Friday, October 30, 2009

মক্কা শরীফের ঐতিহাসিক স্থানসমূহ

34 comments

১। রাহমাতুলস্নীল আলামীনের পবিত্র জন্মস্থান (ছওকুল্লাইল)। ২। হযরত খাদিজা (রা:)-এর ঘর। ৩। দারম্নল আরকাম বিন আবিল আরকাম। ৪। হযরত আলীর জন্মস্থান। ৫। জান্নাতুল মুয়ালস্নাহ্ (কবরস্থান)। ৬। ওয়াদিয়ে ছারফ্ হযরত উম্মুল মুমেনীন মায়মুনা (রা:)-এর বিয়ে ও কবর। ৭। জাবালে নূর-এর গারে হেরা গুহা (কুরআন শরীফ নাযিলের পাহাড়)। ৮। জাবালে ছওর (হজরত রাসূলে করীম (সা:) হিযরতের সময় যে পাহাড়ে ৩ দিন আত্মগোপন করেছিলেন।) ৯। মিনা (হযরত ইসমাইল আলাইহিচ্ছালামের কুরবানীর জায়গা)। ১০। মুযদালিফাহ্- (হযরত আদম ও হাওয়া (আ:)-দ্বয়ের পৃথিবীর প্রথম বাসর রাত বা ঘুমের জায়গা)। ১১। আরাফাহ- হজের ময়দান, যেখানে হযরত আদম ও হাওয়া (আ:)-এর পৃথিবীর প্রথম পরিচয় হয়েছিল। ১২। ওয়াদিয়ে মুহাসসার- বাদশাহ্ আবরাহার ধ্বংসস্থল। ১৩। ওয়াদীয়ে মুহাস্সাব- মিনা থেকে হরম শরীফে ফেরার পথে হুজুর (সা:) এই জায়গায় অবতরণ করেন এবং মাগরিবের নামায আদায় করেন। এখানে একটি সুন্দর মসজিদ আছে। ১৪। হুদায়বিয়া- বর্তমান নাম (ছুমাইসীয়া, মক্কা থেকে ২১ কি.মি. দূর)। ১৫। ওয়াদিয়ে ফাতেমা- মক্কা বিজয়ের সময় মুসলিম বাহিনীর অবতরণস্থল। ১৬। হুনাইন- মক্কা বিজয়ের পর এখানে কাফেরদের সাথে যুদ্ধ হয়, আলস্নাহ ফেরেশতা দিয়ে এই যুদ্ধে মুসলমানদেরকে সাহায্য করেন। ১৭। জেরানা, বড় ওমরার জায়গা রাসূলুলস্নাহ (সা:) হুনাইন যুদ্ধের পর এখান থেকে ওমরার ইহরাম বাঁধেন, এটাই শ্রেষ্ঠ মিকাত। এখানে একটি মসজিদ আছে, যাকে মসজিদে রাসূল (সা:) বলা হয়। ১৮। নাখলা- মক্কা থেকে ৪৫ কি.মি. দূরে মক্কা ও তায়েফের মাঝামাঝি এই উপত্যকা। এখানে খেজুর বাগান ছিল, এই অঞ্চলের নাম 'নাখলা'। এই জায়গাটি মিষ্টি পানির জন্য প্রসিদ্ধ। আলস্নাহর নবীর জবানে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত শুনে জ্বীন জাতির ইসলাম গ্রহণ করার ঘটনা এখানেই ঘটে বলে জায়গাটি ঐতিহাসিক।
মক্কা শরীফের ঐতিহাসিক প্রসিদ্ধ মসজিদ
১। মসজিদে আবুবকর (রা:) এখানে হযরত আবুবকর (রা:)-এর বাড়ি ছিল। ২। মসজিদে খালেদ বিনওয়ালিদ। ৩। মসজিদে জ্বীন। ৪। মসজিদে বাইআহ্। ৫। মসজিদে খায়েফ। ৬। মসজিদে নামেরা। ৭। মসজিদ তাইঈম।
মক্কার ঐতিহাসিক পাহাড়সমূহ
১। জবলে নূর। ২। জবলে সওর। ৩। জবলে আবু কোবাইস। ৪। জবলে রহমত।
কাবা শরীফ ও মক্কা শরীফের রহস্যপূর্ণ জায়গাসমূহ
১। আলস্নাহর ঘরের ভিতরে, তবে সেখানে সাধারণ মানুষ প্রবেশ করা সম্ভব নয় তাই হাতীমে (বাইতুলস্নাহর পাশে গোলাকার দেয়াল ঘেরা কিছু উন্মুক্ত খালি জায়গা) নামায পড়ার সুযোগ আছে।
২। মুলতাজাম বা কা'বা ঘরের দরজা, ১৩৬৩ হিজরীতে বাদশা আব্দুল আজীজ আস্সৌদ একটি সুন্দর কাঠের দরজা লাগান, সেটি তৈরি করতে তিন বছর সময় লেগেছিল। বর্তমান দরজাটি বাদশা খালেদ লাগিয়েছেন। এতে ২৮৬ কি. গ্রা. খাঁটি স্বর্ণ লাগানো আছে, এতে আলস্নাহর ও কুরআন শরীফের আয়াত- 'কুল ইয়া ইবাদিয়ালস্নাজিনা আছরাফু আলা আনফুছিহীম, লাতা কনাতুমির রাহমাতিলস্নাহ্, ইন্নালস্নাহা ইয়াগফিরম্নজ্জুনুবা জামিয়া।
