Thursday, October 15, 2009

লালন সাঁই

0 comments

যারা বই-পত্র না পড়ে শর্টকাটে লালন সম্পর্কে জানতে চান, তাদের জন্যই এই পোষ্ট। "লালন সাঁই" শিরোনামের যে গ্রন্থ থেকে আমি তথ্য সংগ্রহ করেছি, সেই গ্রন্থের লেখক শিকার করেছেন যে গ্রন্থটিতে পরিবেশিত বেশীরভাগ তথ্যরই শক্ত কোন ভিত্তি নেই। নির্ভরশীল সূত্র থেকে প্রাপ্ত আর তাঁর নিজের কাছে যেগুলোকে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে, সেগুলো নিয়েই তিনি গ্রন্থটি রচনা করেছেন। লেখক আবার বাংলা সাহিত্যের গবেষক, তাই বইটি আমার কাছে বেশ নির্ভরযোগ্য মনে হয়েছে।

লালনের জন্মকাল আর জন্মস্থান নিয়ে পন্ডিতদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তিনি নিজেও এই বিষয়ে ছিলেন নীরব। তাঁর জীবনীর প্রামাণ্য ও প্রাচীন বিবরণও বেশ দুর্লভ। ধারণা করা হয় তিনি ১৭৭৪ সালে তৎকালীন নদীয়া জেলার অধীন কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার চাপড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত গরাই নদীর তীরবর্তী ভাঁড়ারা গ্রামের একটি হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ছিলেন মাধব কর ও পদ্মাবতীর একমাত্র সন্তান। শৈশবের পিথীন হন। অর্থাভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মুখ-দর্শন করতে পারেননি। গ্রামে বাউল ও লোকসঙ্গী্তের ব্যাপক চর্চা ছিল। এই সাঙ্গীতিক ঐতিহ্যের পরিবেশেই লালনের জন্ম। লালন বাল্যকাল থেকেই ধার্মিক আর গানপাগল ছিলেন। অল্প বয়সে সংসারের ভার নিতে হয় এবং তাঁর বিয়েও হয়ে যায়। শশুরবাড়ীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তিনি মা-বউ নিয়ে আলাদাভাবে বসবাস শুরু করেন।

প্রতিবেশী বাউলদাসের সঙ্গে আরও কয়েকজনকে সাথে নিয়ে তিনি একবার গঙ্গাস্নানে যান। কেউ কেউ বলে তিনি তীর্থভ্রমণে গিয়েছিলেন। যাই হোক, স্নান সেরে ফেরার পথে তিনি গুরুতরভাবে বসন্তরোগে আক্রান্ত হন। রোগ ক্রমশ বৃ্দ্ধি পেলে তিনি অচেতন হয়ে যান। সঙ্গী্রা তাঁকে মৃত মনে করে নদীতে ফেলে এসে মারে ভো দৌড়। লালনের গ্রামে গিয়ে তারা সবাইকে লালনের মৃত্যু সংবাদ জানিয়ে দেয়। সবাই ব্যাপারটিকে নিয়তির পরিহাস মনে করে স্বাবাভিক ভাবেই নেয়।

এদিকে লালনের "মৃতদেহ" ভাসতে ভাসতে কূলে এসে ঠেকে। নদী থেকে পানি নিতে এসে এক মুসলিম রমণী তাঁকে দেখে আপন ঘরে আশ্রয় দেয়। তাঁর সেবা-শুশ্রুশায় লালন আরোগ্যলাভ করে ঘরে ফিরে যান। বসন্ত রোগ তার মুখ-মন্ডলে অজশ্র্য ক্ষতচিহ্ন এঁকে এবং তাঁর এক চোখের দৃষ্টি কেড়ে নিয়ে বিদায় নেয়। তিনি মা ও স্ত্রীর টানে ঘরে ফিরে আসেন।

