Thursday, January 27, 2011

কার্টুন

0 comments
কার্টুন ছবি আজ আমাদের সবার কাছেই পরিচিত। কিন্তু আমাদের অনেকের কাছেই এর আদি কথা অজানা। কিছু ইতস্তত কালির আঁচড় দিয়ে মনের ভাষাকে জীবন্ত করে তোলে এমন আঁকাআঁকিই কার্টুন হিসেবে পরিচিত। কার্টুনের কথা বললে আমাদের চোখের সামনে মোটামুটি এমন একটি ছবি ভেসে উঠে, যাতে রেখা বা রংয়ে একটু ভেঙেচুরে কিম্ভূত করা হয় আসল বস্তুর আলোকে। দেখে হাসি পায় যদিও, তবু কার্টুন ছবির মধ্যে একটি প্রচ্ছন্ন উদ্দেশ্য লুকিয়ে থাকে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ১৬৭১ সালে যখন কাঠের পিঠে কার্টুনের উৎপত্তি হলো তখন কিন্তু এর ব্যবহার ছিল অন্যরকম। শুধু কার্টুন নয়, তখন থেকে ক্যারিকেচার, কমিক স্ট্রিপ আর অ্যানিমেটেড কার্টুনের প্রচলন শুরু হয়।

ক্যারিকেচার হচ্ছে পুরো ছবিটিকে বা তার অংশবিশেষকে ইচ্ছা করে বিকৃতি করা। এতে চেহারাকে অনেক বাড়িয়ে বা কমিয়ে দেখানো হয় সবসময়। আবার এর পেছনে কোনো গূঢ় রহস্য নাও থাকতে পারে। আর কমিক স্ট্রিপ হলো পর পর ছবি সাজিয়ে কোনো ঘটনাকে মূর্ত করে তোলা, যাতে গল্পটা বা ঘটনাটা ফিল্মের মতো চোখের সামনে ভেসে ওঠে। অ্যানিমেটেড কার্টুনের কথা, এতে পর পর অনেক ছবি এমন আঁকা হয়, যাতে তার ছবি তুলে পর্দায় অভিক্ষেপণ করলে ছবিগুলো জীবন্ত হয়ে ওঠে। এর নামই হচ্ছে কার্টুন ফিল্ম। যার আবিষ্কর্তা ছিলেন ওয়াল্ট ডিজনি। এবার আসা যাক কার্টুনের কথায়।

১৬৭১ সাল থেকেই মূলত কার্টুনের প্রচলন শুরু হয়। তখন অবশ্য এর উদ্দেশ্য ছিল খুব গুরুগম্ভীর। একটি শক্ত কাগজে ছবি এঁকে পরে তা থেকে ছবি তৈরি বা কাপড়ের উপর বন্ধনীর কাজ বা মোজাইক করার কাজে ব্যবহার হতো। অবশ্য ক্রমেই এর রূপ পাল্টে আধুনিককালের চিত্রশিল্পীদের কাছে এটি একটি শিল্প হয়ে ধরা দেয়।

সমৃদ্ধ হতে থাকে কার্টুন শিল্প। তারপর এলো নতুন যুগ। ১৮৬৩ সাল থেকে কার্টুন পত্রপত্রিকায় প্রকাশ হতে শুরু হলো। আর এর পথিকৃৎ ছিলেন ফরাসির 'শারিভাষী'। তার দেখাদেখি ইংল্যান্ডে আরম্ভ হলো পাঞ্চ (চঁহপব)। কার্টুন হাসায় ঠিকই, তবে হাসির খোরাক জোগাতেই শুধু কার্টুন ব্যবহার শুরু হয়নি। কার্টুন বিশুদ্ধ হাসির খোরাক যেমন জোগাতে পারে আবার প্রচণ্ড আক্রমণাত্মক ভঙ্গিও ধারণ করতে পারে। আজকের জটিল দুনিয়ার কার্টুন শুধু হাসার জন্য নয়, ভাবার জন্য। উপলব্ধির জন্য বিশেষত আঁকা হয়।

-শামস সাইদ

0 comments:

Post a Comment