Thursday, October 21, 2010

ভয়ঙ্কর বৃষ্টি!

0 comments
ইংল্যান্ডের আকাশ প্রায়ই মুখ ভার করে থাকে। সে দেশের মানুষ খুব কমই সূর্যের দেখা পায়। টিপ টিপ বৃষ্টি ঝরছে তো ঝরছেই। তবে মাঝে মাঝে বৃষ্টি নামে যেন আকাশ ফুটো করে। ১৯১২ সালে একবার এরকম বৃষ্টি হয়েছিল নরফোকে। টানা একদিন একরাত স্থায়ী সেই বৃষ্টিতে আকাশ পানি ঝরিয়েছিল ষাট মিলিয়ন টন। অমন ভয়ানক বৃষ্টি ইংল্যান্ডবাসী জীবনেও দেখেনি।

১৯০১ সালের জুলাইয়ে, বার্কশায়ারের মেইডেনহেডে মাত্র এক ঘণ্টায় ৩.৬৩ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর ১৯১৭ সালের জুনে, সমারসেটের ব্রুটনে একদিনের বৃষ্টিতে, প্রতি একর জমিতে পানি ঝরেছিল ৯৬৫ টন। এছাড়া ইলাবাস এবং পশ্চিম স্কটল্যান্ডে টানা ৮৯ দিন বিরতিহীন বৃষ্টি পড়েছে। ব্রিটেনের ইতিহাসে এমন বৃষ্টিপাত আর কোনোদিন হয়নি।

বছরকয়েক আগে, ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতি মিনিটে ১.০৩ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়। দুটো ট্যাপ পুরোপুরি খুলে দিলে একটা বার্থটাব ভরতে যে সময় নেবে, ওই বৃষ্টিপাত ছিল তারচেয়েও ভারী।

শিলাবৃষ্টি কম ভয়ঙ্কর নয়। পৃথিবীর সব দেশের কৃষকই শিলাবৃষ্টিকে যমের মতো ভয় পায়। ১৯৮৩ সালের জুনে, প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের জর্জিয়ায় ভয়ঙ্কর এক শিলাবৃষ্টিতে এক হাজার গবাদিপশু মারা যায়। আকাশ থেকে ছিটকে পড়া প্রকাণ্ড শিলাখণ্ড খুলি ফাটিয়ে দেয় গরু বাছুরদের। সব ফলের গাছ ন্যাড়া হয়ে গিয়েছিল শিলাখণ্ডের আঘাত। প্রতিবছরই ব্রিটেনে এক মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি শস্যহানি ঘটে শিলাবৃষ্টিতে।

শিলার সাইজ নানা রকমের হয়ে থাকে : বাদাম, মার্বেল, পিংপং বল, হাঁসের ডিম, টেনিস, বল, এমনকি তরমুজের মতো। আকাশে শিলা তৈরি হচ্ছে সবসময়ই। মেঘের উপরের স্তর যখনই বৃষ্টির ফোঁটাগুলো টেনে নিয়ে যায়, ওগুলোর রূপান্তর ঘটে বরফ খণ্ডে। আকস্মিক ঝড়ে কমপক্ষে কয়েক মিলিয়ন বরফখণ্ড শিলা হয়ে ছিটকে পড়ে ধরিত্রীর বুকে। দিল্লীতে ১৮৮০ সালে আড়াইশ মানুষ মারা যায় শিলার আঘাতে। অনেকের গায়ে এত বেশি শিলা পড়েছে যে, বরফে জমে মারা গেছে তাৎক্ষণিকভাবে। একবার পাঁচ জার্মানি গ্লাইডারে চড়ে আকাশ উড়ছিল। হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকাতে থাকলে তারা ভয় পেয়ে যায়। কিন্তু মাটিতে নামার আগেই শিলাঝড় পেয়ে বসে তাদের। পাঁচজনের চারজনই শিলাজড়ে ও বরফে জমাট বেঁধে মারা যায়।



-আমিন রহমান নবাব

0 comments:

Post a Comment