তাঁর এই আকস্মিক প্রত্যাবর্তনে তাঁর মা-স্ত্রী খুশি হলেও গ্রামের হিন্দু পাবলিক বেঁকে বসে। ধর্ম-শাস্ত্র টেনে এনে বিধর্মীর ঘরের আহারাদি গ্রহনের "অপরাধে" লালনের জাত কেঁড়ে নেয়া হয়। অমানুষিক রাগে লালনও গ্রাম থেকে বিদায় নেন। গৃহত্যাগের সময় লালনের স্ত্রী তাঁকে সঙ্গ দিতে চাইলেও সমাজের বাঁধনের কারণে তাঁর ইচ্ছে ফলবতী হয়নি। এর কয়েক বছর পরেই তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। একজন রিক্সাওয়ালা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হাত-পা হারালে তার জীবন যেভাবে প্রভাবিত হয়, নিজ গ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়ে লালনের জীবনও সেরকম প্রভাবিত হয়েছিল। তারপর মড়ার উপর খাড়ার ঘায়ের মত পত্নীবিয়োগের খবর তাঁর কাছে পৌছে দেয়া হল। এই দু'টো ঘটনাই মূলত আমাদের চিরচেনা "লালন শাহ" এর জন্ম দিয়েছিল।

গৃহত্যাগের পর লালন সিরাজ সাঁই নামক এক বাউলগুরুর কাছে বাউল মতবাদের উপর দীক্ষা নেন। দীক্ষা নেয়ার আগেই তাঁর ধর্মান্তর হয়েছে বলে গবেষকরা মনে করেন। গ্রামবাসীর সাম্প্রদায়ীকতা তাঁর মধ্যে আনুষ্ঠানিক ধর্মের(organized religion) প্রতি প্রবল বিতৃষ্ঞা জাগিয়ে তুলে। কিন্তু তাঁর মধ্যে হিন্দু ধর্মের উপর রাগ বেশী ছিল। বেদের উপর তাঁর গানের মধ্যে এমনভাবে ঝাপিয়ে পড়তেন যা মোটেই লালনসুলভ নয়। লালনের গান থেকে ধারণা করা হয়, তিনি agnostic ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন মসজিদ, গীর্জায়, মন্দিরে গিয়ে পূজা, প্রার্থনা কিংবা নামাজ আদায়ের মাধ্যমে কোনভাবেই স্রষ্টার সাক্ষাৎ মেলা সম্ভব নয়। লালন বিশ্বাস করতেন মানবদেহের অন্তরেই খোদা লুকিয়ে আছে। সব পার্থিব চাহিদাকে বর্জন করে আত্ম-উপলদ্ধিতে নিজেকে নিয়োজিত করলেই স্রষ্টার সন্ধান পাওয়া যাবে বলে তিনি মনে করেন।

লালনকে মুসলিম প্রমাণ করতে যেসব দলিল উপস্থাপন করা হয়, তার সবগুলোই জাল। লেখক কয়েকজন গবেষকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন যে এইসব দলিল মূলত ইসলামপন্থী কিছু ব্যক্তি দ্বারা রচিত হয়েছে। তাঁরা লালনকে মুসলিম বানানোর প্রচেষ্টায় "লালন সাঁই" কে "লালন শাহ" বানিয়ে ছেড়েছেন। "সাঁই" যে আসলে "আলহাজ্ব" এর মত একটি সম্মান প্রদর্শনের পদবী, তা তাঁরা বুঝতে পারেননা। লালন তাঁর গানে প্রায়ই আল্লাহকে "সাঁই" নামে সম্বোধন করেন।

লালন সঙ্গী্ত সাধনার মাধ্যমে স্রষ্টাকে খুজতেন। তাঁর গান ছিল অধ্যাত্ম-ভাবাবেগের ফসল। তাঁর সংগীত রচনার পদ্ধতি নীচের বিবরণটিতে লক্ষ্য করুনঃ-
Web Hosting

