়তনের ভিত্তিতে মৌলভীবাজার বাংলাদেশের ২০তম বৃহত্তম জেলা। মৌলভীবাজার জেলার মোট আয়তন ২৭৯৯.৩৯ বর্গ কি.মি. যা সমগ্র বাংলাদেশের মোট আয়তনের ১.৮৮%। ভৌগোলিকভাবে জেলাটি ২৪০০৮ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৪০৩৯ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১০৩৬ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ থেকে ৯২০১৭ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। এই জেলার উত্তরে সিলেট জেলা, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, পূর্বে ভারতের আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্য এবং পশ্চিমে হবিগঞ্জ জেলা।
প্রশাসনিক পটভূমি
সিলেট সদর মহকুমা অত্যধিক বড় বিবেচনায় ১৮৮২ সালের ১ এপ্রিল সদর মহকুমাকে ভাগ করে উত্তর সিলেট মহকুমা হিসেবে ভাগ করা হয়। ১৯৬০ সালে দক্ষিণ সিলেটের নাম পরিবর্তন করে মৌলভীবাজার রাখা হয়। সরকারের ব্যাপক প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের আওতায় মৌলভীবাজার জেলা ১৯৮৪ সালে জেলার মর্যাদা পায়। বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলায় ৭টি উপজেলা, ৬৭টি ইউনিয়ন ও ২১৩৪টি গ্রাম রয়েছে।
উপজেলার মধ্যে রয়েছে মৌলভীবাজার সদর, শ্রীমঙ্গল, রাজনগর, কুলাউড়া, বড়লেখা, কমলগঞ্জ ও জুড়ি।
নদ-নদী :ধলাই, মনু, জুড়ি। এছাড়া মৌলভীবাজারে রয়েছে অনেক হাওড়। যেমন_হাকালুকি, হাইল, কাউয়াদিঘি।
জলবায়ু : সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ৩০.২০ সে. এবং সর্বনিম্ন ১৩.১০ সে,। বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৩৩৩৪ মি.মি.।
দর্শনীয় স্থানসমূহ :
খোয়াজ মসজিদ (অষ্টাদশ শতাব্দী, বড়লেখা), মাধবমন্দির, রঙ্গিরকূল বিদ্যাশ্রম (উনবিংশ শতাব্দী, কুলাউড়া), পৃথি্বম পাশার নবাববাড়ি (অষ্টাদশ শতাব্দী), খোজার মসজিদ (চতুর্দশ শতাব্দী), অজ্ঞান ঠাকুরের মন্দির, নিমাই শিববাড়ি (১৪৫৪), মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, ব্রাহ্মণগাঁয়ের কাজী খন্দকার (র.)-এর মাজারের গায়েবি ইটের মসজিদ, চাঁনগ্রাম দীঘি (কুলাউড়া), চা-বাগান ও হাকালুকি হাওড়।
যোগাযোগ ব্যবস্থা :ঢাকা থেকে সড়কপথে বাসে সরাসরি মৌলভীবাজার যাওয়া যায়। শ্যামলী, হানিফ প্রভৃতি পরিবহনে মৌলভীবাজার যাওয়া যায়। এছাড়া আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস কিংবা জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসে শ্রীমঙ্গল নেমে এরপর বাস ধরে মৌলভীবাজার যাওয়া যায়।
0 comments:
Post a Comment