Sunday, January 23, 2011

চুলকানি

1 comments
সম্ভবত এমন কোনো ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর, যার চুলকানির (ITCHING) অভিজ্ঞতা নেই। এটি কোনো রোগ নয় বরং রোগের লক্ষণ। রোগের ধরনের ওপর এর তীব্রতা নির্ভর করে। শরীরের কোনো এক নির্দিষ্ট জায়গা বা পুরো শরীরে দেখা দিতে পারে। চুলকানি একটি অনুভূতি যা আপনাকে শরীরের কোনো স্থানে আঁচড় কাটতে উদ্বুদ্ধ করে। প্রায় শতাধিক রোগের লক্ষণ হিসেবে চুলকানি দেখা দেয়। ত্বকের রোগ ছাড়াও শরীরের অন্যান্য জটিল রোগের লক্ষণ হিসেবে চুলকানি হতে পারে।
ত্বকের রোগ : ত্বকের প্রদাহজনিত বিভিন্ন রোগ যেমন একজিমা, বিভিন্ন ধরনের ডার্মাটাইটিস্ ইত্যাদি - ব্যাকটেরিয়াজনিত ত্বকের সংক্রমণ যেমন ইমপেটিগো, সেলুলাইটিস্, ফারাংকুসিস ইত্যাদি - ছত্রাক বা ফাংগাসজনিত ত্বকের সংক্রমণ যেমন ছইদ, দাদ ভাইরাসজনিত ত্বকের সংক্রমণ যেমন জলবসন্ত, হাম, হারপিজ ইত্যাদি ত্বকে পরজীবী বা প্যারাসাইটজনিত সংক্রমণ যেমন খোসপাচড়া বা স্ক্যাবিস, উকুন বিশেষ কোনো কিছুর সংস্পর্শে এলার্জিজনিত কারণ যেমন কসমেটিক, ব্যবহার্য পোশাক, খাবার ইত্যাদি - আবহাওয়াজনিত কারণে গরমে ঘামাচি এবং শীতে শুষ্ক ত্বকের কারণে - বয়সজনিত কারণ যেমন ষাটোর্ধ্ব বয়সে এবং মহিলাদের মাসিক বন্ধ হওয়ার পর বিশেষ কিছু ওষুধ সেবন এবং পোকার কামড় সোরাইয়াসিস্, পেমফিগয়েড, ইকথায়োসিস, লাইকেন প্রানাস, জেরোসিস ইত্যাদি ত্বকের রোগ।

লিভারজনিত কারণ : লিভারজনিত বিভিন্ন রোগে শরীরে চুলকানি অনুভূত হতে পারে। যেমন জন্ডিস, লিভার সিরোসিস, হেপাটাইটিস্ এ, বি, সি, ডি এবং ই এর সংক্রমণ, পিত্তথলিতে প্রদাহ ও পাথর, পিত্তনালীতে পাথর ইত্যাদি।

রক্ত রোগজনিত কারণ : বিভিন্ন ধরনের রক্তের রোগ যেমন থ্যালাসেমিয়া, লিউকোমিয়া বা রক্তের ক্যান্সার, পলিসাইথেমিয়া, লিম্ফোমা, হেমোলাইটিক এবং সিকেল্ সেল অ্যানিমিয়া ইত্যাদি রোগে শরীরে চুলকানি হতে পারে।

কিডনিজনিত রোগ : কিডনির বিভিন্ন রোগ যেমন সংক্রমণ, কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া বা রেনাল ফেইলুর, ডায়াবেটিসজনিত কিডনি রোগে চুলকানি লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পেতে পারে।

এছাড়াও থাইরয়েডজনিত রোগ, ডায়াবেটিস, পানক্রিয়াটাইটিস, স্কেলোডার্মা, সারকয়ডোসিস, সিফিলিস এবং গর্ভাবস্থাজনিত কারণে চুলকানি পরিলক্ষিত হয়। মানসিক রোগের কারণেও চুলকানি অনুভূত হতে পারে।

চিকিৎসা : খাবারের ওষুধ যেমন এন্টিহিস্টামিন এবং ময়েশ্চারাইজার ভ্যাসলিন, প্যারাফিন, তেল ইত্যাদি ব্যবহার করার পর পরিত্রাণ না পেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে সঠিক চিকিৎসার পর পরিত্রাণ পাবেন। আপাত দৃষ্টিতে চুলকানি (ITCHING) সাধারণ সমস্যা মনে হলেও অনেক ক্ষেত্রেই এটি জটিল রোগের লক্ষণ হিসেবে আবির্ভূত হয় এবং সময়মতো ও সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ না করলে জটিলতা দেখা দেয়। কাজেই অবহেলা বা অপচিকিৎসা না করে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

ডা. এম আর করিম রেজা
কনসালট্যান্ট, চর্ম, এলার্জি এবং কসমেটিকজনিত রোগ
এশিয়ান জেনারেল হাসপাতাল লি., বারিধারা, ঢাকা।

1 comments:

  • August 1, 2024 at 3:29 AM
    Anonymous :

    খুব দরকারি পোস্ট, ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য! মাথার ত্বক চুলকানোর সমস্যা অনেকেরই হয় এবং এর কারণ ও সমাধান নিয়ে আপনার দেয়া তথ্যগুলো খুবই সহায়ক। আমার ব্যক্তিগত মতামত অনুযায়ী, Nyclobate Shampoo ব্যবহার করা সেরা উপায়। এটি মাথার ত্বকের চুলকানি কমাতে বেশ কার্যকর। অন্যান্য টিপসগুলোও অনেক ভালো লেগেছে, বিশেষ করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার নিয়মগুলো মানা খুবই জরুরি।

Post a Comment