তাঁহার অন্তঃকরণের ভাবরাশি যখন দুকূলপ্লাবিনী তটিনীর ন্যায় আকুল উচ্ছ্বাসে উথলিয়া উঠিত, তখন তিনি আর আত্মসংবরণ করতে পারিতেন না। শিষ্যগণকে ডাকিয়ে বলিতেন, "ওরে আমার পুনা মাছের ঝাঁক এসেছে"। ইহা শুনিবামাত্র শিষ্যগণ যে যেখানে থাকিত ছুটিয়া আসিত। তখন সাঁইজী তাঁহার ভাবের আবেশে গান ধরিতেন। শিষ্যেরা যন্ত্রদির তান লয়ে সঙ্গে সঙ্গে গাহিয়া চলিত। ইহাতে আর সময় অসময় ছিল না। সর্বদাই এই "পুনা মাছের ঝাঁক" আসিত


লালন মুখে মুখে গান রচনা করতেন আর তাঁর শিষ্যরা তা লিপিবদ্ধ করতেন। লিপিকরের কাজ করতেন মানিক শাহ ওরফে মানিক পন্ডিত ও মনিরুদ্দিন শাহ। লালন শিষ্যরা মনে করেন, তাঁর রচিত গানের সংখ্যা ১০ হাজারের মত হবে।

পার কর হে দয়ালচাঁদ আমারে
ক্ষম হে অপরাধ আমার ভবকারাগারে


অন্তিমশায়নেও আল্লাহ কিংবা গান, কোনটিই ত্যাগ করতে পারেননি।

লালন সম্পর্কে অনেক মূল্যবান তথ্য "হিতকরী" পত্রিকা থেকে পাওয়া গেছে। লালনের চরিত্র বিষয়ে হিতকরী যেসব শব্দ ব্যাবহার করে- ধর্ম্পরায়ণ, চরিত্রবান, সত্যাশ্রয়ী, অসাম্প্রদায়ীক, সংস্কারমুক্ত, তত্তজ্ঞানী, সদগুরু, প্রচারবিমুখ, মাতৃভক্ত, কর্তব্যনিষ্ঠ ও দৃ্রচিত্ত সংগ্রামী। লালনের মধ্যে ছিল গভীর পত্নী-প্রেম ও যে কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করার মানসিকতা। একবার তাঁর এক শিষ্যকে বাঁচাতে তিনি্ লাঠিয়াল বাহিনীর বিরুদ্ধে হাতে লাঠি তুলে নিয়েছিলেন। অনেকেই বাউলদের বিরুদ্ধে অবাধ যৌনাচারের অভিযোগ আনেন। অভিযোগটি মোটেই মিথ্যে নয়। কিন্তু আমাদের একটি বিষয় মনে রাখতে হবে। মুসলিমদের অপকর্মের জন্য যেমন ইসলাম দায়ী নয়, তেমনি কিছু কিছু বাউলের ইতরামীর জন্য লালন ও তাঁর শিষ্যকে ইতর বলা যায় না। লালনকে দেখেছেন এবং তাঁকে নিয়ে পড়াশুনা করেছেন এমন কাউকে জিজ্ঞেস করলেই জানতে পারবেন যে লালন ও তাঁর শিষ্যরা ভুলেও ব্যভিচারে লিপ্ত হতেন না। ইন্দ্রীয়কে সুখী করতে গেলে কি আর খোদার দেখা মেলে! যৌন-সম্ভোগ নয়, যৌন-সংযম ও কাম-নিয়ন্ত্রণই বাউলের মোক্ষের পথ।
FileServeজেন্তে-মরে প্রেম-সাধন কি পারবি তোরা।
যে প্রেমে কিশোর-কিশোরী হয়েছে হারা।।
শোসায় শোষে না ছাড়ে বাণ
ঘোর তুফানে বায় তরী উজান
ও তার কাম নদীতে চর পড়েছে
প্রেম-নদীতে হল পোরা।।
হাঁটতে মানা, আছে চরণ
মুখ আছে তার, খাইতে বারণ
ফকির লালন কয়, এ যে কঠিন মরণ
তা কি পারবি তোরা।।


কামলোভী ভন্ড সাধকের কৃ্ত্রিম সাধনাকে লালন ব্যঙ্গ করে তাই বলেছেন্ "প্রেম জানে না প্রেমের হাটের বুলবুলা", কেননা "তার মন মেতেছে মদন্রসে সদায় থাকে সেই আবেশে"।

