Saturday, July 28, 2012

হাম্মাম জলপ্রপাত

0 comments
প্রকৃতির অপরূপ লীলাভুমি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার কুরমা বনাঞ্চলের সীমান্তবর্তী গহীন অরন্যে সন্ধান পাওয়া গেছে নতুন রোমাঞ্চকর নয়নাভিরাম এক জলপ্রপাত। স্থানীয়রা একে হাম্মাম বলে। গোসল খানাকে আরবীতে হাম্মাম বলে ও জলের স্রোতধ্বনীকে ত্রিপুরার টিপরা ভাষায় হাম্মাম বলে তাই এ জলপ্রপাতটি হাম্মাম বা হাম হাম নামে পরিচিত। উপড়ে যে স্থান থেকে জল পড়ে সেখান থেকে ২শত ফুট পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা সীমানা।
পাহাড়ী অধিবাসীরা বলেন, পানি পতনের স্থানে এক সময় পরীরা গোসল করত। জলপ্রপাতটি ২০১০ খ্রিস্টাব্দের শেষাংশে পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মার সাথে দুর্গম জঙ্গলে ঘোরা একদল পর্যটক আবিষ্কার করেন। তারা এর নাম দেন চিতা ঝর্ণা।
উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩৮কিঃমিঃ পূর্ব-দক্ষিণে রাজকান্দি বন রেঞ্জের কুরমা বনবিট এলাকায় এ ঝরণা'র অবস্থান। এ দর্শনীয় স্থানে যেতে হলে উপজেলা সদর থেকে স্থানীয় মিনিবাস, জীপ, মাইক্রোবাস ও সিএনজি নিয়ে কমলগঞ্জের-কুরমা চেকপোষ্ট পর্যন্ত প্রায় ২৫কিঃ পাকা রাস্তা বাকী ১৩ কিঃ মিঃ মাটির রাস্তায় পায়ে হেঁটে চাম্পারায় চা বাগানের ভেতর দিয়ে কলাবন বস্তি হয়ে মোকামটিলায় গেলে দেখা পাওয়া যায় ১৬০ ফুট উচ্চতা ও ৮০ ফুট প্রস্তের হাম্মাম ঝরণা।

ভ্রমন পিপাষুরা মৌলভীবাজার,কমলগঞ্জ অথবা শ্রীমঙ্গল শহর থেকে যানবাহন ভাড়া করে ভোর ছয়টার মধ্যেই হাম্মামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিতে হয়। গাড়ি ও পায়ে হেটে ৪ ঘন্টা সময় লাগবে গন্তেব্যে পৌছতে। আগত পর্যটকরা বলেন, মাধবকুন্ড জলপ্রপাত থেকে তিনগুন বড় হয়ে পানি পড়ছে হাম্মাম জলপ্রপাতে। মাধবকুন্ডের চেয়ে উচ্চতায় কম হলেও প্রস্থে অনেক বড়।

পাহাড়ের আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু পথে ট্রেকিং করা খুবই কঠিন এবং কষ্টের। মাঝেমধ্যে সিমেন্টের ঢালাই করার মতো দেখতে বড় বড় পাথরের খণ্ড খুবই পিচ্ছিল। তাই ট্রেকিং করার সময় সবাইকে একটি করে বাঁশের লাঠি হাতে নিয়ে পাহাড়ী এই পথে সাবধানে হাঁটতে হয়। এই লাটি হচেছ একমাত্র অবলম্বন। সাথে নিতে হয় পানি ও শোকনো খাবার। আপনাকে গন্তব্যে পৌছে দিতে স্থানীয় গাইডের সহযোগিতা পাওয়া যাবে।

পর্যটন শিল্প বিকাশের স্বার্থে ও দেশের অন্যতম জলপ্রপাতটিকে বিশ্বের সকল ভ্রমন পিপাষুদের পরিচয় করিয়ে দিতে দ্রূত গতিতে পর্যটন উপযোগী, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বনের ভিতরে স্থানে স্থানে বিশ্রামের জন্য কয়েকটি পর্যটন ছাউনি তৈরী করে পর্যটকদের উৎসাহিত করবে পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে এ আশা করছেন পর্যটক ও এলাকাবাসী।

0 comments:

Post a Comment