Saturday, July 28, 2012

ঝাড়বাড়ি, বীরগঞ্জ, দিনাজপুর

0 comments
আটষট্টি হাজার গ্রামের এই বাংলাদেশ। শিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবির মতো এই গ্রামগুলো এবং তার নামকরণ নিয়ে আছে নানা জনশ্রুতি। কোনোটা সত্য, কোনোটা আবার শুধুই মিথ। গ্রামবাংলা এবং তার জনশ্রুতি নিয়ে আমাদের এই ধারাবাহিক আয়োজন। আজ শুনুন দিনাজপুরের বীরগঞ্জের ঝাড়বাড়ি গ্রামের গল্প।


ইতিহাস
সতেরশ' শতকের দিকে রামলাল ছিলেন বীরগঞ্জের কিছু এলাকার জমিদার। প্রতিপত্তিশালী এই জমিদারের পরগনা ছিল সুজলা-সুফলা। কিন্তু একটা এলাকা ছিল একেবারেই জঙ্গলাকীর্ণ। শুধু বাঁশ, বেতের ঝোপ আর বড় বড় আকাশ ছোঁয়া গাছ। জমিদার বিলাসী মানুষ ছিলেন। শিকার ছিল তার নেশা। অনেক সময় দিনের পর দিন শিকারে কাটিয়ে দিতেন। শিকারে গিয়ে শ্রান্তির জন্য এবং রাত কাটাতে জমিদার রামলাল জঙ্গলে এক বাংলোবাড়ি বানান। তার নাম দেন জঙ্গলবাড়ি। ঝাড়ের আধিক্য থাকার কারণে পরবর্তীতে মানুষের মুখে মুখে ঝাড়বাড়ি নামটা প্রতিষ্ঠা হয়ে যায়।
ঝাড়বাড়িতে একদিন
অসীম আয়তনের জঙ্গল। যতদূর চোখ যায় শুধু জঙ্গল আর জঙ্গল। জঙ্গলের পাশ ঘেঁষে আছে কিছু বসতি_ তাও খুব বেশি নয়। তবে অনেক খুঁজেওজমিদারের বাগানবাড়ির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া গেল না। বাঁশের ঝাড়, বড় বৃক্ষের সঙ্গে মিলেমিশে আছে বেতের ঝাড়। আর আছে জঙ্গলের মাঝে মাঝে ফসলের ক্ষেত। সবুজ ধানের চারায় ভরা ক্ষেত দূর থেকে দেখে শিল্পীর তুলিতে ইজেলে ধরা ল্যান্ডস্কেপের শিল্পকর্ম যেন। বিরাট জঙ্গলের কোথাও আবার কুল কুল করে বয়ে গেছে সাপের শরীরের মতো আঁকাবাঁকা নদী। দেখে বোঝা যায়, এক সময় নদীগুলো দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলে পানি পরিবহন করত। এখন নদীতে যে পরিমাণ পানি আছে তা পরিবহন করা তো দূরে থাক, উত্তরাঞ্চলের পানির চাহিদা মেটাতেই হিমশিম খাচ্ছে। আর একই অবস্থা জঙ্গলেরও। ঝাড়ের অর্ধেকও আর অবশিষ্ট নেই জঙ্গলে।

অনিন্দিতা রাজকন্যা

0 comments:

Post a Comment