লালনের সূক্ষ্ম বিচারবুদ্ধির পরিচয় মেলে কাঙাল হরিনাথের বাউলগান সম্পর্কে মন্তব্য পেশের মাধ্যমে। একবার "শখের বাউল" হরিনাথ তাঁর কয়েকটি গান শুনিয়ে লালনের অভিমত জানতে চান। লালন মৃদু হেসে জবাব দিয়েছিলেন, "তোমার এ ব্যঞ্জন বেশ হইয়াছে, তবে নুনে কিছু কম আছে"(অর্থাৎ ভাষা কিঞ্চিৎ নীরস হইয়াছে)

অনেকে বলেন রবীন্দ্রনাথ নাকি লালনের গান চুরি করেছেন এবং তিনি নাকি লালনের সুরও চুরি করেছেন। যেহেতু তিনি জমিদার বংশের এবং লালন একজন damn care ফকির, তাই ঠাকুরের জন্য লালনগীতি চুরি করা কোন ব্যাপারই নয়। লালনের মাজারে গেলে কিংবা লালন একাডেমীর কোন শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞেস করলে তারা আপনাকে এই কথাটিই ববে। আসলে ব্যাপার ভিন্ন। লালনের সাথে রবীন্দ্রনাথের কখনওই কথা হয়নি বলে পন্ডিতেরা মনে করেন। লালন একবার জ্যোতিন্দ্রনাথের দরবারে গান করলে তখনই কিশোর রবীন্দ্রনাথ প্রথম লালনকে দেখেন। রবিঠাকুর এরপর প্রায়ই লালন-শিষ্যদের সাথে দেখা করতেন এবং লালন সম্পর্কে পড়াশূনা করতেন। লালন দ্বারা তিনি তুমুলভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। তিনি লালনকে অনুকরণ করতেন, কিন্তু কখনওই লালনের গান কপি-পেষ্ট করেননি। নিচের বাক্যগুলি খেয়াল করুনঃ-

১) খ্যাপা তুই নাজেনে তোর আপন খবর যাবি কথায়(লালন)
খ্যাপা তুই আছিস আপন খেয়াল ধরে(ঠাকুর)

২) আছে যার মনের মানুষ মনে, সে কি জপে মালা(লালন)
সে যে মনের মানুষ, কেন তারে বসিয়ে রাখিস নয়নদ্বারে?(ঠাকুর)

৩) আমার মনের মানুষেরি সনে মিলন হবে কতদিনে(লালন)
আমি তারেই খুজে বেড়াই যে রয় মনে আমার মনে(ঠাকুর)

৪) ঐ এক অজান মানুষ ফিরছে দেশে(লালন)
সে যে বাহির হল আমি জানি(ঠাকুর)

৫) আমারে কি রাখবেন গুরু চরণদাসী/ইতরপনা কার্য আমার অহর্নিশি।।(লালন)
আমি কেবল তোমার দাসী। কেমন করে আনব মুখে তোমায় ভালবাসি।।(ঠাকুর)

৬) কারে বল্বো আমার মনের বেদনা/ এমন ব্যথায় ব্যথিত মেলে না।।(লালন)
আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল, শুধাইল না কেহ(ঠাকুর)

৭) কেন কাছের মানুষ ডাকছো শোর করে/আছিস তুই যেখানে, সেও সেখানে খুঁজে বেড়াও কারে।।(লালন)
আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে/তাই হেরি তায় সকখানে।।(ঠাকুর)