লেখা আছে। তাই এই আয়াত পড়ে এর উসিলা দিয়ে দোয়া করলে অবশ্যই দোয়া কবুল হয়।
৩। কাবা ঘরের পেছনের দেয়াল অর্থাৎ রোকনে ইয়ামানীর কাছে এখানো দোয়া কবুল ও নিষ্পাপ হওয়ার দলিল আছে। যেহেতু হুজুর (সা:) হিযরতের পর এখানে দাঁড়িয়েই ১৬ মাস বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে নামায আদায় করেছেন এবং কেবলা পরিবর্তনের দোয়া করেছিলেন।
৪। হাতীম বা হিজরে ইসমাইল হিজরে ইসমাইলের অপর নাম হচ্ছে হাতীমে কা'বা। এই হাতীমে হযরত ইসমাইল (আ:) ও তাঁর মা হযরত হাজেরা (আ:)-এর কবর আছে বলে নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিকগণের বর্ণনা পাওয়া যায়। হযরত ইসমাইল (আ:)-এর দোয়ার বরকতে এই বেহেশতি ঝরনা প্রবাহিত হচ্ছে। আলস্নাহর ঘরের ভিতর নামায পড়ার ইচ্ছা করলে হাতীমে পড়ে নিলেই তা আদায় হয়ে যাবে।
৫। হাজরে আসওয়াদ, বাইতুলস্নাহ শরীফের পূর্বকোণে ৩/৪ ফুট উঁচুতে দেয়ালের ভেতরে সংরৰণ করা সেই পাথর বেহেশতের সবচেয়ে মূল্যবান পাথর। রূহের জগতে এই পাথরের উপরে হাত রেখে হুজুর (সা:)-এর রূহ মুবারক আমরা আলস্নাহর বান্দা ও আলস্নাহ আমাদের প্রভু এই প্রতিশ্রম্নতি পাঠ করিয়েছিলেন। হযরত আদম (আ:) পৃথিবীতে আসার সময় আলস্নাহ পাক সেই পাথর তার সাথে দিয়ে দেন, পরবতর্ীতে তিনি সেটা জাবালে আবু কোবাইছে রাখেন তখন সে পাথর বরফের মত সাদা ও সূর্যের মত আলোকিত ছিল। নূহু (আ:)-এর বন্যার সময় আলস্নাহ পাক পুনরায় আসমানে উঠিয়ে নেন। হযরত ইব্রাহীম (আ:)-এর দ্বারা কা'বা ঘর তৈরির সময় আবার তা ফেরেশতার মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়া হয় এবং ইব্রাহীম (আ:) সেই পাথরকে আলস্নাহর ঘরের দৰিণ-পূর্ব কোণে স্থাপিত করেন। তাই এখান থেকেই তাওয়াফ শুরম্ন হয়। হাদীস শরীফে আছেঃ
হজরে আসওয়াদ প্রথম আবু কুবাইছ পাহাড়ে নাজিল হয়, সেখানে তা ৪০ বছর পর্যনত্দ থাকে। তারপর তা হযরত ইব্রাহীম (আ:) এর আগেই --ভিত্তির উপর লাগানো হয়।
অর্থাৎ-মাকামে ইব্যাহীম ও হিজরাল আসয়াদ এই পাথর দু'টিই বেহেশতের পাথর। হযরত ইব্রাহিম (আঃ)-এর আগেই হাজরে আসওয়াদ নাজির হয়েছে। বন্যার সময় এটিকে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছিল। তারপরই ইব্রাহীম (আ:) এর কাবা শরীফ নির্মাণের সময় জিব্রাইল (আ:) তা নিয়ে আসেন।
১১। কা'বার গেলাফ আলস্নাহর ঘরের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের উজ্জল নিদর্শন। ইয়েমেনের বাদশা তবুউল হুমায়রী আলস্নাহর ঘর ধ্বংস করতে এসে কাবার অলৌকিকতা অভিভুত হয়ে নিজেই তৎকালীন সময়ের সব চাইতে মূল্যবান সবুজ ডোরা কাটা কাপড় দিয়ে গেলাফ তৈরি করে পরিয়ে দেন। সেই থেকে এ যাবৎ প্রতি বছর আলস্নাহর ঘরে গেলাফ পরানোর প্রচলন অব্যাহত রয়েছে।

34 comments:

Post a Comment