Thursday, October 21, 2010

রোজাদের ব্লাক ম্যাজিক

0 comments
আদিম সমাজে উইচ-ডক্টর বা রোজা এমন ব্যক্তি ছিলেন যিনি অতিন্দ্রীয় শক্তির বলে ডাইনী, প্রেতাত্মাদের ধরতে পারতেন এবং তাদের ক্ষতিকর কাজের প্রতিবিধান করতে পারতেন। রোজারা একাধারে চিকিৎসক, জাদুকর এবং পুরোহিতের ভূমিকা পালন করতেন। আদিম সমাজের অধিবাসীরা বিশ্বাস করতেন যে ভূতপ্রেতরা অতি প্রাকৃত শক্তি দ্বারা পরিচালিত এবং তাদের ওপর রোজাদের প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা আছে। বর্তমানকালেও আদিম-সামাজিক ব্যবস্থায় বসবাসকারীদের মধ্যে উইচ-ডক্টর বা রোজাদের প্রভাব দেখা যায়। আদিম জাতিদের মধ্যে রোজাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হতো।

তারা আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে কিংবা চোর বা হত্যাকারীদের ধরতে ও শাস্তি প্রদান করতে সক্ষম ছিলেন। এছাড়াও তারা জাদুবিদ্যার সাহায্যে রোগের চিকিৎসা করতে পারতেন এবং মৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথোপকথনে তারা সক্ষম ছিলেন। সে সময় রোজাদের প্রতি জনগণের অন্ধ বিশ্বাস ছিল। রোজাদের হাতিয়ার ছিল জাদুবিদ্যা। সাধারণ মানুষকে তাদের বশে আনার জন্য রোজারা তাদের ভয় প্রদর্শন করতেন তাদের জাদুবিদ্যার সাহায্যে।

তারা তাদের ইচ্ছানুযায়ী অপরকে অভিশাপগ্রস্ত করতে পারতেন। খাদ্যশস্যের উৎপাদন রুদ্ধ করে দিতে পারতেন। শিশুদের রোগগ্রস্ত করতে পারতেন এবং মানুষের মৃত্যুও ঘটাতে পারতেন। মানুষের মৃত্যু ঘটানোর জন্য তারা নানা ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করতেন। কখনো মানুষের একটি ছোট আকৃতির পুতুল তৈরি করে তাতে পিনবিদ্ধ করতেন। আবার কখনো কোনো লোকের চুল বা নখের টুকরো সংগ্রহ করে তা মাটিতে পুঁতে রাখতেন। এগুলো যখন আস্তে আস্তে শুকিয়ে যেত মানুষটিও ক্রমেই মৃত্যুমুখে পতিত হতো। রোজারা প্রায়ই রোগের চিকিৎসার জন্য গাছ-গাছড়া, লতাপাতা ব্যবহার করতেন এবং রোগ সংক্রমণ দূর করার জন্য জল ব্যবহার করতেন। কখনো তারা জাদুকরী পাথরসহ জল ছিটিয়ে দিতেন। তারা জাদুকরী গান করতেন, প্রার্থনা করতেন এবং আশ্চর্য ভঙ্গিমায় নৃত্য করতেন যাতে লোকের মনকে প্রভাবিত করা যায়। রোজারা রঙিন পোশাক পরতেন, মুখোশ ধারণ করতেন এবং মুখমণ্ডল চিত্রিত করতেন। কেউ কেউ পশু চর্মও পরিধান করতেন। বস্তুত তারা লোকদের সম্মোহিত করতেন যাতে তারা বিশ্বাস করতে বাধ্য হতো যে তাদের সৌভাগ্যের জন্য রোজারাই দায়ী। যুগ যুগ ধরে ইতিহাসের পাতায় রোজাদের সম্পর্কে এ ধরনের কাহিনীই প্রচলিত হয়ে আসছে।


http://www.bd-pratidin.com

0 comments:

Post a Comment