লালনের অন্তিম-মুহূর্তের বর্ণনায় বসন্তকুমার পাল লিখেছেনঃ-

বঙ্গীয় ১২৯৭ অব্দের কার্ত্তিকের প্রথম প্রত্যুষা, শর্ব্বরীর তিমিরাবগুন্ঠন এখনও উন্মোচন হয় নাই, তাই বাড়ীঘর, পথঘাট, উদ্যানপ্রান্তর গার্শির আলোকমালায় উজ্জ্বলিত; কোথায়ও হরিস্নকীর্তন, কোথায় বা শঙ্খধবনি; গার্শির মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে জড়তা পরিহার করিয়া গ্রাম্বাসীগণ সকলেই এখন জাগ্রত। এইসময় লালন স্বগৃহে রুগ্নশয্যায় শায়িত কিন্তু নিষ্ক্রিয় বা নীরব নহেন- শিষ্যগণসহ তন্ময়চিত্তে অন্তিম সঙ্গীত[পার কর হে দয়ালচাঁদ আমারে....] গাহিয়া চলিতেছেন। প্রভাতরশ্মি পূর্ব্বাশার অন্তর ফুটিয়া লোক্লোচনে দর্শন দিল, সাঁজীর সঙ্গীতও শেষ হইল, স্বরলহরী থামিয়া গেল, সমস্ত গৃহতল নীরব নিস্তদ্ধ, ইহার পর শীষ্যগণকে সম্বোধন করিয়া "আমি চলিলাম" বলিয়া তাঁহার কন্ঠ হইতে শেষ স্বর উচ্চারিত হইল, নেত্রদ্বয় নিমীলিত করিলেন, সমাজপরিত্যক্ত দীন ফকিরের জীবননাট্যের যবনিকাপাত হইল।


ধারণা করা হয় তিনি ১১৫ বছর বেঁচেছিলেন। সংখ্যাটি সম্পূর্ন সঠিক নাও হতে পারে কিন্তু তিনি নিঃসন্দেহে শত বর্ষ অতিক্রম করেছিলেন।


ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গী থেকে দেখলে লালনের মধ্যে কোন ক্ষুত দেখছিনা। আজকে কোরানের কয়েকটি আয়াতের(৩৩:৩৫, ২:২৫৬, ২:২২৫) ৩টি অনুবাদ(ইউসুফ আলি, পিকথাল, শাকির) দেখলাম, যার সারমর্ম হল জান্নাতে যাওয়ার জন্য একমাত্র যোগ্যতা হল ভাল মানুষ হওয়া এবং অন্তরকে পরিস্কার রাখা। লালন মানুষের মধ্যে মানবপ্রেম জাগিয়ে তুলেছেন, তিনি তাঁর গানে স্রষ্টার প্রতি গভীর ভক্তি প্রকাশ করেছেন(হতে পারে তিনি আল্লাহ, যীশু, ভগবানে বিশ্বাস করেন না। কিন্তু কোরানের সেই আয়াতগুলোর আলোকে এ কাজ না করেও বেহেস্তে যাওয়া যায়, কারণ সেগুলোর মধ্যে একটি অবিশ্বাসীদেরকেও উল্লেখ করে)। আমরা আরও দেখলাম যে তিনি অবাধ যৌনাচার ঘৃ্না করতেন, তাই শরীয়াহপন্থীদের আরেকটি অভিযোগের সমাধান হইল। সর্বশেষ ইস্যুটি হল গান-বাজনা। আমরা যদি সম্মানিত ব্লগার ফতেমোল্লা সাহেবের "ইসলাম ও শরীয়াহ" নামক বইয়ের "ইসলামে সংগীত" অধ্যায়টি দেখি, তাহলে আমরা দেখব যে ইমাম গাজ্জালীর মত আলেমরা ইসলামে সংগীতের উপর নিষেধাজ্ঞার অস্তিত্ব অস্বীকার করেছেন। আমরা অধ্যায়টিতে কিছু হাদীসও দেখতে পাই যা নবী ও আয়েশা(রাঃ) এর সংগীত শ্রবণের কথা উল্লেখ করে(তাও আবার বালিকাদের গাওয়া গান, যা প্রমাণ করে যে গান গাওয়ার জন্য পুরুষ হওয়া লাগেনা)। এই কারণে আমার মনে হয় ইসলামের দোহাই দিয়ে লালনের নামে কুৎসা রটানো পুরোপুরি ভিত্তিহীন(এবং এটি গীবতের পর্যায়েও পড়ে)।

0 comments:

Post a Comment