Monday, March 14, 2011

পরোক্ষ ধূমপানের কুফল

0 comments
ধূমপানরত ব্যক্তির বিডি-সিগারেটের ধোঁয়া দ্বিতীয় ব্যক্তি গ্রহণ করাকে বলে পরোক্ষ ধূমপান। তা দু'ভাবে হতে পারে_ ধূমপানরত ব্যক্তির জ্বলন্ত বিড়ি কিংবা সিগারেটের পাশ থেকে নির্গত ধোঁয়া কিংবা ধূমপায়ী ধোঁয়া গ্রহণের পর নিঃশ্বাসের সঙ্গে পরিত্যক্ত ধোঁয়া। বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত অংশের পাশ থেকে নির্গত ধোঁয়া দিয়ে কোনো একটি কক্ষের মোট ধোঁয়ার ৮৫% ভরে থাকে।

তামাকের ধোঁয়ায় কি থাকে?

তামাকের ধোঁয়ায় ৪০০০-এর বেশি উপাদান থাকে। এদের মধ্যে যেসব কণা রয়েছে তা হলো_ আলকাতরা, নিকোটিন, বেনজিন এবং বেনজোপাইরিন। আর গ্যাসীয় উপাদানগুলো রয়েছে কার্বন মনোক্সাইড, অ্যামোনিয়া, ডাইমিথাইল নাইট্রোস অ্যামাইন, ফরমালডিহাইড, হাইড্রোজেন সায়ানাইড এবং অ্যাক্রোলিন। এক হিসাবে দেখা যায়, তামাকের ধোঁয়ায় অন্তত ৬০ রকমের উপাদান রয়েছে, যারা ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। আর শ্বাসনালীর জন্য উত্তেজক যে কত উপাদান রয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা (Environment protection agency) তামাকের ধোঁয়াকে অ্যাসবেস্টস এবং আর্সেনিকের মতোই প্রথম শ্রেণীর ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান হিসেবে গণ্য।

পরোক্ষ ধূমপায়ীর ক্ষতি : অন্যের ধোঁয়া পান করলে চোখ জ্বালাপোড়া, মাথাব্যথা, গলাব্যথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি হয়। ৩০ মিনিট পরোক্ষ ধূমপান করলে হৃৎপিণ্ডের মধ্য দিয়ে রক্ত চলাচল বন্ধ করার জন্য তা যথেষ্ট। হাঁপানি রোগীর হাঁপানির প্রকোপ বাড়ানোর জন্য পরোক্ষ ধূমপান বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি : বাড়িতে পরোক্ষ ধূমপানের ফলে হৃদরোগ এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রকোপ ২৫% বেড়ে যায়। আর কর্মস্থল এবং পথেঘাটে পরোক্ষ ধূমপানের ফলে হৃদরোগের হার ৫০-৬০% বেড়ে যায়। অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য রিপোর্টেও দেখা যায়, অধূমপায়ীদের ফুসফুসের ক্যান্সার এবং হৃদরোগের কারণ পরোক্ষ ধূমপান।

পরোক্ষ ধূমপানের ব্যাপকতা! : প্রকৃতপক্ষে এর ব্যাপকতা অনেক বিস্তৃত। এক হিসাবে দেখা যায়, ব্রিটেনের অর্ধেক শিশুই বাড়িতে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার। ধূমপায়ী পিতা-মাতার শিশুদের মধ্যে শ্বাসনালীর রোগব্যাধির প্রকোপ তুলনামূলকভাবে বেশি। উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ একটি ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এখন আমাদের পরোক্ষ ধূমপানের বিরুদ্ধে সচেতন হতে হবে। ঘরের ভেতরে ধূমপান করলে তা ধূমপায়ীর জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু তা তার পরিবারের অন্যদের বিশেষত শিশুদের জন্যও ক্ষতিকর।

অধ্যাপক ডা. এ. আর.এম. সাইফুদ্দীন একরাম
বিভাগীয় প্রধান, মেডিসিন বিভাগ
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ, রাজশাহী।

0 comments:

Post a Comment